নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

পোষা কষ্টগুলো :- আহাম্মেদ হৃদয়



মনের ভিতরে পুষে রাখা
কষ্টগুলো ফুঁসে উঠতে চায় অন্তনির্শে

বলতে ইচ্ছে করে বজ্রকন্ঠ সুরে
আমি তো অভাগার সন্তান নয়।
তবে আজ কেনো লোকে আমাকে ডাকে
সমাজের দেওয়া নাম ধরে।

মার আদর স্নেহ ভালোবাসায়
কেটেছে আমার দিনকাল।
আজ আদর স্নেহ করার মতো কেউ নেই,
বলছি আমি এক সমাজের দেওয়া কাঙ্গাল।

হাজারো বায়না পূরণ করতে
চেষ্টায় ছিলো মা আমার।
আজ বায়না করতে মানা আমার
চেষ্টায় থাকি অন্ন যোগাতে।

বায়না আমার অন্ন দেয়না
কষ্টে কাটায় তিনবেলা।

আজ ভাগ্যর নিয়তির টানে,
রাত-যাপন করছি রাস্তার পশুদের সাথে।
এখন আমার দিনরাত কাটে
মার মতো মানুষের অবহেলা পেয়ে।

হাত পেতে বলি দুঃখি আমি
ধাক্কা মেরে বলে শালা এখানে কি?
আমি তো নবাবপুরের ছিলামনা দুঃখি।
নবাবের একমাত্র ছেলে ছিলাম আমি।

যারা আমার বাবার পদতলে ছিলো
আজ তারা আমাকে লাথি মারে।
সমাজ সেবার অন্তরালে
লুকানো ওদের লোমশ চরিত্র।

তাই, কখনো ইচ্ছে করে,
বনের হিংস্র পশু হয়ে যেতে।
ইচ্ছে করে প্রচন্ডগর্জনে
পৃথিবীটাকে কাঁপিয়ে দিতে।

আলো ছায়ার কথামালা : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়





।। চৌত্রিশ ।।


               আজ আমার এক ছাত্রী আমার কাছে একরাশ প্রশ্ন নিয়ে হাজির। একটা প্রশ্নের ঘা সামলাতে না সামলাতে আরও একটা। প্রশ্ন শুনেই বোঝা যায়, এগুলো তার মনে অনেক দিন ধরে চেপে রাখা কথার পাহাড়। তার প্রশ্নগুলোকে পর পর সাজিয়ে দিলে ঠিক এরকম দাঁড়ায় --------- " আচ্ছা মানুষ সবসময় তার প্রিয় জিনিসটাকে নিজের আয়ত্তের মধ্যে পেতে উদ্যত হয় কেনো ? তার প্রিয় ফুলের গাছটিকে বাগানে এনে বসায়, প্রিয় রঙের জামা পড়তে পছন্দ করে, প্রিয়  খাবার খেতে পছন্দ করে, প্রিয় রঙের জিনিসের প্রতি তার একটা আলাদা আকর্ষণ থাকে। এমন কি মানুষের ক্ষেত্রেও।  সে তার প্রিয় মানুষটিকে জীবনে পেতে চায়। প্রিয় জিনিস বা বস্তু বা মানুষটিকে, নিজের সব প্রিয় বিষয়গুলোকে নিজের করে পাওয়াটা কী খুব জরুরী ? "
               ভীষণ গরমের মধ্যে একটা মানুষ ঘরে ঢুকেই আগে সব জানলাগুলো খুলে দেয়। তারপর পাখাটা চালিয়ে দিয়ে মেঝেতে একটু বসে। ক্লান্তি বেশি থাকলে ঠাণ্ডা মেঝেতে সে শুয়েও পড়তে পারে। কিছুক্ষণ পরে স্নান করে সে বারান্দার ঠাণ্ডা হাওয়ায় এসে বসবে। এই যে মানুষটা বাড়ি ফিরে পর পর কাজগুলো করে গেল সবগুলোই তার ভালোলাগা। প্রিয় বলেই সবগুলোকে সে কাছে ডেকে নিল। শুধু তাই নয়, প্রিয় জিনিসগুলো তাকে ভালোও রাখলো।
               এবার একটু অন্য দিকে তাকাই। প্রিয় ফুল, প্রিয় পোশাক, প্রিয় খাবার ------ এগুলো তো আসলে খণ্ড খণ্ড আমি। এসবের যোগফলই তো সম্পূর্ণ আমি। এগুলো কেন প্রিয় ? কারণ এগুলো আমাকে ভালো রাখে। এগুলোর সংস্পর্শে আমি ভালো থাকি। আমার মাথার ওপর যে পাখাটা ঘুরছে, আমি চাইবো না পুরো গরমটায় পাখাটা আমার মাথার ওপর যেন সবসময় ঘোরে ? যে যে খাবারগুলো আমি ভালোবাসি আমি চাইবো না সারা বছর যেন আমি ওই খাবারগুলো খেতে পাই ?
               " নিজের সব প্রিয় বিষয়গুলোকে নিজের করে পাওয়াটা কী খুব জরুরী ? " ------- হ্যাঁ,  অবশ্যই জরুরী। তা যদি না হয় তাহলে তো ওই প্রচন্ড গরমের মধ্যে ক্লান্ত মানুষটার মাথার ওপর পাখাটা বন্ধ করে দিতে হয়। রৌদ্রদগ্ধ পথিক গাছের নিচে না দাঁড়িয়ে প্রখর রোদে দাঁড়িয়েই বিশ্রাম নিতে পারত। কিন্তু তা তো হয় না। সে তখন শীতলতাকেই সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেয়।
               প্রতিটা মানুষ চায়, তার চারপাশে যেন সবসময় ইতিবাচক আবহাওয়ার প্রাধান্য থাকে। যদিও তা মানুষ পায় না কিন্তু যাত্রাটা সেদিকেই থাকে।

গাছের ভিতরে অভ্যাস লিখেছি : অভিজিৎ দাসকর্মকার



আজ হঠাৎ প্রতিফলিত হচ্ছি
জিভের ভিতর
পতঙ্গভূক হয়েছি স্ত্রী-লিঙ্গেরই ছায়া বরাবর।

গাছের ভিতরে অভ্যাস লিখেছি।
আমি ভিজেছি
         নীলা আর মেঘমিলনে-

আনন্দ একপ্রকার লাফদড়ি-
নদীতে হাসিনি কেনো বিকেল জানে
অথচ
ওখানে চলছে রাসায়নিক আড্ডা
পাখি নেই
ফটোগ্রাফার নেই
শুধু রেশম আছে, তারপরও-
          ভাঙা গালের
তোবড়ানো কথায় কাঠপোকার গায়ে
দক্ষিণ-পূর্ব হয়ে যাচ্ছি...

মিলাপ :-তাপসী লাহা





আহা মন , রোদ ছায়ার এই নিত্য খেলায় অংশ নাও যখন মেঘের গুড়্গুড় তখনও ভোরের প্রথম আলোর মত কিছু সত্য।

জানালার শিক কেটে মন ভালোরা তাও ঢুকে পড়বে  ঘরের মেঝেয় আর পাখিদের সম্মিলিত কোরাস কলরবে বুঁদ হয়ে কাঠবেড়ালি হাওয়ারা বলবে ও লো, সই, আয় রে আয় , এই আমাদের কিচিরমিচির এতেই আছে তোর অসুখের দাওয়াই।

কান পাশে একটু আলতু ঠোটমগ্নতা,
আর অবাক মন্ত্রের পিহুকণায় তুই আবার সেই  তেপান্তরে হারিয়ে যাওয়া রাজকন্যার হইচইরবে প্রত্যাবর্তন।

  যে  পথ তোর ফেরা চিনে নেবে,দুধারে সারি সারি গাছ,নাম জানা, নাম না জানা ওদের বিভঙ্গে শুধু হর্ষ,রুপ আর মোক্ষ।

আর সব জীব, জড় আর আনন্দের কোলাজে কাহার্বা বেজে ওঠবে তোর বাহারি ঘাঘরার আন্দোলিত ছন্দে। ফুলে ফলে সুগন্ধের মাতাল করা এমন প্রজাপতির মতন ক্লেদহীন আকাশে  সুর ঘনাবে চিরমলনের।

রাতের ভাঁজে চশমাকাচে:- সৌমেন দাস




রাত বাড়ে

ফ্যাকাশে হয় অনুভূতির মানিপ্লান্ট

শেষ চুমুকে পেয়ালাজুড়ে উঁকি দেয়
কত শত কাহিনিরা

শীর্ণ হয়ে আসে খুশির রেখা

টেবিলে রাখা নতুন চশমাটাও ঠাট্টা করে

ভিজে যায় নিরিহ দুটি চোখ

আর পদ্যরা সব গদ্যপাড়ায় মুখ থুবড়ে পড়ে …

ফাঁকি দিয়ে :- মান্নুজা খাতুন ( মালা)



ফাঁকি দিয়ে যদি লুকায় মাগো
মেঘের আড়াল কোনে
দিনের শেষে হন্য হয়ে
খুজবি কি আর পথে?

খাবার খেতে বসবি যখন
চিনু মিনুর সাথে
আমার অনুপস্থিতি দেখে
ডাকবি কি আর খেতে?

দিনের শেষে ফিরতে হলে দেরি
বারে বারে করবি কি আর খোঁজ
পদধ্বনি শুনলে মাগো
দু চোখ রোষে আগুন করে
বকবি কি মা রোজ?

ছোট্ট আমি ভয় পেলে মা
গভীর রাতের শেষে
উঁকি মেরে দেখবি কি মা
দোরের আড়াল হতে!
সত্যি করে বল না মা আমায়!
তোর ওই বন্য চোখের দুপথ বেয়ে
ফেলবি কি আর অশ্রুধারা
দীর্ঘদিনের জন্য যদি
লুকায় মাগো কোথাও।।