নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

মোঃ রফিকুল ইসলাম




তুমি যে আমার মা ****************


জীবন সংগ্রামে এগিয়ে যায় মহীয়সী নারী , যাদের আঁচলে ধারণ করেছে হাজার সেনা । ধরণীর বুকে হাজারো স্বপ্ন থাকে মানবের , সব স্বপ্নের ধারক - বাহক , তুমি যে অনুপ্রেরণা , তুমি যে গর্বিত জাতি আমার মা । যাদের কন্ঠে মুখরিত ধরণী জীবন সংগ্রামে কত সৈনিকের গর্ভধারণী তুমি যে করেছো হাজার প্রদ্বীপ উন্মোচন তোমার বুকে ধারণ করেছো , মানব মুক্তির সম্মোহনী । তুমি যে আমার " মা " । মায়ের কূলে সন্তান যখন রঙ্গিণ স্বপ্ন দেখে, সেই আলোতে স্বপ্ন দেখে প্রদ্বীপ জ্বালায় মা । সে যে কারো বোন , সে যে কারো সহধর্মী তাদের সম্ভ্রম রক্ষা করে ,দিবো তোমায় উপমা। তুমি ধরণীর বুকে লালন যে মা ।

হোসাইন শাহাদাত




আমার মুখ সীলগালা করে দাও
***************************


আমার মুখ সীলগালা করে দাও,
বিদ্রোহীর সিলমোহর এটে দাও আমার শরীরে।
আমি স্বাধীন দেশের স্বাধীন নাগরিক হয়েও যদি -
প্রাণ খুলে হাসতে না পারি,ব্যক্তি স্বাধীনতার কথা বলতে না পারি? মানবতার কথা বলতে না পারি,তবে পরাধীন জাতি হিসাবে করুনা চাই না!
এইটুকু উপকারতো করতে পার আমার মুখ সীলগালা করে দাও।সীলমোহর এটে দাও আমার শরীরে।
মনুষ্য জাত কখন কি বলে ফেলি?তখন আবার মামলা -হামলা,
জাত ভুলে হিংস্রতা আর ক্ষিপ্রতা দেখাবে।
বরং সীলগালা করে দাও আমার মুখ!
গঠনমূলক সমালোচনা যদি না নিতে পার?
তবে নেতৃত্ব দেওয়ার যোগ্যতা তোমার কখনো ছিল না।
শুধু শুধু নেতৃত্বে কেন আসলে?
চাটুকার তোমার ভুল দেখেও বাহবা দেয়।
সমালোচক সত্যটা তুলে ধরে।
এ দুয়ের পার্থক্য যদি না বুঝ! তবে ফিরিয়ে দাও পরাধীনতা ,
না হয় সীলগালা করে দাও আমার মুখ।

রুনা দত্ত





তুমি
*****



তুমি না থাকলে ধূসর বিষণ্ণ এসকাল
সীমা অসীমের মাঝখানে
মৃত্যুকালীন গাঢ় বিষাদ 
বেহালার সপ্তক সুরে কত রঙ
 মনকে বুঝিয়েছি এ যাবৎ
 তুমি না থাকলে স্বপ্ননীল এই সুরও
 অপেক্ষার দীর্ঘ জঞ্জাল
 সবই উজ্জ্বল হলুদ ছবিতে শ্রাবণের
 বিবর্ণ সন্ধ্যারাগ
 শালবনের নির্জনতায় এককালীন 
 ঝিঁঝির গুঞ্জন।
  
  

তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়




আগমনীর সুর
*************



শ্রাবণ শেষের ভোরে যখন শরৎ এলো-
শিউলি ফুলে সুবাস তখন কে ছড়ালো ?
নীল আকাশে মেঘের ভেলা কে ভাসালো ?
শিশির তখন মন ভেজালো ঘাসের কোলে।
মনপাখিরা ডানা মেলে সুদূর নীলে।
আগমনীর সুর খেলে যায় ঢাকের বোলে।
সোনা রোদের ছোঁয়া তখন কাশের বনে
"সর্বজয়া মা" এর ছোঁয়া সকলখানে।
আনন্দ আজ কে ছড়ালো সবার প্রাণে ?
বিশ্বজুড়ে হিংসার বিষ,ঝগড়াবিবাদ, রণধ্বনি ।
তারই মাঝে জুড়ায় এ মন শুনে তোমার পদধ্বনি।
তাই তো মা'গো দুখের মাঝেও গাইছি তোমার আগমনী।
মা গো, তুমি সব্বাইকে রেখো ভালো।
সবার মনে জ্বেলে দিও ভালোবাসার আলো।
শিক্ষা যেন দূর করে দেয় আঁধার রাতের কালো।
মা'গো তুমি সব্বাইকে রেখো ভালো।।

সুজান মিঠি



মহালয়ার ভোরে
*****************



মহালয়ার ভোরে হঠাৎ ঝমঝম করে বৃষ্টি এলো,
রেডিওতে সবে শুরু হয়েছে বিরেনবাবু আর বাজলো…
জালনার কাঁচে থমকে দাঁড়ালো বৃষ্টি, ফোঁটা ফোঁটা করে,
রোজ চেনা শিউলিসুবাস পেলাম, ও তো জাগেই ভোরে।
উড়ে এসে সুবাসটা বললো, ‘আরে, দেখো, এসেছে বৃষ্টি,
খুশিমত শুনবো আগমনী,  নতুন করে পুরানো সৃষ্টি।

জানলার কাঁচে ফোঁটা গুলো তখন অনেক গেছে বেড়ে,
আনন্দে বৃষ্টি সম্মতি দিচ্ছে যে, যাবেনা বলছে ছেড়ে।
আমি মাথা নেড়ে বলি, বেশ,তবে বাইরে কেন, এস ঘরে
বৃষ্টি বলে, আমি যে মন ভেজাই গো, ঘর তো অনেকপরে
জানালাটা দিলাম খানিক খুলে, শিউলি সুবাস বললে
আচ্ছা, আমাদের সঙ্গে কেমন হয়, কাশের পাড়া গেলে?
চলো চলো, ওকে গিয়ে ডেকে আনি, আজ সবার ছুটি,
খেলবো নাচবো গাইবো  হাসবো একসাথে লুটোপুটি।

খোলা জানলার মধ্যে দিয়ে একরাশ শুভ্রতা নিয়ে এলো কাশ,
এসেই করলে শুরু, এস এস সবাই এস এটা পুজোর মাস।
বললো কি গো, কি সুন্দর মহালয়া, মায়ের হবে আগমন,
আমরা এখন বৃষ্টিমেখে সারাগায়ে হারাতেই পারি মন।
কি বলো, ও ধানের সবুজ, ও মা, দেখি সেও হাজির এসে,
কোত্থেকে এক বাবুই এলো হঠাৎ আকাশ ভেসে।
বললো, মুক্তি নেবে, মুক্তি? এক আকাশে খেলতে হবে,
দুই আকাশ যদি চাও… কি জানি, আসব আবার কবে।
বেশ, লিখে নিলাম ঠোঁটে, পরেরবার ঠিক আনব দেখো,
আমার জন্য আজের দিনে জানলা কিন্তু খোলা রেখো।

তিনটে শালিখ হাসছিল মিটিমিটি, শিউলি বললে এই,
হাসছো যে ভারী, ঝগড়া করার সময়, কাজে মন নেই!
হকচকিয়ে পরে কিচিমিচি ঝগড়া করলে শুরু খুব,
বলি আমি ওরে থাম থাম, ওই দেখ চড়াই দিচ্ছে ডুব।
উঠোনজুড়ে জমেছে বৃষ্টি, ফেলে ছড়িয়ে মাখছে চড়াই
মাধবী এসে বলে, জলকেলিতে আমায় নে’না ভাই।

রেডিওর পাশে জ্বালা ধুপ মা বলে গেলেন খবরদার,
নিভিয়ে যদি দিবি, মহালয়ায় তবে খাবি কিন্তু মার।
ততক্ষনে পাশে রাখা টগরগুলো হামাগুড়ি দিয়ে,
কানে কানে চুপিচুপি বললে, দেখো এসেছি কি নিয়ে,
হাতমুঠোতে দেখি চেয়ে  ঘুমিয়ে ছোট্ট কুঁড়িখানি ,
মায়ের স্নেহ চোখের উপর আড়াল করে আনি।
খেলতে চায় সেও সাথে, আদর করে বুকখানিতে,
রাখি তাকে। রেডিও তখন বীরেনবাবুর মিতে।
গমগম করছে ঘর দুয়ার উঠোন, আর আমরা,
মহালয়ার ভোরে আগমনী খেলায় সবুজ বৃষ্টি পাড়া।

ধীরে ধীরে শেষ হলো পুন্য নতুন ভোর, খুশির ক্ষণ,
হারিয়েছিল তখনো যেন সুরে-খেলায় বৃষ্টি মাখা মন।
হঠাৎ শুনি চমকে উঠে আধো গলায় আবার আগমনী,
বাজলো তোমার আলোর বেনু, গাইছে ছোট্ট ননী।

এস. কবীর






আমি হাইরোড 
*************

                                    
আমি হাইরোড-
আমার ওপর দিয়ে কত শত
ব্যাস্ত যান বহে যায় সাঁই_সাঁই করে-
দিন দুপুরে, রাত-বিরেতে;
উন্নয়নের চাকা অনির্বাণ ঘষটে চলে
আমার পিঠ ঘেঁষে -
তবুও আমি শ্রান্ত শহন শীল!
মাঝ রাতে ঘুম ভাঙে - নতুন চাকা আর
নতুন রাস্তার উৎকট আত্মচিৎকারে-
শোঁ-শোঁ নিশুত শব্দ! (তবুও) আমার
বুকের উপর বহে যায় -
শত টন লৌহ বোঝায় গাড়ি -
যান বোঝায় শিশু - পুরুষ - নারী ;
গ্রীষ্মের দাবদাহে তপ্ত বায়ুর ঝাঁপটে-
ঝলসে যাওয়া পিচের চামড়ায়-
বর্ষার খানা খন্দে ভর্তি জলে ;-
শীতার্ত ঘন কুয়াশায় কুহেলিকার
মাঝে অদেখা পথে ছুটে যায় -
ঊর্ধ্বশ্বাসে, সময়ের সাথে গতি বাড়িয়ে ;
ঋতুরাজের টানে, চিল-কোকিলের গানে-
ছুটে যায় বন হতে বনান্তরে;
তবুও আমার রাজপথে শিশুর রক্তে
লাল হয়ে যায় কখনো মানুষেরই ভুলে!
কত আয়ু হয়ে যায় ক্ষয় নিয়মের অনিয়মে!
তবুও আমার হয়না শেষ পথ চলার -
শহরের বুকচিরে বহে যায় - আমি হাইরোড -
দিক হতে দিকান্তরে।