নোটিশ বোর্ড
আত্মবিলাপ.. পিয়াষা মহলদার
সুখটা তো তার কাঙ্খিত
ভালো থাকার তরে
তবু সে আজ বঞ্চিত
স্বপ্ন ভাঙার ঝড়ে ।
খেলছে তবু জীবন খেলা
ভাঙা গড়ার তালে
সুপ্ত আছে গল্প মেলা
হৃদয় সেঁচা জলে।
কেউ রাখেনি খোঁজ
কেমন করে হারিয়ে গেছে
যত্নে গড়া স্বপ্নগুলো রোজ।
ভীষণ কঠিন ক্লান্ত দুটো চোখ
হারিয়ে গেছে জলছবিরই রঙ
আজ তো তার বজ্র কঠিন বুক
কল্পনাতেও আজ পড়েছে জং।
জীবন মানে এক অঙ্কের নাটক
অভিনয়টা নিখুঁত করা চায়
সত্যিগুলো রঙের নীচে আটক
ভরঙ পাবে সবার কাছে সায়।
তাইতো তার একলা চলার পথে
তার শূন্য ক্যানভাসে
কেউ থাকেনি সাথে
ঈশ্বর আর বুভুক্ষ মানুষ.... বিকাশ দাস (বিল্টু )
বেদেনীর মেয়ের চালধোয়া হাতে নতুন সকালের এক ফালি রোদ
দু টাকা কেজি দরের চালের ফেন ভাতে একটা নতুন সূর্যোদয়
লাল লাল মোটা ভাতে হার না মানা বেঁচে থাকার লড়াই
চা পাতার আনাচে কানাচে ওল আলুতে, রক্তের শিরায় শিরায় বাঁচার রসদ
ফেন গড়াগড়ি খায় ডাস্টবিনের ডাম্পার থেকে, ঝাঁকড়া চুলের শিশুটি বোতল কুড়িয়ে ঘুমিয়ে পরে 13 নাম্বার প্লাটফর্মে, একটু ফেন'ই হতো যদি রাতে.....
হারিয়ে যাই দাবী আর ন্যায্যর কাছে
থমকে যাওয়া কিছু কথার উত্তর বড্ড দোটানা
"ঈশ্বর "মার খায় "ঈশ্বরের" হাতে গড়া "অসুর সন্তানের" কাছে
শানিত কাঁচির ছোঁয়ায়, "ঈশ্বরের" হাতের পরশে দগদগে ক্ষত মোলায়েম হয়
তবুও "ঈশ্বরের হাত "বেঁধে ঈশ্বর কে ভুলি
ঈশ্বর মুখ ফিরিয়ে প্রলয়ের অপেক্ষায়....
বুভুক্ষ মানুষেরা আকাশের দিকে, ঈশ্বর যদি কথা শোনে
বেদেনীর হাতে সাদা কাফন, কুকুরের খাওয়া ফেনে সভ্যতার ইতিহাস কথা বলে
রোজনামচা সভ্যতা চোখাচোখি করে
চলেছি কোন পথে ... রাণা চ্যাটার্জী
যত বেশি স্বাধীনতা তত দেখছি এর অপব্যবহার।চায়ের দোকানে এঁটো বাসন মাজা ছেলেটার বাড়িতে ভাত ফুটানোর জোগাড় আছে কিনা ঠিক নেই,হকার দাদাটার কাল কি করে চলবে চিন্তায় নেই কপালে ভাঁজ কিন্তু পকেটে এন্ড্রয়েড মোবাইল আর ডেলি ফ্রি ডাটা মজুত। হোক আটা দামি বয়েই গেল,নেট দুনিয়ায় রগরগে ভিডিওর প্রতুলতা বুঁদ করে রেখেছে শিক্ষিত অশিক্ষিত ছোট বড় সকলকে। প্রকাশ্যে ঘুরছে যৌন উস্কানি ভিডিও রমরমা।অশ্লীলতার মোড়কে পণ্য জাত হচ্ছে নারী শরীর।এ যেন মগের মুলুক স্বাধীনতা,যখন যাকে খুশি যা খুশি ভাবে করায়ত্ত করার প্রচেষ্টা আর বাধা পেলেই নোংরা তকমায় বিদ্ধ।
কি দেখতে হয় আর কি দেখার বয়স হয় নি এই লক্ষণ গন্ডি ধুয়ে মুছে সাফ। পরশু খবরে পড়লাম মফস্বল ছোট শহরে এক মধ্য বয়স্ক ঠান্ডা মাথায় প্রতিদিন বিভিন্ন বাড়ি ঢুকে মহিলাদের খুন করতেন আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন। শিশুদের মধ্যেও বাড়ছে ভয়ঙ্কর অপরাধ প্রবণতা।স্কুল বাচ্চা প্রায়শই ধর্ষণের শিকার,সদ্যজাত ঝলসে উঠছে লালসার আগুনে,বৃদ্ধা হোক মধ্যবয়সী সে হোক নান কিংবা ভিখারি সবাই টার্গেট এই নর পিশাচ আবহাওয়ায়।তবে কি কোথাও নিরাপদ নয় আমরা,আমাদের মহিলা,শিশু কন্যা মহল?
কিসের আমাদের বড়াই তবে?রুচি সংস্কৃতির দোহাই। দেওয়াল জুড়ে মনীষী দের বাণী নিভৃতে কাঁদে।সদা জাগ্রত প্রশাসন কি করবে মনের মধ্যে যদি অপরাধ প্রবণতার বিষাক্ত লেলিহান আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে আমাদের। সম্প্রতি ফুলের মতো একরত্তি শিশু তিন বছরের টুইঙ্কেলকে যেভাবে নৃশংসতার সঙ্গে ঠান্ডা মাথায় খুন করে ফেলে দিয়ে যাওয়া হলো শিহরণ বয়ে গেল ঠান্ডা রক্ত স্রোতের।দেখ কেমন লাগে আর কত ভয়ঙ্কর হতে পারি আমরা এই বার্তা প্রকাশ্যে খুল্লম খুল্লা ছোবল মারছে। "দেশ বাঁচাও বেটি বাঁচাও স্লোগানের ছত্রছায়ায় মা বাবার স্নেহ ভালোবাসায় হাসি খুশিতে বড়ো হওয়া শিশু কন্যা যার বাড়ির উঠোন জুড়ে এখনো পাবে হরেক খেলনা বাটি,পুতুল ঘর কন্না। কানে বাজছে বাঁশি লাগানো জুতোর পিক পিক শব্দ।কিন্তু কোথাও নেই,হঠাৎ খুঁজে পাওয়া গেল তাকে এক ডাস্টবিনে না চিনতে পারা ছিন্ন ভিন্ন টুকরো হয়ে নৃশংশতার স্মৃতি চিন্হ মেখে এক তাল রক্তাক্ত মাংস পিন্ড হয়ে।
মানুষ কখনো এভাবে ঐ টুকু বাচ্চা কে শ্রীখন্ডি করে মা বাবাকে শিক্ষা দিতে এতটা বীভৎসতার নজীর সৃষ্টি করতে কি পারে ভাবতে অবাক লাগছে।কিন্তু কি অপরাধ মা বাবার?
প্রায় দশহাজার টাকা ধার নিয়ে অভাবের সংসারে শোধ করে উঠতে পারছিল না তারা। চেষ্টা চলছিলো যত জলদি টাকা দিয়ে দিতে পারে হুমকি ভয় ,নোংরামি থেকে মুক্তি।কিন্তু কি পেলাম আমরা? অসহায় মা বাবাকে শিক্ষা দিতে তাদের তিন বছরের ফুলের শিশু টুইঙ্কেল কে তুলে নিয়ে গিয়ে চোখ,চুল উপড়ে, গায়ের চামড়া চেঁছে,শরীরের সব অঙ্গ বিকৃতি বা গায়েব করে ফেলে দিয়ে গেছে বাড়ির কাছে।শ্বাস নালি,কিডনি,যৌন অঙ্গ সব কিছু তছনছ যে আসলে সমাজের গালে পাঁচ আঙুলের দাগ বসানো পেল্লাই চড়।
ভাবতে অবাক লাগে কোন মায়ের কোলে জন্মেছিল এই কুলাঙ্গার গণ, তাদের কি বাড়ি,পরিবার সন্তান বলে কিছুই নেই। কোটি কোটি টাকা ঋণ নিয়ে দেশ কে ফোঁপড়া করে বহাল তবিয়তে দিন গুজরান কিছু মহান চোরের, আর সামান্য কিছু টাকা ধার নিয়ে এ এমন পাশবিক ঘটনার সাক্ষী হওয়া তাও নিজের সন্তানকে এভাবে দেখা কি যায় ,না সম্ভব কখনো?আবার আমরা মোমবাতি জ্বালাবো,শোক প্রস্তাব পাঠ করে মৌন মিছিলে হাঁটবো কিন্তু পারবো না সমাজটাকে নিরাপদ আশ্রয়ে মুড়ে রাখতে,এই সুন্দর সমাজকে ফুলের মতো শিশুদের বাসযোগ্য করে তুলতে । তাই আর কিছু চাইনা,স্তব্ধ হোক লোকদেখানি এই প্রতিবাদ ,সহানুভূতি।
ছলনার শোপিচ -শাহীন রায়হান
.
প্রতীক্ষার জানালায় এখন আর সোনালী সূর্যটা দেখিনা
অবিরল বৃষ্টিতে ধুয়ে গ্যাছে গাছের সবুজ
তবু পুরনো ইচ্ছেগুলো নিঃশব্দে কড়া নাড়ছে
সমাধিত প্রেমের ঘুমন্ত দরোজায়।
.
ডুবে যাওয়া চাঁদ অভিযাত্রীর মতো এক মনে হেঁটে চলেছে
অবাধ্য অন্ধকার মাড়িয়ে নিভৃত ভালোবাসার নিরুত্তাপ সীমান্তে।
যেখানে বিরহী কাঁটাতার বিভক্তির চিহ্ন এঁকে দিয়েছে প্রিয়তম মরুদ্যানে।
.
অস্ফুট ভালোবাসায় জেগে ওঠা বকুল গাছটা এখন আর নেই
কাঁকর রঙা মালাটা সেই কবে ছিঁড়ে গ্যাছে
পাঁজর ভাঙা দূরন্ত বাতাসে।
.
শুধু পড়ে আছে কুয়াশা কাতর মৃদু অন্ধকারে রক্তাক্ত ছলনায়
তোমার ফেলে যাওয়া হতভাগ্য পুরনো শোপিচটা।
মা,,, রৌনক হাজরা
পবিত্র গর্ভে ঠাঁই দিয়ে,
হাঁটতে শেখালে আঙুল ধরে,
তোমার চোখে পৃথিবী দেখি,
ভালোবাসা দিলে উজাড় করে।।
বৃথা মা'গো তোমায় ছাড়া,
দুর্গা রূপে বিরাজ করো,
জ্বরের রাতে অশ্রু নিয়ে,
বুকের মধ্যে জড়িয়ে ধরো।।
দুঃখে যখন একলা থাকি,
কারণ ছাড়াই ডাকো আমায়,
বাইরে যখন দি পাড়ি,
বিপদ নেই তোমার প্রার্থনায়।।
সবাই যখন তুচ্ছ বলে,
ফেলে দিলো মাটির বুকে,
শিখিয়ে দিলে লড়তে আমায়,
কাছে বসিয়ে যত্নে ডেকে।।
স্বর্গ পাই মায়ের কোলে,
আঁচল যেন শান্তির ছায়া,
আর জীবনে চাইনা কিছু,
মিটে গেছে সমস্ত চাওয়া ।।
প্রতি জনম মায়ের রূপে,
জঠোর মাঝে দিয়ো ঠাঁই,
প্রতিবার তোমার মুখে,
খোকা ডাক শুনতে চাই।।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)