নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

না-মানুষ, মেয়েমানুষ :- শ্যামল কুমার রায়।





তুমি আমাকে কিভাবে চেনো?
নারী হিসেবে? ধুর!
সে অস্তিত্ব তো কবেই হারিয়েছি।
তুমি চেনো আমায় লোভাতুর চোখে,
তোমার পৌরুষের মল্লভূমি আমি।
তোমার উল্লাস আমার শীৎকারে
অথচ, বড়ো নিশ্চল তুমি আমার চিৎকারে।
কর্ণ থেকে কংস, রাবণ থেকে বাছাধন
আমার এলোচুলে সদা উদ্যত তোমার হাত,
চুপ করাতে হবে না আমায়?
বাঁজা, বাজারির তকমা? গা সওয়া হয়ে গেছে।
গার্হস্থ্য হিংসার শিকার আমি।
ভাবতে অবাক লাগে, বড় অবাক লাগে!
আমার শত্রু অনেক-
গর্ভধারিণী থেকে কটূভাষিণী
সৃষ্টিকর্তা থেকে সম্ভোগ কর্তা।
নির্যাতিত আমি নানা রূপে, নানা ভাবে,
কেউ কখনো মানুষ ভাবেনি।
কোথাও পৌরুষের ফল
কোথাও বা পৌরুষের কারণ।
সংসারে তো আমি সর্বংসহা!
কখনো আমি শুচি, কখনো অশুচি,
কখনো বা আমি ঢাকের বাঁয়া।
চরম অস্তিত্ব সংকট আমার
স্বনির্ভর হয়েও চরম সংকটে।
কেমনে করব পার- ভব বৈতরণী এবার?
              

অপেক্ষার আষাঢ় :- বিকাশ দাস (বিল্টু )



আষাঢ়ের যৌবনের কথা ভোলা যায়? কাদা মেখে আজ কাদাই খাই......

       অপেক্ষার অভ্যাস সহজাত, ভোলা যায়?

ঝাঁপির অপেক্ষায় তাকিয়ে থাকি.......
                      ভেজা চোখে পায়ের জোঁক নামাই

এখনও অনেক রোয়া গাড়া  বাকি..

                               

ভালোবাসার মহাক্ষেত্র :রুদ্র সুশান্ত



তোর চশমা পরা সজল চক্ষের বাইরে রৌদ্রাগ্নিতে পুড়ে যাচ্ছিলো শহর, আমি নিতান্ত বোহেমিয়ান সুরে বাঁশী বাজাচ্ছিলাম শহরের কোণে বসে। তোর ভালোবাসার রক্তকোষগুলো রঙ মেখে দিয়েছে আমার সবকটি শিরা-উপশিরায়,
এমনি অনুভূতির নিউরোনগুলোতেও।


শহিদ মিনারের লাল বৃত্তটির উপর বসে একরাশ স্বর্গীয় সুখ নিয়ে কীর্তন গেয়ে গেলো একটি ফিনিক্স পাখি- কারণ পাখিটি বুঝে গিয়েছিল দেবীর আগমন ধ্বনি।
আকাশ বাতাস সমগ্র ত্রিভূবন সাক্ষী স্বরুপ জ্বালিয়ে দিলো ভালোবাসার আলো-খচিত হীরক দণ্ড অবশেষ।
যতোবার তোর নয়নে ভালোবাসার নীল প্রজাপতি উড়েছে ততোবার ভালোবাসা পেয়েছে ঐশ্বরিক ছোঁয়া, তোর ভালোবাসার বাহুডোরে গোলাপ বৃষ্টি করে দেবতারা।


শতো জনমে শতোবার পৃথিবী চোখ তুলে থাকালে একটি মুখ দেখেছে বারবার, তোর বিশুদ্ধ মুখশ্রী। যেখানে লেখা আছে ভালোবাসার গল্পগুলো, পৃথিবীর বিবরণ, নীল পদ্মের ইতিহাস, অক্সিজেন তত্ত্ব ও একজন প্রেমিকের যাপিত সংসার।


তোর রহস্যময় নয়নদ্বয়ে ঈশ্বর লিখে রেখেছে মানব জাতির ইতিহাস,
দেবীর নয়নে নিমজ্জিত হয়ে  প্রেমিক পুরুষ হুংকারে ছেড়েছে সর্বনাশ।


তোর চশমার কিনারায় লেগে আছে প্রেম, জনম জনমে যুক্ত হবার আহ্বান।


তোর ভালোবাসা আনবিক শক্তিসম্পন্ন অক্সিজেন বোমা, বেঁচে থাকার বিশুদ্ধ আর্তনাদ, জোছনার পরিপূর্ণ চাঁদ, কবিতার আত্মা আমার লুকোচুরির সুর।


মাঠের পর মাঠ সাম্রাজ্যবাদীরা দখল করে নিলেও আমি শুধু তোরে দখলের আশায় নির্বাক থাকবো, তোর কানে গুজে দিবো আমার নিদারুণ স্পর্শ।

আমার ছন্দের বৃক্ষরাজি তোর ধ্যানে মগ্ন হয়ে স্তুতি করে, দেবী তোর আগমনে এখানে বসন্ত হয়, সবুজ হয় সবকিছু আবার, ফুল আর ফলে ভরে যায় আমার হৃদয়,  পত্রবিল্লব, পুষ্প আর দূর্বাদি দিয়ে চলে তোর আরাধনা।


ভালোবাসার আলিঙ্গনে সহস্র বছরের কবিতার সব পঙক্তি তোর নামে লিখে দিয়ে আমি হবো পৃথিবীর মরুকবি।


একান্ত ব্যক্তিগত : অনিন্দ্য পাল


কোনো কোনো দুঃখ অহল্যা পাষাণীর মত চেপে থাকে
বুকে, সবটুকু একাকিত্বের শুকনো কুয়োয় হাবুডুবু খেতে খেতে মনে হয় আমার জন্য বরাদ্দ নেই বোধহয়
দেবতার টুকরো। পাষাণের মৃত্যুভয় নেই, তবু ঘোর কৃষ্ণ এক রাতে কেঁপে ওঠে অস্তিত্ব, জলজ প্রতিবিম্বের মত অস্পৃশ্য মনে হয় আমার 'আমি'কে। ছুঁতে চাই যখন, আষ্টেপৃষ্ঠে ধরতে চাই যখন, চারিদিকে চেয়ে দেখি, অসংখ্য মিথ্যা ঝুলে আছে নিরুচ্চার বাদুড়ের মত। অথচ দুঃখ এই প্রথম নয়, সময়ের মর্গে থরে থরে শুয়ে আছে সেই সব মনোগত শব। তবু কোন কোন কাঁটা আজীবন গেঁথে থাকে বুকে, কান্না শুকিয়ে জমে থাকে নিষ্পাপ তুহিনের মত।

এ আমার ভুল নয় :অথৈ দেবনাথ (রিনা)



জীবনের এই সঙ্কির্ণতার মাঝে,
 তোমায় যদি বৃহৎ আকারে কল্পনা করি।
এ আমার ভুল নয়,,
যেমন ভুল নয়,
ধুপের অমীয় সুধায় তোমার শরীরের ঘ্রাণ আমি অনুভব করি।
যেমন ভুল নয়,
 গোধুলী লগ্নে মঙ্গল প্রদীবের নিয়ন আলোতে,,
তোমার প্রতিচ্ছবি দেখে আমি বিভোর হয়ে রই।
যেমন ভুল নয়,  রুদ্রাক্ষরের মালার একশত আটটা,  পুঁথির প্রতিটা পুঁথিতে,, নিরাকারের মাঝে তোমার সাকার রূপ আমি স্পর্শ করি।
ঠিক তেমনি ভুল নয়,
তোমার অস্তিত্বের সন্ধান না পেয়েও,
তোমায় স্বয়ংসম্পূর্ণ রূপে,,
আমার মন কল্পনায় প্রতিষ্ঠা করা।

সুপ্রভা-তুমি নেই বলে :-আল-আমীন আপেল



তুমি  নেই বলে-
ষড়ঋতুর বাংলাদেশ আজ
চার ঋতুতে বদলি হয়েছে।

তুমি নেই তাই-
নবান্ন উৎসব হারিয়ে গেছে।

তুমি নেই বলে-
কান্নামাছি, ডাঙ্গুলি খেলা
হারিয়ে গেছে।

তুমি নেই বলে-
গাজী মিয়ার বস্তানি
হারিয়ে গেছে।
চম্পুগান, ঘেটুগান
হারিয়ে গেছে।

আর আমার চোখ দুটি,
অজস্র বছর ধরে-
তোমায় একটা বার
দেখবে বলে অপেক্ষায় আছে।