নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

জীবনযাত্রার বৈপরীত্য : অমিত কুমার জানা




জীবনব্যাপী কেউ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে,
কারো বা আলস্যে সময় কাটে অবহেলে।

কারো খাবার প্রতুল,নিঃসংকোচে ছুঁড়ে ফেলে অতিরিক্ত,
কেউ খাদ্যহীনতায় শুষ্ক প্রাণ,উদর রিক্ত।

কেউ অতিভোজনের মেদ ঝরাতে জিমে যায় নিত্য,
কোন জীবনযোদ্ধা নিত্য পরিশ্রম করে অকথ্য।

কারো সারাক্ষণ গাড়িতে চড়ে সময় সানন্দে অতিবাহিত,
কারো জীবনপথের কাঠিন্যে পদযুগল ক্ষতবিক্ষত।

অর্থের বলে বলীয়ান কেউ করে বেহিসেবি অপচয়,
সামান্য অর্থ উপার্জনের তরে কারো সর্বদাই হয় জীবনের ক্ষয়।

লিফটে চড়ে কেউ আসে যায় ইমারতের বহুতলে,
কারো ছোট্ট স্বপ্ন ফুঁপিয়ে কাঁদে কোন্ সে অতলে।

আভিজাত্যে ভরা পোশাক পরিহিত বাবুরা হেঁটে যায় রাজপথে,
ক্ষুধার তাড়নায় অপেক্ষমাণ ভিখিরি ধূলো মাখে ফুটপাতে।

চাকরির খোঁজে উদভ্রান্ত উচ্চশিক্ষিত দরিদ্র বেকার,
অশিক্ষিত নেতার অবাধ শোষণ,সঙ্গে পদাধিকারের হুঙ্কার।

সত্যের পথযাত্রী কেউ আজীবন ধরে রাখে সততা,
সব পেয়েও কেউ বা প্রতিনিয়ত করে মানবতার হত্যা।

অবাক এক এলা খেলোয়াড় : অনিন্দ্য পাল


আড়ামোড়া ভাঙতে ভাঙতে যখন কমে আসে
রাতের আয়ু, নিদ্রা ছেড়ে ফ্যালে একের পর এক
রাতের পোষাক, ওদিকে ঘুলঘুলি পেরিয়ে পৌঁছায়
সবুজ আলো - বিনা অনুমতিতে ছুঁয়ে যায়
নিষিদ্ধ অঞ্চল, ঠিক তখনই আমার বুদ্ধিকোটরে
কিলবিল করে বেঁচে ওঠে, মর্গের ড্রয়ারে শুয়ে থাকা
সমবয়সী অপমান ...
তারপর,
চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে চলে সেই সব ফুৎকার
যেগুলোর হুকুমে কালো হয়ে যায় রোজ ভোরবেলা
অন্ধকার বাড়তে বাড়তে যখন দুচোখের গহ্বরে
ফুটে ওঠে মৃতভোজী কৃষ্ণ গহ্বর
তখন আবার এক মহাজাগতিক বিস্ফোরণ
আমাকে পৌঁছে দেয় শূন্য সময়ে
কাউকে পাই না সেখানে
কোন মুখ নেই
অবয়ব নেই
ভালোবাসা নেই
ঘৃণা নেই
জন্ম নেই
মৃত্যুকেও দেখিনা শরীরে বা অশরীরে
শুধু আমি
একা আমি আর সমস্ত না থাকা অথবা
বর্তমান শূন্যতা ঘিরে ধরে চারধারে
ভেঙে পড়ে আমার ভিতরে
মিশে যেতে থাকি স্থান-কাল সহবাসে...

তারপর কখন জ্বলে ওঠে খিদে
বেজে ওঠে অশালীন ডোরবেল
ডেকে যায় বাজারের থলি
আবার ঘুমিয়ে পড়ে সমস্ত কৃষ্ণগহ্বর এবং
অসীম শূন্যতা

তখনই, ঠিক তখনই জেগে উঠি আমি
জীবনের চোরকাঁটা ভরা মাঠে
রেফারীর বাঁশি শুনে তখন আমি
অবাক খেলোয়াড় ...

শরতের চিঠি: নির্ঝর চৌধুরী



প্রিয়তমা,
জানালা খুলে দ্যাখো, নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ভাঁজে লিখা শরতের চিঠি..
চিঠিতে তোমাকে পরাবো বলে শরতের আকাশ থেকে কাশ কাশ শুভ্রতা দিয়ে সাজানো একটি জ্যোৎস্নাত মেঘের শাড়ির কথা রয়েছে....
শরতের জলসায় জমবে জ্যোৎস্না সম্ভোগ,সাঝ সকালে তোমার নিশি কালো দীঘল চুল থেকে ঝরে পড়বে শরতের শিশির বিন্দু শত জনমের তৃষ্ণা মেটানোর দায়।
শরতের আকাশে মেঘের কোণঘেঁষা যে বিন্দু বিন্দু বেদনার জলকণা তা মুছে ফেলার অভিপ্রায়ে এক জোনাকিঘেরা সন্ধ্যায় পৌঁছে যাবে তোমার ঠিকানায় আমার অলিখিত প্রেম।
উত্তরের ছলে চিঠি দিও......


নতুন প্রজন্ম: সুমিত মোদক



হাজার বছরের মিথ খাজুরাহর মন্দির গাত্রে ;
প্রেয়সীর হৃদয়ে ভাদ্রের  বৃষ্টি আর রোদের খেলা ;
আমি বার বার ফিরে আসি মৃত্যুর মুখে থেকে ;
অকালবোধনে  সময়কে বসিয়ে রাখি অষ্টমীর সকালবেলা  ।
#
একে একে সকলে পার হয় বাঁশের সাঁকো ;
মনুষত্ব মেরে মানুষ হওয়ার অলীক চেষ্টা ...
মৃতপ্রায় নগরী থেকেও উঠে আসে ওমকার ধ্বনি ;
নতুন প্রজন্মের আপ্রাণ লড়াই বাঁচাবে এ দেশটা ।

ছলনার শোপিচ: শাহিন রায়হান


.
প্রতীক্ষার জানালায় এখন আর সোনালী সূর্যটা দেখিনা
অবিরল বৃষ্টিতে ধুয়ে গ্যাছে গাছের সবুজ
তবু পুরনো ইচ্ছেগুলো নিঃশব্দে কড়া নাড়ছে
সমাধিত প্রেমের ঘুমন্ত দরোজায়।
.
ডুবে যাওয়া চাঁদ অভিযাত্রীর মতো এক মনে হেঁটে চলেছে
অবাধ্য অন্ধকার মাড়িয়ে নিভৃত ভালোবাসার নিরুত্তাপ সীমান্তে।
যেখানে বিরহী কাঁটাতার বিভক্তির চিহ্ন এঁকে দিয়েছে প্রিয়তম মরুদ্যানে।
.
অস্ফুট ভালোবাসায় জেগে ওঠা বকুল গাছটা এখন আর নেই
কাঁকর রঙা মালাটা সেই কবে ছিঁড়ে গ্যাছে
পাঁজর ভাঙা দূরন্ত বাতাসে।
.
শুধু পড়ে আছে কুয়াশা কাতর মৃদু অন্ধকারে রক্তাক্ত ছলনায়
তোমার ফেলে যাওয়া হতভাগ্য পুরনো শোপিচটা।

রান্নাঘর : অভিজিৎ দাস কর্মকার



ক.
দুটো ইট পাশাপাশি লম্ব ভূমি দিয়ে
অতিভুজ পাশে ডিপথেরিয়া ভাইব্রিসির
ডগায় নিয়ে বিড়াল মাসি মাছের
পিটুইটারি বঁটিতে কাটে।
খ.
টম্যাটো আর সাবান গুড়ির ঝগড়ায়
অসমান বৃত্ত
রান্নাঘর কোণার পাশে প্যাকেট দুধ ল্যাকটেট  ক্যাপশুলে বৃত্তচাপ আঁকে।
গ.
বাজারের ঝুড়ি আর ঝাঁটার মধ্যে দূরত্ব ব্যাপার থাকলেও সমিকরণ থেকে কিছু
অংক কথায় ত্রিভুজ চতির্ভুজ সরলরেখায় কাগজে প্রমানিত সমান্তরাল।
ঘ.
অ্যালুমিনিয়াম ফয়েলে চাপ তাপ দিয়ে ওভেনবাবু উত্তেজিত হোতেই পদার্থ গুলো জামা-প্যান্ট খুলে ব্যারোমিটার ফেটে

ঙ.
এদিকের পেরেক থেকে উত্তর দেওয়ালের
দড়ি চার দেওয়ালকে কর্ণ বলে।দরজা তখনও অতিভুজ ভেবে বিসমত্রিভুজে আলকাতরা মাখে।
চ.
স্টীলের মগে পিতলের চামচ-গোঁদলের কোঁদল লাগতেই শব্দ-তরঙ্গ-লুপ নীচের রোয়াকে কাল্পনিক সরলরেখা টানে।
ছ.
নোনা কৌটো হলুদবাবুকে আলাদা ফ্লোরে দিলেও জিরেমশাই কু-মন্থরা। গরম ঘিলুতে পাঁচফড়ং নাড়াতেই গায়ে ফোস্কা ফোটে।
জ.
নীল ডাব্বার চাল ডেকচির নিকেল জলে ফেনাতেই ফুড ভ্যালু মুড়ি ভাজা হয়ে নাচে। টিনের কৌটোর স্পাইনাল কর্ডে সাঁতরে বেড়ায় বেরিবেরি।



ঝ.
বেসিন কলের মুখে তাকিয়ে প্রেমালাপ দিতেই কল থেকে বেরিয়ে এলো জল।
জল সেলাইন ওয়াটার নয়। কলের প্রেম নিবেদনে কিছু কুলকুচি শব্দই মিনারেল হয়ে বেসিনের ঠোঁটে লেপ্টে যায়।

ঞ.
অনেক জ্যামিতিক ঝনঝনানিতে বাসনের রেক মাথার পেরেকের সাথে চু-কিৎকিৎ তীব্রতার আলোকবর্ষেই ভেঙে যায় পাঁচটি পুরনো সম্পর্ক।

ট.
রোয়াকের উপর ফাঁকা বিসলেরি বোতলের
মধ্যে রেশনের কেরোসিন সাপ্তাহিকী পড়ে চোদ্দ কেজির সিলিন্ডারে আজ গ্যাস হয়েছে অ্যাকুয়াটাইট আড়ং-এ জোয়ান ঢেকুর তোলে।
ঠ.
ডাইনিং টেবিলে পাতা কাগজ পড়াশুনোতে বর্ণমালা ঝ ট প ট উল্টে নিতেই থালা বাটি গ্লাস বাবুদের বিরক্তিতে নুনদানিটি গড়িয়ে পড়লো,ছড়িয়ে গেলো গনতন্ত্র ,নোনা...