নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সুমিত মোদক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সুমিত মোদক লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

ফিরে আসে ঘরে :- সুমিত মোদক




মেয়েটি ফিরে এসেছে ঘরে ;
#
কদিন ধরে মেঘ জমে ছিল আকাশের বুকে ;
অথচ , বৃষ্টির দেখা নেই  ;
মেয়েটা ফিরে আসতে ঝমঝম করে শুরু হল  শ্রাবণের বৃষ্টি ;
#
পাড়া-গাঁর বর্ষার গান বেঁধে নেয়
উদাস বাউল ;
সেধে নেয় লালন ফকিরের গান ...
নদীর বুকেও ভাটিয়ালি সুর জেগে উঠে
মেয়েটি ফিরে এলে  ;
#
বাদাবনের কাদাজলে জমে থাকে অনেক দুঃখ-যন্ত্রণা-অভিমান---
খাঁড়ি পথে জীবন মৃত্যুর লুকোচুরি খেলা  ;
মেয়েটি বাঁচার জন্য শ্বাসমূল আঁকড়ে ধরে ;
মণি নদী পাড় ভেঙে , জন্ম দেয় দ্বীপ ;
#
মেয়েটি ফিরে এসেছে ঘরে ;
#
আবার সে নেমে পড়বে জলে মিন ধরতে ;
এ শ্রাবণের সকালবেলায় ...
#
মেয়েরা ফিরে আসে ঘরে ।।

এক আঁচলা জল:- সুমিত মোদক



হরপ্পা নগর থেকে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে হাঁটতে ঠিকই পৌঁছে যাবো তোমার কাছে ;
সেদিন কি তুমি চিনতে পারবে আমাকে  !
চিনতে পারবে কি তোমার সেই পোড়া মাটির পুতুল !
যে গুলো নিয়ে তোমার মেয়েবেলার পুতুল খেলার দিন ;
সে গুলো সযত্নে আজও রেখে দিয়েছি নিজের কাছে ;
#
সেই হরপ্পা সভ্যতার অন্তিম থেকে আজও খুঁজে চলেছি তোমাকে ;
তোমার জন্মচিহ্ন ঠিকই ছিনিয়ে দেবে ;
সে কারণে , যেখানে যেখানে জলের হাহাকার দেখা দেয়  ,
যেখানে যেখানে জলের অভাবে সভ্যতার ধ্বংসের পদধ্বনি শুনি  ,
সেখানেই ছুটে যাই কেবল তোমাকে খুঁজে পাওয়ার আশায় ;
#
সে সময় তো চোখের সামনে দেখেছি কেবলমাত্র জলের অভাবে কিভাবে ধুঁকছিলে ;
ধুঁকছিলে তোমার হরপ্পা সভ্যতা ,
আমার হরপ্পা সভ্যতা ,
আমাদের ভারতবর্ষ  ;
#
কেবল জলের অভাবে ধুঁকতে ধুঁকতে বেরিয়ে পড়ে ছিলে  , শুধুমাত্র তুমি নও , আমি নই ,
আমাদের হরপ্পা সভ্যতার প্রতিটি মানুষ
মানুষের মিছিল ;
একটা সভ্যতা থেকে আরেকটা সভ্যতার দিকে
জলের সন্ধানে  , বাঁচার সন্ধানে ;
#
রাস্তার দুধরে দেখেছি হাজার হাজার মানুষের মৃতদেহ  , সভ্যতার মৃতদেহ ;
মৃত এক নগরী ....
যে যেদিকে পেরেছে হেঁটে গেছে এক ফোঁটা জলের আশায় , বাঁচার আশায় ;
#
আজও হাঁটছি আমি ;
তুমিও হাঁটছো হয়তো এক ভূখণ্ড থেকে আরেক ভূখণ্ডে , আরেক সভ্যতার দিকে ;
#
এখানে এখন শ্রাবণের বৃষ্টি ;
ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি  .  ..
বৃষ্টির জলে ভিজেছি আর ভাবছি কেবল তোমার কথা , তোমাদের কথা ,
আমাদের কথা . .
#
আজ এই সকালবেলায় তোমার জন্য রেখে দিলেন  এক আঁচলা জল , আমাদের জীবন  ।।

হাজার হাজার বছর পর : সুমিত মোদক





সকালের আলো ফুটতে না ফুটতে
সংবাদটি সকলেই পেয়ে গেছে  ;
কেবল , পায়নি সে ....
#
সে তখনও সেই হাজার হাজার বছর পুরানো আড়বাঁশিটি নিয়ে দাঁড়িয়ে যমুনার তীরে ;
#
মৃতপ্রায় যমুনাও যেন আজ বেশ চঞ্চল ;
ধোঁয়া-ধুলায় মলিন কদম গাছ গুলো যেন
নতুন করে মেলে ধরছে ফুলের পাপড়ি
সুঘ্রাণ ;
সমগ্র বৃন্দাবন জুড়ে বেজে চলেছে কিশোরী-নূপুর ;
হাজার হাজার বছর পর সকলেই জেগে উঠেছে আজ ;
#
কেঁদে কেঁদে কেঁদে কেঁদে শুকিয়ে গেছে চোখে জল ;
তবুও সে অপেক্ষায় থাকে গভীর বিশ্বাসে  ;
একদিন না একদিন ফিরবেই তার কাছেই . . .
#
সকালের আলো ফুটতে না ফুটতে
সংবাদটি সকলেই পেয়ে গেছে ;
কেবল , পায়নি সে ....

সেই দিনটির মতো .... সুমিত মোদক



সকাল থেকে সেদিনের সেই তোমাকে
খুবই মনে পড়ছে আজ ;
সকাল থেকে ঝমঝম ঝমঝম বৃষ্টি হয়ে চলেছে
সেদিনটির মতো ;
আমরা তখন খাজুরাহর মন্দির প্রাঙ্গণে ;
নির্জন এক মন্দিরে তুমি আর আমি ;
দলছুট হয়ে , আধভেজা হয়ে ,
অপরিচিত হয়েও কত সহজেই পরিচয় হয়ে গেলো ;
সেদিন তুমি শুনিয়ে ছিলে খাজুরাহর লোককথা ,
হাজার বছরের ইতিহাস  ;
আমি কোনদিন ইতিহাস বুঝিনি ;
বুঝিনি নিজেকে ;
অথচ , বুঝতে চেয়েছিলাম তোমাকে ;
তোমার না বলা  কথা গুলি . 
#
তারপর কখন যে আমরাই খাজুরাহর ভাস্কর্য হয়েগেছি ...
তুমি আমার সঙ্গে এখন সব সময় ;
অথচ ,  সেদিনটির মতো নেই আমরা :
চলো , আবার দুজনে বেরিয়ে পড়ি
এই সকালবেলায় , এই শ্রাবণে , সেই খাজুরাহরয় ...

শ্রাবণের স্বরলিপি : সুমিত মোদক





ভৈরবী রাগের বিস্তার আনে সকালের চায়ের পেয়ালায়
আমার গোপন প্রেয়সী ;
খোয়াইয়ের জল ছুঁয়ে ছুঁয়ে উঠে আসে দখিনের বাতাস ;
তখনও ওড়েনি রাঙামাটির ধুলো ;
সে যে সারারাত ভিজেছে মালকোষ রাগে ...
শ্রাবণের প্রথম সকালে গোপন প্রেয়সী হয়ে ওঠে লাজুক ;
চায়ের পেয়ালায় শব্দ তোলে ;
শব্দ তোলে প্রেমিক হৃদয়ে  ;
#
এখনও বোলপুরের মাটিতে জন্ম নেয় আদিবাসী রমণীর নূপুর ধ্বনি #  মাদলের বোল
আমার স্ত্রীর সংলাপ  # মেয়ের হাসি
লালন সাঁইয়ের গান.. ..
আর আমি , আজও অপেক্ষায় থাকি প্রথম সকালের চায়ের উষ্ণতা #  শ্রাবণের স্বরলিপি