নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সকাল বেলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
সকাল বেলা লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

ডাস্টবিন : আমিনুল ইসলাম


ডাস্টবিন থেকে ধূলো উড়ছে, আর
আস্তাকুড়ে নিক্ষিপ্ত আবর্জনার আস্থা অর্জন করতে সক্ষম হয়ে ওঠেনি কলম, যেহেতু তার সুডোল শরীরের যন্ত্রনায় একবিন্দু আফশোস মেখে নেই আমার।

'আমি' মানে এখানে 'আমিই' নই, এখানে 'আমি' হচ্ছেন উত্তম পুরুষ যাঁর চামড়া পুরু হওয়া বাঞ্ছনীয়
এবং যে সলতে হয়ে পুড়তে সক্ষমতা পেয়েছেন
কারণ পুড়তে অক্ষমতা থাকলে, আলো হওয়া যায় না...

নদীজলের সান্ধ্যভ্রমণ : অভিজিৎ দাস কর্মকার



ফেলে আসা পথ__
    ভয়ের পিছনে আবছায়া হয়ে ওঠে |

তবুও
আমি আগরবাতির ধোঁয়া হতে পারলাম না |

উদ্ভাসিমন সমস্যায় পড়েছিল---
হাতে চায়ের কাপ | কোলে সিন্ধুসভ্যতা ডুবছে পরিপাটি |

তখনই,
  সম্মোহিত অস্থিরতায় রুদ্রফল এবং পৃথিবীর গতানুগতিক জাড্য___
জিন্দাবাদ জানিয়েছিল  নদীজলের সান্ধ্যভ্রমন |
       ৫টি হরিণ শাবক ও ১টি সিগারেট সঙ্গী ছিল আমার,
                       তুমি তাও দেখা দাও নি!

জোরদার : জারা সোমা


আমাদের বন্ধুত্ব ছিল জোরদার,
 কখনো ছিলনা অকারণ দাবী,বরং
 অমাবস্যায় সিঁড়ির কোণে
  টিমটিমিয়ে জ্বলত প্রদীপ
 আলোছায়া সন্ধ্যা জমে উঠত মৌতাতে
সিঁথিতে ডুব দিতো অস্তগামী সূর্য

আমরা অপেক্ষা করতাম বর্ষার
অপেক্ষা করতাম স্রোতে ভেসে যেতে
পূর্বের খন্ডমেঘ ঢেকে ফেলেছিল আকাশ
রঙ বদলে গেল নীল থেকে অভিশাপে

আমাদের বন্ধুত্ব জোরদার ছিল
আমাদের আবেগ জোরদার ছিল
আমাদের যৌবন জোরদার ছিল

শুধু সম্পর্কে বাঁধন ছিল না
ভালোবাসায় ভরসা শব্দটা ছিলনা.....


দিনের শেষে : পলি ঘোষ



দিনের শেষে, নিদ্রা ভরা নয়নে --
তব কথা স্মরণে,
মোর নয়ন ভাসে।
আজি বৃষ্টি ভেজা রাতে,
তব কথা হৃদয়ে মোর বাজে।
মোর আকাশে সকল তারা আজি দেখি!
শুধুই মোর অশ্রু ভরা নয়নে টলমল;
বানভাসি সব মানুষ আজি কেমনে রবে?
তাহাদের কথা ভাবিয়াই আজি মোর নয়নে
অশ্রু নদী ঝরে।
কেমনে রহিয়াছে তারা সবাই,
মোর সকল বানভাসি মা, ভাই, বোন?
দেখো, তব মনের শক্তি দিয়া
উজাড় করিয়া দিও তাহাদের সকলকিছু,
দুই হাত ভরিয়া।
মোর মন থমকিয়া গেছে তাহাদের কথা ভাবিয়া।
ভালো যেনো রাখিও তাহাদের সকল বিপদ হইতে।

ভয়াবহ সূর্য উঠছে : গোলাম রসুল



পৃথিবীর মর্মর মূর্তি সমুদ্রের ধারে
অজানা ঢেউ
আমার প্রার্থনা আকাশ

জলে গভীর রাতের প্রতিবিম্ব
আশ্চর্য আমি বাজাই সেই দ্বীপপুঞ্জ
মনে করো যেখানে তুমি খুন হয়েছিলে

মনের অবস্থা ভালো নেই বলে আমি একটি খারাপ রাস্তা ধরে হাঁটছিলাম

দূরের বন্ধুর মতো জ্বর গায়ে কম্বল
মানুষটাকে আর দেখা যাচ্ছে না কুয়াশায়
তারপর স্টেশনের অরণ্য
যেখানে আমি অনেক  মুখ দেখতাম আয়নায়

গোড়ালিতে জমে থাকা নদী
এক সময় আমরা একাকার হয়ে যাই

সমুদ্রের ধারে সেই সব মর্মর মূর্তি
আর চামড়ার ভেতরে ফেটে বেরুচ্ছে রক্ত

ভয়াবহ সূর্য উঠছে
          __________________

জীবনের গাঁথা : পিনাকী কর্মকার

মধ্যবিত্ত এ জীবন আকণ্ঠ পান করে যেতে চাই।
প্রতিদিন,প্রতিক্ষণ চেটেপুটে খেতে চাই।
জীবনের সবকটা রং আমি সবখানে মেখে,
তবেই বিদায় জানাতে চাই এই পৃথিবীকে।
এলোমেলো গেরস্থালি দেখে নাক সিটকালে,
জেনো তুমি এ জীবনের শুধু সিকিটুকু পেলে।
জেনো রাত কেটে ভোর হয় একদিন,
সেই ফাঁকে অভিমানে ভাঙো যদি জীবনের বীণ
পিপাসা তোমার মিটবে তবে বলো আর কবে?
ইচ্ছে অনিচ্ছে সব কিছু পিছে পড়ে রবে।
সাতরঙা এ জীবনের যতটুকু রস, গন্ধ,
কব্জি ডুবিয়ে খেয়ে যাও লাগবেনা কখনোই মন্দ।
দিনশেষে সন্ধ্যাবেলায় ঘরে ফিরে যদি দেখো,
বিছানার চাদরটা একেবারে টানটান মনোমত।
আনমনে যদি মনে পড়ে কারো কথা বারে বারে,
অজ্ঞাতসারে যদি দুই চোখ জলে ওঠে ভরে,
তবে জেনো সেটাও তো জীবনের একখানা রঙ।
মাখো তাকে সারা গা জুড়ে,সাজো জীবনের শেষ সঙ।
আমি তো সেটাই চাই, ভালবাসা, বিরহ ব্যথা,
সবটুকু নিয়ে হোক আমাদের  জীবনের গাথা।

তুমি হীনা নবান্ন : শাহীন রায়হান


নিঝুম রাতের নীরব কান্নায় বৃত্তাকারে ভিজে যায়
ধানহীন প্রাণহীন অর্ধমৃত অস্তগামী নবান্নের
রংহীন নিষ্প্রভ দুটি চোখ-

তুমিহীনা নবান্ন আজ এক পৈশাচিক সভ্যতার
নগ্ন শেকল বন্দী অন্ধ বোবা বধির কয়েদি
তার বুকে কোন ক্লোরোফিল নেই, নেই পুষ্পিত গোলাপের
রং মাখা ভোর ধানে ধানে প্রজাপতির উড়াউড়ি ভ্রমরের
কানাকানি গুনগুন গান-

তুমিহীনা অগ্রহায়ণ যেন ভাতহীন কৃষকের
কুঁচকানো মুখ ক্ষুধার রাজ্যে একটানা দুঃখের বিলাপ-

আমাদেরই দেখি : সুমিত মোদক



টিলার ওপারে হাট বসে ;
শনিবারের হাট ...
ওখানে মোরগের লড়াই হয় ;
মৃত্যুর লড়াই ...

ধারালো দুটো ছোট ছুরি বাঁধা থাকে
মোরগ গুলোর পায়ে ;
তাদের মালিক লড়াই বাঁধিয়ে দেয় ;

লড়াইটা ততক্ষণ চলে ,
যতক্ষণ না একটা মারা পড়ছে ;
আর সেই লড়াইয়ের উপর চলে জুয়া ;
জুয়া--জুয়া--জুয়া---

টিলার এপারে আগুন জ্বলে ;
যেখানে ঝলসে খাওয়া হবে ;
পরাজিত মালিকরাও আমন্ত্রিত
প্রীতিভোজে ;

টিলার উপর দাঁড়ালে দেখি আমাদের ,
আমাদেরই ঝলসানো শরীর ।।


সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে : আহাম্মেদ হৃদয়



সব কিছু দূরে সরে যাচ্ছে
হারিয়ে যাচ্ছে সোনালি দিনগুলো।

আমার জন্মের মায়া ভরা ভিটে
জামতলা বৃক্ষের অমল ছায়া।
হারিয়ে যাচ্ছে আমার সকল
চির চেনা মানুষের মুখ।

হারিয়ে যাচ্ছে পদ্মার মতো
বিস্তৃত সকল নদী
হারিয়ে যাচ্ছে রকমারি পাখিদের
মনোমুগ্ধকর কোলাহল।

হারিয়ে যাচ্ছে শৈশবউত্তীর্ণ
সকল প্রকার খেলা
হারিয়ে যাচ্ছে এদেশের
গ্রাম -গন্জের মেলা।

আমিও হারিয়ে যাচ্ছি
প্রবল স্রোতের টানে অতল সাগরে
হারিয়ে যাচ্ছি সংচূর্ণিত কাচের মতোন
বিশাল সাগরের জলে।

রিয়াজুল হক সাগরের ৩টি কবিতা



১.
মন আঙ্গিনা

চোখ বুঝলে দেখি তোমার প্রতিচ্ছবি
অকারনে পুড়লো হাত,
বুক পকেটে তোমার সেই লাল গোলাপ
আজও সযত্নে রেখে দিয়েছি।
পাড়ার সবাই তোমার দিকে তাকিয়ে থাকতো
আমায় দেখে তুমি আলতো করে হেসে ফেলতে,
আমি সন্ধে হলে তোমার দেয়া ঠিকানায় যেতানা
রোজ দেখা হতো কথা কেউ টেরও পেতনা।
সন্ধের আলোয় ফুরিয়ে যাওয়ার আগেই তোমার দেখা মিলতো
সেই গাঁয়ের বড় পুকুড় পাড়ে দাড়িয়ে থাকতে,
নীল জামা আর খয়েরী রঙের সেই টিপ, আজও আমার চোখে ভাসে,
কি অদভূত দৃশ্য ভুলিবার নয়।
তুমি বিকেলে খেলার মাঠে খেলা দেখার ছলে আমাকে
দেখতে আসতে বুঝার সাধ্য নেই,
আমি তোমায় চুপি চুপি দেখতাম তুমি আমাকে
বুঝাতে তুমি এসো কিন্তু।

2.
শীতের জ্বরে

কনকনে শীতে বুড়ো দাদুটি ঘাপটে বসে আছে
আগুনে তা দিতে ব্যাস্ত ,
নুয়ে পড়েছে বয়সের ভারে রক্তে ঝটলা ধরেছে
র্নিবোধ এখন দাদু আমার।

গ্রামের অধিক মানুষ সকালের রোদ একমাত্র ভরসা
শীতে কাতর ধর ধর কাপছে চারিদিক,
ছমিরন কমিরন ছকমল সবারি একই কষ্ট
এই শীতের জ্বরে কাপছে ।

শহরের বাবু এসে দেখে গ্রামের এ কি হাল এই বুঝি প্রাণ গেল
অকাতরে গরীবের,
কঠিণ এই সময়ে চারিদিকে চিৎকার শীত শীত শুধুই শীত
এই অসহায় মানুষের ।

খড় কুঠো জ্বালিয়ে আগুনে তাপিয়ে শীতকে মোকাবেলা করে
সহজ সরল অবুঝ শিশু,
একটু তাপদাহের আশায় যেন মৃতু যাত্রির দুয়ারে
হে বিত্তবা চোখে পড়েনা এই আতর্নাত শীতে কাপড়ে
মরতে বসেছে এই গরীব অসহায় মানুষ ।

৩.
দাড়িয়ে-----


পুর্নিমার চাঁদের মত দেখতে আমার প্রিয়ার মুখ
তার দৃষ্টির ভাজে কি মায়া বুঝতে কষ্ট হবে,
স্বাধ্য নেই তার প্রেমের ভাজে পরতে সময়
লাগবেনা অমনি প্রেমে পরে যাবে যে কেউ।

দাড়িয়ে নদীর কিনারে আনমনে এক দৃষ্টিতে
চোখের পলক পরার আগেই অদৃশ্য,
পায়ে নুপুড়ের আওয়াজ কানে ভেসে আসলো
ঝন ঝন শব্দে শুনতে পেলাম।

নৈাকায় বসে গুনগুন শব্দে কাকে যেন ডাকছে
নতুবা গানে মুগ্ধ সেই সুন্দরী,
আবার দাড়িয়ে কাঁশ ফুলের মাঝ খানে সেই আওয়াজ
খুজতে হারিয়ে ফেলেছি তাকে আমি।
হটাৎ আবার একটি কন্ঠ শুনতে পেলাম সেই
আগের মত দেখার সাধ্য নেই,
হারিয়ে ফেলেছি তাকে আর খুজে পেলাম না
সে আবার দাড়িয়ে নদীর তীরে।

রোজনামচা : জারা সোমা



ঘুম ভাঙলেই জরিপ করি প্রতিবিম্ব
গোপনে হাত রাখি কাঁধের কাছে
অর্ধ মেলানো যতি চিহ্নে
দৃশ্য বিভ্রমের মতোই ভেসে ওঠে
একের পর এক স্মৃতি

ইচ্ছে গুলো কখনও হয়ে যায়
মেঠো ইঁদুর, রমন পারদর্শিতায়
খুবলে নেয় শস্যের অধিকার
কখনওবা ময়াল সাপের মতোই
আষ্টেপৃষ্টে বাঁধে মোচড়ে,
কখনও বা উঠোনের গন্ধরাজ
সুবাসে মাতোয়ারা সকালে

ক্রমশ বয়েস বাড়ে সকালের
সাতটা বাজলেই টিভিতে
শুরু হয় আরেক আমন্ত্রণ
গানে গানে মুখোরিত সকালে
আত্মজদের স্কুল কলেজের তোড়জোড়

রোমনামচার মাঝে অপেক্ষা করে
 মাথা ভর্তি কুমন্ত্রণারা।।।।


নতুন পৃথিবী চায় : গোলাম মোস্তাফা লিটু



যে শিশুটির নেই ঠিকানা
নেইকো আপন ঘর
যে শিশুটি গ্রীষ্ম বর্ষা শীত নয় শুধু
সারাবছর থাকে পথের 'পর।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
ঘরের অভাব নাই।

যে শিশুটি ক্ষুধার জ্বালায়
ময়লার'পর খাবার খুঁজে ফেরে
যে শিশুটির দিন কেটে যায়
অর্ধাহারে কিংবা অনাহারে।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
খাবারের অভাব নাই।

যে শিশুটি পায়না আদর
মায়া-মমতার স্নেহ ভালোবাসা
যে শিশুটির জীবন জুড়ে
নিদারুণ দুঃখ্য-কষ্ট ঠাসা।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
স্নেহ ভালোবাসার কোন অভাব নাই।

যে শিশুটির সাধ আহ্লাদ
হয়না কভু পূরণ
যে শিশুটি অনেক কষ্টে
কোনমতে করছে জীবন ধারণ।

সেই শিশুটির জন্য একটা
নতুন পৃথিবী চাই
যে পৃথিবীর বুকে শিশুর
জীবনধারণে কোনও কষ্ট নাই।


জয়দেব বেরার দুটি কবিতা



১.
শাহরুখ খান (SRK)
       
 তুমি ভারতের গর্ব
তুমি ভারতের সেই উজ্জ্বল শুকতারা,
তোমার DDLG মুভি দেখেই
 আমি হয়েছিলাম দিশাহারা।।
 তুমি অভিনয় জগতের নক্ষত্র
তুমিই মোদের রোমান্টিক বাদশা
তাই তো তোমার জন্মদিনে
তোমায় জানাই শতকোটি ভালোবাসা।।

২.
একটি কলমের আত্মকথা
         জয়দেব বেরা

হ্যাঁ, আমি একটি কলম
কিন্তু, নই কেবলমাত্র নিবযুক্ত কালিভরা একটি বস্তু।
হ্যাঁ ,আমি একটি কলম,শক্তিশালী কলম
যার স্পর্শে কেঁপে উঠতে পারে এই সমগ্র সমাজ।
হ্যাঁ ,আমি একটি কলম,ক্ষমতাশালী কলম
যার ক্ষমতার স্পর্শ থাকে সমাজের সর্বত্র।
হ্যাঁ ,আমি একটি কলম,সূর্য্যের ন্যায় তেজস্বী
যার ছোঁয়া থাকে শিক্ষায়-দীক্ষায়,অনুভবে-চিত্তে,যুক্তি ও বিচারে।
হ্যাঁ, আমি একটি কলম,যা বিচারকের হাতের অস্ত্র
যার লেখণীর স্পর্শে বাঁচিতে ও মরিতে পারে কোন এক মানব।
হ্যাঁ, আমি একটি কলম,যা সত্য, সন্দুর ও ন্যায়ের প্রতীক
কিন্তু,নই কোন এক কাঠামো যুক্ত সাধারন বস্তু।
আমি হলাম এক শক্তিশালী,ক্ষমতাশালী,তেজস্বী কলম
হ্যাঁ,আমি একটি কলম।

শাহীন রায়হানের দুটি কবিতা


.
১.
হারিয়ে খুঁজি হেমন্তে

ক্যালেন্ডারে প্রতিনিয়ত ঋতু বদল হয়
বাহারি কবিতার তুমুল বৃষ্টিতে ভেজে ফসলের মাঠ-
কবিতায় কবিতায় গানে গানে চলে
শুধু হেমন্ত বন্দনা।
কবির কল্পনায় নবান্ন আসে
শিশির ভেজা হিম কুয়াশায়।
পিঠাপুলির ঘ্রাণে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে উদাসী গঙ্গাফড়িং
চারুকলা রমনার বটমূলে চ্যানেলে চ্যানেলে চলে
হেমন্তবরণ।
..
জীর্ণ বিদীর্ণ কৃষকের অন্ধকার খুপরিতে
বাস্তবে হেমন্ত কোথায়!
সবুজহীন রিক্ত মাঠ আজ ধূমায়িত-
ইটভাটার দখলে।
আগ্রাসী নগরায়নে কান্না হয়ে ঝরে যায়
কৃষকের খুশির নবান্ন। তার নির্ঘুম রাত কাটে
চোখের জলে হারিয়ে যাওয়া নবান্নকে খুঁজে খুঁজে-
ফসলহীন আর্তনাদে বেদনার বিস্তীর্ণ পর্দায়-


২.
বিমূর্ত সুখ


এক বিমূর্ত সুখের সন্ন্যাসী আমি-
তবু,
ঘড়ির কাঁটার টিকটিক শব্দে ঝুলন্ত পেন্ডুলামে
পুরানো পত্রিকায় স্মৃতি-বিস্মৃতির আঁকিবুঁকিতে এতিমের বক্ষপিঞ্জরে সকালের খোলা জানালায় কাশ্মীর থেকে কারবালায় সসীম থেকে অসীমে অনন্তে অনন্তে....
ওর দেখা যে কোথাও পাইনি-

বিমূর্ত সুখ যে আজ বিলুপ্ত ডাইনোসর।
মরীচিকার মতো এক খোলস বদলানো নদী।
অনন্ত সূর্যলোকে পোড়া হাজার বছরের এক কল্পিত প্রত্নতত্ব।

বিপ্লব গোস্বামীর দুটি কবিতা

1.
হয়তো তুমি আসবে ফিরে

হয়তো তুমি আসবে ফিরে
ভাঙ্গা বুকের ভাঙ্গা নীড়ে।
আসলে কাছে বুঝে নিও
ভেজা চোখের ভাষা।
ইচ্ছে হইলে মিটিয়ে দিও
ভাঙ্গা বুকের আশা।

হয়তো তুমি আসবে ফিরে
শুকনা গাঙ্গের ভাঙ্গা তীরে।
আসলে ফিরে নাও বাইও
শুকনা গাঙ্গের জলে।
ইচ্ছে হইলে মিশে যাইও
কুল হারাদের দলে।

২.
তুই আমার সব

  তুই আমার সবরে বন্ধু
      তুই আমার সব,
 দূরে গেলে ধ‍্যানলোকে
        করি তব স্তব।
 তুই আমার প্রথম প্রেম
     তুই আমার শেষ,
 তোর জন‍্যে সর্ব ত‍্যাগি
    ধরব ভিগরী বেশ।
তোর কারণে বেঁচে আছি
 মরতে রাজি তুই বললে,
 রাতের তার এনে দেব
  তোই বায়না ধরলে।
  তুই হীন বাঁচা কঠিন
    থাকব হয়ে তোর,
তোর কারণে পারি দেব
        সাত সমুন্দর।

প্রতিসৃত : ভগ্নপুরুষ



আবাসভূমি থেকে গড়িয়ে পড়ছে
শিবরঞ্জনীর ধ্যানমগ্নতা___

আমি বোধহয় আরও প্রতিসৃত হবো!--

দৃশ্যে যে ঠিকানা লেগে আছে অবচেতন হয়ে, রাত ২টো-র দখল ছেড়ে ঘ্রাণপুরুষটি গভীরতার ঘোরাটোপে কিশোর-কিশোরী খেলছে__

এখনও রোজ ভোরে রাতের সমঝোতারাও চায়ের টেবিলে বসে
সমাদৃত হবার পর ডান হাতটি উদ্ধার করতে চাইলো নারীর উর্বরতা ---

কাঙাল : সত্যপ্রিয় বর্মন



ও দাদা আমার বড় বিপদ
মনে বড় দুঃখ,
আমার আসপাশটা বড় ফাঁকা
খুব একা হয়ে গেছি দাদা,
সত্যি বলছি -
একটু সঙ্গ দরকার ছিল আপনার,
দুঃখগুলো শেয়ার করতাম
একটু সময় পাওয়া যাবে?
একটু পাশে বসতাম
কথা বলতাম…

বলতে বলতেই হেঁটে যাচ্ছিলাম ফুটপাথ ধ'রে।
রাস্তায় প্রচণ্ড ভিড়
আমি প্রত্যাশি নয়নে চেয়ে ছিলাম ওদের দিকে
কেউ পাশে এসে দাঁড়াল না,
অনেকে অবশ্য সামান্য সমবেদনা জানিয়ে চলে গেল
ব'লে গেল - সবারই ওই এক…
অনেকে আড়াল খুঁজল
অনেকে আড়াল থেকেই বলল - বেশ হয়েছে।
কেউ আমার প্রত্যাশি চোখের দিকে তাকিয়ে
প্রেরণা জাগিয়ে বলল না - পাশে আছি।

এই সামান্য কথাটি শুনলেই হয়তো বেঁচে যেতাম

অমৃত : সুমিত মোদক



যে মানুষ গুলো প্রথম থেকে মরে আছে
ভিতরে ভিতরে ,
তাদের জন্য সমুদ্র মন্থন ;
তাদের জন্য অমৃত কুম্ভ ;
#
 জানি ওরা কেউই অমৃত পাবে না ;
কারণ , ওরা কুম্ভটাকে পেয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে দেবে ;
ওরা কেউ বাঁচতে শেখেনি ;
শিখবেও না ;
অন্যকে বাঁচানো তো
অনেক দূরের ভাবনা ;
#
তুমি ওদেরই নতুন প্রজন্ম ;
তুমি নাও অমৃত ;
মহাকালের অমৃতবাণী সকল ।।

দেশবাসী : সোমা জারা



রাজনীতির ফন্দি  গিলে নিচ্ছে
  সাধারণের সহজ সরল জীবন,
 নিরীহ চোখের আর্তি ফায়দা করে
 আজীবনের মতো জমা রাখে ভূখণ্ড,
 আ গ্যয়া আচ্ছেদিন

 আচমকা ঝাঁঝরা শ্বাপদের গুলিতে
ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ে থাকে
 সকল এয়োতি  চিহ্ন সমূহ
  মৃত্যুর চোখের শরম
 জানাজা ঢাকে কফনে
মেরে প্যারে মিত্র

বহুদূরে অপেক্ষার চোখে নোনাপ্লাবন
ভেসে গেছে সোহাগী অন্ন
ওরা  পাঁচ নাম গোত্রহীন সংখ্যামাত্র
সরকারী ভিক্ষার হকদার
জয় জওয়ান জয় কিষাণ

আমি উপেক্ষা  ঢাকি সুখ চাদরে
কাশ্মীর - যন্ত্রণা - পরিণতি -উন্নয়নের জোয়ারে
মেতে উঠি উৎসবে-মোচ্ছবে- মাতম এ
মেরে প্যারে দেশবাসীও..........

নতুন জীবন : সুমিত মোদক



স্বপ্ন নাচে আঙুলে আঙুলে ;
আঙ্গুল নাচে সুরে ..
সে সুর এতো দিন হারিয়ে গিয়েছিল
নদীর বাঁকে ;
তাকে খুঁজে পেয়েছে হৃদয়
লাজুক প্রেয়সী ;

কয়েক যুগ পর সকলেই হাঁটছি
নদী বরাবর ;
প্রথম সকালের সূর্যোদয় দেখার জন্য ;

আঙুল গুলোয় ছুঁয়ে নিচ্ছি
নতুন আলো
নতুন জীবন ।।