নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

আলো ছায়ার কথামালা --- হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়






।। পঁয়ত্রিশ ।।



               খুব ছোটবেলায় একা একাই সব জায়গায় ঘুরে বেড়াতাম। তার মানে এই নয় যে আমি কারও সঙ্গে মিশতে চাইতাম না বা মিশতে পারতাম না। আর পাঁচটা মানুষের মতো স্বাভাবিক সব গুণই আমার ছিল। তবু একা একা থাকতে হলে আমার খুব একটা অসুবিধা হতো না। ছোটবেলায় আমাকে একা রেখে কেউ বাইরে গেলে অথবা এখনও যখন প্রয়োজনে একা থাকতে হয় তখন আমার তো বেশ ভালোই লাগে। তখন কলেজে পড়তাম, ট্রেনের জন্যে স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছি, ট্রেন আসতে দেরি করছে ; কত মানুষ কত কি বলছে। আমার বন্ধুরাই কত কিছু বলত। কিন্তু আমার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ উল্টো প্রতিক্রিয়া দেখা যেত। আমি একটুও বিরক্ত হতাম না। বরং ট্রেন আসতে দেরি হলে আমার বেশ ভালোই লাগতো। আমি বসে বসে কবিতা পড়তাম। তাই আমার কাছে কেউ ট্রেনের আসা নিয়ে বিরক্ত প্রকাশ করত না। কারণ ওরা জানতো, আমাকে বলে কিছু লাভ হবে না।
               একা একা থাকলে আমি নিজেকে নিয়ে ভাবতে পারি। নিজের কোনো লেখা নিয়ে আরও গভীর চিন্তা ভাবনা করা যায়। সে যাই হোক, কোনো কিছু নিয়ে একবার ভাবনার গভীর জলে ডুবে গেলে আর দেখতে হবে না। তখন কে কোথায় আছে, আমিই বা কোথায় কি জন্যে বেরিয়েছি সব ভুলে যাই। তখন আমিই আমাকে সঙ্গ দিই। আমার কোনো ভালো লাগা নিয়ে আমিই আমাকে একটা বিশেষ উচ্চতায় নিয়ে যাই। এটা সম্পূর্ণ একটা ভিন্ন জগৎ। এই জায়গায় কারও সঙ্গে কারও দেখা হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই কারও জন্যে মনে কোনো অভাব বোধ জাগ্রত হয় না। আত্মমগ্নতার চূড়ান্ত স্তরে গিয়ে পোঁছানো যায়।

হে গিরিরাজ... অভিজিৎ দাসকর্মকার



তারপরও
ছায়ারাও বাবার আচরণে
বৃক্ষের নীচে দাঁড়ায়-

বিস্তীর্ণ কাঁসাইয়ে কৃষ্ণগহ্বর
নদীর সাথে শুয়ে আছে
স্নানঘাট গুলি
কাব্যের স্পষ্ট একাকিত্ব,আর-
নাব্যতার বৈধব্য নিয়ে-

মহড়া সাজাও
হে গিরিরাজ,!
আজ কিছুটা আলতা পরে
হেমলক খাবো
তোমার সোসাইটির সক্রেটিস বলে...

নিয়ম,, বৈশাখী গোস্বামী



একঘেয়েমি যাপন শেষ করে
রাত ভোর হয় নতুন অভ্যাসে,
ক্যালেন্ডার বদলায় না সময়ে
বছর পুরোনো দেবতার দোঁহাই,
অথচ নিত্য প্রতিমার বিসর্জন!
প্রতিকৃতিই পূর্ণ সহায়।

নিয়ম বানায় নিয়ম ভেঙে
নিয়ম মানি সমাজ নামেই।
প্রমাণ লোপাট যুগ পেরিয়েও
চোখ সয়ে যায়, চোখ সরিয়ে
মাত্রা মানলে মাত্রাতিরিক্ত
মাত্রা ছাড়ায়, অনাশক্ত ।

সুখ:শাহীন রায়হান




আমার শ্যাওলা ধরা ভাঙা হৃদয়ে
 চির সবুজ ছত্রাক তুমি মরুর বুকে
 বয়ে যাওয়া এক অনন্ত সুখের
প্রবাহমান জলচ্ছবি।
 তোমায় নিভৃত নিশীথে দেখাতে সুখ
 স্পন্দিত হৃদয়ে লেখাতে সুখ
 প্রেমময় স্পর্শ অনুভব অনুভূতিতে
 সুখ তোমার গভীরতম অন্দরে
 সুখ অরণ্যময় বাহিরে
 সুখ কাল কালান্তরে ছুঁয়ে থাকা
মধ্যরাতের সুখচ্ছবি তুমি।
 আমি সুখ সমুদ্রে নোঙর ছিঁড়ে পাল তোলা এক
নিরুদ্দেশ নাবিক- জীবন কম্পাসে
 উষ্ণ স্পন্দন দেখে দেখে মনে হয়
 তোমাতে মরি তোমাতে থাকি বেঁচে।

তোমার অপেক্ষায়: সাব্বির সেখ




একদিন আমিও হেঁটেছিলাম কালবৈশাখীর ঝড়ে,
বিবর্ন আকাশে কয়েক ফোঁটা বৃষ্টির অপেক্ষায়।
একদিন আমিও হেঁটেছিলাম তপ্ত ধু ধু মরু প্রান্তরে।
নীল দিগন্তে শীতল মরুদ্যানের প্রতীক্ষায়,
তারপর..


তুমি এসেছিলে বিদগ্ধ হৃদয়ে বৃষ্টির বারিধারা হয়ে,
জীবনের গোধূলিবেলায় শীতল মরুদ্যান হয়ে,
ধ্রুবতারাও হিংসে করে জ্বলেছিল তখন,
তোমার ভালোবাসায় তৃপ্ত হয়েছিল তৃষিত এই মন।

তারপর ভেসেছিলাম আমি সুখের সুনামিতে,
আবেগের ভেলায় পাড়ি দিয়ে অজানা এক দেশে.
আজও আছো তুমি, ঠিক আমার পাশে,
তবে তোমার আমার মাঝে শত বিরহের সুর বাজে.

প্রেম এসেছিল নীরবে :- তোহাদ্দেশ সেখ



তোমার মুখ ফেরানো আমার ভাবের পোড়া বাড়ি
শহরের লালচে জ্বরেও আদর কাড়ি
তোমার চোখ রাঙ্গানো আমার শেষ বিকেলের সূর্য যেমন
তবুও রাত নামলে তোমায় খোঁজে বেহায়া মন
তোমার অনিদ্রা আমার হলুদ স্বপন
আর ব্যাস্ত আঙ্গুল তোমার চুলে আদর বুনন
কোন এক আনমনা দুপুর ছুঁয়ে
হয়তো তুমি বুঝনি প্রেম এসেছিল নিরবে।

তোমার খুব ঝগড়ার ক্লাসরুম
আমার হাসতে থাকা উদাস আকাশ
তোমার চিমটি কাটা মিষ্টি ছোঁয়া কেন আমার তাতে
হাত বোলানো রাত কাটানো ভাবের প্রকাশ
তোমার রাগি মুখ আর গাল রক্তজবা
আমি শিল্পী তখন তোমার ঠোঁটে স্বপ্ন এঁকে বাচঁতে শেখা
আমার বন্ধু ভাবা আর তোমার মান অভিমান সবই
হয়তো তুমি বুঝনি প্রেম এসেছিল নিরবে।