নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অমর একুশে লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
অমর একুশে লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

এম. এ. রোকন




বর্ণমালা
******


.
আজ শ্লোগান হবে মেশিনগানে
পথ কাঁপিয়ে মিছিল হ'বে
ডানা মেলে উড়ে যাবে ভাষার
কপোত।
আজ আঁধারে ডোবা আকাশে
সূর্যালোক পোহাবে রাত,
উত্তাল মিছিল রাজপথ পা'য়ে পা'য়ে
কার্জন হল!
শকুনের ঠোঁটে এলো রক্তের স্বাদ
খুনের ধারাপাত উচ্চারিত হলো
স্টেনগানে-
বৃষ্টি ফোঁটায় বর্ণমালা ভাসিয়ে দিল
রক্তের স্রোতে আমার শহীদ ভায়েরা
জলোচ্ছ্বাস এনে দিল জয়ের।
.
আজ ধ্বংস হ'বে শোষিতের
কালো পাহাড়-
যার আড়ালে চাঁদ, সবুজ দেশ,
বাঙালী জাতি।
অ আ ক খ হৃদ নিংড়ানো বর্ণমালায়
বাঙালী সাজাবে সবুজ বাগান,
রক্তাক্ত হৃদপিন্ডে লাল লাল ফু'লে।
.
আজ আঁকবে মানচিত্র সাহসী বাংলা -
এ আমার অবুঝ বুক; সবুজ বাংলা,
এ আমার রক্তের নদী ; রক্তিম বাংলা,
এ আমার বর্ণমালা; মায়ের ভাষা,
এ আমার স্বাধীন দেশ; সোনার বাংলা,
এ আমার শেষ নিঃশ্বাস; স্বাধীন বাংলা,
এ আমার বহমান কন্ঠ; হৃদয়ে বাংলা।

সীমান্ত চন্দ্র রায়




অমর একুশ
************


অমর একুশ আমার জান ,অমর একুশ আমার প্রাণ ।
কে দিবে না তার সম্মান?
অমর একুশের জন্য রফিক জব্বার রাজপথে জীবন করেছে দান।
কৃষ্ণচুড়ার ডালে ফাল্গুন এসেছে লাল হয়ে।
সালাম বরকত অমর একুশের জন্য দিয়েছে বুকের তাজা রক্ত ডেলে।
অমর একুশের জন্য আজো আমি প্রাণের বর্ণমালা লিখি ।
অ আ ক খ প্রাণের বর্ণমালার ইতিহাস আছে সাক্ষী।
অমর একুশের কথা ইতিহাসে আছে লেখা প্রাণের বর্ণমালা দিয়া।।
অমর একুশ আমার জান অমর একুশ আমার প্রাণ।
অমর একুশের জন্য আজো আমি বাংলায় কথা বলি
বাংলা আমার মায়ের ভাষা ,ভাইয়ের ভাষা।
তাইতো বাংলাকে ভালোবাসি।

শামীমা ডেইজী




উর্বর বর্ণমালা অ আ ক খ
********************




আমার শহীদ ভাইয়ের রক্তে রাঙানো মাতৃভাষা
শহীদ ভাইয়ের রক্তে রঞ্জিত বাংলার ধূসরমাটি
সবুজ ঘাসে রক্তে দুর্গন্ধে ঘ্রাণ ভেসে বেড়িয়েছে আকাশে বাতাসে দূর দূরান্তে.
২১শে ফেব্রুয়ারি....
আমরা কি ভুলিতে পারি তোমাদের লড়াই করে
ছিনিয়ে আনা মোদের বাংলা ভাষার ধ্বনি।
জন্ম নিয়েছি যখন থেকে শুনেছি মোরা মিষ্টি সুরে
মায়ের মুখে অ আ ক খ বাংলা ভাষার ধ্বনি।
বই এ পাতার ভাজে-ভাজে বাংলা বর্ণের শ্লোগান
অ আ ই ঈ বাংলা ভাষার রক্তিম আর্তনাদ,
 শহীদ ভাইয়ের রক্তের বিনিময়ে সন্তানহারা মায়ের
অর্জিত বাংলা ভাষা,
ভাষা সৈনিক শহীদের আন্দোলনের শ্লোগান কানে আসে ভেসে....
যারা করেছে প্রতিবাদ বাংলা ভাষার জন্য ভালোবেসে দিয়ে গেছে বাংলার মাটিতে প্রাণ,
বীর বাঙ্গালীর কণ্ঠে একটাই শ্রোগান রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চাই।
বাংলার দামাল ছেলেরা রাষ্ট্র ভাষা বাংলা চেয়ে নেমেছে  আন্দোলনে ভয় করেনি প্রাণের।
বাংলা ভাষার সুর মানুষের কণ্ঠে রবে যতোদিন
বাংলা ভাষা বাঙ্গালীর মুখে থাকবে ততোদিন
বাংলা ভাষা শহীদের স্মৃতি স্মরণ হয়ে রবে।
ভাষা শহীদেরা বাঙ্গালীর হৃদয়ের স্পন্দনে চির অমর হয়ে থাকবে।
পৃথিবী জুড়ে আমার বাংলা ভাষা
শহীদের তাজা রক্তে বর্ণলিপির জমিনে
উর্বর বর্ণমালা অ আ ক খ।

এবিএম মাহাবুবুল ইসলাম




একুশের কবিতা
*************



যে চেতনায়
শিমুল-পলাশ-কৃষ্ণচুড়া ফুল,
হৃদয়জুড়ে ফুটেছিল
দ্রোহের আগুন ফুল।
সেই চেতনার সাহস বুকে
মৃত্যুক্ষুদার গানে,
স্বাধীনতার শপথ ছিল
সাতকোটি ঐ প্রাণে।

সেই চেতনার আগুন জ্বলে
একুশ এলে প্রাণে,
বর্ণমালার মুক্তো ঝরে
কবিতা আর গানে।

একুশ আমার অহংকারে,
একুশ দ্রোহের গানে,
মুক্তিপাগল স্বপ্ন সাজে
একুশ এলে প্রাণে।

শাহ্ আলমগীর

       


          ''রাষ্ট্রভাষা''
             *******
         
   


আমার ভা‌য়েরা রক্ত দি‌য়ে সে‌দিন
রঞ্জ‌িত করে‌ছিল রাজপথ।
উর্দ্দুই হ‌তে হ‌বে বাংলার রাষ্টভাষা
পিন্ডির হুকুম‌তে নেয় মত।

তরতাজা প্রাণ ব‌লিদান‌ে রুখে
সে দি‌নের কা‌লো ধারা।
কেঁপে উঠে মসনদ ক‌রে গদগদ
সকল দাবীতে দেয় ‌সাড়া।

এই মু‌খের ভাষা‌‌ কে‌ড়ে নেবার
সাধ্য ‌যে নাই কাহার।
আমার মা‌য়ে‌দের মুখে শু‌নেই
ফু‌টে স্ব‌রের বাহার।

এ ভাষ‌ায় বর্ণে সা‌হিত্য লি‌খে
কু‌ড়ি‌য়ে‌ছি ভবে সম্মান।
এ ভাষা‌য় দৈনিক ইচ্ছে প্রকাশে
প্রশান্তি পায় যে প্রান।

স্বরে অার ব্যাঞ্জনে লুকে আ‌ছে
সভ্যতা কৃ‌ষ্টি ‌আচার।
শিল্পীর তুলিতে দেয়া‌লে অ‌ঙ্কিত
মুখরিত শ্লোগান বাঁচার।

এ ভাষার বর্ণে বিন্যাস ছড়া‌নো
এঁকে যাই সুখে কল্পনা,
মস্ত অ‌ভিধা‌নে খুটে খু‌টে দে‌খে
অবসান করি‌ জল্পনা।

আমার এ ভাষা আ‌লো আশা
মুক্তো মা‌নিক সোনা।
অগ‌নিত কাব্য উপন্যাস গল্পে
সারা বিশ্বে আছে বোনা।

ফি‌রে আসে বায়ান্নর স্মৃতি নি‌য়ে
প্রতি একু‌শে ফেব্রুয়ারী।
বেদীটায় দাঁ‌ড়ি‌য়ে অশ্রুজলে
ফু‌লে ঢাকি শহীদ ফুয়ারী।

লায়লা ফাতেমা সুমী





একুশ
*****


একুশ তোমায় মনে পড়ে
শীতের মিষ্টি সকালে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
গ্রীষ্মের দাবদাহ বিকালে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
সাগরের বিকট গর্জনে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
শিউলি ঝরা ভোরে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
বর্ষার টিপ টিপ বর্ষনে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
মাঠের ঐ সোনার ধানে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
রাখালের কণ্ঠের গানে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
প্রতিটি বাঙালীর প্রাণে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
আমার প্রাণের মাঝে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
আমার সকাল সাঁঝে।
তোমায় খুব মনে পড়ে
ফেব্রুয়ারি এলে,
তোমায় খুব মনে পড়ে
প্রভাত ফেরীর মিছিলে।

মৌসুমী ভৌমিক




একুশে ফেব্রুয়ারি
*****************



ফেব্রুয়ারির অমর একুশ
রক্তে ভেজা দিন
সহস্র প্রাণে উঠেছিল বেজে
মাতৃভাষার বীণ।
পলাশ শিমূলের রঙ মাখা
একুশের রাজপথ
লাল রক্ত মেখে কেঁদেছিল
বিষন্ন জনপদ।
চির স্মরণীয় সেই দিন
একুশে ফেব্রুয়ারি
স্বণাক্ষরে রয়েছে লেখা
'আমি কি ভুলিতে পারি'।
প্রাণের ভাষার মর্যাদা রক্ষায়
উঠেছিল প্রতিবাদ।
অকাতরে বিলিয়ে প্রাণ, বাঙালি করেছিল জয়নাদ।

মনি আহমেদ




এই আমার দেশ ,
***************




এই  আমার  দেশ  রক্তের ঘ্রাণে ,
তৈরী  বাংলা তোমাকে  পাবো  বলে ,
ভালোবাসার  অফুরন্ত  প্রমান  দিয়েছি ,
তোমার   সম্ভ্রম  লুটিয়ে  পড়ার  আগেই ,
বিন্দু  বিন্দু  রক্তে  নিজের  অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছি ।

এই  যে  শহীদ  মিনার  মাথা  উঁচু  করে  দাঁড়িয়ে আছে ,
কেমন  একটা  শিহরণ   জাগে  বুকে ------
রফিক ,সালাম ,বড়কত ,এদের  বুকে নিয়ে মাথা
উচ্চু  করে  দাঁড়িয়ে  থাকা  এই  মিনার ,
বাঙ্গালীর  জাতীর  মহান  প্রতিক -----
লাল  সূর্য  মহান  বাঙ্গালীর   আত্মত্যগের প্রেরনা দেয় ।

একবার  মনে  স্কুল  জীবনে  ভাইয়ার  সাথে  শহীদ  মিনারে
প্রথম  যাই  ,আগের  আমরা  সব  ছেলে  মেয়েরা  লিফলেট ,
লিখি রাতে    কাল  ব্যজ  তৈঁরী  করি  সবাই  ,
সকাল  হতে  ভাইয়া  বা  ছাত্র  ইউনিয়ানের  কিছু, ছেলেমেয়ে,
আমাদের  লাইন  করে  আজিমপুর  হয়ে  শহীদ  মিনার ,
খালি  পায়ে  উঠি   ভাইয়া  তখন  শ্লোগান  দিচ্ছিল ।
অসুস্থ  ছিল  এই   শহীদ  মিনারের  পিছনে লুকিয়ে ,
আছে  কত  ত্যাগ  বিরহ  বেদনা ------------

পাশাপাশি  বাংলার  গৌরব গাথা  ,
নিপীরিত  নির্যাতিত  বাঙালি  জাতী  অধিকার বঞ্চিত হয়ে ,
জেগে  উঠেছিল  প্রতিবাদি   সত্ত্বায় -----------।
নিজ  গৃহে  পরবাসি  হয়ে  প্রতিবাদ  প্রতিরোধ করে ,
মৃত্যুর  পথে  এগিয়ে  যাওয়া ----------
ভালবাসায়  জয়  চিরন্তন  ,তাই  চিৎকার  করে ,
বলতে  চাই   মা  তোমায়  ভালোবাসি  জন্ম  জন্মান্তরে।

শান্তনু দে





ভাষা দিবস
*********



যে ভাষাতে শিশুকালে
শুয়ে আমি মায়ের কোলে
বলেছিলাম মা ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

যে ভাষাতে বাউল গান
ভরিয়ে দেয় মন প্রাণ
ভরায় সকল গাঁ ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

যে ভাষাতে শিশু ডাকে
নিবিড় করে জড়িয়ে থেকে
আদর করে মা ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

যে ভাষার আন্দোলনে
জোয়ার এনেছিল প্রাণে
আজও ভুলি না ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।


যে ভাষার আন্দোলন
একুশে ফেব্রুয়ারীর ক্ষণ
হয় না তুলনা ।
সেইতো আমার মাতৃভাষা
আমার বাংলা ভাষা ।।

রশিদ মোহাম্মদ জিয়া



আমার একুশ
***********



মায়ের শাসন
প্রেমিকার আহ্বান সে তো বাংলায়।
প্রতিবাদের ভাষা
প্রয়োজনে পাশে থাকা সেও বাংলায়।
বাংলা আমার অস্তিত্বে
বাংলা আমার চেতনাতে
বাংলা আমার মূল্যবোধে
বাংলা সর্বাবস্থাতে।

নবীন মণ্ডল






প্রার্থণা
********





       
আমি  জীবন খেয়ার দাঁড়ি হয়ে
               রয়েছি এই ভবে
        তোমার চালানো তরী বেয়ে
             তোমায় স্মরি এবে।।
      পারের নৌকো যেথায় যাবে
      দাঁড়ির কর্ম সেটাই চাবে
      আমার মাঝি তুমি হয়ে
                  ধন্য আমি সবে।।
       বাইব খেয়া তোমার দানে
       তোমার বাণে জীবন মানে
       চারণ বিশ্বে সুখে দুখে
                    তোমার ইচ্ছা যবে।।
      ক্ষণিক বুকে তোমায় পেয়ে
      কাটাই আমি,বেদন দিয়ে--
       ভুলেই থাকি,অশ্রু বিনে
                  তোমায় কেবা পাবে!!
      আমার মাল্লা হয়েই থেকো
      তোমার পাল্লা সদাই দেবো
      তোমার সঙ্গ প্রার্থণা যে
                  তুমিই মোরে দেবে।।

অনন্য বন্দ্যোপাধ্যায়





বর্ণমালার সাথে আমার সংসার 
 ***************************




চেতনামাত্র শব্দ সমুদ্রে ডুবে দেখি --চোখের সামনেই ভাসছে  আমার অজস্র জন্মের প্রেমিকা বর্ণমালা ।
আমি বর্ণমালাকে ভালোবাসি --বর্ণমালা আমাকে . . . . 

সাতপাকে  ঘুরে আমি এখন তার  সাথেই সংসার করি ।

জয়দীপ রায়





বাংলা জানে  একুশে
*******************





    জানলা ছুঁয়ে কার্নিশ ভেদ করে আসা রোদ
     অ লেখা এক পাঞ্জাবীর উপর         
     পাশের বাড়ির ছেলেটা সদ্য স্কুলের জামা পেয়েছে
     কাকু নাক শিটকে  
     ইংরাজি সাহিত্য শেক্সপীয়র ভুলে তুই
     বাংলা শিখবি বেশ বেশ 
     “আম পাতা জোড়া জোড়া 
     বড় হয়ে বেশ চড়িস ঘোড়া” 
     খিল্লি ওড়ালেন এক পোশাকি 
      হুম নামে বাঙালি ই বটে।
     তার কিনা সকালে সুগার ফ্রি 
     দুপুরের মেনু ভাত কাঁচা লঙ্কা
     আর পোস্ত দিয়ে মাখি
  
   সুইট হার্ট ব্যাপী ভ্যলেন্টাইন মাখা 
   আঁতেল শব্দ গুলো  জ্বর গায়ে থার্মোমিটার মুখে 
   ঘুরে বেড়াচ্ছে আর চড়ছে পারদ 
   বাঙালির লোহিত শ্বেত দিনে দিনে কমতে থাকা 
          অণুচক্রিকায় 
   রবীন্দ্র সরোবর বঙ্কিম সরণি র বদলে
   তাদের আড্ডা জমে শেক্সপীয়র সরণির রোয়াকে
নাম না জানা ভোকাল সঙ
ভোকালিস্টদের তালু চেনে 
আমাগো ভাষা রসগুল্লায়
মেঘের কিনারা খোঁজে 
চটি পেতে ফুটবল 
গোল তুই শালা মোহন বাগান আমি ইস্টবেঙ্গল
এলাইচি মাখা রাস্তার ভাঁড় ছোট্ট চুমুক
 রেডিও বলছে একুশে ওই দিন কি দাদা
 আপনার বোঝার কম্ম নয় 
 খাটি বাঙালি রা সেটা জানে। 
 

স্বপন রায়




আমার বাংলা
*************



বাংলা আমার রক্তের কণে কণে,
শিরায় শিরায় প্রবাহিত অনুভব_
প্রথম সে'দিন চোখফোটা দর্শনে,
দেখেছি কোমল বাংলার অবয়ব ৷
বাহান্ন সাল সূচনার অধ্যায়...
রক্তে লিখিত ভাষাশহিদের কথা ৷
লোহিত কণিকা রাজপথে বয়ে যায়,
ভেসে যায় কত জননীর নীরবতা ৷
পাষান গলেছে বেদনার আঁখিজলে,
ঘনঘোর মেঘে তারা ফুটে জ্বলজ্বল ৷
পশ্চিমী ঝড় ফিরেছে আস্তাবলে
রণাঙ্গনের মাথানীচু সেনাদল ৷
জনগণমনে বাংলা থাকুক বেঁচে—
অমর একুশ থাক্ সদা অন্তরে ৷
মুক্তো এনেছে অতল সিন্ধু সেঁচে,
প্রহরী জাগুক প্রতি বাঙালির ঘরে ৷

মালবিকা হাজরা





আনন্দ
******


                
অবকাশে গিয়ে বসি যখন 
পলাশের গালিচায়
চেনা উঠোন থেকে একটি আঁচল 
উড়িয়ে নিয়ে যায়
হলুদরোদের মতো বর্ণমালায়...
কী নামে ডাকি সে মুগ্ধ ছোঁয়ার!
দ্রিমি দ্রিমি মাদলের বোল শুনি
আমার মায়ের ভাষায়।

ফারদিন খান সুপ্ত





  তিন গম্বুজ
 **********





কিচিরমিচিরে অবচেতনার নিদ্রাভঙ্গ -
      প্রহর যে হলো সবে মাত্র।
  উদিত সূর্যের আলোয় আলোকিত ভুবনে,
      জুড়ে গেল  ভোর পাখিদের মেলা।
রবির আবছা আলোর প্রকাশে মনকোণে,
      চেঁপে যাওয়া গহিন আর্তনাদ।
বদ্ধ-গৃহ চৌকাঠ পেরিয়ে পুষ্পকাননে,
  দুরন্তপনায় ছুটে চলা তাজা পুষ্পের আশায়।
টকটকে রক্তিম গোলাপগুচ্ছ বদ্ধ হাতে,
      খালি পায়ে রাস্তার মাঝে হন্টনরত-
    রক্তিমা লাল পাঞ্জাবী পরিহিত।
ফুঁটছে পায়ে কাঁটার ন্যায় ইট-পাথরের কণা,
    বদ্ধহাতে কণ্টকময় পুষ্পকানন পুষ্পসম।
অব্যক্ত ব্যথায় মনে পড়ে গেল,
              ভাষা শহীদদের যন্ত্রণা।
আবুল,বরকত,সালাম,জব্বার-
               প্রাণ দিয়েছেন ভাষায়।
রক্তে মম, পথ রঞ্জিত হওয়ায়,
       স্মৃতিচারিত ভাষা আন্দোলন।
তিন গম্বুজের নিচে তুচ্ছ কয়েক গোলাপ,
      সাক্ষরিত মম রক্তাক্ত পথের।
সাক্ষরিত ভাষা শহীদের রক্তাক্ত-
        অমূল্যচরণ পদধূলিরঞ্জিত পথের।

শুভদীপ সেন





নৈস্তব্ধ
*****




আগুন,তুমি স্বপ্ন পথিক-
রক্ত আগন্তুক,
ঝর্ণাধারায় মৃত জীবন-
সমকামী সব সুখ।
আফ্রিকা'র ঐ কালো শিশু-
পেটে নেই আজ ভাত,
পুঁজিবাদের হাতটা ছাড়ো-
থাকবে না জাতপাত।
বৃক্ষরোপন,বনসৃজন 
পাগলামি ঝুড়ি ঝুড়ি
হীরক রাজার দেশেতেও ভাই,
হীরে গেছিল চুরি।
মিথ্যে কথা বলবে যতই,
ততই তুমি সৎ
সঠিক বিচার চাইতে গেলেই
বন্ধ বিশ্বপথ।
কন্যাভ্রূনের মৃত্যু মিছিলে,
ভোরের সূর্য কাঁদবে
যাবজ্জীবন সঙ্গীরা সব, 
আগামী জোনাকি আনবে।
শহরের সেই সবুজ মাঠে,
কত্তো পায়ের ছাপ
বলতে গেলেই বুঝতে হবে,
ভাবাটাই মহাপাপ।
অট্টালিকা উঠবে গড়ে,
আকাশগঙ্গা ফুঁড়ে
বিনিময়ে আজ আসবে না আর,
একটি পাখিও উড়ে।
প্রেম-প্রীতি ছাত্র-ছাত্রী,
তোমরাই মহাকাল
বুঝিয়ে শুধু দাওগো ওদের,
কত ধানে কত চাল।
যতোই ভাবো এগিয়ে গেছো
রয়েছে ছায়া পিছে,
দূরে তুমি ঠেলবে যতই
ততই আসবে কাছে।
ঘুম আমার মধ্যরাতে,
করছে স্বপ্ন ফেরি
কলম তুমি গর্জে ওঠো,
নেই রেনেসাঁর দেরি!



প্রভাত মণ্ডল





একুশে 
******* 


                    

দিনটা ছিল একুশে
বাতাসে ছিল ফুরফুরে মেজাজ
বিহান বেলায় কে যেন
কৃষ্ঞচূড়া রঙে রাঙিয়ে ছিল নীলাকাশ
গুলদস্তা হাতে ছিল বসুন্ধরা
কি অপূবই না তার সাজ
ছিল চাতকের কন্ঠে সুখমধুর তান
পলাশ রাঙা শাড়ীতে
কোনো গ্রাম‌্য বালার লাজুক স্বরের গান। 

দিনটা ছিল একুশে
কথাও ছিল যেন একটা গুমটানো ভাব
ভ্রমরের গুঞ্জনের মধ‌্যে ছিল প্রতিবাদ
হিজল, শিমূলের বিদ্রোহীর সাজ
বাংলা বাপ=ঠাকুরদার ভাষা
ওই ভাষাতেই বলেছিলুম প্রথম কথা
প্রান দিয়েও রাখবো তার লাজ। 

দিনটা ছিল একুশে
পদ্মার বুকে জলতরঙ্গের উঠেছিল উচ্ছ্বাস
শালিক দম্পতি গুনে চলছিল প্রমাদ
বরকত, জব্বার, সালামের
রক্তে লাল হয়েছিল বসন্তের সকাল
দিনটা ছিল একুশে
ঢাকার রাজপথে রচে ছিল
বাংলাভাষা আন্দোলনের অমর ইতিহাস।

সৈকত বণিক






একুশের ডাকে স্ত্রৈনতা
********************




সেদিন শহরের শীতলতম দিনে
বোধহয় সেই জামরুল গাছের নীচে
নিজেকে আবার হারালাম
তোর কাজলের কাছে...
কিছু প্রশ্ন ছিল, শুকনো
আচ্ছা তোর সাথে মেঘের আহ্লাদে
এখনও বৃষ্টি পড়ে?
কৃষ্ণকলি বলে এখনও কেউ ডাকে তোকে?
আমি তো ভেসেছি তোর কবিতায়
আর তুই আমার ছন্দের আস্কারায়...
সেই শেষ পিরিয়ডের শেষ বেল
কিংবা ভাঙা ঘাটে পা চুবিয়ে জলকেলি-
আমার সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেনি
হয়ত আমায় খুঁজে চলেছে
স্ট্রিট লাইটের আবছা আলোয়...
আর তুই অনেক অনেক দূরে
সেই জামরুল গাছের নীচে
শহরের শীতলতম দিনে...

তপময় চক্রবর্তী




অবশ বিবশ দিবস
*****************





এ এক অন্য দিন , প্রস্ফটিত এক কৃত্তিম,
নিলয় অনিলদের স্বতঃস্ফূর্ত রুক্তিম !
যেখানে মেঘেদের কোন প্রতিজ্ঞা নেই ,
ঘন আধার এখন বিরাজমান
পিছুটান নেই কোন ...
রক্তিম জলে ধুয়ে যাই প্রাণতরলতা
নীলসরোবরে স্বরবর্ণ ব্যঞ্জন মন!
মাটির শরীর তবুও ব্যাকুল 
ভালোবাসার ভাষার ব্যাথায় আকুল ,
কাটছে সময় এখন অপেক্ষাতে
খুব ক্লান্ত প্রাণ'টা অবশ বিবশ ,
দখল করে অশ্রুর ' ভাষা দিবস ' ;
বুকে মাথা রেখে যেদিন বললে
ধুয়ে মুছে সকল ক্ষোভ গুলো
আর প্রভাতফেরিরর সেই প্রথম সকালে
প্রাপ্তির, তৃপ্তির ছোঁয়া তাই এই মনের গভীরে,
তুমি পেরিয়ে এসেছ অনেক ভাষার বসন্তে
আজ তাতে আর একটি সংযোজন |