নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

হঠাৎ দেখা :মান্নুজা খাতুন




দেখেছ! সময়ের খেয়া স্রোত কিভাবে মিলিয়ে দিল আমাদের

ক্ষনিকের জন্য কি ভাবে এক করে দিল তোমার-আমার দৃস্টি

কেমন একটা অজান্তেই দেখা দিল আমাদের ঠোঁটে একটা লাজুক হাসি।

সত্যি কি তুমি জানতে? আজ এমনটা হবে 

যে পথে দেখা হল সে পথ তো তোমার নয় প্রিয়!

তুমি কি পথ ভুলে এসেছ আজ এই পথে?

নইলে  এই পথে আজই বা কেমন করে এলে?

প্রিয়!

তুমি প্রশ্ন করেছ আমায়; একি স্বপ্ন নাকি বাস্তব?

নাহ! প্রিয় বিস্মিত হও তুমি, এ স্বপ্ন নয় এ যে বাস্তুব সত্য।

দিনের আলোয় যা দেখেছ সে তো স্বপ্ন হয় না প্রিয়।


যদিও তোমাতে আমাতে হয় নি কথা

তবুও জেনে গেলাম অনেক কিছু, জেনে গেলাম তোমাকেও

তোমার ওই একটুকরো হাসি দেখে।



আচ্ছা প্রিয়!

আমরা কি কখনো পাশাপাশি বসে দেবদারু কিংবা বটগাছের চাতালে বসে গল্প করব না?

তোমাতে আমাতে কি এই ভাবেই দূরত্ব রয়ে যাবে।


তবে যাই বলো না প্রিয়;

তোমাকে বড্ড ভালোবেসে ফেলেছি

তুমি না বাসতেও পারো,তাতে আহত হবো না।

বরং তোমাকে নিয়ে দেখব হাজার হাজার স্বপ্ন

যে স্বপ্নে থাকবে তুমি থাকবে আমার ভালোবাসা।

ভালোবাসার নিকোটিন : সৌজন‍্য ভট্টাচার্য্য

হৃদয়ের বৈঠকখানায় জমেনা মজলিস
প্রেম বড়ো বেরসিক হয়ে গেছে,
প্রনয়ের প্রস্তাব গুটি পাকায় না গোলাপের ঠোঁটে
কেননা কামুক অস্থি মজ্জায় জং ধরেছে।
ভ্রমরের সুরে ছন্দপতন ঘটছে বারবার
ডানার ঝাপটা শোনাই শুধুই শঙ্কিত আওয়াজ,
শতদলের সোহাগ রেনু অপেক্ষায় প্রহর গোনে
তার উদগ্রীব আকুতির নেই কোনো লাজ।
ক্ষুধার্ত যৌবন হাতড়ে বেড়ায় ঋণ
নতুন স্বপ্ন তার কাছে যে আলেয়া,
মনের কোনটা কালো ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন
দাগা দিয়ে গেছে (পুরানো) আদরের নিকোটিন।।
          

ঝোড়া-তালি :তনয় চৌধুরী



ছোট একটা ল্যম্পশেড
গল্প করছে মাঝরাত
এসব কথায় একঝাক
মনের গ্রামে হিংসে।

ক্রসফায়ারের তুমি টাই
সমস্ত রাত জেগেছো
মোমের রঙের রিংটোন
আমার হাতে পুড়ছে।

একফালি ঘুম। ছিমছাম
বাড়ির সামনে ঘুরঘুর
তোমার কোন নাম নেই
মন ও অবুঝ। খুব জেদ।

আদেখলা সব অ্যটিটিউড
চোখ ভিজিয়ে নির্ভীক
তোমার মতো দিব্যি
কাছে টেনেছে ল্যাপটপ।

কী যে ভাবছো। মুখভার
অ্যসট্রে জুড়ে ধোয়া-সা
ঠিকুজি তোমার বানানো
রেখায় কলম। উত্তাপ।

সমাধিরা রাত জেগে কিছু কথা নিয়ে পাসলড্। অনুতপ্ত। চিন্তিত।


শেষ যাত্রা : মোঃ মিজানুর রহমান



চারিদিক মেঘে ঢাকা গুড়িগুড়ি বৃষ্টি
তাকিয়ে দেখি আমি কোনো এক
বিশাল উচ্চতার দালানের অচেনা
শতশত মানুষের ভিড়ে শুয়ে আছি।
ভাবলাম আমি কি স্বপ্ন দেখছি!
কেমন জানি ভয় ভয় লাগলো
খানিক বাদে আমার কানে ভেসে এলো
জৈনিক এক লোকের কন্ঠ।
বুঝতে পারলাম আমি-
জহিরুল ইসলাম মেডিকেল কেলেজের
তৃতীয় তলার কোনো এক বেডে শুয়ে আছি।
আমার মাথার কাছে বসা
সবচেয়ে আপনজন
আমার ভালোবাসা সারা জীবনের সঙ্গী
ডান পাশে বসা আমার অতি আদরের
তনয় তনয়া
যাক একটু স্বস্তি পেলাম।
সবার মুখ মলিন হয়ে আছে
সবাইকে আমি স্বাভাবিক করার চেষ্টা করলাম।
কিন্তু কেনো জানি আজ আমার কোনো কথাই ওদের কানে পৌছে না
আমি একটু অভিমান করলাম।
গা কেমন জানি ব্যথায় জ্বলে যাচ্ছে
কিছুক্ষনের মধ্যে আমার চারপাশে
লোকজন জড়ো হতে লাগলো।
ওমা ওরা আমাকে এভাবে দেখছে কেনো?
ও আল্লাহ্ কেউ আমার কথা শুনছেনা কেন?
হায় আল্লাহ্ লাশের গাড়ি আসলো কেনো?
কে জানে কার কি হয়েছে।
একটু পরেই তিন চারজন আমাকে আলগা করে তিন তলা থেকে নামাতে
শুরু করলো।
আমার সারা শরীরে ব্যথা
আমি চিৎকার করে বলতে থাকলাম
আমাকে তোমরা ছেড়ে দাও
আমি ব্যথা সহ্য করতে পারছি না
আমি মরে গেলাম
আমার বউ ছেলে মেয়েদের বারবার বুঝানোর চেষ্টা করলাম।
কিন্তু কেউ আমার কথা শুনলো না।
আমি নিরুপায়।

মিনিট পাঁচেক পর আমাকে লাশের গাড়িতে উঠানো হলো
আমি ভয় পেয়ে গেলাম
ভাবলাম আমাকে এ গাড়িতে তুলছে কেনো?
আমি সারা জীবন যাকে আগলে রাখলাম
সেই অর্ধাঙ্গীনী আমার কথা শুনছেনা
এতো আদর যত্নে যে সন্তানদে বড় করে তুললাম তারা আমার সাথে এমন করছে।
কথা শুনেও না বুঝার ভান করছে
যাক যখন আমার কথা কেউ শুনবে না
আমার শরীরে যতই ব্যথা হোক ওদের আর বলবো না দেখি কি হয়।
কয়েক ঘন্টা পর আমাকে গাড়ি থেকে নামানো হলো।
বাড়ির লোক পাড়াপড়শির সবাই আমাকে ঘিরে ধরলো।
হঠাৎ মা এসে আমার মুখের কাছে মুখ করে অঝরে মায়ের চোখের পানি ঝরছে
আর চিৎকার করে বলছে
খোকা ও খোকা সোনা মানিক আমার
ঘুমিয়ে আছিস ওঠো বাবা আমার
আমি মা বলছি ওঠো যাদু আমার
আমার কলিজা ছিড়া ধন
চল তোকে নতুন কলম কিনে দিবো
তুই না কবিতা লিখতে পছন্দ করিস
একটা ডাইরীও কিনে দিব বাপ
মাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখবি না খোকা।
আমি মাকে বললাম মা ওমা
লিখবো তো তোমার জন্য একটা কেনো হাজারো কবিতা হৃদয়ে জমা।
আজ আমার কথা মা শুনতে পাচ্ছেনা
কেনো?
দেখলাম আমার মমতাময়ী মা জ্ঞান
হারিয়ে আমার বুকের উপর শুয়ে পড়লো।
আমি চিৎকার করে উঠলাম ওমা গো
আস্তে আমাকে ধরো সারা শরীরে অসহ্য ব্যথা।
একটু পরেই আমাকে সবাই আলগা করে ধরে উঠানের পূর্ব কোণে নিম গাছের নিচে
একটা চৌকির উপর কলা গাছ বিছানো
তার উপর আমাক শুইয়ে দিলো।
ও মাগো মরে গেলাম পিঠে কি অসহ্য ব্যথা।
এমন খোলা আকাশের নিচে আমাকে শুয়াতে পারলো।
যেখানে আমি নতুন পরিষ্কার মশাড়ি ছাড়া ঘুমাইনি আজ আমাকে ওরা একটা জীর্ণ মশাড়ির নিচে শুইয়ে দিলো।
যাক হয়তো মশার কামড়ানি খেতে হবে না।
 এরপর যা শুরু হলো আমি আর সহ্য করতে পারছি না।
কয়েকজন আমার শরীর থেকে সমস্ত পোশাক খুলে ফেলল আমি লজ্জানত হয়ে গেলাম এরা
করে কি আমার সাথে?
ভাবলাম কিছু একটা না বললে চলবে না
কিন্তু কি করার ওরাও আমাকে পাত্তা দিলোনা।
স্বস্তি এতটুকুই ওরা আমার লজ্জাস্থান ঢেকে দিল।
এবার আমার শরীরে গরম জল ঢেলে দেওয়া হলো আমি সইতে পারিনা
কইতে পারিনা।
কি সব পাতা ভিজানো গরম জলে
আমাকে কসকো সাবান ঘসা হচ্ছে।
মনে হচ্ছে আমার গায়ের সব চামড়া তুলে ফেলবে।
গোসল সেরে আমাকে পাঁচ টুকরো সাদা
কাপড় পরিয়ে দিলো।
আমি মনে মনে কষ্ট পেলাম সারা জীবন কতো দেশি-বিদেশী নামি দামি ব্রান্ডের কাপড় পরলাম আর আজ শুধু পাঁচ টুকরো সাদা কাপড়?
আমি খুলে ফেলার সিদ্ধান্ত নিলাম
কিন্তু লাভ হলোনা।
কেউ আমার কথা শুনার প্রয়োজন মনে করলো না।
এতদিন যারা আমার কথায় উঠবস করতো তারা আজ কেউ আমার কথা রাখেনা আমি নিরুপায় দেখে যাওয়া ছাড়া
কিছুই করার নেই।
দেখতে দেখতে বিকেল গড়িয়ে আসলো
বাড়ির পাশে মাদ্রাসা মাঠে হাজারো মানুষের সামনে আমাকে রাখা হলো
একটা চারপাওয়ালা খাটে।
সবাইকে দেখছি কিন্তু আমার মা-বাবা কই
আমার সহধর্মীনী কই।
আমার অতি আদরের মা-মনি কোথায়?
আমার বাড়ির সবাই কই।
এ সাদা কাপড়ের ভিতর আমার দম বন্ধ হয়ে আসতেছে।
ও আল্লাহ সবাই আমার সাথে এমন করতেছে কেনো।
যাক এইতো আমার আদরের মানিক গুলো
আমার কাছে আসতেছে।
ওরা সবাই আমাকে খাটে করে সামনে যেতে আমি খুশিতে আটখানা হয়ে গেলাম।
মনে মনে ভাবলাম যাক আমাকে ওরা বাড়িতে নিয়ে যাচ্ছে।
এবার শান্তিতে ঘুমোতে পারবো।
কিন্তু মিনিট দুয়েক পরে আমাকে গোরস্থানের পাশে খোড়া একটা কবরের পাশ রাখা হলো।
আমি ভয় পেয়ে গেলাম আমাকে এখানে আনা হলো কেন?
আশপাশে হাওমাও কান্নাকাটিতে
আমি চমকে যাই।
কিছুক্ষণ পর দেখলাম সবাই আমাকে খাট থেকে নামাচ্ছে আর আমার অতি আদরের দুজন সন্তান কবরের দুইপ্রান্তে নামলে আমি চিৎকার মেরে কেঁদে ফেলি
বাবা সোনা মানি আমার ওখানে নামিস না
ওখানে তো মরা লাশ থাকে
ওখানে থাকতে অনেক কষ্ট হয় বাবা তোরা উঠে আয়।
আয় আমার বুকে আয়
তোদের গালে আমি চুমো খাব
আয় বাবা উঠে আয়।
হায় আল্লাহ মাবুদ এতো দেখি ওদের সাথে আমাকেও করবে নামিয়ে দিলো।
যাক তবুও ভালো হলো আমার মানিকদের আর ভয় নেই।
আমি বাবা ওদের সাথে আছি।
বড় ছেলে আমার মুখের মোড়া খুলে
মুখের কাপড় সরালে একটু সস্তি পেলাম।
পাশে কেউ নেই ওদের দুজনকে দেখে গায়ের ব্যথা মনের কষ্ট সব ভুলে গেলাম।
কিন্তু একি আমার এতো ভয় লাগছে কেন?
ও মানিক ধন তোরা আমাকে এ অন্ধকারে একা রেখে কই গেলি বাবা।
একি পাশে কেউ নেই ?
মা ওমা বাবা গো আমার দম বন্ধ হয়ে আসছে।
আল্লাহ গো ওরা সবাই আমার সাথে এমন করছে কেন
আমাকে ওরা বাঁশ চাটাই দিয়ে ঢেকে দিলো কেন?
তাহলে কি ভাবনা নয় এটাই চরম সত্য
আমি আর পৃথিবীর সদস্য নই
এটাই আমার শেষ যাত্রা।
ওমা তুমি কই ও বাবা গো
 ও আল্লাহ মাবুদ সহায় হোন।
দুনিয়ার সবাই তোমরা এমন স্বার্থপর।
কি না করেছি তোমাদের জন্য
আর আমাকে পাঁচ টুকরো সাদা কাপড় সাড়ে তিন হাত মাটি কয়েক টুকরো বাঁশ
আর কয়েক ফোঁটা আতর গোলাপের ছিটা ব্যাশ এ হলো আমার জীবনের পরম
পাওয়া।

বিজয়: জয়ীতা চ্যাটার্জী



উদিসীনতা, ও আমার পাথর চাপা দুখ।
বড় উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয়েছে আজ,
এগিয়ে যাওয়ার নেশা চেপেছে,
পায়ের পাতায় ফুটছে, আজ রক্ত কাঁটা সুখ।

বড়ো  সাধ চেপেছে মনে মনে চাইছে গৃহ কোন।
যারা রঙ তুলিতে ইতিহাস আঁকে,
তাদের তো দুঃখ নেই ছিন্ন পোশাকের,
জীবন জোড়া না পাওয়া আর তাতেই উপশম।

উদাসীনতা, ও আমার বড়ো শান্তির আপন গাছের তলা।
এবার যে তোর তেষ্টা পাবে, ভেতর জুড়ে
গুলিয়ে উঠবে চাবির শোক, স্পর্শের সৌজন্যে
 পুড়ে যাবে কথা, নিঃশ্বাসে থেকে যাবে সমস্ত না বলা।

আমার বই এর পাতা হলুদ হয়েছে, তাকে বুকে নিয়ে ফিরতে  হবে দিগন্ত থেকে ও কিছু দূরে। পলাশের বন, দীঘির কোনের সামনে দিয়ে যাব, আসন ছেড়ে না ,
সেই অসংখ্য অধ্যায়দের ইচ্ছে করে ভুলে।।

দেউলিয়া নদীর পাশে আমার ঘর : মহঃ রাফিউল আলম



       
তোর আকাশে এখন
অনেক তারা---কিংবা তোকে ঘিরে
        পঞ্চহ্রদ
   আমার আকাশ শূন্য আজ
আমি দেউলিয়া নগরীর রাজকুমার।
         

           
তোর চোখের প্রত্যেক ফোঁটা
   অশ্রুবিন্দুকে জিজ্ঞেস কর----
কতটা ব্যাথা পেলে তারা বাইরে আসে?
তোর নষ্ট রাতকে জিজ্ঞেস কর
   কেন তারা অকারণ রাত জাগে?

যতটা ব্যাথা তুই পেয়েছিস---
বিপরীত প্রান্তে থাকা মানুষটির
নিকোটিনে পোড়া ঠোঁটকে একবার জিজ্ঞেস করলে
বুঝতে পারতিস----তার আগে
কতবার সে নিজেকে পুড়িয়েছে?