নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

জারা সোমা





ছত্রছায়া.
******



কথা যত কম বলা যায়
তত ভালো থাকে সম্পর্করা
ঘরের কোণের টবে বরং যত্নে রাখি
সকল অ-কথা কুকথাদের
ওদের স্পর্শ করি মধ্যরাতে
স্বমেহনেই প্রীত হই
কবি , যোগী , উড়ুক্কু প্রেমের মতো
নীরবতাকে নতজানু করি শিকলে

কথাগুলো বাঁধি নিয়ম মেনে 
যতই খরস্রোত ভাসিয়ে দিক ঘর
শব্দের প্রলেপে ফুটিয়ে তুলি কবিতাঅবয়ব
দেনা পাওনা কড়ায় গন্ডায় বুঝে
তুলে দিই ম্যাগাজিনে
চিকচিকে চোখের পৈশাচিক উল্লাসে

কখনও আবার আরেকটু সাহসী হই
রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, জীবনানন্দ সঙ্গী করে
খুলে ফেলি রগরগে রম্যরচনার পাঠশালা
উৎসমূলে ঢালতে শেখাই রক্তবীজ
প্রতিশোধের অঙ্গীকারে টিকে যাই
ভালোবাসাহীন পৃথিবীর কৌটিল্য ছত্রছায়ায় ।।

প্রতিভা দে




কলম সৈনিক
******* ****


কলম সৈনিক বটে 
ঢাল তলোয়ার ছাড়া
তবুও কলম করতে পারে
হাজার লোকের জ্ঞান হারা।
মস্তিষ্কে চালায় আঘাত
অনেকের ই ঘটায় ঘুমের ব্যাঘাত।
নিঃশব্দ গুলি চালায় অন্তরে
অনেকটাই গোল পাকিয়ে দেয় মন্তরে।
যা গেল তা অভ্যন্তরে 
কাজটা বড়ই গোপন স্তরের।
জেগে উঠে মানুষ স্থির জেনে
অন্তরে তা নেয় মেনে।
সেই অস্রের এমন আঘাত
রক্ত ঝরেনা
শক্ত হয় আরো অন্তরে
বরং মরতে পারে অন্যের কাছে
সত্যকে নিয়ে ঢাল
জ্বালিয়ে নিয়ে বুকে মশাল।
মৃত্যু বরন করে ।

সোমা বিশ্বাস




ধর্ষক হত্যা
********


নারী ধর্ষণ করে তৃপ্তি পাও ।
মনে মনে হেসে নিজেকে পুরুষ বলে বাহবা দাও ।
মনে করো, এইরকম ঘটনা বাস্তবে ঘটতে শুরু হলো,
তাহলে কেমন হতো ?
একদল নারী বিপ্লবীর উদয় হলো
যাদের কাজ ধর্ষকদের হত্যা করা ।
স্লিপার সেলের মতই তারা লুকিয়ে থাকে
আর একটা ডেটালিস্ট তৈরী করে পুরুষ ধর্ষকদের,
তারপর প্রেমের অভিনয় করে সহবাসের টোপ ফেলে 
কেউ একজন ভুলিয়ে গোপন ডেরায় আনে,
সকল বিপ্লবী মেয়েরা তারপর হত্যা করে ।
আর তারপর ??? তারপর ???
তারপর প্রবল অট্টহাস্যে ধর্ষকের লিঙ্গ কেটে ফেলে 
একটা কাঁচের শিশিতে সংরক্ষণ করে.....
মৃত ধর্ষকের ছবি, নাম, পূর্বজীবনের ধর্ষণকাণ্ডের বিবরণ 
       লেখা থাকে তাতে ।
আর.... আর লিখে রাখে.......
           কত নম্বর ধর্ষণকারীর লিঙ্গ কাটা হলো

সন্দীপ দাস




আমি এক যৌনতার ব্যবসায়ী 
**************************





আমি এক যৌনতার ব্যবসায়ী ।
যোনি বেচেছি পেটের টানে 
মুজরা করেছি উলঙ্গি বদনে 
এক নির্লজ্জ উলঙ্গ সমাজের সামনে ।।

আমি এক যৌনতার ব্যবসায়ী 
রাতের পর রাত বহু অসহায় হাত 
আমার দেহের কোমলতার সওদা করেছে ,
পেটের টানে তাও সয়েছি ।
ওরা বলতো আমি খুব রূপবতী ,
সতী হয়ে শিবের মত বর জুটলো ।
বিশ্বাস করুন , ঠিক শিবের মত 
মা , বাবা তাই তো বলতো ।।
বিদেশে থাকে , ভালো কামায় 
যেটা বলে নি সেটা হল 
কচি মাগী বেচে , মরদটা নিজের 
ব্যবসা চালায় ।।

আমি এক যৌনতার ব্যবসায়ী ,
আমার এখন নতুন নাম রৌশনি বাই 
সারাদিন ওরা আমার ন্যাংটো শরীরটা 
কামড়ে কামড়ে খায় ,
আর সেই সেবা দিয়ে যেটুকু দিনে পাই 
তাই দিয়ে দিব্বি সংসার চালাই ।।

আমি এক যৌনতার ব্যবসায়ী ,
রাতের আঁধারে কত এলো আর গেলো 
কত শিব গাঁজার কোলকে মুখে পুরে 
এই সতী লক্ষ্মীর সম্মান কিনে নিয়ে গেলো ।
লক্ষ্মী !! হাহাহা !! লক্ষ্মী !!
সত্যি আমি লক্ষ্মী , 
মরদের বেডরুম থেকে এই ঢালের উঠোনে 
আমি লক্ষ্মী , সতী-লক্ষ্মী ।।

আফসোস হয় না , বাবু 
একটুও হয় না ।।
সেকালের শিব আজকের জীবের সেবায় 
তুষ্ট হয়েছে ,
তাই তো এতো ডিমান্ড শরীরটার ,
ব্যবসা বেশ ফুলে ফেঁপে বসেছে ।।

যৌনতার ব্যবসায়ী ,
আমি এক যৌনতার ব্যবসায়ী ।।

শিল্পী দত্ত





বারবনিতা
 ********



আমি প্রতিরাতে মনের পসরা সাজিয়ে,
তোমার অপেক্ষায় জ্বেলেছি জোনাকির ঝাড়বাতি।
বারবার তোমার ঠোঁট ছুঁয়ে আমার ঠোঁট,
মনে করিয়ে দিতে চেয়েছে প্রতিরাতে করা তোমার শপথের কথা‌।
তুমি আমার সন্তানের পিতা হয়েছ,
তবু আজও মোছেনি আমার কপালের 'বারবনিতার' আখ্যা। 
তোমার হাত বহুবার আমার শরীর ছুঁয়েছে,
কিন্তু আমার মনের অভিমান আজও রয়ে গিয়েছে                     তার নাগালের বাইরে।                                                                  কি প্রচন্ড অধিকারে প্রতিরাতে ছিঁঁড়ে টুকরো টুকরো করেছো আমার নারী সত্তাকে।                                               নিজের চোখের সামনে দেখেছি আমার কত স্বপ্নের মৃত্যু।             তবু আজও আমি  প্রতিরাতে তোমার অপেক্ষায়                     আমার মনের পসরা সাজাই‌,                                                       শুধু আজ ঝোনাকির ঝাড়বাতির বদলে  জ্বলতে থাকে           আমার স্বপ্নের চিতা।

স্বরূপা রায়




অগ্রাধিকার নয়, সমাধিকার চাই
*****************************



নাবালক ছেলেকে ধর্ষণের অভিযোগে ধৃত দুই মহিলা...
বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ধর্ষণ, গ্রেপ্তার প্রেমিকা...
বাসের মধ্যে শ্লীলতাহানি, পুলিশে অভিযোগ দায়ের করলেন যুবক...
বন্ধুর বিরুদ্ধে মিথ্যা ধর্ষণ মামলা, গ্রেপ্তার মহিলা...
স্বামীকে পুড়িয়ে মারলেন স্ত্রী, পলাতক স্ত্রী...
নিজের পেটের শিশু কন্যাকে গলা চেপে খুন করলেন মা, সিসিটিভি ফুটেজে সেই ভয়াবহ দৃশ্য...
আপনারা আমার লেখা পড়ছেন, আর ভাবছেন যে লেখিকা পাগল।
না, না আমি একদম সুস্থ, পাগল না। উপরে আমার লেখা খবরগুলো বাস্তব। কিন্তু তা প্রকাশ্যে আসে না।
তার কারণ কি?
কারণ, পুরুষরা এখনো নির্যাতিত হলেও সেটা নিয়ে অভিযোগ করতে ভয় পায়। যারা অভিযোগ করে সাহস করে, তাদের উপর সমাজ হাসে। কম মশলাদার আর মানুষের তেমন কৌতুহল এই বিষয়ে না থাকায় কোনো খবরের কাগজে বা খবরের চ্যানেলে এসব খবর তেমন দেখানো হয় না। আর মূল কারণটা হলো, আমাদের সমাজ নারীর দোষ দেখে না, নারী সবসময় মা-বোনের অজুহাতে পাড় পেয়ে যায়। আর নারীর হাতে তো মোক্ষম অস্ত্র আছেই, মিথ্যা নারীকেন্দ্রিক মামলা।
পণের জন্য যেমন বধূ হত্যা হয়, তেমনি পরকীয়া বা আর্থিক মর্যাদা স্বামী বজায় রাখতে না পারলে স্বামী হত্যাও হয়।
নারীর যেমন ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি হয়, তেমন পুরুষেরও ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানি হয়।
অনেক বাবা যেমন সন্তানকে মেরে ফেলে অবাঞ্ছিত কারণে, অনেক মাও সন্তানের ঘাতক হয়ে ওঠে।
স্কুল-কলেজে ছাত্রীরা বা অফিসে মহিলা কর্মচারীরা যেমন সুরক্ষিত না, তেমনি ছাত্ররা বা পুরুষ কর্মচারীরাও সুরক্ষিত না।
আমার বা আপনার মা, বোন, দিদি, মেয়ে, বউদি, কাকীমা, বান্ধবী, প্রেমিকা বা স্ত্রী যেমন সুরক্ষিত না আমাদের সমাজে। ঠিক তেমনি আমাদের বাবা, দাদা, ভাই, ছেলে, জামাইবাবু, কাকু, বন্ধু, প্রেমিক বা স্বামীও সুরক্ষিত না আমাদের সমাজে।
ভারতীয় মহিলা কমিশনের ২০১৩-১৪ রিপোর্ট অনু্যায়ী ৫৩.২% ধর্ষণের মামলা মিথ্যা। ধর্ষণ হলে তো আমরা খবর পাই। কিন্তু সেটা মিথ্যা প্রমাণিত হলে, আমাদের কান অবধি সেটা পৌঁছায় না।
কত স্ত্রী নিজের আর্থিক মর্যাদা বজায় রাখার জন্য স্বামীর উপর অত্যাচার করে। এটা পণের জন্য অত্যাচারের চেয়ে কম কি?
কত নাবালক ছেলেগুলো বিকৃত মানসিকতা সম্পন্ন নারীর তীব্র পাষবিক যৌন লালসার শিকার হয়। আমরা কয়টা জানতে পারি?
আসলে আমরা ছোট থেকেই শুনে এসেছি নারীর উপর অত্যাচার, নারী পণ প্রথার বলি, এই সমাজ নারীকেন্দ্রিক। আর সেই নিয়েই নারীর অধিকারের লড়াই।
কিন্তু নারীর অধিকার লড়াইয়ে যে আমরা আমাদের সমাজের পুরুষদের নরকে ঠেলে দিচ্ছি সেটা কেউ লক্ষ্য করলো না।
যেক্ষেত্রে নারী পিছিয়ে, সেই ক্ষেত্রে নারী অধিকার পাক। কিন্তু সমাধিকার, অগ্রাধিকার নয়।
আর যেক্ষেত্রে নারীরা আজ অগ্রাধিকার পাচ্ছে এবং তাতে পুরুষদের জীবন দুর্বিসহ হয়ে উঠছে। সেই ক্ষেত্রে নারীকেই দাঁড়াতে হবে নিপীড়িত পুরুষদের পাশে।
একদিন বহু বিবাহ প্রথা বন্ধে, বাল্যবিবাহ বন্ধে বা সতীদাহ প্রথা বন্ধে যেমন আমাদের সমাজের পুরুষরা এগিয়ে এসেছিলেন। আজ তেমনি পুরুষ নির্যাতন বন্ধ করতে আমাদের নারীদেরই এগিয়ে পুরুষদের পাশে দাঁড়াতে হবে।
নারী বা পুরুষ কারোরই অগ্রাধিকার চাইনা আমরা। আমরা চাই নারী-পুরুষের সমান অধিকার। মানবতার স্বার্থে সমাজ এবং আইন ব্যবস্থা এগিয়ে আসুক।