নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

জিয়াউল আলম ফারুকী

 বোধ




অবাক হয়ে শুনি
রক্ত কথা কয়,
কূল হারা নাবিক
ভাংগা মাস্তুল অঁকড়ে
খুঁজে নতুন দিন।

দিন আসে দিন যায়
গারদবদ্ধ শালিক
ধান খুঁজে মাঠের পর মাঠ,
আস্ত খাঁচাটায় যে পাখি
কাঁতরায় মুখোস আড়ালে।

দূর দিগন্ত হতে হয়ত
কেউ আসবে,পাশে বসবে,
দুয়ার খুলে বলবে,
বনের পাখি তুমি খাঁচায়
কেন!কী করে উড়ে যেতে হয়?

অতঃপরএকটি সবুজ
খামে বারতা আসুক
বনের পাখি,মনের পাখি
মুক্ত আকাশ হোক
তোমার কপোতি চারণ।

ভীষ্মদেব সূত্রধর

 খোঁজ, স্বপ্ন ও সংজ্ঞা 


আফ্রোদিতি'র খোঁজে মহল্লার গেরস্তের বাড়ির খবর রাখিনা
একে একে চলে গেছে...বিবর্ণ সকাল আমার একার
ভাঁজা খেয়েই আমি তৈলাক্ত শিথিল! 
ঘন্টার পর ঘন্টা টেবিলের পায়ার কথা ভাবি
চারপায়ে হেঁটে চলা জন্তু আর জোনাকি
ভোরের কাক প্রেমিক হয়ে 
উৎকৃষ্টতর নীল বেদনায় ঝুলে পড়ে বৈদ্যুতিক তারে
একটি আত্মহত্যা এবং হন্তারক সন্ধ্যারতির দীপ্যমান মুখ।
বন্যপুষ্প-সুরভিত উত্তপ্ত বাতাস
ঘিরে অক্ষরাদি ভেসে যায় প্রদত্ত উঠোনে
নোনাজলাবদ্ধ ওষ্ঠাগত দ্বিপ্রহরে।
পিছনের পুকুর থেকে অনুজীব জলপরী
কুকুরের মত্ত সহবাস
চোখ ওঠা লাল চোখ
জল ঝরা হাতা
আমি ধর্ণা দিইনি নদীর বুকে অপ্সরা নেমে আসে 
কারো বুকে
কারো জঙ্ঘায়
ইপ্সায়!
ভীষণ টিটকারি,  ভাঙা আয়নায় সিলভার প্রলেপ
আমার মুখোমুখি 
আমি আদৌ কোন কিছু দেখি
বারবেলা ঘুমিয়ে ক্লান্তি জমলে
আমিও চাঁদ ছুঁতে ছুটে যাই স্বপ্নে-মদিরায়।
কিছু ওষুধের পরিত্যক্ত খাম
পুরান টর্চ
সাহসের পর দুঃসাহসের ঘাম অবশেষে টেনে তোলে চাটি মারে। ধুর।


 

শম্পা সামন্ত

 কুমারীর আলিঙ্গন


ধীরে ধীরে আমি মৌন মন্থর আলিঙ্গন করছি কোনো বৃহদায়তন পান্থ পাদপের চরণ।
আর সেই আলিঙ্গন এক আকাশের গায়ে চাঁদের ছায়া।
যে রাতে ঘুমিয়ে থাকার কথা ছিল সে রাতে আর ঘুম এলোনা।
দীর্ঘকাল যেন সূর্যের নীচে শুয়ে থাকা যাপন।
আর কম্পিত নি: শ্বাস প্রবাহিত হচ্ছে।
আমি এপর্যন্ত যা জানি তা করা উচিত হলনা আর যা যা জানা নেই তা যেন অপটু হতে সেরে ফেলছি। 
এক পটু শিকারির মত।
আমি যা যা দেখিনি তা আমার ভাবনা।
আর যা ভেবেছি তাও শরীরি কল্পনা।
আর সবুজ বনানী ঘিরে আমার হারিয়ে যাওয়া।
অস্তিত্বহীন। নাম।

সাকিন

অসুস্থতা তোমার পারগতাকে চাগিয়ে তুলতে পারে  অকর্মন্য এক জীবন খুঁজে পেলে।
লাল রঙা গোধুলির মাঝে এই প্রেম ভ্রূপল্লবিত।
ছায়ামুখ যেন আঁকাবাঁকা পথময় ছড়িয়ে।ঐ আলোময় মুখ ঘিরে আমার অনুভব।এই ক্লিশে হয়ে যাওয়াস্মৃতি মেদুর গতি।আর হাজার বছর আমি টিকে থাকি।
বিষাদের আঁধার টুকু নিয়ে, বেরসিকের মত।আর ক্ষতগুলো সানিয়ে নিচ্ছে তরবারি।
এখন একটা সঙ্গী পেলে পারাবার পেরোতে পারি।
একটা অশ্লীল কবিতা লিখতে অঙ্গীকার করি। 
তুমি কী আমার সঙ্গী হবার প্রতিজ্ঞায়  হাত ধরবে?

শাহীন রায়হান

 তোমার বিরহ বেলুন 


মনের উঠোনে দাগ কেটে কেটে
প্রজাপতি রং সারাদিন আনমনে এঁকে যায়- 
মৃত প্রায় বিষখালী হরিণঘাটার ধূ ধূ বালুচর 
সর্পিল পায়রার সমুদ্রগামী ফেনায়িত লাল মোহনা
এক বিকারগ্রস্ত জলময়ুরীর ছবি। 

পুরনো স্মৃতির ঝলসানো ক্যানভাস থেকে 
পলেস্তরার মতো খসে পরে
আলুথালু চিরচেনা স্বপ্নীল দুটি হাত-

বেখেয়ালি মন হেঁটে যায়
নদীমুখী জল থৈ থৈ কালমেঘা খাল পেরিয়ে 
বকমুখী নলটোনা ঘাটে। 

বুকের চিকন সরল রেখায় থেমে থেমে দোলখায়
এক দিকভ্রান্ত দুর্ভাগা গো-শালিক
তার জরা চোখে বরাবর বেহিসাবি আমি 
জীবনের নতুন পুরনো সব হিসাব মিলাই 

তারপর পীতরঙা পৃথিবীর কোমল নিতম্ব ছিঁড়ে 
জেগে ওঠে ঘুমন্ত লাউ মাচা, দূর হিজলের বন
আমার লাজুক মনের ভাঁটফুল দাওয়ায় 
ঝড় তোলে পশ্চিমা বাউরি বাতাস
আর পলাশের লাল পাপড়ি ছুঁয়ে নীরবে উড়ে যায় 
তোমার বিরহ বেলুন।

অমিত কুমার জানা

 সভ্যতার ভিত



আমরা যখন ইঁট হয়ে থাকি
হতবাক হয়ে চেয়ে দেখি
তোমাদের কি নিষ্ঠুর মানবিকতা!
হেয়জ্ঞান করে অবজ্ঞাভরে
লাথি মেরে সরিয়ে দাও সুদূরে,
তাই মোরা নিক্ষিপ্ত হেথাহোথা।

পুনরায় স্ব স্ব প্রয়োজনে,
উন্মত্ত হও আমাদেরই অন্বেষণে।
আমাদের অগণিত সহোদরে
একসাথে রাখো জড়ো করে।
গড়ে তোল অট্টালিকা গগনভেদী,
স্তরে স্তরে সজ্জিত মোরা বহুদূর অবধি।

যাদের দিয়ে গড়েছো সভ্যতার ভিত,
তাদের অবজ্ঞা করো না কদাচিৎ।
সভ্যতার ভিতে যদি ধরে ফাটল,
নিষ্ঠুর শাসকের গদি হবে টলমল।

সুমিত মোদক

 জ্বেলে যায় দীপ



অন্ধকার সরিয়ে সরিয়ে বার করে নিতে হয়
সামনের এগিয়ে চলার পথ ;
পথিক বার বার পথ হারায় ;
তবুও পথে নামে পঞ্চপাণ্ডব ও পাঞ্চালী ;

ঘোর অমাবস্যায় তন্ত্র সাধনায় মগ্ন অঘোরী-জীবন ;
গভীর জঙ্গলে থেকে উঠে আসে প্রেত-তত্ত্ব ,
মহাকাল …
অথচ , মুখোশের সংখ্যা দিন দিন বেড়ে যায় ;
দিকে দিকে চুরি হয়ে যায় শ্মশান ;
কেবলমাত্র পড়ে থাকে আধপোড়া চিতাকাঠ ,
ফুটোকলসি ;

রাতচরাপাখি গুলো রাতের অসুখ দেখে
ভয়ে ভয়ে থাকে ;
এই বুঝি আকাশ থেকে ভেঙে ভেঙে পড়বে 
সহজ সরল মানুষের কান্না ;
সে কান্নার শব্দ গুলোকে উপেক্ষা করার ক্ষমতা
তাদের নেই ;
সে কারণে অপেক্ষায় থাকে নতুন ভোরের ;

ডোম হরিশচন্দ্র এখনও খুঁজে বেড়ায় 
একটা শ্মশান ;
চারপাশে তার হাজার হাজার মৃত দেহ ;

এমনই অন্ধকারের মধ্যে দিয়েই হেঁটে যায়
গৌতম বুদ্ধ ;
খুঁজে পেতে বোধিবৃক্ষ , সুজাতা পায়স …

এতো কান্না , এতো অন্ধকার , এতো নৈশব্দ
তবুও করা যেন দিকে দিকে , দিগন্তে 
জ্বেলে যায় দীপ ;
আলোয় আলোয় ভরে উঠছে সনাতন ভারত ভূমি ।