নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রবিবাসরীয় সংলাপ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
রবিবাসরীয় সংলাপ লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(পঞ্চম পর্ব)






মাধব মন্ডল 
**********


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।






জীবনটা এমন চলতে পারে না
বাস রাস্তার মাঝখানে ঐ লোকটা
সাদা পাঞ্জাবি পায়জামা বুট পরে
হাতে দলীয় পতাকা
তামাশা আরো জমাবার জন্যে
কে একজন একটা প্লাস্টিকের চেয়ার দিল।

অতঃপর চেয়ারে ওঠে লোকটা
জীবন এভাবে চলতে পারে না
এ প্রধান চোর
প্রধান সাহেব জিন্দাবাদ
এরপর শুরু হয় জিন্দাবাদ ধ্বনি
গাড়িরা দাঁড়িয়ে পড়ে একে একে।

একে একে লোকেদের মনের কথাগুলো
প্রকাশ্যে না বলতে পারা কথাগুলো
লোকটা টেনে হিঁচড়ে বার করে
কারো চোখে রাগ নেই
বেবাক হাসিগুলো পিচ রাস্তায়
আহা,প্রধান আপনি তুমি তুই এক্ষুণি আয়!



লতপতে কথারা আমার মুন্ডু ছিঁড়ে খাক
তবুও আমার বাঁচা আমারই হাতে থাক
হাওয়ায় ওড়ে সজনে আর শিমূল শিমূল
চ্যাঁচাচ্ছি না এটা বলে - কি ভুল কি ভুল!

আমার চোখে কি বিদ্বেষ আঁকা ছিল?
আসলে শীতে শিরীষের ডাল ফাঁকা ছিল
আচমকা রোদ্দুর এবার যদি আঁকো
চোখে চোখে গড়ে ওঠে বারুদের সাঁকো।

ঐ দেখ ডালে ডালে কাজলের রেখা
ওড়ে খুব ডাকে খুব নানা দলের শেখা
ডাকি তোকে আয় আয় মুন্ডু ছিঁড়ে খা
অনন্ত বিষাদের ছায়াদের চেয়ে ভাল যা।



চাওয়া পাওয়া সব উঠে গেল
কার কি হিসেব বাকি বল
নিয়ে নাও নিয়ে নাও
আমাকে নীরবতাই দিলে দাও।

চারপাশে এত শব্দ, এতই শব্দ
দশরথের মত ব্যর্থ হতে চাইনা
নীরবতা তুই আমাকেই শেখা
শব্দভেদী সেই অব্যর্থ বাণের কৌশল!

যার যা বোঝার বুঝে নাও,নিয়ে যাও
নিখুঁত সাজানো নীরবতায় তোর প্রবেশ নিষেধ
আর তো ফিরব না সন্তানের ডাক ছাড়া
চল মন লোটা কম্বল আর নীরবতায়।


(চলবে...)

শ্রীময়ী(প্রথম পর্ব)


     


        
শ্যামল কুমার রায়, সহ শিক্ষক,
নবগ্রাম ময়না পুলিন বিহারী উচ্চ বিদ্যালয়।





                       ( প্রথম পর্ব )
                    --------------------
                     মুরারীমোহন মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়ের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শ্রীময়ী। সহ শিক্ষা বিদ্যালয়ের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মুকেশ শর্মা । ঐ বিদ্যালয়টা মুকেশের ঠাকুরদার স্মরণে । অত্যন্ত উচ্চবিত্ত ঘরের ছেলে মুকেশ । অর্থের প্রাচুর্য মুকেশ কে বখাটে ছেলে হতে দেয়নি । কারণ, মুকেশের মা লেডি ব্রাবোন কলেজের বাংলার  অধ্যাপিকা। মা জাতিতে বাঙালি । আর বাবা মারোয়াড়ি । মাঝারি মাপের শিল্পপতি । মুকেশের মা, বাবার ও প্রেমের বিয়ে । তখন ১৯৭৪ সাল। বাঙালি মেয়ে তিতলি তালুকদার ।আশুতোষ কলেজে বাংলা অনার্সের ছাত্রী । আর মুকেশের বাবা মাখনলাল শর্মা তখন ফিটফাট তাজা যুবক । অডি গাড়িতে চড়ে কলেজে আসত । আর পুলিশ কনস্টেবল, তারকনাথ তালুকদারের মেয়ে তিতলি সাদামাটা কিন্তু মার্জিত পোষাকে কলেজে আসত। মৃদু ভাষী, শালীন, মিষ্টি মুখের তিতলি কে চোখে লেগে গেল মাখনের । হাতে সোনার আংটি ও গলায় সোনার চেন। মাখন হিসাব শাস্ত্রে অনার্স। কলেজ ক্যাম্পাসে তিতলি থেকে চোখ সরত না মাখনের । চাপা গুঞ্জন শুরু হল কলেজে - প্রজাপতি এখন আর ফুলে বসে না , রে। প্রজাপতি এখন মাখনে আটকে গেছে। সতীর্থদের উৎসাহ, টিপ্পনী তে কখন যে ওরা কাছাকাছি চলে এল, তা দুজনকেই ভেবে বলতে হবে।
    অভিজাত পরিবারের ছেলে মাখন এর পর হার্ভার্ড বিজনেস স্কুল থেকে এমবিএ করে দেশে ফেরে। আর তীব্র লড়াই করে জীবন যুদ্ধে টিকে থাকা তিতলি মাস্টার্স কমপ্লিট করে জে আর এফ কোয়ালিফাই করে। তালুকদারবাবুর অশিক্ষিত কিন্তু ধর্মপ্রাণ স্ত্রী তিতলির নৈতিক চরিত্র গঠনে খুব বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন । একদম নিজের প্রচেষ্টাতে রিসার্চ করাকালীন তিতলি লেডি ব্রাবোন কলেজে অধ্যাপিকা পদে যোগদান করে । জীবনের প্রথম প্রেমের কথা তো ভোলা যায় না । আর মাখন , তিতলির সম্পর্কটা 'ফ্লার্ট' এর ছিল না ।

(চলবে...)

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(চতুর্থ পর্ব)







মাধব মন্ডল 
**********


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।




ঠিক কতটা পেরোলে পথ
লোকে জন্মদিন করে
গোলাপের তোড়া হাতে একমুখ হাসি
হাসিতে মধু ঝরে
যে স্বপ্নগুলো ভালবাসি
বাঁচি তার পাশাপাশি
সকালের রোদ গায়ে পড়ে।

অপেক্ষার বৃষ্টিরা
কেড়ে খায় প্রভাবশালী
মেঘও পক্ষপাতী,কি করব
আয় দুব্বো,নিজেই আশীর্বাদ হ'
ধান তুলসিকেও ধরব
আমি না হয় সক্কাল সক্কাল
সজনে তলায় বসে পড়ব!



এখনও এই প্রায় মাঝ ফাল্গুনে
কুয়াশায় ঢাকে ভোর আর সকাল
একলা ফিঙেরা পোতা বাঁশের ডগায়
আজকাল তোরা কেন বারবার দেখা দিস!
তাও একা একা
কাকেদের মতো তোদের কি মিছিল নেই কোন?

সব রাস্তায় ভোর থেকে রাত
আম ফুল মাতাল করে মন
সজনে ফুলেরা সাদা চাদর হয়ে আছে পড়ে
মাছেরা ভয়ার্ত হয়ে জল থেকে উঁকি দেয়
দু'একটা কুকুর গন্ধ শুঁকে অভ্যেসে ডাকে
মেঘেরা লুকিয়ে কুয়াশায়,হায়!



আসলে আমার অনেক কিছু দেখার ছিল
কিন্তু আমি দেখলাম যে প্রায় দখলি খালে কচুরিপানার বাহারে ফুল
আমি কি বোকা!

আসলে অনেক কিছু করার ছিল আমার
আমার বন্ধুরা
আমার গান্ধর্ব মতের বউ
একমাত্র বাচ্চাটিও
সেকথা মনে করিয়েছে বহুবার
কিন্তু আমি শুনেও না শুনছি
সেসব গুহ্য কথা
আসলে আমি তো চালাক নই মোটে!

আসলে যেখানে আমার হিসেব অনুযায়ী
ঝোপ জঙ্গল সাফ করা দরকার
সেখানেই আমি ছায়া খুঁজছি,মায়া খুঁজছি
আর আম,ঘাস আর বাঁশ উদ্যান
উথাল পাতাল করে চাঁদ ডুবছে উঠছে।

ঈশ্বর মুচিরাম আর কাউরেচরণ
যাঁরা কিনা একমন একপ্রাণ ভাই ভাই
এই নাতকুড়কে দেখছে আর বলছে--
শালার আড়ে নেই বহরে আছে
আর ঈশ্বর রাইচরণের প্রায় লোমহীন বুক
মাথা রাখছি সেখানে
আর কি যে হচ্ছে কি বলব
আমার এ কটা চোখ বরাবর আরেকটা নদী নামল
আর এই মোটেও চালাক নই আমি
সেখানে ভাসছি আর ডুবছি!



এখানে সবকিছুই স্বাভাবিক
পাখিরা নির্ভুল সুরে
গাছেরা মাথা নাড়ে বর্ণমালায়
উঁকি মারে লাউফুল
এক পুকুর মাছ থেকে থেকে ঝিলিক দেয়।

এত পাখি,এত গাছ,এত শিশু!
সজনের ফুল কুড়োতে কুড়োতে
অবাক চোখে চোখ রাখে
ভাজা খাবে দু'টো নিয়ে যাও
আমি তো ওদের মতই হাসির চেষ্টা করি।

শুধু ঐ সাদা দাড়ি লোকটা
কখনও ভাই বলে
কখনও খোকা
বলে কিনা সব ঠিক আছে
মানুষগুলো আর ঠিক নেই।



(চলবে....)

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(তৃতীয় পর্ব)





মাধব মন্ডল 


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।


(তৃতীয় পর্ব)




ঠিক কতটা বাসলে ভালো
ঐ তো আমাকে জানাল
চোখেতে ফোটে বৈশাখি আলো
কি বুঝি আর ও কি বোঝাল
খুঁজে খুঁজে মরি ঐ তো খোঁজাল
ভ্রুতে আলপনা আঁকলে চোখ যে বোঁজাল।

এ কি ভালবাসা?
মনে হয় মায়ার পিপাসা
তাই বারবার ঘটে শুধু তামাসা
দোল দোলে আশা আর নিরাশা
আর হঠাৎ কুয়াশা
কেটে গেলে জেগে ওঠে আশা।



এত ভিজে ভিজে ভালবাসা,এত্ত
আর এত্ত এত উপোস,নির্জলা
তাই এত ভুগি সর্দি কাশিতে।

জানি তোর ভয় নেই কোন
নিজে চলিস নিজের মতো
তোর আশারা জেগে উঠুক।

আমার বোঝা মিথ্যে হোক
মিথ্যে হোক মিথ্যে হোক
মিথ্যে হোক আকাশে গড়াগড়ি।

ভূত্বক ফুঁড়ে কেঁচোর মাটি উঠুক
গর্ত ধরে ঢুকে যাই কুমারী কেঁচোর কাছে
বলি গিয়ে দেখ দেখ পেয়েছি কত ভালবাসা।

কত কত্ত ভালবাসা,ভালবাসা
বলি গিয়ে শুয়ে আছে নরম গদিতে
প্লাস্টিক দেয়াল,শ্বেত পাথরের মেঝেতে।



সিগন্যাল লাল
থামো থামো থামো
দরাজ নয় ওটি
রাখো পাকামো!!

কেউ নেই পথ চেয়ে আর
ঘুম নেই তোর ক্যানো?
পথ সব বেছে নিল যে যার
পড়ে থাক চুপচাপ ন্যাতানো।

গান এলে কানে
ছিঁড়ে ফ্যাল কান
চিল ডেকে খাওয়া
বাঁচা তোর মান।



আমি তো লতপতে মাল
এত টাকা তোর
পাথর বসানো চক মেলানো তোর ঘর
আমি বেমানান
ছেঁড়া খোঁড়া হয়ে আছি ভাই!

ভালবাসা নয় কোন এক মায়া
ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিস
দুব্বোর হাড়ে গজাবার মতো।
দু'হাত উপুড় করা
খালি নেই নেই করা!!



আমার জন্মদিনে কেউ পায়েস করেনি কোনদিন
বাবা কি কোথাও লিখেছিলে নাকি?
কোনদিনও স্কুলে না যাওয়া মার কি মনে ছিল জান?
সেদিন বর্ষা বাদল
বেস্পতিবার!

এমনটাও নয় যে
আমার উপরের আট আর নীচের একজন
জন্মদিন উপহার পেয়েছিল।

আসলে, কি বলি
বিদ্যাধরীর নোনা হাওয়া
ঐ নোনা হাওয়াই জন্মদিন খেল।



আমার ঘুম কেড়ে খা
ঘুমের ভেতর গাল পাড়
দশ ভূত লেলিয়ে দে
সব চুল তুলে নে
গালটা তুবড়ে দে
ঘুম পেলে বরফে বসা আর
পায়খানা পথে পুলিশি গাদন দে।

তবুও নৈরাশ্য নয়
হবও না বুদ্ধ অনুগামী
আমি তো আমার মতো
চিৎ হই,উপুড়ও হই।



আমার সংশোধনী আমি নিজে
তুমি তো নিষ্ঠুর ঘাতক
আমি খানা খন্দ লাফিয়ে সকালকে ডাকি
তুমি ভাব সকাল তোমার প্রাপ্য
পাখিদের সুর শেখাই,আর
তুমি বলছো ও পাখি তোমার!

এতটা মিনিট,সেকেন্ড
শুধু তোমারই তর্জনী গিললো
আমি বলি কি,কি বলি?
পদচ্যুত করে তুমি শীর্ষ ছোঁও
আমি শুধু একটু অন্ধকার চাই
আমি যে আমার নিজের সংশোধনী।



দুটো চড়ের দাগ আজও আয়নায় দেখি
স্পষ্ট দেখা যায় ওদের
মানুষের আয়না এটা তো নয়
কথা কিছু কিছু মনে আছে
অজস্র বেবুঝ জল
কিছু কি শিখেছি?

একটু একটু কানমলা খাই
একেক করে শিরা ছিঁড়ি
বস্তাবন্দি করেছি বেয়াদপি,হায়!
তবুও মানুষ হতে এখনও অনেক বাকি।



সবটা দিয়েছি
কোথাও রাখিনি একতিল
তাহলে কিসের এ যুদ্ধ
যুদ্ধ!
এ কোন ভালো থাকার অন্ধকার
এত নৈরাশ্য
এত বিচ্ছিন্নতা
এত ঘৃণা ফুটে ছিল?
আমি কি এতই অধম!

মিনিট সেকেন্ড সেকেন্ড মিনিট
আষ্টেপৃষ্ঠে প্যাঁচানো
কি করে কেটোছো গুণী?
ফুটো ফুটো বাসা আমার
অসম্ভব চাঁদনি কলরব
এই কি ছিল তোমার চাওয়া!



আহা,কি সুন্দর
কি দক্ষ সিদ্ধান্ত তোমার
পুকুর সেঁচে মাছেদের বলছো ভাল আছো?
কখনও বলছো আরে ভয় কি
ঐ তো মেঘ আসছে
ঐ বৃষ্টি নিয়ে
এক নম্বর
ন'নম্বর
চার নম্বর
ঐ তো আসছে ওরা
প্যান্ডেল বাঁধো
লাগাও প্রতিটা দিবস জম্পেশ
গোলাপ দামী হলে মোরগজটাই আনো।

আহা,কি সুন্দর বল তুমি!
কোটেশন করে বাঁধি
কারোর বৃষ্টির আর নেই ডাকাডাকি
কাদা জলে আর কখনও বা পাঁকে
শান্ত উদ্বেগে সময় জাপ্টে বসে আছি।



একটা একটা করেই মারছি
একান্ত ভুল
একটা একটা করেই তাড়ছি
অশান্ত গুল।
একটা একটা স্মৃতি মাকড়
রক্তে ভাসে ঐ
একটা একটা শেকড় বাকড়
জ্বলে আসে ঐ।

একটা একটা মিনিট যাচ্ছে
মন শুখাচ্ছে না
একটা একটা ঝড় যাচ্ছে
নাগাল পাচ্ছে না।
একটা একটা কথা ভাসছে
গায়ে মাখছি না
একটা একটা রোগ হাসছে
রক্তে রাখছি না।



ভুলে তো খেয়েছে গুলে
জলগুলো ফলগুলো
ছুটে এসে গেল ফুটে
চুলগুলো ফুলগুলো
তোলা তো রয়েছে কানমোলা
রাগগুলো ফাগগুলো
গোলা তো মেরেছে ঝোলা
ধানগুলো পানগুলো।

পাখি করে ডাকাডাকি
ফুলগুলি ফুলগুলো
রাতে আসে কাটতে
ভুলগুলি ভুলগুলো
পাশাপাশি কাছে আসি
তাপগুলি তাপগুলো
খেটেমেটে খাই পেটে
ভাতগুলি ভাতগুলো।



প্রত্যেকটা প্রত্যাখ্যানে হাজারো রক্তক্ষরণ
কি যন্ত্রণা কি মরণ এমন মরণ!
আমি তো নিজস্ব ভূত্বকে কামড়ে ধরি তোমাকেই
কীট জ্ঞানে আছাড় মারলে!
কি আশ্চর্য,বিষে কেন ছটপট কর তুমি!

কি কপাল আমার!
এতকাল দেবদূত সাজালাম পরস্পরে
মিনিটে মিনিটে ভগ্নাংশে পূর্ণভাবে
নৈবেদ্য নিয়েছি দিয়েছি কত
আর আজ!

এত কষ্ট কাটে তোমাকে
তুমি বলেছিলে না
হায়,কি করি এখন!
তুমি এখানে এভাবেই বিশ্রাম নাও
চললাম আমি.......

কে দেখি পারে এক চুমুকে এক শ্বাসে
ধোঁয়া ওঠা বিষ শুষে নেয়
হে খোলা মাঠ,হে শীর্ষ বাঁশের আগালি
হে বর্ণমালা,হে একাকীত্বের শব্দ
আমাকে গুঁড়ো গুঁড়ো কর

আমার বিস্ময় বিষকে গুঁড়ো গুঁড়ো কর
হে পুকুর পাড়ে গজানো থানকুনি
হে দুব্বো,হে তুলসী,হে বুনো ফুল
হে আমার মালা বদলের রজনীগন্ধা
আমি তো দুর্বিপাকে বিপন্ন,জল খেলি শুধু।



(ক্রমশ...)

রহস্য কাহিনী(তিন)







দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

2/401 Urmila Apartment .
Gorai Complex. Bagnan.
Howrah 711303.


          (তিন)


১১.

মেয়ে গায়

জল তরঙ্গে নূপুর ভেসে যায়

মাছরাঙা পাখিটির দেশে

দোল খায় চোখ

আর ক্রমশ রঙ্গিন আকাশের মাঠে

খেলা চলে রোদ ও ছায়ার

মায়াবী অক্ষর গাছে গাছে

সুস্বাদু পথের জানালায় বাহবা তুলি

আরো কিছু এঁকে দিলে

সাদা কাগজের যেমন খুশি সাজ

বাড়িতে উৎসব গন্ধ

এসব কিছুই দুঃখ ভুলানি উপকথা

ঠাকুমার কণ্ঠটি কেঁপে কেঁপে

ঝুলির ভিতর নামের মালাটি জপে

আর বর্ষার মাঠে বীজতলা

তৈরি হলে কষ্টের ভিতর

ভাতের পুরনো সুবাস ফিরে আসে

সে ঘরে ফিরে নি কেউ বলতে পারে না

১২.

একটা ভাঙাচোরা বাড়ির নীচে

শূন্য আর স্বপ্ন বুনে

সময় কেটে যায়

ঘুম বিদায় নেওয়ায় তার জায়গা

নিয়েছে তোমার প্রিয় নাম

এই যে বর্ষার দিনে মেলে

তোমার দীর্ঘ চুলের বাহার

মাঝে মাঝে সেখানে

সেজে ওঠে বর্শা রঙের ক্লিপ

রাত্রির শরীরে

কেঁপে ওঠে

এক মধুর ঝড়

ধ্বংসের ভিতর এক কালো নদী

শূন্যতার মাঝখানে গড়ে

তোলে রাত্রির এলো চুলের

অস্পষ্ট স্মৃতি

মৃত জোছনায়

আছড়ে পড়েছে কান্না

সাগরের গুমরে গুমরে


রহস্য কাহিনী(দুই)




দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

2/401 Urmila Apartment .
Gorai Complex. Bagnan.
Howrah 711303.


          (দুই)




৭.

বাড়িটি বাড়াতে হবে

গাছটি বোঝে

তার সময় হলো যাবার

দুঃখ ক্রমশ ইট কাঠ পাথর

ভাতের ভিতর 

লেবুগন্ধ নেই 

সন্ধ্যার ভিতর নেই সন্ধ্যামণি

আম কাঁঠালেরা চলে গেলে

গ্রীষ্ম অতীতকাল হয়ে পড়ে

বাড়িটি বাড়তে বাড়তে

আকাশ ঢাকলে

হারিয়ে যায় চড়ুই শালিক 

এতো উচ্ছেদের পর 

নিজের শিকড়

সেও বিদেশে চলে গেলে 

শূন্য শব্দটি এই নির্মাণে বসাই

খাঁ খাঁ র ভিতর তবু কিছু ঘুঘু রয়ে গেছে

৮.

বকুল গাছের গান শুনতে

তোমার সকাল সুবাসে

বাসা খুঁজে নেয় 

তুমি পুকুরের ভিতর এক

একটি মুক্তোর পতন দ্যাখো

আকাশের উপর কালো পর্দা

সরে গেলেই সিনেমা শুরু

অন্ধকারের ভিতর তোমার অপেক্ষা

 বেশ উত্তেজনাকর

 ‎আওয়াজ আসছে ওপার থেকে

 ‎কিছু ঝিলিকের সাথে

স্থলপদ্মের পাপড়িগুলো জল

ধরে আছে স্নানের পরে

তার ভিতর তোমাকেই দেখি

গায় ভেজা চুল 

এক এক ফোঁটায় তুমি উজ্জ্বল

জলের গভীরে জল 

কোন রহস্যে খুব হেসে ওঠে

৯.

কালো আলখাল্লা পরে পীর সেজে

রোদকে হুমকি দিলে 

সে বশ হয়ে লুটিয়ে পড়ে দরগায়

গাছের পাতা যেন চামর

বুলিয়ে যায় মাথায় 

নিরাময়ের পথে উড়ে আসে বাতাস

সমস্ত ষড়যন্ত্রের ভিতর 

মাকবেথের দুর্গে পাখির কলতান

ফুলের সুবাতাস 

নৈরাজ্যের মাঝেও ফড়িংয়ের

অবিরাম ওড়া 

মধু খেয়ে যাওয়া প্রজাপতি

ডানায় লেখে বহুরৈখিক কবিতার ভাব

বৃষ্টির ছোঁয়াচ লাগা সন্ধ্যায় 

ঝিঁঝিঁরা বেজে যায় অবিরাম

তুমি বধূ তবুও

গলায় কাপড় বেঁধে

সিলিং ফ্যানের প্রেমে পড়ে যাও

তোমার অভাবে 

ভিজে বিড়ালটিকে কে তবে ফেরাবে!

১০.

মৃত ঘোড়ার সাথে 

কথা হয় সন্ধ্যার রাস্তায় 

এক ক্ষয়া চাঁদের নীচে

তার কর্কশ হ্রেষায়

 কেঁপে ওঠে 

শহরের নির্জন রাস্তা

ছায়াময় আলো

অন্ধকারের কাটা মাথা

দ্রুত ছুটে যেতে 

না পারায় আতঙ্ক

তার শূন্য চোখ থেকে

ক্রমশ সংক্রমিত

তার থম মারা অবস্থা

থেকে থেকে 

মৃদু পায়ের শব্দ

ধূ ধূ দুঃখ রেখে 

হারিয়ে যায়...


(ক্রমশ...)

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(দ্বিতীয় পর্ব)







মাধব মন্ডল 


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।





    ( দ্বিতীয় পর্ব)



আগে থেকে বোঝা যায় কোন ঝোপে বসে আছে বাঘ!
অনভিজ্ঞ সেই আমি সপাটে মেরেছি বাঘ
আর তুমি কিনা বললে
এটা কি দুঃখজনক ঘটনা
বাঘের আমাকে খাওয়া উচিত!

কি কান্না কেঁদেছিল
আহা,ফাঁদ ফেলে ঐ বাঘ।
আজ আবার সেই আওয়াজ কান শোনে
তোমার নখ থেকে,চুল থেকে।

উঠুক গর্জন
অভিজ্ঞতাই মোকাবিলা করে
সবংশে নিষ্ঠুরতা গিলবো এবার।


তুমি এখন ঝড়ের মুখে
উতাল পাতাল মন
কাউকে করো পরোয়া?
কচু কাটা হয় গোলাপ বন
তোমার তুমি হিসাব ধাঁধায়,
ঘুর্ণি বিপাক বিনা বাধায়!! 
তুমি আর সেই তুমি নেই
এখন তুমি নিজেই ঝড় তোলো।


কতটা মিনিট সেকেন্ড আর বছর কাটলে ভালবাসা জেগে ওঠে প্রতিটা লোমের গোড়ায়,কতটা রক্ত পথ পেরোলে শিবরাত্রি ভালবাসা মাখে!!হাঁটতে হাঁটতে ফিরে দেখি হঠাৎ তুমি উল্টোদিকে ছুটেছো,কি ঝড় কি ঝড়,একা হাতে সামলেছি কত!উড়ে যাওয়া তোমাকে নামিয়েছি বুকে,ঝড় থেমে গেলে ভালবাসা ভূত্বকের সব আবর্জনা ধুয়ে দিত,আর আজ সেই আমি উড়েই চলেছি মাটি ছেড়ে ঘাস ছেড়ে শীর্ষ বাঁশের ডগা ছেড়ে.......

কাল তুমি নরম সোফায় আধশুয়ে খবরটা দেখতে ভুলো না কিন্তু.....

এ খবর শুনে ভূত্বকের কচি ব্যাঙগুলো আর বোধহয় ডাকবে না,খাবেও না এক চিমটে বিষ!!


কতটা ক্ষত হলে থামে একটা ঝড়
আর যদি সে আচমকা নামে বুকের উপর
ঘুমের ভেতর?

কতটা সংসারী হলে ঝড়ও দোরে এসে কুর্ণিশ ঠোকে
কত ঘাম খেলে ফসলও খাঁটি হয়!

কেউ কি জান?
কেউ কি জান কতটা ঘৃণা জড় হলে ভালবাসা উড়ে যায়!

কতটা মেকআপ মাখলে নকল আসল হয়
কতটা শিশির জমলে মনে,ভালবাসা জাগে সিম আর লাউয়ের মাচায়!

কতটা চাপে বিপর্যস্ত হলে মন থেকে উড়ে যায় যুক্তিরা
কতটা যুক্তিহীন কাজ হলে মানুষ পাগল শিরোপা পায়!!

কেউ কি জান?
কতটা ক্ষত হলে একটা ঝড় থামে??


আকন্ঠ বিষয়ী তুমি
হায়, তোমারও গলা এখন দুব্বো পাতা!
মোড়ের মাথার কৃষ্ঞচূড়া,কি বলি 
আজ কি তোমায় চোখ মেরেছিল?
ফাগুনের আগুন চেটে নিলই 
ঘুম ঘুম জমাট শীতলতা।

কি হিসাব কিসের হিসাব
মিলে গেল বিষয়ী?
শুধু কিছু লাইক কমেন্ট
এই তো ছিল রোজকার বরাদ্দ!
আজ শুধু মায়ায় ভরেছো তুমি
ভালবাসা চুপচাপ একধারে পড়ে।


দাঁড়িয়ে আছি তো আছি
পাগল আমি
তোমাকে ছোঁব বলে
গান্ধর্ব মতে উষ্ঞতা গলেছে মনে
আর কত দাঁড়াব!
ঐ তো গেল তোমার ট্রেন
তারপরেরটা...তারপরেরটাও।

নাহ, সব আশা শেষ হল।

কতটা উপায়ী হলে সব চাওয়া হয় পাওয়া?
পাওয়াগুলো বাসা বাঁধে এ লোমশ বুকে
নির্দিষ্ট ট্রেনে তোমাকে ফিরিয়ে আনা যায়
আর মধ্যরাতে বিসমিল্লা খান হওয়া যায়।

দাঁড়িয়ে আছি তো আছি!!


(ক্রমশ....)

রহস্য কাহিনী(এক)







দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

2/401 Urmila Apartment .
Gorai Complex. Bagnan.
Howrah 711303.




খেলার ভেতর হত্যাকান্ড
কেউ দেখল না 
সারারাত জাগবার পর মর্জিনা
চাঁদের দিকে পিছন ফিরে
কাপড় তোলে
সমস্ত তারা সেই জলের আয়নায়
ভেসে যেতে যেতে ভাবে 
এক দিন তারাও..

কিন্তু পৃথিবী তাদের মর্জি না করে দেয় 



 ২.
রেললাইনকে কিছুতেই বোঝানো যায় না
আত্মহত্যাকারীর কথা
এমন ঝকঝকে পূর্ণিমায় টুকরো টুকরো
দেহভাষা
পড়তে কষ্ট হলেও ভিড় বাড়ছে
অত্যন্ত ক্লিভেজ যেন নজরে পড়ে যায়



৩.
বাজারে ঘাম না কিনেও কেনা হয়ে
গেলে
নিজেকে বরফের দেশে কল্পনা করে নেন শিতলবাবু
তারপর ফ্রিজের ভিতর চালান 
করে দেন তার অনুভব
ফ্ল্যাটের দেয়ালে একটি অরণ্য
ছেলের আঁকা
তারিফ শব্দটি শুনতে শুনতে দেয়ালপ্রিয় হয়ে ওঠেন
তারপর চ্যানেল সার্ফিং করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লে
দুঃস্বপ্নের বউ তার গলা কেটে 
দরজায় তালা দিয়ে বেরিয়ে যায়

তার হৃদপিণ্ডের প্রেম আর উষ্ণ থাকে না 




৪.
বাজারে ঘাম না কিনেও কেনা হয়ে
গেলে
নিজেকে বরফের দেশে কল্পনা করে নেন শিতলবাবু
তারপর ফ্রিজের ভিতর চালান 
করে দেন তার অনুভব
ফ্ল্যাটের দেয়ালে একটি অরণ্য
ছেলের আঁকা
তারিফ শব্দটি শুনতে শুনতে দেয়ালপ্রিয় হয়ে ওঠেন
তারপর চ্যানেল সার্ফিং করতে করতে ঘুমিয়ে পড়লে
দুঃস্বপ্নের বউ তার গলা কেটে 
দরজায় তালা দিয়ে বেরিয়ে যায়
তার হৃদপিণ্ডের প্রেম আর উষ্ণ
থাকে না



৫.
সবুজ পৃথিবী নিয়ে যে ঝরনা বয়
আর রুপোর নাকছাবি তৈরি হয়
সূর্যের তরুণ আলোয়
উপত্যকার শূন্যতা ভরে যায়
এই যে যুবক শুয়ে আছো খোলামুখ
জিভের ভিতর প্রেমের চিহ্ন নিয়ে
ঘাসের বালিশে
গভীর ঘুমের আদরে বিবর্ণ সবুজে
রোদ গন্ধে বিভোর
তোমার পা দুটিকে বুনো ফুলে পেয়েছে প্রণাম ভঙ্গিমায়
শিশুর মতো অপরাধ ছাড়াই হাসি
কে দেবে উষ্ণতা তোমার শীতল রক্তে
পতঙ্গও দূরে  চলে যায় যেন অপরিচিত কেউ
তার বুকের উপর হাত রেখে সে
ঘুমে নির্বিকার
এতো শান্তি ,তার বুকের পাশের ক্ষতও বুঝতে পারে না তাকে



৬.
বৃষ্টির জলে সব রক্ত ধুয়ে যায় না
হাসিখুশি আর খেলার ভিতরে
রাক্ষসের গল্পে ঢুকে যায় সেই স্রোত
গরম মাংসের জন্য সে তোলপাড় করছিল
বালিকা শরীরে কোনো দুর্গ নেই
এই  যে প্রাচীর  ভাঙা হল অনুমতি ছাড়াই
বাগানকে ফেরত পাওয়া গেল না
পাখির বাসার কান্না
মুক্তো হতে না পারায়
সারা উঠোন জুড়ে কাচ আর কাচ
বিঁধে গেলে যন্ত্রনা সারা জীবন 
কাটাছেঁড়া হয়ে বেরিয়ে আসছে
মর্গের বাইরে
একটা ছোট্ট হাইফেন পলিথিনে মোড়া
সুরতহালের সংবাদ হাওয়ায় 
ক্রমশ ঘুড়ি আর জল

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(প্রথম)





মাধব মন্ডল 


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।




আমি তো খুঁজবই তোকে
ভালবাসাকে সস্তা করে দিলি যে তুই!
ভালবাসা জ্বলে গেলো
আর হাজারটা কৈফিয়ত চাস
আমি তো মরবই আলিপুর জেলে।
আসলে ওখানে মন তো মজেছিল
কোন এক ফসল কাটার মরসুমে
আজও জিব চাটি ঘুমের আশেপাশে
আছোলা মাঠকুমড়ো আর আলু ঢালা
হালকা রঙের ঝোলের বিস্বাদে।
আমি তো খুঁজবই তোকে
ভালবাসা চরিত্র খুঁড়লো যে
সময়ের হাত পা কেটে
জিব বের করা হাঁপানি গিলে
কি পুরস্কার, আহা!!
রত্নাকরদা,তোমাকে একটা কথা জিজ্ঞাসা করি,কতটা যন্ত্রণা পেলে সব সম্পর্ক নিভে যায়,উইঢিপিও রাজপ্রাসাদ হয়,আর ভূত্বকের তাবৎ রহস্য মাথাকে ভরাট করে,মাটি মাখা ঠোঁট ওঠে নড়ে!!
আর বুদ্ধদা,তোমাকেও বলি কোন আক্কেলে রাজপ্রাসাদ থেকে বলা নেই কওয়া নেই ফুড়ুৎ,মাটিতে নেমে সেই তো পায়েস,নারী, রাজদরবার!অহিংসা তোমার অনুগামীরা কি মানে?শুধু তুমি কাজে লাগ, মূর্তি তোমার হয় বিশাল।
একটা সুর ছিঁড়ে গেলে
শরীরের নরম তন্তুরা
ভেঙে ভেঙে যায়
শোক শোক গানেরা
তাজমহলের উঠোন ছাড়িয়ে
ভূত্বকে ছড়ায়,হায়!
সম্রাট শাজাহান,আপনি লম্পট
নাকি নারীরা আপনাকে আঁকড়ে ধরেছিল?
বাধ্য হয়েছিল তাইনা!!
বহু বিবাহী মন ভালবাসা পায়?চায় কি?
ভালবাসা ছদ্মবেশে যমুনার জলে মরেছিল?
শ্রীরাধিকার মত একথা কেউ কি আর বুঝেছিল?
ওখানে এখন অবুজ পাগলামি
ওখানে এখন যাব না
শাঁখচূড় ভালবাসায় মেরেছে ছোবল
বিষ ছাড়া কিছু পাব না।
যদিও ওটুকু বিষ
এমন কি কিছু!
আমি তো বিষের আবাদ
জমি তো বেশ নীচু।
সবটাই হজম হবে রে
ভাবিস না কিছু
রত্নাকরী যাদু আছে না
স্বপ্নও সাজাই কিছু।
বিষে ভয় নেই
পাগলামিতেই ভয়
যদিও আমার এ মন
এখনও তুমিময়!
তোর লোনা ঘামের দাম বুঝি না!
হি হি হাসি,হো হো হাসি!
তুই যে প্রশ্ন তুলিস
সেগুলো না মড়া বাসি!
কথায় কথায় কবর খুঁড়িস
করিস শুধু পোষ্টমর্টেম
বারেবারে করিস ভুল
আরে ও ছিল এক নষ্ট এ্যাটেম।
পষ্ট কথায় বলেছি তো
ঘামের দাম বুঝি
কিন্তু তুই করেছিস বেমানান রাগ
অপমানে চোখ বুঁজি।
কাট কাট কেটেই দিলি
কথাবার্তা বন্ধ
পরের জন্যে কেঁদে ভাসাস
এতই হলি অন্ধ!
বিষন্ন বদ্বীপে স্বেচ্ছা নির্বাসনে
কারা কারা আমার আপন জন?
সব তো অনেক বছর আগেই নিজস্ব প্রাসাদে
শুধু মুষড়ে দেওয়া এক জ্যান্ত বাস্তব
আমাকে ঘিরে কি নাচটা নাচে!
একা একা ঘুরি ফিরি
সবদিক শান্ত,জলচরও
যদিও পাখিরা ডেকেই চলে
কান্না কান্না হাহাকার সুর!
এখানে শাঁখের আওয়াজ নেই কোনো।
ভারী ভারী চোখের লোমগুলো
একা তো থাকতেই হয়
কেউ কেউ ঠোঁট বাঁকায়
কেউ কেউ মেঘ হয়,বৃষ্টিও হয়
আমি থাকি নিজের গর্জনে,দীর্ঘশ্বাসে।
কত তো হিসেব
মিলেছে তো সব?
এত সহজে?
একি রোজকার বাজার?
এত তেতো নিমপাতা হয়!
আমি তো তোমার বন্ধু হতে চাইনি কখনও!
হবার কথাও ছিল না কোনদিন।
তুমি আধুনিক
তাই এত চুলচেরা হিসেব নিকেশ
দেখ শেষ দেখ
স্বাভাবিক কিসে হয় কে
আগে থেকে ধরে নাও কেন!
সেধে যেচে বিষ কেউ খায়?
ভূত্বক নিজেই বিষে কাঁদে আজ!
এত কষ্টে কাটল সময়
তবুও তো রা কাড়নি
হৃদপিন্ডে কয়েদ ছিলে
তাই শ্বাসও ছাড়নি!
সব প্রবেশ ও বাহির পথগুলো
উড়িয়ে দিলাম
যাও পাখি
আমি আছি
আগেও যেমনটি ছিলাম।
শোন পাখি শোন
শুধু উড়ো না ঐ
ভূত্বকের রক্তাক্ত আকাশে
ওখানে বাতাসে বিষ পৌনঃপুনিক
শিশু পাখিও ছাড় পায় না
বন্ধ করেছে ডাকা সে।
দেখা ছাড়া নেই আর
একটিও কাজ
যদিও কুড়িয়ে রাখি
ঝরা পালকটিও আজ
সব গোলাপ সব রজনীগন্ধা
বেলানো শেষ হলে
সুসময় হয়ে গেলে বন্ধ্যা
আর চতুর পাখিদের দুড়দাড় শেষ হলে
ফিরে এসো রক্তাক্ত আমারই কোলে।
কতটা লক্ষণ থাকলে বলা যায় কেউ কাকে ভালবাসে
কতটা কাজ হলে বলা যায় তুমি অসাধারণ?
কতটা ছিটালে কাদা মরে যায় পরিকল্পিত ভালবাসা
আর কতটা, কতটা নামলে নীচে তুমি সাধারণ হয়ে যাও!!
চারদিকে এখন ছেঁড়া খোঁড়া রাত
পেঁচারাও নিঃশব্দ শিকারে
রোজ রোজ একটু একটু মরা এখানে ওখানে
কোথায় গেল সব উত্থাপিত ভালবাসারা!!
খুনি রাতেরা বিভ্রান্তি ছড়াল
মিনিটের চাওয়ায় হেরে গেল মন
শিকড় ছিঁড়ে উড়িয়ে দিল শূন্যে
মনকে প্রবোধ দেওয়া এই ভাল হল!
কতটা মাখামাখি ব্যক্তিগত সংসার চায় না
শুধু খাদ্য তালিকায় রাখে মশাল ভালবাসা
পুরুষ কোনদিনও শকুন্তলা হয় না
বোঝেও না ভালবাসার গুহ্য কৌশল।
রত্নাকরদা, উইঢিপি ফুঁড়ে কি হাহাকার দেখেছিলে!
ভেসে যাওয়া ঘর,ভালবাসা,তাই না?
পুরুষ বিক্রমে তাই সৃষ্টি কর সীতাকে
আমি জানি, মহা বাস্তবে তুমি তো পরাজিত
ও তোমার দেখনদারি!
তোমার ভূত্বক তোমারই তৈরি
আমি তো নিমিত্তমাত্র
সাগরের জলে তোমাকে হারাই
এটা কি আমার পাওনা হতে পারে?
আমি তো ভিখিরি
অসাধারণ তকমা আঁটল
কারা কারা কি প্রয়োজনে!!
আমার ব্যস্ততার ফাঁক গলে
সিঁদ কাটে সরাসরি ঘরে
আহা,তোমার কি উত্তেজনা!
সব চাবি একে একে দিয়ে দিলে।
তোমার তো কিছু চাহিদা ছিল না
তাই না!
আমি লোভে একমনে করে গেছি কাজ
ভেবেছি কি মহান
অসাধারণ!
ভাল সাজানো ইচ্ছেগুলো উড়ে গেল
বলা ভাল ফুৎকারে উড়িয়ে দিলে।
তবুও বলবে তুমি
তোমার কিছু চাহিদা ছিল না?
আমি লোভে করে গেছি কাজ?

রবিবাসরীয় সংলাপ