আকাশ যখন মেঘকে সাথী করে নিয়ে এলো,
তখন চারিদিকে কত আনন্দ!
নতুন জীবন পেলো ওরা।আকাশ মেঘকে বুকে করে আগলে রাখলো,
আর মেঘও যেন আকাশের বুকে ভেসে গেলো।এইভাবেই হাসিতে খুশীতে দিব্যি সুখে দিন কেটে যায়।
হঠাৎ একদিন আকাশের মুখ ভার,
মেঘের মনেও কালো ছায়া।
ওদের মধ্যে একটু দূরত্ব বাড়লো--
মেঘের কোলে বৃষ্টি এলো যে!রিমঝিমিয়ে নেচে বেড়ায় কাজলা সেই মেয়ে।
তার নাচের তালে তালে গাছপালাও আনন্দে নাচে।একদিন হঠাৎ দেখি বৃষ্টির সাথে ভাব হয়েছে রোদের।
তারপর....
রোদ আর বৃষ্টির সে কি লুকোচুরি খেলা !এইভাবেই কেটে যায় বাদলবেলা।
আকাশ-মেঘ-বৃষ্টির ভালোবাসা ভরা দিন।।
নোটিশ বোর্ড
ভালোবাসার গল্প : তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়
বারি ধারা ": রাসমণি সাহা দেবনাথ
গ্রাজুয়েট, শ্যামবর্ণা মধুলীণা এবার ইতিহাস নিয়ে এম এ তে ভর্তি হয়েছে কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে।গায়ের রং এবং চেহারার জন্য ছোট থেকেই তাকে অনেক কটুক্তি শুনতে হয়েছে, এখনও শুনতে হয়।
তার দ্বারা নাকি জীবনে কিছুই হবে না... পারিপার্শ্বিক মানুষ গুলোর ভারি অদ্ভুত ধারণা। এ জীবনে তো তার বিয়েটাও হবে না।যেমনি তার গড়ন, তেমনি তার রূপ রঙ ! কে করবে তাকে বিয়ে ?...আজকের যুগে দাঁড়িয়ে মানুষ কেন যে এমন মত পোষণ করে, মধুলীণা নিজেও সেটা বুঝতে পারে না।যৌথ পরিবারে বড় হয়েও সে খেয়াল করেছে, তার পরিবারের অনান্য সদস্যরা যারা তার খুব কাছের, পরম আত্মীয়, তারাও আজকাল তাকে হেয় করতে পারলে বেশ খুশি হয়।তার মনের কষ্ট গুলো কবিতার মালা হয়ে উদ্ভাসিত হয়।তার লেখনী শৈলীর গুণে সেই কবিতা গুলো যেন বাগ্ময় হয়ে ওঠে।মধুলীণার লেখার নেশা খুব ছোট্ট বেলা থেকেই।বিভিন্ন পত্রিকায় তার বেশ কিছু লেখা বেরিয়েছে, যেটা বাড়ির কেউ জানে না।
এবার গরমটাও পড়েছে সাংঘাতিক।আজ সকাল থেকেই কেমন যেন অস্বস্তি দায়ক অবস্থা।আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে বিগত দশ বছরের রেকর্ডকে ছাড়িয়ে গেছে এবারের গরমের দাপট।"ফণী"-নামক ঘূর্ণিঝড়ের দরুন বায়ুমণ্ডল আরও শুষ্ক হয়ে উঠেছে।শ্রাবণ মাস আরম্ভ হলেও বৃষ্টির হাত ধরে বর্ষার দেখা নাই।যেন মেঘরাজের সাথে আড়ি করে অভিমানী বৃষ্টি হয়েছে নিরুদ্দেশ।
ড্রয়িং রুমে টিভি চ্যানেলে সবাই বিশ্বকাপ খেলা দেখতে মগ্ন।এমন সময় ল্যাণ্ড ফোনটা বেজে উঠল।পুরো রিং কমপ্লিট হয়ে যাবার দু মিনিট পর আবার বেজে উঠল।অবশেষে পরিবারের অভিভাবক তথা সকলের দাদু শ্রী ক্ষিতিশ রায় ফোনটা রিসিভ করলেন।কিছু ক্ষণ পর দাদুর বাজখাঁই গলার স্বর শুনে সবাই চমকে উঠে।কী ব্যাপার?
দাদুর ডাকে মধুলীণাও গুটি গুটি পায়ে আসতেই, ক্ষিতিশ তাকে দু হাত ভরে আশীর্বাদ করলেন।বললেন, যে মেয়েটির জন্য পাড়া প্রতিবেশী, পরিবারের সকলের অবজ্ঞা আর তাচ্ছিল্য.... সেই মেয়েটিকেই সেরা মহিলা কবির সম্মান দেওয়া হবে রবীন্দ্র সদনে।কোলকাতার একটি নামী প্রকাশনা সংস্থা তার একক কবিতার বই প্রকাশ করবে এবারের বইমেলায়।
শ্যামবর্ণা মধুলীণার দু'চোখে আনন্দের ঘন শ্রাবণ ধারা।
বাইরেও তখন হঠাৎ বিদ্যুতের ঝলকানি ! ড্রয়িং রুমের জানালার সার্সিতে এল বৃষ্টির ঝাঁট।শুরু হল বহু কাঙ্খিত মুষল ধারায় বৃষ্টি।
স্বপ্ন ভঙ্গ : বীরেন্দ্র নাথ মহাপাত্র
হঠাৎ দেখি বিকেল বেলায়পশ্চিমেতে মেঘ জমেছে,বলতে বলতে নামলো বৃষ্টিগা ভিজল বলে মা বকেছে ।একটু বাদে বৃষ্টি থামলোমোদের গাঁ থেকে,দেখতে পেলাম উইপোকাগুলিস্বপ্ন ভরা ডানা মেলেছে ।ক্ষণিক আনন্দ গেল মিলিয়েউড়ার স্বপ্ন ভেঙ্গে গেল,ডানা খসে পড়লো সবেপাখি কিছু তাদের খেল ।আবার যারা বাঁচলো সবেআশা আলো দেখে ছুটে এলো,বাড়ীর মেয়েরা রেগে মেগেস্বপ্নের পাখিকে ঝেটিয়ে বিদায় দিলো ।
মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো : - অমিতাভ মীর
মনখারাপের বৃষ্টি যখন নামলো চোখের পাতায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা জাগায়।
কাজল মেঘের অভিমানে আকাশ পাগলপারা,
ঝমঝমিয়ে মাটির বুকে নামলো শ্রাবণধারা।
মাটির দহন নিভলো যখন শ্রাবণ ধারায় ডুবে,
আমার বুকের সুপ্তসুখ তখনই গেল উবে।
ছলছলিয়ে চোখের আকাশ ঝরছে নিরবধি,
কলকলিয়ে উঠলো দুলে বুকের গহীন নদী।
সেদিন এসেছিলো পাশে কেউ গভীর ভালোবেসে,
ভুল বুঝে সেও গেল চলে আনমনে বাঁকা হাসি হেসে!
গরম কফির ধোঁয়ায় স্মৃতির আবেশ জুড়ায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।
অঝর ধারার বর্ষণমুখর এক উদাসী সন্ধ্যায়,
ভেজামন নিয়ে কেউ এসেছিলো আমার আঙিনায়।
মজেছিলো দু'টি ঠোঁট গরম কফির কাপের ছোঁয়ায়,
বুকের নদীর পাড় ভেঙেছিলো সেই শ্রাবণ সন্ধ্যায়।
তারপর কেটে গেছে অনেক বর্ষণমুখর শ্রাবণ,
বুকের নদীর পাড় ভাঙে আজো চোখের প্লাবন।
আজ মন বেসামাল মনখারাপের শ্রাবণ সন্ধ্যায়,
ঝুলবারান্দার শার্শিতে বৃষ্টিকণা স্মৃতিকাঁটা বেঁধায়।
আষাঢ়ে কথা : কিশলয় গুপ্ত
অবশেষে বৃষ্টি নেমে এলো-
নোংরা ঘামের অত্যাচারের পরে,
আষাঢ় কথা নিন্দুকেরাই খেলো;
তবু ওম রেখেছি তোমার একা ঘরে।
নোংরা ঘামের অত্যাচারের পরে,
আষাঢ় কথা নিন্দুকেরাই খেলো;
তবু ওম রেখেছি তোমার একা ঘরে।
বুকের সাথে বুকের গোপন কথা,
হাত রেখেছে হাতের উপর জল;
আর কিছু নয়- মেঘের বর্বরতা
সময় ভুলে করেছে দুর্বল।
হাত রেখেছে হাতের উপর জল;
আর কিছু নয়- মেঘের বর্বরতা
সময় ভুলে করেছে দুর্বল।
নজর ধরে সরলরেখায় চোখ-
পায়ের উপর পা রেখেছে কাল!
আজ ভুলে যাই গতকালের শোক,
লোকের কথায় ফালতু বাওয়াল।
পায়ের উপর পা রেখেছে কাল!
আজ ভুলে যাই গতকালের শোক,
লোকের কথায় ফালতু বাওয়াল।
অবশেষে বৃষ্টি এলো ঘামে-
এবার তুমি দেবে নরবলি?
মোমবাতি আজ জ্বলুক আমার নামে
ভেজা হাঁসি দিক বদনাম গলি।
এবার তুমি দেবে নরবলি?
মোমবাতি আজ জ্বলুক আমার নামে
ভেজা হাঁসি দিক বদনাম গলি।
বর্ষা রাণী : বিপ্লব গোস্বামী
সাজিয়াছে আজি বর্ষা রাণী
মাতিয়াছে আকাশ ধরণী ;
অঝর ধারায় ঝরিতেছে বারি
বাহিয়া মেয়ের তরণী।
আনন্দে আজি মাতিয়াছে পাপিয়া
মুখরিত কানন কূজনে ;
গগনে বনানীতে বড় ভাব আজি
সীমান্তে চুমিছে দুজনে।
পুষ্পে আজি ভরিয়াছে কানন
শ্যামলী বালা হরষা ;
তটিনীতে আজি ভরা যৌবন
নামিয়াছে আজিকে বরষা।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)