নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

গোপাল চন্দ্র সাহা





বিপ্রতীপ  
*******





চাঁদের এ'পিঠে গল্পের ইলসে গুড়ি জ্যোৎস্না 
অলিন্দের জাফরানি আলপনায় 
মৃদুল ছন্দ তল্লাশে, 
স্নিগ্ধ প্রত্যাশা জমিয়ে
রাত্রি কঙ্কণে কেটে যায় ঋতুর গমনাগমন
শুভক্ষণী প্রাঞ্জল অন্তরাগে

উৎসুক চাহনি থমকে যায় যেখানে 
চাঁদের ও'পিঠে
শূন্যতার বিক্ষিপ্ত ঝড়ে পেচিয়ে যায় সন্ধ্যাচারী
সেখানে এক খন্ড মেঘ আলেয়া ছায়ায় হাঁটে 
তাল রেখে নিরুদ্দেশে
আর ক্রমাগত পুড়ে যায় 

দুকুল ছাপিয়ে প্লাবিত কথারা ঘেমে ওঠে
ধমনীর গোলাপী অথবা বিবর্ণ কোলাজে

ধীরে ধীরে এ'পিঠ আর ও'পিঠ
দুই বিপ্রতীপ ডুবে যায় কোন একক প্রদর্শনে 
ঘন অমা-রস কল্লোলে  ।।

পলি ঘোষ




মন
****



মন এমনই এক আশ্চর্য অনুভূতি যা কিছু সবার সাথে শেয়ার করা যায় না! কিছু এমনই প্রতিচ্ছবি এঁকেছি আমার মনের অন্তরালে! যা কেবলই ছুঁয়ে যায় আমার ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে অন্তরে অভিমানে কেঁদে যায় দূর হতে আর এক আশ্চর্য অনুভূতি আকুলতা বিশ্বাস অধিকার আদায়ের সংগ্রামে রাজপথে সক্রিয় সদস্য হতে! জানি আমি সে কেবলই আমার একরাশ আন্তরিক অভিনন্দন আমার বন্ধু হবে!

অমৃত বাণী সোনাই যখনই দেখি মনটি উদাস হয়ে তাকিয়ে আছে অবাক নয়নে নয়ন মেলে! আজ সে বলে মনে মনে ভাবলাম আমার সারা জীবনের সঞ্চয় অনুভূতি সকল ইচ্ছা তোমারই চরণে নিবেদন করতে করতে আজ আমি এক আশ্চর্য লাবণি ক্লান্ত পথিক! যা কিছু নিরবে চোখের অশ্রু ঝরে যায় উত্তরার মত কিছু করে!

জানি মনের নাকি দুটো সন্তান !এক হলো কু মন আর অপরটি সু মন! যখন নাকি কু মন খুব আকুল হয়ে উঠে কোনো মানুষ খারাপ ব্যবহার করে! আর সু মনের জোরে মানুষ প্রতি দিন পবিত্র কিছু ভালো কাজ করতে ব্যাস্ত হয়ে ওঠে!

আমার মনে তো সব অপমান জ্বালা সহ্য করে ও কারো খারাপ করার চেষ্টা ও করি না! আমার মন তাই বলে উদ্ভুত ঈশ্বর বিচার!

আজ আমি ধন্য মনে মনে পেরে আনন্দিত হলাম নিজেকে নিজেই আবিস্কার করতে পেরে! এ এক আশ্চর্য অনুভূতি আমার জীবনে!

দীপান্বিতা বিশ্বাস



তামসী
******





মেকী শহরের মিথ্যে ভালোবাসা--
ইতস্তত ঘুরছে ট্রামলাইন ঘেরা রাস্তায়।
মুখ থুবড়ে পড়ে আছে কিছু মিথ্যে প্রতিস্তুতি,
নিয়ন আলো ক্রমেই মিলিয়ে যাচ্ছে নোংরা গলির অন্ধকারে।
আবেগী নৌকারা বটবৃক্ষের তলায় স্থির দাঁড়িয়ে অবহেলার আস্তরণ মেখে,
গঙ্গার প্রতিটা ঢেউয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে শত অপেক্ষামান রংমশাল।
নীলকণ্ঠী পাখির বোবা কান্না চাতকের মতো চেয়ে আছে,
শ্মশানে এককোনে পড়ে থাকা নিথর দেহের দিকে।
কবিতা থেকে বেরিয়ে কিছু প্রেত খুঁজে চলেছে--
"বাঁচার ঠিকানা"।
ছাইরঙা গ্রিলে গ্রাস করেছে অন্ধকারের ছন্দবানী..
মাটি ফুঁড়ে ওঠা সবুজ অঙ্কুরকে গিলে খেয়েছে কিছু রাক্ষুসে শিকড়।
শ্যামলা মেঘের দোলদুলানি অনেকটা কমে গেছে চলমান ব্যস্ত জীবনে,
হলুদ কদমফুল গুলো শুকিয়ে গেছে বৃষ্টির অভাবে।
ভালোবাসার প্রতিটা ছটা কাঁপছে কামারের গরম হাতুড়ির অগ্নিস্ফুলিঙ্গে...
আর কিছু রুদ্ধশোক হাত পা বেঁধে পরে আছে রেললাইনের ইস্পাতে।।

বৈশাখী দাস



গল্প নয়
*******

গল্প তো সবারই থাকে।কারুর গল্পে গণনারা হাঁতড়ায় 'আগামী',জন্মতারিখের হরোস্কোপে।কারো আবার, চিতাভস্মের দহনে অশ্রুর আর্দ্রতা ঢালতে ঢালতেই এগোয় যাপনচিত্র।কেউ কেউ সুখ-দুঃখের সমান্তরালেই আঁকে গল্পের সঞ্চারপথ।কেউ, স্থিরচিত্রে থেমে থাকা প্রশ্বাসহীন মুহূর্তে রেখে যায় অসমাপ্ত গল্পের উত্তরাধিকার।গল্প তো সবারই থাকে।স্বপ্নসম্ভবা রাত্রিও জমায় আকাঙ্ক্ষিত ভোরের গল্প।গল্প কি শুধুই বাক্যবিনাসে,কল্পনায়,অলঙ্করনে?কলমের কৌলীন্যে,শব্দের অনুরণনে?ছুঁয়ে দেখো, নৈঃশব্দ্যেও লেগে থাকে কি নিবিড় গল্পের ঘ্রাণ!
   

বৈশাখী চ্যাটার্জী




পুজো এলে
**********



পুজো এলে -পুরনো উঠোনটায় একটা স্থলপদ্মের গাছ মনে পরে ।
ফ্রক পড়া একটা মেয়ে -ঝুড়িতে স্থলপদ্ম গুলো সাজিয়ে দুর্গা মণ্ডপে নিয়ে যেত পুজোর চারটে দিন ।
ষষ্ঠীর সকালটা কি দারুণ প্রত্যাশা নিয়ে আসত ।
মণ্ডপে তখন ব্যস্ততার চূড়ান্ত প্রস্তুতকরণ  ।

বাবা বলতেনা -'মা এসে গেছে ষষ্ঠী তলায়' । 
মেয়েটা কোথায় যে খুঁজবে সেই ষষ্ঠীতলা বুঝেই পেতনা ,
তবু অলীক স্বপ্ন সাজিয়ে নিয়ে দেখত কোন একটা গাছের তলায় মা দুর্গা দাঁড়িয়ে রয়েছে ছেলেমেয়েদের নিয়ে । পুলক লাগত মনে --!

শরৎকালীন সকালগুলো নদীর চর ধরে আজও আসে ।
ফ্রক পড়া মেয়েটা প্রবাহিনীর চরের ওপর  সাদা কাশফুলের পথে হাঁটতে হাঁটতে কখনো যেন বদলে গেলো ।
বদলে গেলো মহালয়ার ভোর ,
শরৎ আকাশ -
কাশফুল -
এমনকি দুর্গাপুজোর মন্ডপটাও  ।

পুরনো উঠোনটা এখন সিমেন্ট দিয়ে বাঁধানো ।
স্থলপদ্ম আর ফোটে না ।
মেয়েটাও আর এ পাড়ায় আসে না পুজোতে ।
তবে তার চোখ এখনও সাদা সাদা মেঘে,  সাদা কাশফুল খুঁজে বেড়ায় ।
উঁকি মেরে খুঁজে আনতে চায়-
সেই সকালটা -ঢাকের শব্দ , নদী থেকে ঘট তুলে আনা , কলাবউ এর স্নান ।

চণ্ডীপাঠের শব্দ ভেসে আসলে -!
রোমকূপে কেমন শিহরণ হয় ,
মনে পড়ে,  দূরে অনেক দূরে একটা ফ্রক পড়া মেয়ে ।
অমনি আনমনে কেঁদে ওঠে ভেতরটা ।
শারদ সকালগুলো এখন নতুন শহরে ভাসে ।
ফ্রক পড়া মেয়েটির মুখে , মনকেমনগুলো সাদা কাশফুল হয়ে এখনও দিব্যি হাসে  ।

                   

তুলি রায়





বেলা অবেলা কালবেলা
******************



যেভাবে হারিয়ে যাচ্ছে খেইগুলো
মাঝ দরিয়ার তরী
উড়ছে শুধু ছাই
চিত্রনাট্যের নাটকীয়তায়
প্রলাপ সংলাপগুলো
মাখছে বিসর্জনের মাটি
আবাহনের থেকে বিসর্জন অনেক সহজ ছিল
যবনিকার পরেও জেগে থাকে উপন্যাসের আলো
যতটা আঁধার
তার থেকেও তীব্রতর হয় মুহূর্তমগ্নকাল
কাল-আকালের লীলায়
বাঙ্ময় হয়ে থাকে
আমাদের যাবতীয় ধূসর বার্তালাপ