নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

দিনের শেষে : পলি ঘোষ



দিনের শেষে, নিদ্রা ভরা নয়নে --
তব কথা স্মরণে,
মোর নয়ন ভাসে।
আজি বৃষ্টি ভেজা রাতে,
তব কথা হৃদয়ে মোর বাজে।
মোর আকাশে সকল তারা আজি দেখি!
শুধুই মোর অশ্রু ভরা নয়নে টলমল;
বানভাসি সব মানুষ আজি কেমনে রবে?
তাহাদের কথা ভাবিয়াই আজি মোর নয়নে
অশ্রু নদী ঝরে।
কেমনে রহিয়াছে তারা সবাই,
মোর সকল বানভাসি মা, ভাই, বোন?
দেখো, তব মনের শক্তি দিয়া
উজাড় করিয়া দিও তাহাদের সকলকিছু,
দুই হাত ভরিয়া।
মোর মন থমকিয়া গেছে তাহাদের কথা ভাবিয়া।
ভালো যেনো রাখিও তাহাদের সকল বিপদ হইতে।

ভয়াবহ সূর্য উঠছে : গোলাম রসুল



পৃথিবীর মর্মর মূর্তি সমুদ্রের ধারে
অজানা ঢেউ
আমার প্রার্থনা আকাশ

জলে গভীর রাতের প্রতিবিম্ব
আশ্চর্য আমি বাজাই সেই দ্বীপপুঞ্জ
মনে করো যেখানে তুমি খুন হয়েছিলে

মনের অবস্থা ভালো নেই বলে আমি একটি খারাপ রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম

দূরের বন্ধুর মতো জ্বর গায়ে কম্বল
মানুষটাকে আর দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়
তারপর স্টেশনের অরণ্য
যেখানে আমি অনেক  মুখ দেখতাম আয়নায়

গোড়ালিতে জমে থাকা নদী
এক সময় আমরা একাকার হয়ে যাই

সমুদ্রের ধারে সেই সব মর্মর মূর্তি
আর চামড়ার ভেতরে ফেটে বেরুচ্ছে রক্ত

ভয়াবহ সূর্য উঠছে
          __________________

জীবনের গাঁথা : পিনাকী কর্মকার

মধ্যবিত্ত এ জীবন আকণ্ঠ পান করে যেতে চাই।
প্রতিদিন,প্রতিক্ষণ চেটেপুটে খেতে চাই।
জীবনের সবকটা রং আমি সবখানে মেখে,
তবেই বিদায় জানাতে চাই এই পৃথিবীকে।
এলোমেলো গেরস্থালি দেখে নাক সিটকালে,
জেনো তুমি এ জীবনের শুধু সিকিটুকু পেলে।
জেনো রাত কেটে ভোর হয় একদিন,
সেই ফাঁকে অভিমানে ভাঙো যদি জীবনের বীণ
পিপাসা তোমার মিটবে তবে বলো আর কবে?
ইচ্ছে অনিচ্ছে সব কিছু পিছে পড়ে রবে।
সাতরঙা এ জীবনের যতটুকু রস, গন্ধ,
কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে যাও লাগবেনা কখনোই মন্দ।
দিনশেষে সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে যদি দেখো,
বিছানার চাদরটা একেবারে টানটান মনোমত।
আনমনে যদি মনে পড়ে কারো কথা বারে বারে,
অজ্ঞাতসারে যদি দুই চোখ জলে ওঠে ভরে,
তবে জেনো সেটাও তো জীবনের একখানা রঙ।
মাখো তাকে সারা গা জুড়ে,সাজো জীবনের শেষ সঙ।
আমি তো সেটাই চাই, ভালবাসা, বিরহ ব্যথা,
সবটুকু নিয়ে হোক আমাদের  জীবনের গাথা।

তুমি হীনা নবান্ন : শাহীন রায়হান


নিঝুম রাতের নীরব কান্নায় বৃত্তাকারে ভিজে যায়
ধানহীন প্রাণহীন অর্ধমৃত অস্তগামী নবান্নের
রংহীন নিষ্প্রভ দুটি চোখ-

তুমিহীনা নবান্ন আজ এক পৈশাচিক সভ্যতার
নগ্ন শেকল বন্দী অন্ধ বোবা বধির কয়েদি
তার বুকে কোন ক্লোরোফিল নেই, নেই পুষ্পিত গোলাপের
রং মাখা ভোর ধানে ধানে প্রজাপতির উড়াউড়ি ভ্রমরের
কানাকানি গুনগুন গান-

তুমিহীনা অগ্রহায়ণ যেন ভাতহীন কৃষকের
কুঁচকানো মুখ ক্ষুধার রাজ্যে একটানা দুঃখের বিলাপ-

আমাদেরই দেখি : সুমিত মোদক



টিলার ওপারে হাট বসে ;
শনিবারের হাট ...
ওখানে মোরগের লড়াই হয় ;
মৃত্যুর লড়াই ...

ধারালো দুটো ছোট ছুরি বাঁধা থাকে
মোরগ গুলোর পায়ে ;
তাদের মালিক লড়াই বাঁধিয়ে দেয় ;

লড়াইটা ততক্ষণ চলে ,
যতক্ষণ না একটা মারা পড়ছে ;
আর সেই লড়াইয়ের উপর চলে জুয়া ;
জুয়া--জুয়া--জুয়া---

টিলার এপারে আগুন জ্বলে ;
যেখানে ঝলসে খাওয়া হবে ;
পরাজিত মালিকরাও আমন্ত্রিত
প্রীতিভোজে ;

টিলার উপর দাঁড়ালে দেখি আমাদের ,
আমাদেরই ঝলসানো শরীর ।।


সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে : আহাম্মেদ হৃদয়



সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে
হারিয়ে যাচ্ছে সোনালি দিনগুলো।

আমার জন্মের মায়া ভরা ভিটে
জামতলা বৃক্ষের অমল ছায়া।
হারিয়ে যাচ্ছে আমার সকল
চির চেনা মানুষের মুখ।

হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মার মতো
বিস্তৃত সকল নদী
হারিয়ে যাচ্ছে রকমারি পাখিদের
মনোমুগ্ধকর কোলাহল।

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবউত্তীর্ণ
সকল প্রকার খেলা
হারিয়ে যাচ্ছে এদেশের
গ্রাম -গন্জের মেলা।

আমিও হারিয়ে যাচ্ছি
প্রবল স্রোতের টানে অতল সাগরে
হারিয়ে যাচ্ছি সংচূর্ণিত কাচের মতোন
বিশাল সাগরের জলে।