নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

-জিবেন্দু রাজবংশী

অভাব হলেও হারিনি 
*******************



তুচ্ছ হলে কি হবে!
রাতে সরু গলির মোরে আমার কদর এখন অনেক।
ওই যে সমাজের লোকেরা কি যেন বলে আমায় বেশ‍্যা নাকি?
বলি হে বড় বাবুরা আজ তোমরা যারে বেশ‍্যা বলো,
আমার পেছনের হিস্ট্রী একটু শুনবে চলো।
এক কালে আমার বাবার টানের সংসারে অভাব পড়েছিল খুব,
তা দেখে আমি থাকতে পারিনি চুপ।
তবে সার্টিফিকেটের উপর ভরসা ছিলো বটে,
রোজগারের দায়িত্ব তো আমাকেই নিতে হবে মাথায় উঠলো চটে।
এই এম.এ পি.এইচ.ডির যুগে কমদামী মাধ‍্যমিক পাশের সার্টিফিকেট কি হবে শুনি?
মুদ্দা কথা গরীবের মেয়ে তো ঘুষের টাকা দিতে পারবো নি।
তাই সরকারি চাকরি আর করা হয়নি,
বেসরকারি কোম্পানি গুলোতেও টাকা দেয়না খুব একটা কমী!
এদিকে বাপটাও আমাদের ছেড়ে ইহলোকে গেল চলে
এ আবার নতূন কি?
আমি মা আর ভাই পরলাম বড় অভাবের গেরাকলে।
ভি.আই.পি অফিসের দরজায় কত ঘুরলো আমার দু-পা,
টাকা ছাড়া গতিক নেই জীবন করছিল খাঁ খাঁ।
কালো কোট পরা বাবুরা চাইনি আমার কমদামী সার্টিফিকেট,
চেয়েছিলো সাধাসিধা গরীব মেয়েটার উষ্ণ শরীরের স্রোত।
গরীব হলে কি হবে আমি কিন্তু অনেক দামী,
তাই দেয়া-নেয়ার চাকরিটা আর হয়ে ওঠেনি।
একদিকে দারুণ অভাব আর অন‍্যদিকে গরীবত্বের অভিশাপ,
শেষমেষ নিরুপায়,দামী শরীরটা নিয়ে দিতেই হলো ঝাঁপ।
না না মৃত‍্যূতে নয় বাবুদের একটু উষ্ণ স্বাদ দেবার তরে,
মরতে পারলে তো বড়জোড় বাঁচতাম,
কিন্তু আমি হারিনি টাইপরা কথ‍্যবাবুদের কাছে,
আজও অন্ধকার রাতে মেদ জমে যাওয়া বাবুরা টাকা নিয়ে ছুটছে আমার পাছে।।
                            

সুকান্ত মণ্ডল

 আমি বৈশাখ 
**********



চৈত্র তুমি ভালো থেকো-
আমি বৈশাখ এসেছি বাংলায়।
নতুন করে সৃষ্টি হব ,আবার ধ্বংস ও হবো;
মনে মনে বাঁধব এক আকাশ শপথ।

ইচ্ছে হলে, ভালবাসা হয়ে ঝরবো-
           সবুজের পাতায় -পাতায়।
জলোচ্ছাসের প্রেমে আনব শস্যোচ্ছাসের বিপ্লব ।

আবার, ইচ্ছেমতন ধুয়ে ফেলব-
   নরপিশাচদের শিরায়- শিরায়।
অবক্ষয়ী আমার দেশে বেলাফুল হবে চিরবিরাজিত।


শুভদীপ পাপলু

সাডেন ডেথ
 ***********



অন্য ঋণের সাতসকালে,
কালো মানুষের ছাল
তোমার দেহে গাছ পুঁতেছে,
শুকনো লংকা'র ঝাল।

বাকি যুগের হিসেব খাতা,
সাইরেন-এ কফি মাগ
কলমপেষা জীবিকা তোমার,
আমার দেশ ভাগ।

কড়িবরগায় নকশালবাড়ি,
আসমুদ্র হিমাচল
ছন্দ হারুক তোমার নিচে,
আমার কর্মফল।

কাল কিশোরী'র রান্নাবাটি,
ইছামতি'র কূল
তোমার ওজোন্ বাড়ছে খুব'ই,
আমার ভাতে ভুল।

তোমার ছবি দ্য ভিঞ্চি মুখ,
শ্রমিক শ্রেণি'র ঝি
তোমার চোখের আইন অমান্যে,
ব্যারিকেড ভেঙেছি।


দেবাশিস সাহা

সার্কাস জীবন 
**************

            

হে ঈশ্বর
সার্কাসের তাঁবু থেকে বলছি

তাঁবুর সারা শরীরে 
বড় বড় আইহোল

ঝড় এসে উকিঁ দেয়
দ্যাখে
     জোকারেরা কষ্ট আর কান্নাগুলোকে
ধর্মান্তরিত করছে হাসি আর মজা

বিদেশী শরীরের জ্যোতস্না 
কুড়িয়ে নিচ্ছে দর্শক

হাতি-ঘোড়া-কুকুর আর পাখি
কসরত ফেরি করছে
কংক্রিটের জঙ্গলে

একটা দুখি খিদে
ট্রাপিজের খেলা দেখাতে দেখাতে
এগিয়ে আসছে আমার দিকে

সেই আদিম যুগের ছেঁড়া জাল
আজো ব্যালান্স করছে মানুষের

হে ঈশ্বর
এই সার্কাস জীবন আর 
জীবনের সার্কাস
   মেলাবো কোন অংকে....

অর্ঘদীপ পানিগ্রাহী

আনকোরা বনবাসী
*******************



অনাবৃত শব্দপুঞ্জে হারাতে গিয়ে -
দিগন্তের অনাবিল আলোর মেলায় -
মধুমালতীর ছায়ার সঙ্গোপনে ,
ঝরে পড়েছি শিউলী বেলায়...
অধরা ঘুমপাড়ানি সজীব মিঠে হাওয়ায় -
একরাশ স্বপ্ন বুক চুপকথায়.....,
এ অভাগী মন ফিনিক্সের ক্ষুধার্ত ঠোঁটে -
উষ্ণ আবহের গালিচায় একান্তে গুমরে মরে -
অনাস্বাদিত উড়ো প্রেমের তর্পণে -
শ্যাওলা ভেজা কোন এক কাক ভোরে -
আড়ষ্ট একবিংশীয় অবিন্যস্ত প্রহরে...,
প্রানহীন ইঁট পাথর আর কংক্রীটের -
কান্নাভেদী বাড়তি নেশায় - চিরকল্পিত শহরে ,
ভালো থাকার স্বল্পমেয়াদী সুদ আসলের -
অমলিন জটিল প্যাঁচের , অসম্পূর্ণ গর্ভ দ্বারে ,
তোর আলতো ছোঁয়ায়, শতপদী কেন্নো মন..
আবার ও খুঁজে নেয় সব হারিয়ে হারানোর কারণ...

জয়দীপ রায়

কল্প দুপুর 
*********



আমার এক চিলেকোঠা রদ্দুর
মসৃণ আম্রফলকে পোহাচ্ছিল
এক ঝিমানো দুপুরে
বড্ড লোভী ওই দুপুর পোড়া রোদ
দড়িতে টাঙানো আঁচলটা
ঘুম চোখের মারীচকে
ধরবে বলে পার হয়েছিল
সাবধানীর গণ্ডি
আর ফেরেনি
মার্কেন্ডীয় মতে ওটা এক কল্পনা
একটা দুপুর রোদের ।