নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সতীর্থ :মান্নুজা খাতুন





যেখান থেকে শুরু হয়েছিল দিনের প্রথম ট্রেনটি

ঠিক সেইখান থেকেই আমরা ছিলাম একই পথের যাত্রী।

তুমি অচেনা আমার কাছে তবুও যেন অনেক দিনের চেনা

তুমি জানো না আমার গন্তব্যপথ,আমিও ঠিক তাই

তবে মনে বরাভয়

হয় তো নেমে যাবে মাঝ পথে নয় তো জেলার শেষপ্রান্তে

অজানা এক আশংকায় খোদাকে ডাকি

মনে মনে হাত জোড় করে বলি এই পথ যেন শেষ না হয়।


চলার পথে হাজারও গোলমালে

পড়েছে তোমার চোখে চোখ,

হয় তো বা হয়ে ছিলাম দুজনেই বড়োই অপ্রস্তুত


সারা পথ চুপ চাপ দুজনেই মুখোমুখি, কেটে যাই সময় নিস্তব্ধ দুপুরের ঘুমন্ত রুপ দেখে

কখনো বা আড় চোখে চেয়েছি দুজনে দুজনের পানে

লুকোচুরি খেলতে গিয়েও পড়ে গেছি ধরা

অপরাধীর মত আনত করেছি মুখ

তারপর।

তারপর ফুরিয়ে আসে পথ

মনে জাগে এক অপরিণত চঞ্চলতা।

অবশেষে পৌচ্ছালাম যেখানে হয়েছে শেষ সব ট্রেনের গতি পথ

দুজনেই নেমে গেলাম এক রাশ হতাশা নিয়ে

শহরের ভীড়ে হারিয়ে গেলাম দুজনেই।

অতঃপর  নিজেদের অজান্তে পেছন ফিরে দেখা

মুখ ফুটে পারি না বিদায় জানাতে

কেন না সারা পথ একসাথে এলেও হয় নি আলাপচারিতা

যা হয়েছে সব কিছুই হৃদয়ের!

বামপাশের পার্লামেন্টের ওয়াল ক্লকে টিকটিকি করে প্রহর গোনে

আবার কখন আসবে দিনের শেষ ট্রেন।

রিক্ত যৌবনে : রাজিত বন্দোপাধ্যায়


কাল তুমি এসেছিলে --   
ঘোর ঘুম পথ ধরে ,       
এই জীর্ণ দীর্ন স্মৃতির পটভূমে !     
কাম রাঙা ঘুম ঘোরে আমি     
হঠাৎ আবিস্কার করলাম তোমার   
যৌবন দীপ্ত অধর ;     
তোমার বিপন্ন যৌবন যেন       
আমায় হাতছানি দিয়ে বলে  --     
ভালো আছো তো ,     
হে সুজন তোমার আমা রিক্ত যৌবনে  ?     


একা আছি, ভালো আছি :সারিফ হোসেন


কোনো এক কিশোর কালে
প্রিয় বন্ধু কথা দিয়েছিল
আমাদের, আমাদের কেউ আলাদা করতে পারবে না
আমিও এক দায়িত্ববান বন্ধু হয়ে উত্তর দিয়েছিলাম
 ঠিক বলেছিস।
আফটার অল উই আর ব্রাদার ফ্রম অ্যানাদার মাদার
কিন্তু স্মৃতির ভেলায় সে বন্ধু আজ ডুবন্ত গুপ্তধন।
সে ছাড়িয়াছে আমার পাছি,
একা আছি, ভালো আছি।।

বসন্তভরা যৌবনে, প্রেমিকার উষ্ণ ঠোট
কানের কাছে এসে ফিসফিসিয়ে বলেছিল
প্রতিটা বসন্ত এভাবেই ধরে থাকবো তোমার হাত
আমিও কেমন আজব ভঙ্গিমায় বলেছিলাম
কেয়া বাত।
আফটার অল আমাদের মাথার উপর ছিল শেক্সপিয়ার  এর হাত।
কিন্তু জীবন নামক বইয়ের পাতায় সে আজ ইতিহাস।
সে আজ অন্য দ্বারে উঠিয়াছি।
একা আছি, ভাল আছি।।

গ্রীষ্মের এক দুপুর বেলায়, আপিসের সহকর্মী
কফি হাতে এসে বলেছিল, ভাই আমাদের বন্ডিংটাই আলাদা, অন্যরকম
আমিও মৃদু হেসে বলেছিলাম, একদম তাই
এক্কেবারে সেইরকম।।
আফটার অল উই হ্যাভ দ্য সেম সেন্স অফ  হিউমার
কিন্তু কর্মক্ষেত্রের তাগিদে সে আজ বহুদূর।
সে আজ অন্য কর্ম করিয়াছি।
একা আছি, ভাল আছি।।

বুকটা কাপিয়ে আমাকে জড়িয়ে ধরে
সহধর্মিণী ভালবাসার সুরে বলেছিল
আমরা একসাথে বাচবো একসাথে মরবো,
আমিও বাচ্চাদের স্নেহ করার সুরে বলেছিলাম
আমরাতো সুখের নীড় গড়বো।
 আফটার অল উই আর কানেক্টেড উইথ ইচ আদার
কিন্তু সে আজ ত্রিভুবন ছেড়ে, স্বর্গ লোক পাড়ি দিয়াছি,
আজ একা আছি, ভাল আছি।।

শেষ শীতের সকালে, ধূলোমাখা বইটা
আমার দিকে তাকিয়ে করুণ সুরে বলেছিল
আমায়, আমায় ভুলে গেলে,
আমিও বাধ্য শ্রোতার মতো পাতা উল্টিয়ে
শেষ পৃষ্ঠা পড়িয়াছি।।
আফটার অল বুকস আর মাই ফার্স্ট লাভ
কিন্তু আজ আমার চশমার পাওয়ারের সাথে সাথে
চোখের ছানিও বাড়িয়াছি।
আজ শান্ত আছি, বড়ই ভালো আছি।।

নারী :পলি ঘোষ


নারী আমি তাই আমি অহংকারী ।
নারী আমি তাই আমি প্রতিবাদী ।নারী আমি তাই গর্জনে গর্জে উঠি ।
নারী আমি তাই কৈলাশের পার্বতী ।
নারী আমি তাই মিথ্যা সন্দেহের প্রতিবাদী ।
নারী আমি তাই অত্যাচারীর প্রতিবাদী ।
নারী আমি তাই অন্যায়ের প্রতিবাদী ।
নারী আমি তাই কঠিন বাস্তবের প্রতিবাদী ।
নারী আমি তাই শক্তিরুপী মা ভবতারিনী ।
নারী আমি তাই অসুর দলনী জগত জননী ।
নারী আমি তাই প্রচন্ড ক্ষমতাধারী তেজস্বিনী ।
নারী আমি তাই অম্বিকা ;মাতৃকা জননী ।
নারী আমি তাই কলঙ্কিনী কঙ্ক।বতী ।
নারী আমি তাই মহামিলনের সন্ধিক্ষণ ।
নারী আমি তাই মহামিলনের সঞ্চালনী ।
নারী আমি তাই শ্রীকৃষ্ণের সঙ্গিনী ।
নারী আমি তাই কালবৈশাখীর ভয়ঙ্করী ।
নারী আমি তাই মা অন্নপূর্ন।রূপে বিরাজিত ।
নারী আমি তাই গর্ভধারিণী ।
নারী আমি তাই গঙ্গা যমুনা সরস্বতী ।

ইচ্ছে করে :পায়েল মিত্র


ইচ্ছে করে ছুঁতে আমার গহীন মনঅরন্য।
 ইচ্ছে করে ছুঁতে আমার উজান নদীর গাঁ।

ইচ্ছে করে কাজল মাখাই তোমার কানের পাশে।
আমার নামের টিকা করে রাখি অহর্নিশে....

ইচ্ছে করে বিনা সার্টিফিকেটে ঘুরি অবুঝ গলি।
ইচ্ছে করে সাজাই আমার আটপৌরে গীতাঞ্জলী।

কিন্তু!
সব ইচ্ছে খেয়ালে তরি ভাসায় না,
সব ইচ্ছে বুক জুড়িয়ে রাখে না।
কিছু ইচ্ছে যে মুখ লুকিয়ে বাঁচে,যেন নৃশংস রাতের বোবাকান্না!


ভয় :শোর্য্যতি



হাত ধরো বলছি...
        মৃত্য উপত্যকায়।লাশ।সবাই।
নিজের মৃত্যুতে দিচ্ছি হাততালি ।।

তুমিও তো বেশ লুকিয়েছো মুখ।শাড়ির আঁচল।
       ক্ষয়-বুকে পাথর।ভালোবাসো ।মিথ্যে
বলেছো স্নানের ঘরে বাষ্প হয়নি'কো জল ...

এরপর আমি ভীষণ বিপ্রতীপ...

ভীষণ কষ্ট হলে ,আঙ্গুল গুনে রাখো।
ভালোবাসি,ভালোবাসি। মৃত্যু তোমায়
               নিভছে সে প্রদীপ।।

সে বুকে মিছিলে কোনো।প্রেমহীন।জমে গেছে
লাল। গুলিতে জমছে রক্ত।

আসলে তোকে ভালোবাসি না'ত...।।