নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

প্রেম ও শোষণের বেড়াজাল :-শাহীন রায়হান



একটি মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখবো বলে-
প্রেম পর্যটক আমি
প্রতিদিন প্রতীক্ষার জানালায় অবসন্ন প্রহর গুনি-
ইছামতীর বাঁক ঘেষে বসে থাকি চরম উৎকন্ঠায়
গাঙচিলের ধূসর ডানায় খুঁজি প্রেমের প্রাঞ্জল পঙক্তিমালা।
.
একটি মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখবো বলে-
তোমার অসীম কল্পনায় আঁকি হেমন্তের সবুজ ধানক্ষেত
গঙ্গাফড়িং এর সমান্তরালে উড়াউড়ি
বৈকালি প্রজাপতির ডানায় স্মৃতির গোলাপি শহর।
.
একটি মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখবো বলে-
নিদ্রাহীন কলমে অধীর আগ্রহে-
বুকের অন্তরালে ঘুমন্ত ইচ্ছাকে বারবার
জাগ্রত করি-
কিন্তু না, আমার হেয়ালি কলম এখন
মেঘ রং প্রেমের কবিতা লিখে না।
ওর তুমুল আগ্রহ এখন
বিপন্ন মানুষের আর্তহাহাকার মানবাতিকার
ধর্ষণ গুম খুন হত্যা খোলস বদলানো রাজনৈতিক নিষ্ঠুরতা
মানুষে মানুষে অসাম্য দেয়াল শোষণের বেড়াজালে।

বুঝবে সেদিন বুঝবে : বিপ্লব গোস্বামী



সূর্য সেদিন অস্ত যাবে
ভেঙ্গে যাবে খেলা ;
তোমার প্রিয় মানুষ যেদিন
করবে তোমায় হেলা।
স্বপ্ন ভেঙ্গে বুঝবে সেদিন
সত‍্য মিথ‍্যার খেলা;
সত‍্য প্রেমের খুঁজে খুঁজে
কাটবে সারা বেলা।
বুঝবে সেদিন বুঝবে তুমি
সত‍্যি সেদিন বুঝবে ;
আশার সমাধি পাড়ে
অতীত স্মৃতি খুঁজবে।
হঠাৎ শোনবে ডাকছি আমি
খুলবে তুমি দ্বার ;
ধরতে আমায় হাত বাড়াবে
দেখবে সব আঁধার।
শ্রাবণের রিম ঝিমিতে
ভিজবে তোমার চুল ;
মধুল লোভে উড়বে অলি
গাইবে আপন সুর।
আসবে ফিরে শরৎ ঋতু
ঝরবে শিশির কণা ;
অতৃপ্তির তৃষায় তুমি
থাকবে যে আনমনা।
বুঝবে সেদিন বুঝবে তুমি
সত‍্যি সূদিন বুঝবে ;
আশার মমাধি পাড়ে
অতীত স্মৃতি খুঁজবে।

মন- দূষণ : সুমিত মোদক



যাযাবর জীবন নিয়ে নামছে মানুষ পথে ;
লক্ষ্য তাদের একটাই
সবুজ রাখবে কাছে ;
আবার তারা গাছ কাটবে
ধ্বংস করবে সবুজ ;
মানুষ নামক জীব গুলো সব এতটাই অবুঝ ;
বায়ুদূষণ , জলদূষণ , শব্দদূষণ , শত ....
আসল কথা মন-দূষণ , করে রেখেছি ক্ষত ....

সুদীপ্ত বিশ্বাসের গুচ্ছ কবিতা







আহ্বান

গুমরে মরেছি শুধু মনের গভীরে।
 অস্ফুট আর্তিতে , অপেক্ষায় -অপেক্ষায়
 বয়ে গেছে রক্তধারা এই যমুনায়।
রুধিরের স্রোত জল বৃথা, সব বৃথা ।
অনেক মায়াবী রাত ঝলমলে দিন ,
নিতান্ত নিস্ফল তারা, অপুষ্পক স্মৃতি।
এখনও গোলাপবাগে আধফোটা  কুঁড়ি,
ভ্রমরের স্পর্শ পেতে প্রচণ্ড উন্মুখ।
প্রতীক্ষা, প্রতীক্ষা নিয়ে রাত ভোর জেগে,
সরিয়ে  রেখেছি পাশে বরমাল্য খানি।
তারার জন্মের পর তারার মৃত্যুতে,
চুপচাপ কাল স্রোতে বয়ে গেছে কাল।
নিঝুম দুপুর থেকে ধূসর বিকেলে
অলিন্দে একাকী বসে দেখেছি জগত।
লুকিয়ে রেখেছি কত চোরাবালি স্রোত।
লুকিয়ে রেখেছি কত পক্ষ বিধূনন।
আগ্নেয়গিরির সেই উদ্গিরণের মত,
আজ আমি অভিসারী, রোমাঞ্চ পিয়াসী।
তুমি এসো...মুগ্ধতার সে প্রাচীন আধিকার নিয়ে এসো।
 রুদ্ধদ্বারে বার বার কর করাঘাত।
তোমার উদ্ধত ফনায় আমাকে বিদ্ধ কর,
 মুগ্ধ কর, কর শিহরিত।
বাজিয়ে তোমার বীণ,
 নিয়ে চল জ্যোৎস্নার মায়াবী জগতে।
তোমার ডানার স্বেদ বিন্দু
 গড়িয়ে পড়ুক আমার ডানায়।
কানায় কানায় উপচে উঠুক রসস্রোত।
পিয়াসী  তৃষ্ণার্ত বুকে
ঢেলে দাও অমৃত তোমার ...


---------------------------------------------------------------

বৃষ্টি এলে

বৃষ্টি এলে বুকের ভিতর গোলাপ কুঁড়ি ফোটে
বৃষ্টি এলে মনটা বড় উদাস হয়ে ওঠে।
বৃষ্টি এলে শিউলিতলায়, ছাতিমগাছের ডালে
মনটা বড় কেমন করে বৃষ্টি-ঝরা কালে।
এখন তুমি অনেকদূরে না জানি কোনখানে,
ভিজছো কিংবা গুনগুনিয়ে সুর তুলেছো গানে।
তোমার গানের সেই সুরটাই বৃষ্টি হয়ে এসে
টাপুরটুপুর পড়ছে ঝরে মেঘকে ভালবেসে।
মেঘ বিরহী,কান্নাটা তার বৃষ্টি হয়ে ঝরে
তোমার বুঝি মেঘ দেখলেই আমায় মনে পড়ে?

************---------*******------****----



কবিতা

সেটা আকাশ থেকে হঠাৎ ভেসে আসে
সেটা স্বপ্ন হয়ে নামে আমার পাশে।
তার আলোর সুরে শুকতারাটি হাসে
তার খুশির দোলা প্রতিটি ঘাসে ঘাসে।
তার সুরের ধারা আপনি বয়ে চলে
তার গভীর সুরে প্রাণটি কথা বলে।
তাকে মনন করে মনের সীমা বুঝি
তার গভীরতায় পাতালপুরী খুঁজি।
তাকে অস্ত্র করে দূর বিদেশে যাই
সেই তারার পারে মরণ সীমানায়।
তাকে আগলে বুকে জীবনে বেঁচে থাকি
তাকে যত্ন করে আবেগ দিয়ে আঁকি।
তার প্রাণের সুরে বাঁধা আমার প্রাণ
তার গানের সুরে সুর যে পেল গান।
তার উথলে ওঠা আবেগটুকু নিয়ে
ওই ঝর্ণা ছোটে পাহাড় চিড়ে দিয়ে।
তার শক্তি কত বলতে পারে কেউ?
সে তো রোজই বলে সাগর সেঁচা ঢেউ।
তাকে আগলে রাখি মাথায় করে চলি
তার সপ্ত সুরে প্রাণের কথা বলি।
তার চলার পথে আবেগ রাশি রাশি
তাকে আদর করি, তাকেই ভালবাসি...

****-----------------------*****************------


 *আহাম্মকি*

মগজে তালাচাবি দিয়ে
বুকের সব লাল গোলাপগুচ্ছ
বাগান উজাড় করে তোমায় দিলাম।


কানাকড়ির চেয়েও কম দামে
বিকিয়ে দিলাম নিজেকে।


সব বাঁ পায়ে মাড়িয়ে মশমশিয়ে চলে গেলে।


বুকের গভীরে বিঁধে থাকা পেরেক
উপড়ে ফেলতে না পেরে,
নির্জন সমাধিতে আজও একা শুয়ে।


আজকাল কেউ স্ফটিক চাইতে এলে
তাকে কাচের টুকরোও দিতে পারি না!


______________________





 *শূন্যতা*

দিনকে ফাঁকি দিতে পারলেও
রাতের কাছে হেরে যাই রোজ!
স্বপ্নেরা সব মুখ থুবড়ে পড়ে
চোখের জলে বালিস ভিজতে থাকে।

তারপর খুব ক্লান্ত হলে,
গভীর ঘুমে পাই মৃত্যুর স্বাদ।

সারারাত জ্বলতে-জ্বলতে
রাতের তারার সলতে ফুরিয়ে যায়।

আবার একটা দিন...
আবার ছোটা শুরু...





______________________



 *মরণের পার থেকে


কীদোষে ছিলাম দোষী,কীদোষ আমার?
অনেক ভেবেছি তবু সদুত্তর নেই,
গোলাপ ফুলের মত নতুন কিশোরী
স্ত্রীলিঙ্গ শরীরে ছিল, দোষ ছিল এই!

মানুষেরা পশু নয়, সেকথা জেনেই
ধর্ষিতা হতে হতে কেঁদেছি অঝোর,
আমার মতোই কত কেঁদেছে কিশোরী
তবুও তো রাত কেটে আসেনি গো ভোর।

অনেক কাঁদার পরে, অবশেষে থেমে
নিথর আমার দেহ কফিনে শোয়ানো;
মোমবাতি মিছিল হবে ! হাঁটো মিছিমিছি,
সোহাগ দেখাতে কিছু ফুল কিনে আনো।

যেদেশে ধর্ষণ, খুন আর অনাচার
অসভ্য সেদেশ ছিল ঠিকানা আমার!

লেখক পরিচিতি :-

নাম- সুদীপ্ত বিশ্বাস,জন্ম ১৯৭৮,
কবিতা লিখছেন ১৯৯২ সাল থেকে।কবিতার প্রথম প্রকাশ  ২০১০ সালে। কবির কবিতা প্রকাশিত হয়েছে শুকতারা, নবকল্লোল, উদ্বোধন, কবিসম্মেলন, চির সবুজ লেখা, তথ্যকেন্দ্র, প্রসাদ, দৃষ্টান্ত, গণশক্তি ইত্যাদি বাণিজ্যিক পত্রিকা ও অজস্র লিটিল ম্যাগাজিনে। কবিতার আবৃত্তি হয়েছে আকাশবাণী কলকাতা রেডিওতে। ঝিনুক জীবন কবির প্রথম বই। ২০১০ এ প্রকাশিত হয়। এরপর মেঘের মেয়ে, ছড়ার দেশে, পানকৌড়ির ডুব, হৃদি ছুঁয়ে যায়, Oyster Life বইগুলো এক এক করে প্রকাশিত হয়েছে। দিগন্তপ্রিয় নামে একটা পত্রিকা সম্পাদনা করেন। কবি পেশাতে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেট। নদিয়া জেলার রানাঘাটের বাসিন্দা। শিক্ষাগত যোগ্যতা বি ই,এম বি এ, ইউ জি সি নেট। স্বরবৃত্ত, অক্ষরবৃত্ত ও মাত্রাবৃত্ত তিন ছন্দেই কবিতা লেখেন।বড়দের কবিতার পাশাপাশি ছোটদের জন্যও কবিতা লেখেন।


মাটি : শক্তি পুরকাইত


এখনও মাটির কাছে দাঁড়াই
এখনও গ্রামে গ্রামে ঘুরি ।

সকল সময় আমাদের পূর্ব পুরুষেরা
বলতেন , মাটির কথা
মানুষের কথা ।

আকাশের সিঁদুরে মেঘ দেখলে
চোখের সামনে ছল ছল করে
নদীর ভাঙনে ভেঙে যাওয়া ঘর ।

আমার মায়ের সেই ডাক
আমি কী এতই সহজে
ভুলে যাব !

বহু দূর থেকে শোনা যায়
কার কুঁকিয়ে ওঠার শব্দ

অথচ প্রতিনিয়ত লাঙলের ফলায়
এ ফোঁর ও ফোঁর করে
     মাটি ।

চির অনন্ত ধন : বিপ্লব গোস্বামী



আমি ভগবানকে দেখেছি ছবিতে
দেখেছি অনেক মূর্তিতে;
বাস্তবে এক ভগবানকে দেখেছি
পাশে পেয়েছি সর্বক্ষণ ;
সাথে পেয়েছি বিষাদে,ফূর্তিতে।
যেদিন হাঁটতেও শিখিনি সেদিন
হাতে ধরে মোর ;
পথ চলা শিখিয়েছেন তিনি।
আজো অফিস হতে যদি
বাড়ি ফিরতে দেরি হয়;
বার বার কল করেন তিনি।
অসুস্থ হলে যিনি হাজার বার
বলেন ডাক্তার দেখাতে ;
শত বার বলেন তিনি
নিয়ম মেনে ঔষধ খেতে।
যিনি প্রেরণা যোগান অহরহ
মম প্রতিটা কাজে ;
যার পরিচয়ে পরিচিত আজ
এ পৃথিবী মাঝে।
তিনি আর কেহ নন,,,
একান্ত শান্তির আশ্রয় ;
তিনি জন্ম দাতা পিতা
চির অনন্ত ধন।