নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

পূজা: জয়ীতা চ্যাটার্জী



হে অপরূপ, তুমি সৃষ্টির সুন্দর পূজা নিবেদন।
                শ্বেত শুভ্র, তুমি বন্দনীয় আমার।
তোমার ভেতরের তুমি সে একান্তই আমার একমাত্র।
             অন্তরের সমস্ত শোক তাপ মুছে দেবো চুম্বনে।
তোমার ভেতরের হিম যুগকে
            শুষে নিতে খুলে যায় ওষ্ঠধার।
বার বার উচ্চারিত হয় শ্লোক, আমি সেই পূজারিনী
       যার বিশ্বাস একেশ্বরবাদ।
তোমার কাছে ,তোমার গুণের কাছে,
           তোমার রূপের কাছে চির ঋণী আমি।
আসনের সামনে সাজিয়েছি যজ্ঞবেদী,
               আগুন, কাঠ, হেম দিয়ে, সময় অভিমানী!
ক্ষয়ে যাচ্ছে জীবন অসম্ভব সহিষ্ণুতায়।
          জাগিয়ে রাখি তোমার বুকে গোটা একটা জীবন
মন্ত্র সাধনায়।
আদ্রতা কমে আসে ঠোঁটের,
চুঁয়ে চুঁয়ে রক্ত পড়ে
আঙুলের ডগায় তোমার বুকের আকাশ ছুঁই,
      তোমার প্রত্যেকটা নিশ্বাস জন্ম দেয় একটা একটা নক্ষত্র,আমি তাদের সযত্নে রাখি অধরে।
অপরূপের ভেতর তোমার যে বিশাল রূপ সেই পাবে পূর্ণতা আমার আরাধনায়।
পূজো হবে বিশ্বাসের মন্ত্রে, প্রেমের মন্ত্রে, সাধনার বলে ত্রিমাত্রিক ছায়ায়।।

ব্যক্তিগত ভুল:দেবযানী ভট্টাচার্য্য



অনুভূতিগুলো তবু ব্যক্তিগত  রয়ে যায়-
যদিও অক্ষরেরা জানে-
কতবার চাবুকে চাবুকে আহত করেছি  স্বপ্নদের,
স্বপ্নলীনা নদীটির মুখ   ঘুরিয়ে দিয়েছি স্বেচ্ছাচারে।
বুঝেও স্রোতস্বিনী সাম্পানের
নোঙর পিপাসা-
ভাতের অব্যর্থ  ঘ্রাণে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধেছি ফুসফুস ,
আমার ঘ্রাণের থেকে বিষম  দূরত্ব  ছুঁয়ে বয়ে গেছে প্রেমজ বাতাস--
অলক্ষ্য জমেছে মেঘ  ধূসরিত বর্ষণ খামে,
পাঁজরে  অনিচ্ছা খাঁজে অবিরল হিসেবের কড়ি গুনেছি ভুলের জ্বোরো ঘোরে।
এহাতে কামনা রেখে অন্যহাতে ঘেঁটেছি কাঞ্চন।

এখন হেমন্তের  ঝরে যাওয়া  পাতার উপর
ক্রমশ মিলিয়ে যায়   রমণের বিমর্ষ দাগ।


বাতাসে বারুদের গন্ধ :পবিত্র চক্রবর্তী


                (এক)


বাতাসে একটা জোলো জোলো গন্ধ উঠছে । সেদিনও ঠিক এমনটাই ছিল । আর মেশানো ছিল তাজা বারুদের গন্ধ , পোড়া লাশের কূট ঘ্রাণ । সব মিলিয়ে বাতাসকে আরও ভারী করেছিল । দীর্ঘ ৪৮ বছরের কথাটা খবরের কাগজে কিছু লেখা পড়েই মনে পরে গেল জামাল সাহেবের । কর্মজীবন থেকে অবসর আর কিছুকাল পরেই । বিশেষ কিছু জমাতে পারেন নি যদিও । কেমন করেই বা জমাবেন ! সরকারী স্কুলের চাকরীটা এপার বাংলায় ৭১ এর পর এসে বহু কাঠখড় পুড়িয়ে পেয়েছিলেন । বয়স তখন ৩৫ ছুঁইছুঁই । সুলেখা লাল আন্দোলনে তখন ব্যাস্ত । ওরই ঠিক করে দেওয়া কানাগলির এক কামরা ঘরে শেষমেশ থাকতে শুরু করে যুবক জামাল ।
বিষয়টা যত সহজে লেখা হচ্ছে তা কিন্তু নয় । বাঙাল বাড়ীর মেয়ে সুলেখা । দেশ ভাগ হওয়ার পর বাবা এ দেশে চলে আসেন । কিন্তু তখনও সম্পর্কের,ভালো লাগার বাঁধ ভাঙে নি । সুতরাং যাতায়াত ছিলই । বাংলাদেশে মামা বাড়ীতে মাঝেমধ্যে যেত সুলেখা । আর ঠিক তখনই পরিচয় হয় জামালের সাথে । কলেজ পড়ুয়া দুজনাই । কেন জানি না  প্রথম দেখাতেই  ভালো লাগাটা ভালবাসায় পরিনত হয়ে যায় ।
সম্পর্কের বন্ধন দূরে থাকলেই হয়তো বেশী করে উপলব্ধি হয় । আর  এ দূরত্বটা কাঁটা তারের এপার আর ওপারের । ভিন্ন ধর্ম , দেশের । কিন্তু থামে নি তাদের অনুরাগের স্পর্শ । প্রথম প্রথম পার্টির কাজের নাম করে সুদূর কোচবিহারের বাংলাদেশ সীমান্তে যেখানে দুটি দেশের কাঁটা তার চলে গেছে ঠিক সেখানে বেড়ার এপার ওপার থেকে মনের কথা , হাতের ছোঁয়া চলত । যদিও সেটা বেশীদিন চলে নি , কারণ ৭১ এর মুক্তি আন্দোলন ।
সেদিন ছোট্ট একটা প্রশ্ন করেছিল জামাল , “ যদি বল তাহলে আসবো কী চলে ?”
হাল্কা হেসে সুলেখা উত্তর দিয়েছিল , “ এসো না , আমি তো আছি ।“ বড় ভরসার কথা ‘ আমি তো আছি ‘ কথাটা ।


                             (দুই)


আপত্তি করে নি সুলেখার বাড়ীর কেউই । ছোট থেকেই কান্তিবাবু তার মেয়েকে একটু অন্য ভাবে মানুষ করতে চেয়েছিলেন ,হয়েও ছিল তাই । জামাল আর সুলেখার বিয়ে হয়ে যায় । ভালবাসার জন্য দেশকে ভুলে যায় নি জামাল । হ্যাঁ প্রথম দিকে কান্তিবাবু বা জামালের বাবার মনেও এই চিন্তাটা এসেছিল । কিন্তু আর যাই হোক জামালের আত্ম মর্যাদাটা একটু বেশীই ।
বিয়ের কয়েকদিন পর বাস্তবের মাটিতে দাঁড়িয়ে জামাল স্বাধীন বাংলাদেশে না ফিরে গেলেও এখান থেকে চেষ্টা করে গেছিলো পাশে থাকার । আজও করে ।
দেখতে দেখতে ছটি বছর কেটে যায় । সংসারের হাল কোন মতে চলে । জামাল বাংলার টিউশন করে আর সুলেখা রাজনীতি , ছাত্র আন্দোলনের ফাঁকে হাত মেশিনে ব্লাউজ বানায় । আর ঠিক এরই মধ্যে সন্তান । সুলেখা আর জামালের মেয়ে । নাম রাখে রূপকথা । রূপকথার মতই তো । না আছে কোন দেশের গণ্ডী , না আছে ধর্মের ঝাঁঝালো গন্ধ । রূপকথা সকলেরই ।
সময়ের তালে নদী যায় বয়ে । আর ক্রমে সেই বহমানতার সাথে মেশে বেশ কিছু তরতাজা রক্ত । সুলেখা তারই বলি হয় । জামাল রাজনীতি কোন কালেই বোঝে নি , বোঝার চেষ্টাও করে নি । তা বলে সুলেখাকে বাধা দেয় নি । সুলেখাও ধীরে ধীরে কোন ফাঁকে যে নকশাল আন্দোলনে জড়িয়ে গেছিলো তা নিজেই বুঝে ওঠার আগেই ছিন্নভিন্ন করেছিল পুলিশের বুলেট । বুকটা রাতের অন্ধকারে হাহাকার করলেও সেই বুকেই মাথা রেখে ঘুমাতো রূপকথা । তবে অপুষ্টি আর জণ্ডিসে রূপকথার মৃত্যু শক্ত মুসলিম হৃদয়কে সমূলে নাড়িয়ে দিয়েছিল । কানাগলি ছেড়ে কয়েক মাস স্থান হয়েছিল মেন্টাল এসাইলামে ।
শেষ হয় জামালের অধ্যায় , ভালবাসার পর্ব ।




                     (তিন)

কাকারা বহুবার ফিরে যেতে বলেছিল জামালকে , নাহ জামাল এ অঞ্চল-সুলেখা-রূপকথা স্মৃতি মাখা একটুকরো জমি ছেড়ে যায় নি ।
“ ওরে পাগল একা বাঁচা যায় না , শাদিটা আবার কর “ কাকার কথায় অবাক চোখে তাকিয়েছিল কিছুক্ষন ।
অস্ফুট স্বরে বলে , “ বাঁচা যায় না বুঝি !” বাঁচার অর্থ যে হারিয়ে ফেলেছে সে একা থাকার অর্থই বা বোঝে কী করে ! বিয়ে হয় এদিকারই মেয়ে মাসূমার সাথে । সত্যি মাসূমার মত নিষ্পাপ । বাপের জমিজমা বেশ আছে পশ্চিমবাংলায় । দেখতে শুনতে মন্দ না , পড়াশুনা জানা । এত সুখ ! নাহ এত সুখ না । অর্থ দিয়ে হয়তো সব কেনা যায় না । দেহ কেনা গেলেও মন ! নাহ মনকে বিক্রী কোনদিনই করে নি মাসূমা । মাসূমা ডান হাত জন্ম থেকে অকেজো , পোলিওতে সরু ।
জামালের মত ছেলে যার হিন্দু স্ত্রী-কন্যা গত হয়েছে , মানসিক ভারসাম্য হারিয়েছিল । এমন মানুষকে মন থেকে শ্রদ্ধা জানিয়েছিল সে । মনে মনে নিরাপদ হয়েছিল এই ভেবে যে আর যাই হোক এই মানুষটা ভালবাসতে জানে ।
বলা যায় একহাতেই মাসূমার সেবা আর বাপের পয়সার দৌলতে জামাল শুরু করে দ্বিতীয় অধ্যায় । যে বিয়ের আশাই ছেড়ে দিয়েছিল সেই মেয়ে এখন গর্ভবতী । জামাল সুস্থ অনেক । রাতে মাসূমার পেটের উপর কান পেতে আগামীর নড়াচড়া শোনে ।
বাচ্চাদের মত মুখে এক ঝলক হাসি । মাসূমার দিকে তাকিয়ে বলে , “ আসছে রূপকথা ।“
মাসূমা বোঝে জামালের হৃদয় । তাও সে তো সতন্ত্র । পাশ ফিরে খানিক অভিমান করে বলে , “ যদি ফারহান আসে ?” ফারহান আধুনিক , ভাগ্যবান । যদি ফারহান তার আধুনিক-নতুনের স্পর্শে সকল অতীতের কষ্টকে ভুলিয়ে দেয় ? নারী মনে ওঠে এই আশা বারবার ।
রূপকথা আসে নি ,এসেছিল ফারহান ।  সেও বড় হতে থাকে । জামাল ভালোবাসে কিন্তু প্রশ্রয় দেয় মাসূমা । না অন্যায় প্রশ্রয় নয় কিন্তু প্রচ্ছন্ন আবেগ ভাঙা ভালোবাসা ।



                       (  চার)


আজ বাতাসে বৃষ্টির গন্ধ । মাধবীলতার গা দিয়ে জল চুঁইয়ে পরছে । স্কুল ছুটি । মাসূমা জামালের পাশে বসে চা খায় ।
“ বাড়ী আছেন ?” বাইরে কলিং বেলের শব্দ । বাইরে খানিকটা শোরগোল ।
মাসূমা উঠতে যাবে , জামাল ওকে হাতের ইশারায় বসতে বলে নিজেই দরজা খুলতে গেল ।
“ ফারহান আপনার ছেলে ?” পুলিশের কথা শুনে বুকটা কেঁপে ওঠে ।
“ হ্যাঁ কিন্তু…” শুকনো গলায় জানতে চায় জামাল । মাসূমা এরই মধ্যে উঠে এসেছে । মুখে উৎকণ্ঠা । এখন যা অবস্থা চারিদিকে ।
“ থানায় চলুন । আপনার ছেলে আমাদের কাছে আছে ।“ পুলিশের কথায় গলা বেয়ে আসে কান্না মাসূমার ।
জামাল আকাশের দিকে আল্লার কাছে জানতে চায় মনে মনে “ কেন প্রতিবার আমারই সাথে ?”
জামাল একা আসে নি । ঠিক সেই আগের মতই মাসূমা তার একহাত দিয়ে জামালের হাত ধরে আছে । পুলিশের গাড়ী ছেড়ে দেয় । পিছনে পরে থাকে মাধবীলতা , ঘর ।




বড়বাবু মন্দ লোক নন বরং খাতির করেই বসালেন । হাসতে হাসতে বললেন , “ জব্বর ছেলে তৈরী করেছেন আপনারা মশাই । এতবড় কাজ করে ফেলল !”
জামালরা জানে ফারহান দস্যুর মত । কোন বাধাই সে মানে না , পড়াশোনায় তেমন মন কালেই ছিল না । করুণ চোখে তাকায় বড়বাবুর দিকে । খানিক পরে ছেলে আসে ।
“ একটু ফর্মাল জিজ্ঞাসা বাদ করেই ছেড়ে দেব । আসলে ও আজ খেলে আসার সময় বাসে কিছু লোকের কথাবার্তা শুনে ওদের পিছনে পিছনে ডেরা অবধি যায় । যখন বোঝে ওরা মানে জব্বর , আবু মিস্ত্রী মেট্রো ষ্টেশনে অ্যাটাক করার মতলব আঁটছে ঠিক তখনই ভয় না পেয়ে থানায় ফোন করে । আর ধরা পরে…। ব্রেভ বয় ।“
জামালের চোখে জল । মাসূমা বলে , “ ও তো তোমার রূপকথা গো । রূপকথারা কী খারাপ করতে পারে …।“
জামালের চোখে ভেসে ওঠে সেই ছোট্ট জামাল বাবার কাছে মাথা দুলিয়ে দুলিয়ে আবৃতি করছে –
“ ধর্ম তুমি কোথায় থাকো
চুল , ত্বক না গোঁফের তলে ?
সত্যি তুমি থাকছো কোথায়
টাক , টিকি না দুই বগলে ?

ধর্ম তোমার কোথায় নিবাস
বোরখায় না লাল সিঁদুরে ?
ধর্ম কাকে দিচ্ছো মদত
মৌলবি না জাত হিঁদুরে ?

ধর্ম তুমি থাকছো কোথায়
চুল , দাড়ি না পৈতে গিঁটে ?
কোথায় তোমার আসল ঘাঁটি
মক্কায় না তারার পিঠে ?

ধর্ম তুমি কোথায় ঘোরো
বাবরিতে না রাম-দুয়ারে ?
ভাসছো নাকি শুনতে পেলাম
রাজনীতি আর ক্রোধ জোয়ারে ।

ধর্ম তুমি তৃপ্ত কিসে ,
কুরবানি না বলিদানে ?
কখন তুমি নাড়াও মাথা
আজান নাকি গীতার গানে ?

ধর্ম নাকি আড্ডা মারো
ব্লাডব্যাঙ্ক আর হোটেলগুলোয় ,
আড্ডা নাকি মারছো শুনি
কবরখানায় শ্মশান চুলোয় ;

ধর্ম তোমার ইচ্ছেটা কী
বিচ্ছেদ আর রক্তমাখা ?
স্রষ্টার সব সৃষ্টিকে কী
ধন্দ দিয়ে সরিয়ে রাখা ??”
                         ( সমাপ্ত )

প্যালেট উপচিয়ে: কল্যাণী মুম্মা



উল্টেপাল্টে রাখা একগোছা কথাদের
একপ্রান্তে সংশয়ের দোলাচল।

যেটুকুকে নিজের ভেবে যত্নেরাখা...
              সবটাই শব্দঋণ।

      অন্যের দেওয়ালজুড়ে পরিচিত ক্যানভাস!!
             রামধনু রঙ ছড়ায়...
ইচ্ছের আদর সেরে কাদা লাগা তুলিতে
 পছন্দের নারীমুখ...

আঁচলে রক্তের ছাপ লাগলে আঁশটে গন্ধময় শরীর।
      ধুলেই কি সব রঙ মুছে যায়....


শূণ্য মানেই ঈশ্বরে দেখা পাই :অলোক মিত্র



স্মৃতির কোষে জমা পড়েছে
একহ্রাস ধুলিকনা মেঘ,
আজ বাস্পয়িত হয়ে
নেমে পড়বো মাঠ ঘাট পথে প্রান্তরে,
তারপর সুপেয় মিঠা পানি হয়ে
সোজা হেটে পদ্মা যমুনায়,
আমার ঠিকানা খুঁজতে
এখানে এসো না এখন,
অনেক রাত, নিঃস্তব্ধ মহাসড়কে
মহাপ্রয়াণ চলছে,
গত আত্মাদের একা থাকার
যন্ত্রণা বিলাপে নতুন আত্মজ আত্মারা
উড়ালপুল হয়ে উড়াল দেয় আকাশে।
তারারা সব খসে পড়েছে
নিকশ কালো রাত্রিতে আরাধনা
ঈশ্বরে, ফেরেস্তারা নেমে আসে
কোলাহলবিহীন নিস্তেজ গহীনে
আত্মাদের নিয়ে টানাটানি।
একটা বিড়ালের চোখ গিলে খায়
সকল অন্ধকার, আমি ওর সাথে
নেমে পড়ি অাধাঁরের রূপ দেখতে,
দেখি ছায়া হেটে চলে, আমি নেই তাতে।

মরা গাঙ পাড়ে, আলো আঁধার বলেশ্বর।

ছায়া চিত্র:সায়ন্তনের ইতিকথা

 

বৈশাখীর তপ্ত দুপুর শেষে এখন অমাবস্যার রাত্রি যাপন করছে ঝড় আর শীতলতা, বাড়ির ওপরের ঘর গুলো বন্ধ। লোডশেডিং - এ আরো অন্ধকার চারিদিক, বাতাসে মো মো করছে বিদেশি মদের গন্ধ..  নিস্তদ্ধটা এতটাই জোড়ালো যেন শোক ছায়া বিদ্যমান প্রতিটি দেয়ালে।
আমি এমনই কোন কারণ ছাড়াই আঁচল লুটিয়ে ওপরের বারান্দায় দাঁড়িয়ে ছিমাম, পায়ের শব্দ পেয়ে পিছনে তাকাতে দেখলাম ছোটমা.. কিন্তু ছোটমা আমায় দেখেই এক রকম ভয় আর অবাক হয়ে ঞ্জান হারালেন..
আমি তরিঘরি করে জল আনতে গিয়ে নিচে যেতেই দেখলাম ঝড়ের কারণে দেয়ালে ঝোলানো জুঁই দিয়ে সাজানো ছবিটা  ভেঙে গেছে.. কাঁচের টুকরো পাছে পায় ফোঁটে সেই ভয়ে ছবিটা তুলতেই দেখলাম আমার ছবি...
মনে পড়লো আমি তো মারা গেছি...!