নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

নীতা কবি মুখার্জী




রবি কবি
*********



আকাশের রবি আর আমাদের মাটির রবি দুজনাই প্রাতঃ স্মরনীয়
মাটির রবি তাঁর স্বমহিমায়, তাঁর উজ্জ্বল জ‍্যোতিতে চির বরনীয়।

জোড়া সাঁকোর ঠাকুর বাড়ীর অতি শুভ এক ক্ষনে
জন্ম নিলেন কবির রাজা বিশ্ব ভুবন জানে।
পাঠশালাতে মন বসে না,প্রকৃতি তাঁহারে চায়
গ্ৰহন করিলেন প্রকৃতি দেবীকে, মন যে সেদিকে ধায়।

নিয়মাবদ্ধ পূঁথি পড়া ছেড়ে ,পড়িলেন নানা পাঠ
বিদ‍্যা দেবী খুশী হয়ে তাঁর মাথায় দিলেন হাত।
মায়ের আশীষ মাথায় নিয়ে লেখেন কবিতা গুলি
গানে গানে আর গল্পে কথাতে ভ‍রিলেন নিজ ঝুলি।

বাংলা ভাঁড়ার পূর্ণ হলো যে কবিতা রচনা গানে
বাংলা ছাড়ায়ে বিশ্ব মাঝারে নোবেলটাও তো আনে।
কবিদের গুরু বিশ্বকবি বিস্ময় জাগে মনে
বাঙালী তোমার গর্বে গর্বী তোমার করুনা দানে।
আজি শুভ দিনে অঞ্জলি দিই তোমার চরন তলে
শুধু দেখি ঐ বিজয় মালাটি দোলে যে তোমার গলে।



জ‍্যোতির্ময় মুখার্জি





আ পারফেক্ট হোল্



এইতো চাঁদের মতো চুল সীমানা। হে প্রিয়, তোমার গর্ভাশয়ে বেড়ে উঠুক আজ আহ্লাদী মাটি। শাঁখা-পলার মতো খুলে রাখো তোমার ঘর ঘর বিশ্বাস। তুমি কি শান্ত হবে এই প্রকাশ‍্য স্বেদ ও বিষে?

যদিও এখানে কোনও যুক্তিহীন বারান্দা নেই। এখানে মাঝরাতে লোভীর মতো গান শুনিয়ে যায় না কোনও আধপোড়া শ্লোক। নীলকন্ঠ পাখিটিও এখানে রেলিংয়ে হেলান দিয়ে মেখে নেয়নি শরীর শরীর পালক। এখানে সবকিছুই পারফেক্ট। এখানে জলের তলায় ঘুমিয়ে পড়ে না জল

হে প্রভু, তিরস্কার করবেন না আমাকে। চিৎকার করে ঘুম ভাঙাবেন না আমার। আপনাকে অসহ্য করে তোলার মতো কোনও ব‍্যক্তিগত আঁশ বাকি নেই আর। আপনার প্রিয় পৃথিবী থেকে কোনও নরম নরম রাত চুরি করে পালাইনি আমি। আপনার পৃথিবীতে নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ে শিশু বুকে স্টেনগান জড়িয়ে। তাহলে খামোখা দোষ দিচ্ছেন কেন আমাকে ? ওদের বুকে থেকে যদি আপনি সীসার গন্ধ পান তারজন্য কি আমি দায়ী?

তাকিয়ে দেখুন, কিছু বালি বালি অন্ধকার কিন্তু এখনো ঠায় দাঁড়িয়ে। ওদের প্রতীক্ষার কোনো সিঁথিডোর নেই। নামতে নামতে ক্রমশ শষ্য থেকে বীজ, বীজ থেকে শষ্য হওয়ার আগে পর্যন্ত তুলতুলে জিহ্বা তুলে জেগে থাকে খিদে আর ভয়। ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাই শরীরে পিন ফুটিয়ে দেখে নিই, ঠিক কতটা স্বপ্ন বুনলে বাড়িঘরগুলো নিজস্ব পরাগ মুছে হাততালি দিতে দিতে হেঁটে যাবে সমস্ত রাস্তা জুড়ে



মোস্তফা তোফায়েল




প্রজনন ক্ষমতারহিত
*******************



পদ্মফুলের মধু, মিষ্টি মধুর।
পদ্মফুলের মধু পদ্মবুকে থাকে,
লালপদ্ম নীল পদ্ম সাদা পদ্ম
পুণ্ডরিক উৎপল কমল।
মধু পান করে ওরা শুয়ে ঘুম যায়,
স্বপ্নে স্বপ্নে বায়ু সাঁতরায়,
উড়ায় উড়ায়
বলাকা পাখায়
দেশ হতে দেশান্তরে ঘুমোতে ঘুমোতে চলে যায়
আনন্দের ঘোর মদিরায়।
মানুষ তাদের সব গ্রন্থি খুলে দিয়ে
সোম রস মধু নিয়ে সম্পদ দোলায়;
দুই পক্ষ মেলে দোলনায়;
সারা বিশ্ব মুগ্ধ আজ আচানক মধু ছলনায়।
মধুবিদ্ধ উভ-পক্ষ
সম্মিলনে উদ্বাহু ত্রস্ত লোলায়মান বিলাসী ছেলেরা
আলিঙ্গনে আলিঙ্গনে ভিজিয়ে ফেলেছে আজ ভূমিদেহ ধরা;
ভোগবাদী বিশ্বে আজ সারাদিন সারাক্ষণ বেজে চলে গানের পসরা।
প্রবল সংঘর্ষ নেই, প্রতপ্ত সঙ্গম নেই, প্রজনন নেই!
সংঘর্ষে সংঘর্ষে ত্বক ছিঁড়ে যাওয়া উত্তেজনা নেই!
প্রজনন ক্ষমতাই নেই।
নিঃশ্বাসে প্রশ্বাসে নেই উত্তপ্ত, চাপা শীৎকার;
নেই অঙ্গীকার;
নেই দম্ভ, খাড়া স্তম্ভ, নেই ঘর্মস্রাবী স্বাধিকার;
নেই অহংকার
পৌরুষের নারীত্বের সদর্পী সুপুষ্ট বেদনার
প্রবল ঝংকার।
আছে শুধু স্মৃতি কথা –
একদিন আমাদেরও ছিল অধিকার প্রবণতা;
একদিন আমাদেরও শালপ্রাংশু বাহুবল ছিল;
একদিন আমাদেরও খাড়া নাঙ্গা খোলা অস্ত্র ছিল:
একদিন আমাদেরও অনন্তপ্রবাহী নদী রক্তস্রোত ছিল;
একদিন আমাদেরও ঐক্যবদ্ধ এক মাতা ছিল;
আমাদের জাতিগোত্রবর্ণপ্রথা একদিন একাকার ছিল;
প্রবল হুংকার ছিল পাহাড় কাঁপানো—
প্রবল ধিক্কার ছিল মেঘদের গর্জন ছাপানো—
কঠিন আঘাত ছিল বন্দুকের সুতপ্ত ব্যারেলে—
সেই বীর্যপাতে জন্ম নিয়েছিল বিশ্বময় মানব প্রবল
উজ্জীবিত, সাহসী, সবল
আজ শুধু পান করি মধু।
নিঁদ যাই মনের হরিষে;
রজনী শাওন ঘন, ঘন দেয়া গরজন
রিমিঝিমি শবদে বরিষে
নিঁদ যাই মনের হরিষে।

তনুজা চক্রবর্তী




পাটকাঠি
********


                   

বদল এসেছে, আঙ্গিকে বদল না ঘটিয়ে
শঙ্খের ছন্দের বারান্দায় কবিতা,
রবি মধু ছন্দে ঘোরাফেরা করেছে---
তবে নবীন কলম সেই সুরে, 
অনীহা দেখাতে গিয়ে আজ সরগম ভুলেছে !
আধুনিক সভ্যতা ঝুলছে ছেঁড়া জিন্সে,
কোমর থেকে নেমে অনবরত মাটি ছুঁতে চাইছে, 
পুরুষের লজ্জা বস্ত্র !
নারীরাও মুগ্ধ ছেঁড়া জিন্স, কাটা হাতে! 
গান সোৎসাহে পানীয় হয়েছে, 
যুগের সঙ্গে সভ্যতা এগোচ্ছে
কবিতার সঙ্গে প্রবন্ধের অবৈধ প্রেম বাড়ছে,
শুধু হারাচ্ছে কবিতা প্রীতি--
অভিধান বুকে জড়িয়ে কবিতা পাঠের অভ্যাস, 
নীরেণ সুনীল শক্তি  অবধিই তাকে ভালোলাগায় !
তাই শুরুর সেই সহজপাঠ, মান্ধাতার পথপ্রদর্শক 
এখনো প্রকাশকের পেট ভরাচ্ছে !
অবয়ব টাকে মেনে চলেছে সাহিত্য, 
শুধু কাঠামোটা পাটকাঠির বন্ধুত্ব---- 
মেনে নিয়েছে।

মালবিকা ব্যানার্জী





                  আমি - তিলোত্তমা
                   ***************



তিলোত্তমা -
কোন আবরনে ঢেকোনা নিজেকে
উন্মুক্ত থাক তোমার বুক
মিলনের দাগ আমি রেখে যাই -

তিলোত্তমা -
কোন ছলনা মিশিয়োনা নিজেতে
শুদ্ধ থাক,সুন্দর থাক তোমার মন
বৈরাগ্যের মন্ত্র আমি শিখিয়ে যাই -

তিলোত্তমা -
কোন কলঙ্ক মেখোনা গা-য়
আমি,শুধু আমি ভাসাব তোমায়
কৃষ্ণ-প্রেম যমুনায় !

                

রাজীব লোচন বালা





অমৃত সন্তান হায়রে 
  *******************

                   

       হৃদ-মননে বড্ড ইচ্ছা ছিল ভালো হবো, মানুষ হবো__
        ঈশ্বরের অমৃত সন্তান!!!  মান- হুঁশের বালাইষাট,
        জাত- পাতে শতধা বিভক্ত, মুখে হাসি মনে কালি
                    না বুঝে যত সব বাজায় তালি ।

         স্বার্থে স্বার্থে টানাটানি,  মা - বাবাকে পেটায় ভারী,
         মা- বাবারে দেয় না খেতে, বউয়ের কথায় নাচে__
          বৃদ্ধাশ্রমে পাঠিয়ে দিয়ে , শ্বশুর বাড়ি নিয়ে থাকে,
          এরকম অমৃত সন্তান !!!  আছে ভারী দেশে।

         অমৃত সন্তান !  বলতে হৃদয়ে কন্টক বিঁধে,
 মনুষত্বের অবনমনে পৃথিবীতে হাহাকারের দামামা বাঁজে
        অনেক দূর  চলে যাওয়া 'মানুষ'  আরকি,
শুনবে ধরিত্রী মাতার হাহুতাস আর বেদনা ভরা কান্নার ধ্বনি?

কি শুনবে, কি দেখবে আর কি বুঝবে,' আমরা'ই বা বুঝি কই?
চোখতো উন্মীলিত হয় না, কান দুটিও বধির, সহস্র ক্রোশ দূরে
দাঁড়িয়ে রয়ে মিথ্যা নাটকীয় প্রতিবাদের আহ্লাদী  ঝলকানি,
জীবনে প্রয়োগহীন নানান আদর্শবান বুদ্ধিজীবীদের কথার কলি__

আর বিপ্লবী মুখ হীন ভারী মুখের দ্বারোদঘাটনে ঘুমিয়ে পড়া,
মানুষ রুপে হিংস্র পশুর মতো কতশত , মিষ্টি মধুর কথা বলে।
কত রুপ-রস, আহার-বিহারে জমকালো আইটেম হাজারো,
ঈশ্বরের মহান সৃষ্টি বলে যাহারে, 'মানুষ' ! একি কন্দর রুপ তব?

হায়রে অমৃত সন্তান!!!তোদের দেখে ডরাই "আমি" বোঝাবো কেমনে,
 ধর্মে - ধর্মে হানাহানি,  সাম্প্রদায়িকতার গরল দিলে ঢেলে
নিজ স্বার্থ বুঝে নিয়ে,আপন মায়েরই বলি দিলে নিদান কালে,
      পশুর চেয়েও অধম মানুষ দেখছি এখন নরকুলে।

নিশি গিয়ে জাগৃতির দীপ্তকারী ভোর হল, কালিমা তবুও রয়ে গেল, 
হিংসা-দ্বেষে দেশ উজাড় হওয়া শশ্মান দেখি, শেষে ভাগাড়ের রুপ নিল__
 অমৃতের অমৃত সন্তান মানুষ হয়ে কি করছি  "আমরা"?
ওহে মানুষ ! শুনতে পাচ্ছ নাকি? ইস !  মানুষ বলি কারে ?

শুধুই তো পান্ডিত্যের অহংকারে ভরা ভাষণ আর অপার__ 
শব্দচয়নের বুলি, বিশেষ ক্ষমতা আর শিক্ষার মেরুদণ্ডহীন- বেহাল অবস্থায়,
  নব শক্তির উন্মাদনায়  মুক্তমনাপাখির নিশান হাতে,
 তেজোদীপ্ত  কন্ঠে গর্জে ওঠো অমানবিকতার প্রতিবাদে।

মানুষ অগ্নিপুরুষ ভুল নয় একথা, নর তার জ্বলন্ত গিরি আর,
            নারী হল তার প্রাণের আদ্যাশক্তি।
কিন্তু, আজ দেখি চক্ষু মেলিয়া, মানুষের আজ বিষাক্তরুপ হেরিয়া__
ঈশ্বরের মতি মরল, "তার" বানানো মানবিক মুখের কীটাচরণ দেখে।

   বলে অনেকে,  "মানবকীট" আছে ভারী ভারী শত-শতয়,
       বন্য-জানোয়ার কি দেখেছো , মানুষ দেখনি কভু__ তাই,
       রইবো না আর সেখানে মানুষ রবে  যেখানে,
চির শান্তি - পরিমলে রইবো মোরা শ্রীকুঞ্জের নীড় আলয়ে।

মানুষ হয়েছে যারা যারা, সহজ জীবন গড়ে সুখের পাড়ি দেয় নি তারা,
শত দুঃখ - যাতনা সয়ে হতে হবে মোদের স্বীয় কীর্তির ধ্বজা- ধরে তাদের দেখানো পথে।
বীর বিপ্লবী, মুনি-ঋষির দেশ  অখন্ড ভারতমাতার সন্তান হয়ে,
 আজ কি খেলায় মেতেছি মোরা ?  কি করছি আমরা ?

অমৃতের সন্তান মানুষ, দু-পায়ে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষ  ওঠো,
জাগো, কাপুরুষতার স্বভাব ছাড়ো,  প্রেমের ডুরি দিয়ে__
এ জগৎ একাত্মতার ছন্দ-সুর-সাম্যের অখন্ডানন্দে  বাঁধো।
মা যে ডাকে বারে বারে মোদের  ধর্ম - কর্ম,  জাত-পাত ভুলে,
মোরা কি পারি না, রাখাল হয়ে তার পাশে, সবার পাশে এসে দাঁড়াতে ?
হায়রে অমৃত সন্তান, একবার তাঁকাও ছিন্নভিন্ন মায়ের দিকে।