নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রাজীব লোচন বালা





অমৃত সন্তান হায়রে 
  *******************

                   

       হৃদ-মননে বড্ড ইচ্ছা ছিল ভালো হবো, মানুষ হবো__
        ঈশ্বরের অমৃত সন্তান!!!  মান- হুঁশের বালাইষাট,
        জাত- পাতে শতধা বিভক্ত, মুখে হাসি মনে কালি
                    না বুঝে যত সব বাজায় তালি ।

         স্বার্থে স্বার্থে টানাটানি,  মা - বাবাকে পেটায় ভারী,
         মা- বাবারে দেয় না খেতে, বউয়ের কথায় নাচে__
          বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে , শ্বশুর বাড়ি নিয়ে থাকে,
          এরকম অমৃত সন্তান !!!  আছে ভারী দেশে।

         অমৃত সন্তান !  বলতে হৃদয়ে কন্টক বিঁধে,
 মনুষত্বের অবনমনে পৃথিবীতে হাহাকারের দামামা বাঁজে
        অনেক দূর  চলে যাওয়া 'মানুষ'  আরকি,
শুনবে ধরিত্রী মাতার হাহুতাস আর বেদনা ভরা কান্নার ধ্বনি?

কি শুনবে, কি দেখবে আর কি বুঝবে,' আমরা'ই বা বুঝি কই?
চোখতো উন্মীলিত হয় না, কান দুটিও বধির, সহস্র ক্রোশ দূরে
দাঁড়িয়ে রয়ে মিথ্যা নাটকীয় প্রতিবাদের আহ্লাদী  ঝলকানি,
জীবনে প্রয়োগহীন নানান আদর্শবান বুদ্ধিজীবীদের কথার কলি__

আর বিপ্লবী মুখ হীন ভারী মুখের দ্বারোদঘাটনে ঘুমিয়ে পড়া,
মানুষ রুপে হিংস্র পশুর মতো কতশত , মিষ্টি মধুর কথা বলে।
কত রুপ-রস, আহার-বিহারে জমকালো আইটেম হাজারো,
ঈশ্বরের মহান সৃষ্টি বলে যাহারে, 'মানুষ' ! একি কন্দর রুপ তব?

হায়রে অমৃত সন্তান!!!তোদের দেখে ডরাই "আমি" বোঝাবো কেমনে,
 ধর্মে - ধর্মে হানাহানি,  সাম্প্রদায়িকতার গরল দিলে ঢেলে
নিজ স্বার্থ বুঝে নিয়ে,আপন মায়েরই বলি দিলে নিদান কালে,
      পশুর চেয়েও অধম মানুষ দেখছি এখন নরকুলে।

নিশি গিয়ে জাগৃতির দীপ্তকারী ভোর হল, কালিমা তবুও রয়ে গেল, 
হিংসা-দ্বেষে দেশ উজাড় হওয়া শশ্মান দেখি, শেষে ভাগাড়ের রুপ নিল__
 অমৃতের অমৃত সন্তান মানুষ হয়ে কি করছি  "আমরা"?
ওহে মানুষ ! শুনতে পাচ্ছ নাকি? ইস !  মানুষ বলি কারে ?

শুধুই তো পান্ডিত্যের অহংকারে ভরা ভাষণ আর অপার__ 
শব্দচয়নের বুলি, বিশেষ ক্ষমতা আর শিক্ষার মেরুদণ্ডহীন- বেহাল অবস্থায়,
  নব শক্তির উন্মাদনায়  মুক্তমনাপাখির নিশান হাতে,
 তেজোদীপ্ত  কন্ঠে গর্জে ওঠো অমানবিকতার প্রতিবাদে।

মানুষ অগ্নিপুরুষ ভুল নয় একথা, নর তার জ্বলন্ত গিরি আর,
            নারী হল তার প্রাণের আদ্যাশক্তি।
কিন্তু, আজ দেখি চক্ষু মেলিয়া, মানুষের আজ বিষাক্তরুপ হেরিয়া__
ঈশ্বরের মতি মরল, "তার" বানানো মানবিক মুখের কীটাচরণ দেখে।

   বলে অনেকে,  "মানবকীট" আছে ভারী ভারী শত-শতয়,
       বন্য-জানোয়ার কি দেখেছো , মানুষ দেখনি কভু__ তাই,
       রইবো না আর সেখানে মানুষ রবে  যেখানে,
চির শান্তি - পরিমলে রইবো মোরা শ্রীকুঞ্জের নীড় আলয়ে।

মানুষ হয়েছে যারা যারা, সহজ জীবন গড়ে সুখের পাড়ি দেয় নি তারা,
শত দুঃখ - যাতনা সয়ে হতে হবে মোদের স্বীয় কীর্তির ধ্বজা- ধরে তাদের দেখানো পথে।
বীর বিপ্লবী, মুনি-ঋষির দেশ  অখন্ড ভারতমাতার সন্তান হয়ে,
 আজ কি খেলায় মেতেছি মোরা ?  কি করছি আমরা ?

অমৃতের সন্তান মানুষ, দু-পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ  ওঠো,
জাগো, কাপুরুষতার স্বভাব ছাড়ো,  প্রেমের ডুরি দিয়ে__
এ জগৎ একাত্মতার ছন্দ-সুর-সাম্যের অখন্ডানন্দে  বাঁধো।
মা যে ডাকে বারে বারে মোদের  ধর্ম - কর্ম,  জাত-পাত ভুলে,
মোরা কি পারি না, রাখাল হয়ে তার পাশে, সবার পাশে এসে দাঁড়াতে ?
হায়রে অমৃত সন্তান, একবার তাঁকাও ছিন্নভিন্ন মায়ের দিকে।



তৌশিক ঢালী




বর্তমান সমাজ
**************



গর্ব করে বলি মোরা স্বাধীন ভারতবাসী,
মাতৃক্রোড়ে কন্যা মোদের হয়ে যায় বাসী।
রাজনীতির বেড়াজালে বদ্ধ মোরা,
খুনখুনি,মারামারি অশান্তিতে ঘেরা।
সবদেখে সববুঝে পথ চলি আজও,
প্রতিবাদের ভাষাটুকু মুখে নেই কারও।
ঘর ভাঙছে,মন ভাঙছে, ভাঙছে নদীর কূল
শিক্ষিত হয়েও মোরা করে যাচ্ছি ভুল।
স্বাধীন,স্বাধীন,স্বাধীন মোরা করি হইচই,
নিভৃতে একান্তে ভাবি স্বাধীনতা কই।

অভিজিৎ দাসকর্মকার




খামোশী
********



ভিনদেশী তারারা রাতের চিলেকোঠার দরজায় শিকল তোলে ট্রয় পড়ে সিয়াচেন পড়ে ভৌগলিক লাভা গলে যায় ম্যাকমোহন বরাবর

লাল-নীল টেবিল পাতে
ঘুলঘুলি তে অসংখ্য রিমিক্স গান 
পরকিয়ায় ব্যস্ত কূটনৈতিক  লিরিক 

খণার কোটেশন পড়ি
কক্ষপথ থেকে নেপচুন পাঠ করি তিব্বতীয় মহামন্ত্রের গায়ে অঙ্ক লিখি আর-
         দশ ঘরের ধারাপাতি পথ
          আঠারো ঘরের নামতায়
কবি জীবনের জড়তা ত্রিকোণমিতির তালগাছ হয়ে যায় 
লম্ব আর ভূমীর বর্গ-যোগফল: বাঁট রাহা থা যাব খুদা...
দু-বাহুর দূরত্বে সংসার বাড়ে:দো প্যায়র বাড় রাহা হ্যায়...

সন্দীপ ভট্টাচার্য



তোর জন্য
 *********         

           (১)
তোর মায়াবী মনের ছায়াপথে
আমার নামাজি আকুতি
হাটখোলা বুকে আরও একবার
নিঃস্ব হবার প্রণতি
           (২)
গজল সুরের রোদ্দুরে তুই
হেঁটেছিস শুধু উদাসীন
নূপুরের গান মনের উঠোনে
লুকোনো ব্যথার অংশিন্
          (৩)
আস্কারা দিলে বসন্ত আর
আড়াল খুঁজলে বর্ষা
দখিনা বাতাসে বৃষ্টি ফোঁটাতে
স্বপ্ন সুখের তিয়াসা
          (৪)
আগুন হয়ে আয় না ধেয়ে
জ্বলবো আমি দাবানলে
নতুন করে উঠবো বেঁচে
তপ্ত ছোঁয়ায় মরার ছলে
         (৫)
পারলে চোখের জল হয়ে যা
ভাসবো আমি পাল তুলে
চাইলে না হয় ঝাঁপই দেবো
কপালে ভাসা উদাস চুলে

বিকাশ দাস






দুষ্টুমি



তোমার নিঃশ্বাস আচম্বিত চুম্বনের গহনে
উড়িয়ে দিগন্তে    অন্তহীন রহস্য গোপনে
মোহের দরজা জানালা ভেঙে নিজের মনে
আলাপী আকাশ মেঘবরণ আমার শিহরণে 

তোমার সোহাগ মাখা বিলোল দুষ্টুমি
কবিতার মতো দৃষ্টি কাড়া স্বাধীন ভূমি
সৃষ্টি ছাড়া বৃষ্টি          প্রসন্ন মুখর সৃষ্টি
সঙ্গোপনে লুকানো ঝনৎকারে
উষ্ণ মধুর আলিঙ্গনে   তুষার-শীতল শরীর
নিরাময় 
উচ্ছিত সব কথার স্তব্ধতার  গভীরে হৃদয়
ঋতুময়  

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়



বৃষ্টি দুপুর






মেঘ করেছে এখানে খুব
আকাশ কাজল কালো
বৃষ্টি দুপুর আজকে হলেও
বৃষ্টি দুপুর নয় ।
বৃষ্টি দুপুর মানে জানি 
তোমার আমার বৃষ্টি
সেই তুমি আজ নাগালে নেই
অনেক দূরে ব্যস্ত ।
তুমিই যদি না থাকো তো
ঝরবে কোথায় বৃষ্টি ?
মনের মাঝে তুমি মানেই
বৃষ্টি মিষ্টি মিষ্টি ।
এখানে তাই বৃষ্টি মানে
সারাটাদিন কালো
সেই কালোতে ঢেকে আছে
ইজেল ক্যানভাস।
বৃষ্টি আজকে রঙ ঢেলেছে
বৃষ্টি আজকে তুলি
চোখের সামনে বৃষ্টি প্যালেট
বৃষ্টি ক্যানভাস ।
বৃষ্টি মেখে বৃষ্টি হেসে
বৃষ্টি নামে তুমি
বৃষ্টি জলের শরীর নিয়ে
ঝরছে অঝোর বৃষ্টি ।