নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

মৌ ঘোষ





মন্ময়ী
******



হায় রে দূর্গা..তোর কপাল দোষ,
নারী জন্ম নিলেই পরে
সমাজের ভিষণ রোষ ।

মাটির গৌরী মর্তে আসেন চারটি দিনের তরে,
আরেক গৌরী সত্য প্রকাশে অকালেই ঝরে পড়ে।

যে দেশেতে মানুষ অধিক, গরুও পায় সম্মান
সেই দেশেতেই নারী শিক্ষা
ভিষণ রকম বদনাম........।

প্রযুক্তিতে কর্মক্ষেত্রে নারী যখন শ্রেষ্ঠত্বের শিরপায়,,
ধৃতরাষ্ট্রের দেশে নারীকে গান্ধারী সাজায় যাতে পুরুষত্বে আঘাত না পায়,

মাটির মূর্তি  পূজার জন্য সবাই যখন মগ্ন

রক্ত মাংসের গৌরী তখন 
সমাজে হয় নগ্ন......।

কিশলয় গুপ্ত




পরিচয়
******



কাল হয়েছে সময় করে ভাবার
আমার নামটা আমার-নাকি বাবার
খালি পেটে ধর্ম তিতে লাগে
হাতের কাছে এক্ষুনি চাই খাবার
কালকে বললে কালকে পড়বে প্রেমে
গান বেজেছে মনেরই এফ এমে
কাল বেজেছে কাল ও বাজবে বলে
হঠাৎ করে আজ গিয়েছে থেমে
সময় করে ভাবতে বসি আবার
কোথায় এলাম, কোথায় ছিল যাবার
ঝোলার ভিতর মারছে উঁকি ফাঁকি
আমার নামটা-আমার নাকি বাবার
                              

রণধীর রায়



রাধা
****


আজ না হয় বাঁশি বাজিয়ে গেল রাধা-
চৌরাস্তা ধরে সোজা;
 বাঁ-দিক ঘেষে নর্দমা আর নন্দনকানন।
চিবুক বেয়ে নোনা জল তখন
মাথার ওপর ঘনশ্যাম মেঘ
বাঁশি বাজিয়ে গেল রাধা-
বেনারসের গঙ্গায় ডুব দিয়ে করাচির ফুটপাথ;
মাথায় ঝুরিতে কিছু কাঁটাতার আর মৃত ধর্ম। 
 সিরিয়ার কিছুটা বারুদ নিল মাথায়,
রক্তের দাগ লেগে ছিল যে স্কুলটির দেওয়ালে 
খসে যাওয়া লাল ঢুন, কবরের মাটি
মস্কো থেকে ইউক্রেন খালি পা, শান্ত। 
বাঁশি বাজিয়ে গেল রাধা-
প্যালেস্টাইনের রেস্তোরাঁর বাইরে 
বন্দুকধারী শান্ত শিশুটি তখনও শান্ত 
 ট্রিগারে আঙুল দেয়নি সম্ভবত এক রাত
"বোবা হও" শেখাচ্ছিল নর্থ কোরিয়ার স্কুলটি, 
সুদানের রাস্তায় রেকর্ড হচ্ছিল জেহাদ। 
বাঁশি বাজিয়ে গেল রাধা-
সিলেটের চা বাগান থেকে চীনের পাঁচিল 
আফ্রিকার আদিবাসী থেকে নন্দনের বুদ্ধিজীবী 
স্তম্ভিত সকাল থেকে ধর্ষক রাত 
মারমুখী মেট্রোর প্রৌঢ়দল অথবা অবাক প্রেম 
যেখানে যার ধর্ম ঠিক ছিল আগে থেকে... 

ধর্মগুলি মূহুর্তে পেল প্রান
ধর্ম শুধু মানবতা মানুষের জয়গান।

সুশান্ত সৎপতি





নিয়ম
******

(১)


গাছের ছায়ায়   ঘাসের উপর
বসে আছি আর ভাবছি
অন্তহীন চিন্তা স্রোত যেখানে খুশি নিয়ে যাক ।সংসার থেকে এক দুটো দিনের
ছুটিকে আর নিয়মে বাঁধতে চাই না।
বালিহাঁসের পাঁখায় মুক্তি লেখা আছে
নদীর জলে সাঁতার।আর ঐ
শাল মহুয়ার শাখায়,পাতায়
জীবনের অন্তহীন গান।
ক্ষীণ আয়ু মানুষ -আর কী চাইবো।
এতো ভালোবাসা ছড়িয়ে আছে
পৃথিবীর ধূলি মাটিতে!


               (২)

ক্রমশ চশমা পরা লোকের সংখ্যা বাড়ছে
দৃষ্টিশক্তি কমতে কমতে একসময়
পৃথিবীর রূপ দেখার জন্য
কোনো মানুষের চোখ কী থাকবেনা।কিন্তু
এ নিয়ে আক্ষেপ করার সময় এখনও আসেনি।যাদের হৃদয় বিবর্ণ হয়ে
আর এক ধরনের অন্ধকার নিয়ে এসেছে মাটির উপর,তাদের সংখ্যা বাড়ছে
পোকাদের নিয়মে।সংসারে এত অনিয়মের
মধ্যে  আশ্চর্য ভাবে এই নিয়ম কার্যকর!

অনাদি রায়





কল্পনা ও আমি :
 ---------------------

সদ্য ভেজা শরীরের পাশেই কল্পনা

ও আমি :
মিহি শ্বাসে ভরা ল্যাম্পপোস্টের নিচে
বিগড়ে ওঠা পাতলা পথ বেয়ে
বালকের সঙ্কুচিত গোঁফের মতো
অবুঝ একটি নদী-----

নদীর ত্বক ছুঁয়েই কল্পনা।।

কোকিলের কুহুকুহু মাঠ বরাবর
একনাগাড়ে অহম্ ছড়িয়ে দিয়ে
লাজুক কুয়াশায় আবৃত সেই

শাদা বাসনার মেঘ থেকে
অযথা লাল চিৎকার
ঐকুসুমের মতো কল্পনার সরু গলি দিয়ে আমি
গ'লে যাচ্ছি

সুদীপ্ত বিশ্বাস





অভিলাষ
*********




তুমি যখন নদী হলে
আমার চোখে আলো
সাঁতরে ভাঙি উথালপাথাল ঢেউ
অনভ্যস্ত গহীন গাঙে
আনাড়ি এই মাঝি
তুমিই জানো, আর কি জানে কেউ?
ঠিক সে সময় ঝাপুরঝুপুর 
বৃষ্টি যদি নামে
আকাশ জুড়ে গলতে থাকে মেঘ
সুখ সাঁতারে শ্রান্ত আমি
ঘুমিয়ে যদি পড়ি
জানবে আমার কেটেছে উদ্বেগ।
ঘুম ঘুম ঘুম ঘুমের দেশে
স্বপ্নমাখা চোখে
দুহাত দিয়ে জাপটে ধরি নদী
বাঁচতে রাজি অযুত বছর
আলোকবর্ষ পারে
ভালবাসা, তোমায় পাই গো যদি।
সহজ তুমি সহজ হয়েই
থেক আমার পাশে
গ্রীষ্ম দিনে,দারুণ মরুঝড়ে;
বুকের পাশে নরম ওমের
পালক হয়ে থেক
শীতের রাতে বরফ যদি পড়ে।