নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রিক্তা মুখার্জি



*অমর একুশে*
************


জননী, আমার গর্বিতা জননী,
দেখ তোমার ছেলের লহু জননী,
গড়িয়ে লাল এই মাটির বুকে,
তোমার গৌরব তুলে ধরতে
তারা জেগেছে শান্তির চিরহরিৎ মুখে।

ভুলেছে জোছনাস্নাত চাঁদনী রাতের ফোয়ারা,
গায়ে মেখে কত রক্ত, ঘাম,বুলেট,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।
ও আমার স্বাধীন জননী,
সমুদ্র নদীর রক্তজলায়
তোমার ছেলেরা রয়েছে সেথায়,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।

আকাশের বিদ্যুৎ ঝলকের মত জেগে ওঠা
তোমার রূপেরঘটায়, প্রকৃতির ঘ্রাণে,
সবুজের ঘোমটাপরা উদার দিগন্তরেখা জননী,
ওরা এনেছে স্বাধীন বাংলায় শান্তির পায়রা,
তুলে ধরেছে পেশিবহুল হাতে
এই মানচিত্র, সবুজের মাঠ,
কৃষাণের লাঙল, পতপত করে ওড়া
লাল সবুজ সমুজ্জ্বল তোমার আঁচল জননী।
ওরা এঁকেছে সুউচ্চ তাল-তমালে
স্বাধীন সূর্য লহুর প্রেম, প্রশান্ত বায়ুর অবনী।

হিমালয়ের শিখর ছড়িয়ে
বাংলার স্বর্গ তুলে দিতে
ওরা জেগেছে বিনিদ্র রজনী,
অজস্র বুলেটের আঘাতে
ঝাঝরা বুকের কাঁপুনি,
মরেও ওরা মরেনি,
মরেও ওরা মরেনি।
হে আমার দুখী বাংলা জননী,
তোমার চোখে অশ্রু মুছে,
ওরা লুটিয়েছে তোমার শিয়রে,
হাসি হাসি দিবস রজনী।

ওরা এঁকে গেছে ভাটিগাঙ স্নিগ্ধ জল হাসি,
শত শত মাইল সুবিস্তৃত তটে,
তোমার ঢেউয়ের বাঁশি,
বীরের সমুদ্রজলে দিগন্ত প্রসারিত
ডানা মেলা গাঙচিল, সারস,
সূর্য ছুঁয়ে সদা জাগ্রত মাঝির তরণী,
ও আমার শান্তির জলপাই পাতা জননী।
জেগেছে ওরা তোমার শিয়রে
হাসি হাসি মুখে দিবস রজনী।

রূপা রায়




একটি দিনের তাৎপর্য
*****************



তাৎপর্যপূর্ণ দিন না দিনটির তাৎপর্য!
শহিদের বেদিতে ফুল না ফুলের
সজ্জায় শহিদ!
   প্রতিটি দিন আসে প্রতিটি দিনের মতো।
সব দিন ই সমান
কেউ জানে না কোনদিন কখন তারিখ হয়ে যায়;
ইতিহাসের পাতার কোনো গুরুত্বপূর্ণ
অধ্যায় সৃষ্টি করে সে।
  জীবনের আয়ু যেমন কল্যানপুত কর্মে
দিনের মাধুর্য তেমন মানুষের বিপ্লবের উচ্ছ্বাসে।
  অধিকারের মান্যতা বোঝার বিড়ম্বরতা,
খসখসে কলমের কালির লেপন কাগজের পাতায়।
দিবসের অন্ত নেই
আর নেই প্রকাশের মাধুর্য;
দিন আসে দিন যায়
শহিদ অমর হয়,
তুমি আমি ফুল দিই তাতে।
রাখতে শহিদের মান
আগুনে জ্বালাও প্রাণ
ঝড় তোলো কোনো প্রভাতে।
  প্রাচ্য পাশ্চাত্যের অপূর্ব মেলবন্ধন
বাংলার শিক্ষক,তার ই সন্তান
ইংরেজী স্কুলের নন্দন;
আভিজাত্যের অহংকারে উচ্চ শিরে কহে-
ছেলেটা আমার বেশ নাম করেছে
ইংরেজী ইস্কুলের ফাষ্ট বয়,
তবে বাংলাটা বিশেষ বোঝে না
তাতে কি আসে যায়?
মানুষের মত মানুষ হচ্ছে
কেবল মাতৃভাষায় দুর্বল।
তা হোক  তাতেই বা কি আসে যায়
মারা পড়েছিলো কিছু মানুষ না হয়!
  বিবেক বন্দী তালকানা তাই
করছি পালন ভাষা দিবস।
বন্ধ দেরাজ খোলো রে সকলে
দ্বন্দ্ব ভুলে তোলো আওয়াজ।
তোমার ভাষা আমার ভাষা
বাংলা আমার মান
সবে মিলে অমর করি
বাংলা ভাষার প্রাণ।।


মো: রফিকুল ইসলাম




আমি শহীদ মিনারে দেখেছি
**********************



আমি শহীদ মিনারে দেখেছি
যেখানে চল্লিশ কিংবা তারও বেশি রক্তের ছাপ।
যারা মা , মাটি ও মাতৃভূমির গর্বিত সন্তান ,
মাতৃভাষার জন্য দিয়েছে যারা অকাতরে প্রাণ
তারা যে আমার স্বপ্নে আঁকা এই বাংলারই বুকে মুক্তির জয়গান ।

আমি দেখেছি মায়ের চোখের জল
বিধবা মায়ের হয়েছে স্বপ্ন ধূলিসাৎ
পিতৃহারা সন্তানের আর্তনাদের চিৎকার
কবে আসবে সেই প্রতিজ্ঞায়...।

জানি ওরা চল্লিশ জন কখনো ফিরে আসবে না,
ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের বুকে তারা যে মৃত্যুঞ্জয়ী বীর।
আমি কৃষ্ণচূড়ার অজস্র পাপড়ি ভালোবাসি ,
ভালোবাসি মুকুল গাছতলায় বসে প্রশান্তি নিতে-
যেখানে ফাল্গুনের পুষ্পিত ফুলের গন্ধে রমনার প্রাঙ্গণ,
আজ ইতিহাস সাক্ষী মায়ের ভাষার জন্য।

আমি ভালোবাসি তাদের কে
যারা বুকে শহীদের স্বপ্ন লালন করে
বাংলাকে দিয়েছে প্রাণ,
রঙিন বর্ণে ধরণীর বুকে।
আমি বিশ্বাস ঘাতকের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই,
যারা দিতে চাইনি আমার মায়ের সম্মান
যাদের বুলেটের আঘাতে বাংলার বুকে রাজপথে রক্তক্ষরণ হয়েছে আমার ভাইয়ের দেহ,
সেসব ঘাতকরা যে এখনো সজাগ ,
কিভাবে বাংলাকে বিলুপ্ত করবে এ ধরণীর বুক থেকে।
বাংলাকে ভালোবেসে করে যাবো আমরা তাদের প্রতিঘাত।

আমি শুনতে ভালোবাসি মুয়াজ্জিনের আযানের সুমধুর সুর,
যে  মধুর সুর শুনে ভাইয়ের ঘুম ভাঙ্গে মায়ের ভাষা রক্ষায়,
ঘুম ভাঙ্গে ভোরের দোয়েল ,কোকিল , শালিকের কন্ঠে,
যে কন্ঠ শুনে রাজপথে ঝড়েছিল তাজা প্রাণ!

কখনো ভুলবো না তাদেরকে , ভুলবো না মায়ের গর্বিত সন্তানদের,
যে বুকে তোমাদের নিয়ে আমার বাংলার জয়গান,
ভালোবাসি তোমাদের স্বপ্ন ,
যে স্বপ্ন লালন করে যাবে আমার এই স্বপ্রাণ ।

মো: আল-আমীন হোসাইন



চাপাবাজ
*********




ভাষার জন্য তোমরা যারা
দিয়ে গেলে প্রাণ,
আমরা কি রেখেছি কভু
বাংলা ভাষার মান।

বাংলার সাথে ইংরেজী হয়
হায় হ্যালো সরি,
এসব কথা বলতে গেলে
লজ্জায় যে মরি।

আম্মু ছেড়ে মাম্মি বলি
আব্বু ছেড়ে যে ডেডি,
ডিজিটালের ছোঁয়া লেগে
শুরু না হয়ে রেডি।

ভাষার মাসে যাদের জন্য
শহিদ মিনারে ফুল,
নাচে-গানে অশ্লিলতা
এটাও একটা ভুল।

হায়রে বিবেক পঁচে গেলি
বিক্রিত তুই আজ,
বাংলাভাষি দাবি করে
হইছো চাপাবাজ।

কামরান চৌধুরী





একুশে চেতনা
*************

একুশ মনে চেতনা আনে
ভাষার বোধ হৃদয় পানে,
রক্ষা করতে মায়ের ভাষা
শহিদ বেদিতে ছুটে আসা।

ফাগুন দিনে দীপ্ত শপথ
বর্ণ শব্দে মোহিত জগৎ।
অতীত সাথে মেল বন্ধন
অন্তর গৃহে ভাষা স্পন্দন।

প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে
ভাষা মাধুর্য বাহিত সুরে।
গর্ব আমার বাংলা ভাষা
গড়েছি সেথা স্বপ্নের বাসা।

ভাষার জন্য দেশের জন্য
শহিদি মরণ ধন্য ধন্য।

একুশ মনে তারুণ্য আনে
শত্রুর মূলে আঘাত হানে,
দেশের মাটি কপালে ছুঁয়ে
মৃত্যু চুমি যে অহংকারে।

শেকল ছেঁড়া দুরন্ত তরী
নোঙর করে প্রভাতফেরি।

ভাষার তাজ শ্বাস প্রশ্বাস
শিমুল পলাশে নিত্য বাস।
একুশ মানে এগিয়ে চলা
সপ্ত সিন্ধুতে ভাসিয়ে ভেলা।।


মাযহারুল ইসলাম অনিক




ভাষা শহীদের প্রতি
**************




ইচ্ছেগুলো যখন তখন
বলতে পারে কথা,
উর্দূ ঘায়ে মনের মাঝে
হয় না এখন ব্যথা।

শাসকগুলো মাইক হাতে
ছাড়ছে না আর ডাক,
বাংলা ভাষা মনের মাঝে
দিচ্ছে শুধু হাঁক।

বুড়ো -বুড়ি খোকা -খুকু
জানায় মনের আশা,
অ, আ,ক,খ সর্বখানে
বাঁধছে সুখের বাসা।

গলা ছেড়ে ইচ্ছেমতো
গাইতে পারি গান,
বাংলা মায়ের দামাল ছেলে
করলো জীবন দান।

হাজার সালাম জানায় তাদের
লড়লো যারা একা,
রাজপথেতে জীবন দিতে
পায় না ভীতির দেখা।

সেই তো আমার সবার প্রিয়
দেশের রফিক সালাম
তাদের তরে জীবন ভরে
পড়ি দোয়া কালাম।