নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কান্না :তপন কুমার মাজি


দুর্বল আর নরম মানে কী শুধুই পরাজয় ?
গতিপথে যার ঢের অন্ধকার
আমার সেই শিকড় খুঁজে নিয়েছে বাঁচার রসদ !

প্রয়োজনে ফুটো করেছি পলিথিন-
গুঁড়ো করেছি নুড়ি-
ভেঙেছি পাথর,
কঠিন যে কোন কাঠিন্যই নয়
প্রমাণ করেছি ঝড়কে প্রতিহত করে,
কখনো লাঙলের ফলায় হয়েছি ছিন্নভিন্ন-
হয়েছি নাগরিকদের যূপকাষ্ঠে বলি,
তবুও...

ছেড়েছি কী হাল ?
নীরবে ছড়িয়েছি প্রাণরস ডালে ডালে--
পাতায় পাতায়--
কীটাণুদের বিষকে করেছি নির্বিষ,
ফুটিয়েছি ফুল বৃন্তে বৃন্তে,
দিয়েছি বেঁধে নাড়িকে বিটপের প্রতিটি শিরায়,
ফলাতে ফল,
দুঃস্থ পৃথিবীর প্রয়োজনে...

সদিচ্ছা আর মনোবলকে পাথেয় করে হাঁটছি--
এখনও হাঁটছি
অনিশ্চিত আগামীর পথে
যদিও কুঠারের আঘাতে শুনতে পাই আমি
কোন এক কান্না
যে কান্না অত্যন্ত গভীর ও ব্যঞ্জনাবাহী !!


আলো-ছায়ার কথামালা : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়







।। তেরো ।।

চৈত্র মাসের সন্ধেবেলা। হ্যারিকেন নিয়ে পড়তে গেছি। অর্ধেক পড়া হয়েছে। ঝড় উঠলো। একটু পরেই বৃষ্টি। সারাটা দুপুর বেশ গরম গেছে। এখন বেশ ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা। সন্ধের একটু পরের বৃষ্টি চারপাশকে কেমন চুপচাপ করে দেয়। তার ওপর আবার গ্রাম। হ্যারিকেন নিয়ে বাড়ি ফিরছি। ব্যাঙ ডাকছে। রাস্তায় দু'একটা লোক। আমি প্রায় একাই। রাস্তার ধারে ধারে আমগাছ। ঝিঁঝিঁ ডাকছে। ভয় যে একেবারেই করত না তা নয়। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে যেত একটা ভালোলাগা বোধ। কতদিন হল ব্যাঙের ডাক, ঝিঁঝিঁর ডাক কান থেকে সরে গেছে। আজ মনে হয় ওইগুলোই ছিল প্রকৃত গ্রামীণ জীবনের সঞ্চয় যা একটা মানুষকে ইঁট কাঠ পাথরের মাঝেও আমৃত্যু সবুজ রাখতে পারে।




।। চোদ্দ ।।

দেওয়ালীর রাতে প্রতিটা বাড়িতে মোমবাতি জ্বলছে। আমরা সারা পাড়া ঘুরে ঘুরে দেখছি কোন বাতিগুলো নিভে গেছে। বাতি নিভে গেলেই আমরা সেগুলো নিয়ে নিতাম। নেভা বাতি তুলে নেওয়ার সময় খুব তাড়াতাড়ি ফুঁ দিয়ে একটা দুটো বাতি নিভিয়ে সেগুলোও হাতে তুলে নিতাম। যখন বাড়ি ফিরতাম মনে হতো রাজ্য জয়ের আনন্দ। বাতিগুলো পেয়ে যে কি আনন্দ হতো তা বলে বোঝাতে পারবো না। বছর ঘুরে গেলেও সেগুলোকে কাছ ছাড়া করতাম না। আজও ভাবলে বাতিগুলো মনকে উষ্ণ রাখে।

(কর্ম

দাসপ্রথা ও দাসত্ব : সারিফ হোসেন


ইতিহাসের পাতা খুঁজলে পাওয়া যায় শব্দ দুটি
              " দাসপ্রথা ও দাসত্ব ”।

ইংরেজি ভাষার মায়াজালে
               আজ গর্বিত বাঙালির ও
বাংলা ও বাঙালীয়ানার ভাবনা ছেড়ে
               ইংরেজি দাসপ্রথার দাসত্ব মানে।।

শ্বেতবর্ণের নেশায় চড়ে
               গর্বিত কৃষ্ণের ভক্তও
কৃষ্ণকলির কৃষ্ণকায় দেখে লজ্জিত
               কারণ আমরা শ্বেতকায় আবদ্ধ।।

নীল আকাশের নীচে বসে
               বিন্দু বৃষ্টির স্পর্শ নিয়ে
ভাবি আমি, আমরা আজও কি
               "দাসপ্রথা ও দাসত্বের" গন্ডি পেরিয়েছি?


জানিনা, উত্তর নিজ নিজ
               আপন মননের অন্তরালে
খুঁজতেই হবে পথ আমাদের
               নতুবা রইবো আমরা দাসত্বেরই বেড়াজালে।।

সব্যসাচী তাই : রাজিত বন্দোপাধ্যায়

     

পৃথিবীর সব কথা , সব ব্যথা     
সহেও যেন শব্দ বেছে যাই ,   
সমস্ত অন্যায়ে যেন --   
শব্দের সংঘাতে কাটতে চাই ।   
আমি শুধু কবি নই ছন্দের -- 
অক্ষর অস্ত্র হাতে সৈনিক ভাই !   
জীবনের শত রণে -- 
লড়ি একা সব্যসাচী তাই ।। 


শিরোনামহীন গল্প : বিকাশ দাস (বিল্টু )



রাত ঘুমিয়ে আছে,  তারারা ক্লান্ত ,
আর
চাঁদ মেঘের দেশে ---

আমি নির্জন রাতে একা গল্প লিখি ।
যোগ বিয়োগের প্রাপ্তি আর ভালোবাসার ।
তবে -
     কলম দিয়ে নয়,
নীরবে একা আঁধার রাতে  মনে মনে ।

  মন তো কত গল্প লিখে চলে ;
                             সব কি মনে থাকে?
হিসেব চলে..........

 আবার কিছু গল্প শেষ হয়েও শেষ হয়না ।
                                  যদি আরও কিছু হতো....

আমার  গল্পও  শেষ হলো না,
                                শিরোনাম পারিনি  দিতে।
ভাবছি রাত শেষ করবো বুঝি?
            তখনি বুঝি নতুন গল্প শুরু।

 শিরোনাম নতুন প্রভাতের আবছায়া  আলোতে ।
আর,
আমার মন  লিখে চলছে কত না জীবন কথা ।
তবুও _
যোগ বিয়োগ কিছুতেই হিসেবে  আসেনা  না ।
.
.

রাত শেষ, সকাল।
  ------ তবুও গল্প ফুরালো না ।

আগ্রাসী যাপন :হেমন্ত সরখেল



দগ্ধ কাঁচুলি ছেড়ে
মন নামছে-
অমৃত সন্ধ্যার বুকে।
তোমার প্রখর রৌদ্র পুরো নষ্ট দিনটা জুড়ে -
ফালা ফালা, ধিকিধিকি।
করুক তৃপ্ত- সন্ধ্যা, একটু শ্রান্ত হাসি।

আগের ধ্বংসাবশেষ নোনা ইঁটে জড়।
এবারে, তাই রসের ভান্ড নিয়ে বসি -
জীবাশ্ম চাটলেও আর নোনতা লাগবে না।

উন্মুক্ত বুকের প্রচ্ছদে আধখোলা মনের
উঁকি
রন্ধ্র খোঁজে, পদ্মনাভি, কস্তুরী।
নোংরা লাগলে -
হাত গুটিয়ে আবার খোঁজে অমৃতকুম্ভ
আরো নিচে??
শতদ্রুর পিঠের নিচে নিয়েছে শয়ান?

এসব জানা থাকতে নেই।
অজ্ঞের পরিতৃপ্তি অন্তহীন।
হাতেকলমে নামলে শিখবে
বুদ্ধাসনে মুখোমুখি
বিজাতীয় মন্ত্রেই উদযাপন। সন্ধান। নিরসন।

এভাবেই সাঙ্গ হয় পুজো
মেঘ জমে থাকে আঁচলের ডগায় ডগায়
সুন্দরী অহমিকার ডাক কত্থকী-
 ' আয়, তেঁতুলতলায় যাবি?'
       ----এসো, প্রাণসখা।
পাশাপাশি বসে
সেই ছোট্টবেলার মতো
বুড়ো আঙুল চুষি।

বৃষ্টি না এলে, তেমনভাবে আমরা
 - ভিজব কেমন করে?