নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

উৎসব লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
উৎসব লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

।।আলোয় ভুবন ভরা।।প্রতিভা দে




আলো যখন আমার
রবি কবির কথায়,
আলোয় ভুবন নিশার স্বপন,
আলো জগৎ ভরা,
আলোয় আলোয় 
স্নান করে হ ইযে 
আপন হারা,
আলোর হাওয়া,
আলোর মেলা,
সকল দিকে আনন্দ
মেলা,
এমন ভুবনে জন্ম
নিয়ে যেতে চাইনা ছেড়ে,
এমন সুন্দর আলোর
জগৎ,
সুন্দর মনের খেলা,
এমন আলোয়
আছি আমরা যেথায়
মুক্তি ধারা।

।।ভালোবাসি।। আশীষ মাহাত





তোমাকেই ভালোবাসি "সু" কিন্তু তোমাকে ভালোবাসি না 
আশীষ 

এই কয়েকদিন আমার চোখে শুধু তুমি আর তুমি সাঁতার কেটে যাচ্ছো "সু"

আমি সাঁতার জানি না বলেই সমুদ্রে ভাসার ইচ্ছেটা প্রবল 
হয়তো মন খারাপের নৌকা ভাসতে ভাসতে একদিন তলিয়ে যাবে
তুমি ১১ টা দিনের মেকি শোকের বরখা পরে রবে

তারপর পথে হেঁটে যেতে যেতে পায়ের ছাপ
যেভাবে ভুল যাও

ভ্রু কুঁচকে আকাশের দিকে দেখবে মেঘ করেছে
ধীরে ধীরে বৃষ্টিতে ভিজে আমাকে ভুলে যাচ্ছো

।।বেখেয়ালী স্বপ্নরা! ।।শিবানী বাগচী

,



কোন এক হেমন্তের অলস বিকেলে রঙচটা বেখায়ালী স্বপ্নগুলোকে টাঙিয়ে রেখেছিলাম দেওয়ালে পেরেক ঠুকে!

নৈঃশব্দে সুরসুরি দেওয়া তোর আলতো ছুঁয়ে যাওয়ায়,ওরা গোপন কামনায় নিবিড় হতে চায়;আজ তাই অকারনে আমার মৌনতাকে সম্মতি জানাই!

তোর মাথায় বিলিকাটা রাত আজও একি ভাবে খেলা করে আমার আঙুলের ডগায়;আমার মন জমুনায় নামে জোয়ার;উথাল পাথাল আছড়ে পরে আমার বুকে!

বুভুক্ষ লাঙলের ফলায় লাগে পলি মাটির সোঁদা সুবাস;বন মহুয়ার নেশায় গোধুলির রক্তিম আবেশে ওরা ডানা ঝাপটায়;খেলে রঙিন স্বপ্নের কাটাকুটি।

।।ফাঁকা হাড়ীর ধর্ম ।।রবি মল্লিক





রাস্তা মেপে এগিয়ে যায় চেনা রোদ্দুর,
জগা অবাক চোখে প্রত্যক্ষ করে বর্তমান,
ইতিহাস মাথা চারা দেয় বারংবার ,
রাতারাতি  বদলে যায় পোষাকের রং,
শরীর আর চরিত্র সর্বদা ধ্রুবক ,
খাঁচায় বন্দী পাখিরা সুর বদলে গান ধরে ,
নতুনের আদেশে কেদারায় বসে নখহীন বাঘ,
চাওয়া পাওয়া উপেক্ষিত থেকে যায়,
পেট কেটে গড়ে ওঠে মূর্তি ও দেবালয়,
যোগ্যতা ঝলসায় গরম তেলের কড়াইয়ে,
খালি পেট বলে যায় ব্যর্থতার সংলাপ,
ধর্ম আজও শেখেনি ফাঁকা হাড়ী ভরতে৷ 

।।মুখোমুখি তুমি।। আমিনুল ইসলাম






বসে আছি মুখোমুখি, মানে মুখে মুখ রেখে চুমুর অন্তরঙ্গতা নয়
সামনাসামনি কিছু বোঝাপড়া বুঝে নিতে আয়নায়।
তুমি লেলীহান জ্বলছো সলতের সংস্পর্শে -
আলোহীন খাঁচার ভিতর পাখি সেজে কতোদিন একা থাকা যায়?
একা হতে হতে তলানিতে ঠেকে একাকিত্বে নিখোঁজ হওয়ার অমোঘ আকর্ষণে পর্দার হারিয়ে যাওয়া, শব্দগুলিকে ভেঙে বিকলাঙ্গ করে তোলার নিরবিচ্ছিন্ন তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় সত্য-মিথ্যা
সতী-সাবিত্রী কথায় বালিশ ভেজেনা কখনো, ভিজে যায় চোখের চালচিত্র
মেজেন্টা রং ক্ষয়ে যাবে বলে আদ্রতা ধরে রাখে উদ্ভিদ
চাঁদের চর্যাপদে চাষযোগ্য ভুমি না থাকায় কৃষি কাজ নিয়ে কোনো চাঁদের আলোর মাথা ব্যাথা নেই
সুতরাং একা হয়ে পড়ছো ক্রমশঃ বহুত্বের অন্ধকারে -
দলিত ফুটপাতে আঁকা থাকে রাতের প্রজাপতি।।

শাহীন রায়হানের গুচ্ছ কবিতা






মায়াবিনী


তোমার ভালোবাসার অগ্নি বারুদে কাঠ কয়লার মতো পুড়ে পুড়ে
জীবন ককপিটে জীবন্ত লাশ নৈঃশব্দ রাতে
নিমগ্নতায় ঘুরে বেড়াই বিধ্বস্ত গণকবরে।
.
এখন আমার জীবন পার্কে শুধু লাশের আনাগোনা
সামনে পেছনে ডানে বামে হোটেলে মোটেলে চেয়ারে বেঞ্চিতে
নাম না জানা বিচিত্র কতশত লাশ।
.
প্রতিটি স্নিগ্ধ সকাল ক্লান্ত দুপুর পড়ন্ত বিকেল ঝিঁঝিঁ ডাকা প্রতিটি ভয়ার্ত রাতে
ওদের সাথে পুরনো দিনের ধুলো ভরা মলিন মলাটের প্রেম বিরাগী বাউল জীবনের-
অদ্ভুত গল্প করে দিন কেটে যায়।
.
তোমার পড়িয়ে দেওয়া সাদা কাফনটা আজও খুব চকচকে
নাকে সুড়সুড়ি দিয়ে সুবাসিত আতর গোলাপ
এখনও স্পন্দিত করে আমাকে।
.
আমি অবাক বিস্ময়ে শ্রদ্ধাঞ্জলির ফুলগুলো দেখে দেখে
নদীর মতো প্রবহমান তোমার পৃথিবীসম প্রাপ্তিকে ভাবি।
.
মায়াবিনী প্রিয়তম জীবন পুষ্পিতা কি দাওনি তুমি,
স্বার্থপর অবুঝ কুলাঙ্গার ভবঘুরে এ আমাকে
অবহেলা ঘৃণা নির্যাতন নিন্দা নিষ্ঠুরতা নিজ হাতে গ্লানিমাখা মৃত্যু সব, সবই তো দিয়েছো।
.
আমি তো কিছুই দেই নি তোমাকে-
শুধু দিয়েছি ভালোবাসাময় পিঁপড়া জীবনের-
যৎসামান্য মৃত্যু।




তৃষ্ণার্ত দুটি চোখ


তোমাকে দেখবে বলে আমার পরিশ্রান্ত ফোয়ারার মতো দুটি চোখ
নিঝুম রাতের নির্লিপ্ত অন্ধকার পেরিয়ে অস্ফুট কাব্য ব্যঞ্জনায়
সবুজ পাতার প্রাণ নিয়ে আহত চাঁদের মতো
একাকী জেগে উঠতো-
বিরহী ঘুঘু ডাকা ফাল্গুনী রূপালী সন্ধ্যায়-
.
বিজন দ্বীপের সবুজ গাঁয়ে হেঁটে যাওয়া প্রতিটি নিথর বিকেলে-
তুমিই ছিলে আমার শার্সী কাঁপানো খোলা জানালায় নীরব ইচ্ছে পাখির ডানা।
.
তখন অঝোর বর্ষায় জেগে ওঠা পরিপূর্ণ স্নিগ্ধ নদী
উতলানো সমুদ্রের মতো আছড়ে পড়তো 
তোমার ভেজানো সৈকতে।
..
হেয়ালি তুমি সময় চেয়ারে খুলে দিলে নীল সমুদ্র বাঁধন
আত্নমগ্ন নগ্ন মহাকাল পেরিয়ে তোমার অনন্ত যৌবন রেখায়
নিষিদ্ধ দিকভ্রান্ত পর্যটক হতো আমার তৃষ্ণার্ত মলিন দুটি চোখ-

অনিন্দ্য পাল এর গুচ্ছ কবিতা









"আমি " নৈশব্দের বন্ধু নই 


ইস্পাত পড়ে গেল তোমার হাত থেকে 
ঝনঝন শব্দ ছিঁড়ে দেয় নিদ্রাশিকড় 
পায়ের তলায় দৃষ্টি দিয়ে বুঝি 
আসলে ঘুম নয় 
তুমি ভেঙেছ মিথ্যা সত্যের ঘোর ...

বাসন ঝনঝন করতে করতে থেমে যায় 
একসময় 
কিছুই বদলায় না আগে আর পরে গৃহময় 
শুধু বেওয়ারিশ নৈশব্দ লুকিয়ে পড়ে 
আমায় ছেড়ে ...
হঠাৎ গতিময় হয়ে ওঠে চারধার, 

শুধুই চলে যায় মুখ লুকিয়ে, তেমন নয় 
অস্পষ্ট প্রাচীন কখনো এসে বসে পাশে 
কলঙ্কহীন ইস্পাতের আর্তনাদ থামে একসময় 
বোবা বাতাস আমার অসহায়তায় হাসে ...

শব্দ মিথ্যা নয় 
রোদ্দুর মিথ্যা নয় 
অন্ধকারকে শুধু বলেছি যেও না আওয়াজ হলে 
সবই সত্যি, সবাই রয়েছে প্রকৃতি জুড়ে 
তবু কোন সেতু ভেঙে যায় 
সুতো ছিঁড়ে যায় , নৈশব্দে "আমি" ডুবে গেলে ...





যদি

সেই দিন যদি ছুঁয়ে দিতাম ঠোঁট 
তবে লিখতাম এখন অন্য উপাখ্যান 
এত বড় রাত হয়ত হত এইটুকু মুষ্টিজোট 
হয়ত বৈপ্লবিক সুরে গাইতাম একই রাতের গান 

যদি সেই মাদুর আসনে বসে বিঘত দূরে 
ছুঁয়ে দিতাম তির তির কাঁপা ঠোঁট 
তুমি বুঝতে আমি ভিতু নই এতটুকু 
শুধু বুঝতে না কত ভারি, দারিদ্রের মোট 

যদি সেদিন ভুলে যেতাম আগে পিছে লুকোচুরি 
তোমার আদর ঠেলে পৌঁছতাম না করাতের বুকে 
দরজা খুলে আসন পেতে রেখেছিলে তোমার ঘরে 
রাতপাহারায় হেঁটে বেড়াই এখন আফসোস ঠুকেঠুকে 

যদি সাড়া দিতাম সেই কুঁড়ি ফুটে ওঠার ডাকে 
এখন তবে আমার বাগানে প্রজাপতি মাখা ফুল 
তবু তুমি এখন সুখি জীবনে জমকালো 
তুমি ভালো আছো, আমি ভালো আছি, 
কোথাও হয় নি  ভুল! 

।।কুমারীপুজো ।। সুজাতা মিশ্র(সুজান মিঠি)




পুজোর সময় আসন্ন। প্যান্ডেল বাঁধাও শেষ।
রাত পেরোলেই ষষ্ঠীর বোধন হবে শুরু।
ব্যস্ততা চরমে সকলেরই। পুরোহিত মশাই
পঞ্জিকায় সঠিক সময় দেখে নিচ্ছিলেন ভালো করে।
দুহাতে পাঁজাকোলা করে মেয়েকে নিয়ে
 ভিতরে ঢুকলো গোপাল।
তার সারা গায়ে রক্তের বন্যা যেন। যে পথ দিয়ে ঢুকল
তার সবটুকুও।
অবাক পুরোহিত ও অন্যান্যজন।
গোপাল চিৎকার করে উঠলো কিছু মুহূর্ত পরেই।
ঠাকুরমশাই, এই দেখুন আমার মেয়ে, আপনাদের মন্দিরের পিছনের ড্রেনে পরে ছিল।
প্রাণ চলছে এখনো। তবে থাকবে না,  এই দেখুন দেখুন না
আমার মেয়ের সব জায়গা দিয়ে কত রক্ত বেরোচ্ছে!
এই দেখুন পুরোহিতমশাই ক্ষতবিক্ষত যোনি।
ও নতুন প্যান্ডেল দেখতে এসেছিল জানেন তো।
ওর মাকে বলেছিল, আমি দেখে আসি আমি কোথায় বসে
মা দুর্গা হবো।
ওর কুমারিপুজো করবেন আর পুরোহিত মশাই?
খুবলে খুবলে যারা ওকে খেল তাদের সামনে ওর অক্ষত যোনি পুজো করবেন, পুরোহিত মশাই?

গোপালের অচৈতন্য হয়ে পড়ার আগে ধরাধরি করে
নিয়ে যাওয়া হলো হাসপাতালে।
মেয়েটা আর বাবা পাশাপাশি দুই বেডে।
অচৈতন্য।

অষ্টমীর পুজো শুরু হয়েছে মণ্ডপে মণ্ডপে।
পাড়ার মণ্ডপে পুজোর কোনো ঘাটতি নেই।
আয়োজন সম্পন্ন হলে পুরোহিত বললেন
এবার চলো আমার সঙ্গে।

হাসপাতালের বেড ঘিরে অতি সতর্কতায় সাবধানে
গোপালের সাতবছরের মেয়েকে সাজানো হলো।
শুরু হলো অষ্টমীর কুমারীর আরাধনা।
মৃন্ময়ীকে চিন্ময়ীরূপে আরাধনা।

মেয়েটা কিছু পরে ফিরে পেল জ্ঞান, কথা বললো,
'জল খাবো।' 
পুলিশ টানতে টানতে নিয়ে এলো দুটো লোককে।
পুরোহিত বললেন, অসুরবধ হবেই হবে, ভেবোনা গোপাল।
উঠে বসলো তার বাবাও, শোক সামলে।
বাচ্চা মেয়েটির পায়ে মাথা রাখলো পূজারী।

।।শরত অনুরাগে ।।সবুজ জানা






হেঁটে যায় আলো স্পষ্টহাসিতে চাঁদের কন্ঠ-নীল
নদীগর্ভে জলসজ্জায় তারা সারারাত নিয়ন ঝিলমিল।

জোনাকির ডানায় ঝরে পড়ে অমলিন রাতকণা
ঘাসের ডগায় জল থইথই নৈসর্গিক আনমনা।

তারের বাজনায় আমার শ্রী-কবিতারা নিয়েছে ছুটি
শিউলি তলায় একমুঠো ফুল আশৈশব লুটোপুটি।

ঢাকের বোলে উদাসী বাউল গীতিকবিতায় একতারা 
শারদে নারদে উদাস দুপুর কাশবনে সবহারা।

ধানের গর্ভে ফসল-কথা মাঠের কানে কানে 
একতারা হাতে পোয়াতি নদী বাউলা অভিমানে।

সাদামেঘের মাথায় গোলাপী পালক শরত গোধূলিতে 
চোখের অববাহিকায় স্বপ্ন অঙ্কুর নি:শব্দ সঙ্গীতে।

অ-বৃষ্টির রঙে অবুজে সবুজে আগামীকাব্য জাগে বেশ্যা-মাটিতে সাজে আমার দুর্গা বাংলার অনুরাগে।

গুচ্ছ কবিতা - অনাদি রায়

    





         ডিয়ার শৈশব
                 ----------------------

আজ হতে বহু আজ পচ্ছাতে___
আমারো কচ্ছপের খোলে শৈশব ছিল
আজ সেই কচ্ছপ গতকাল ,

বসন্ত ফেটে যাচ্ছিল চিনির চিৎকারে 
খুটে রেখেছি কত দিবানিশির বে-দানা
কত ভোর ভরে গ্যাছে ভাদর ভাইরাসে :

এভাবে নদী বাঁক কাটতে কাটতে ___
কখন জল কেঁদে ফেলেছে
তারপর চিৎকার ছিঁড়ে ডিয়ার খুঁজেছি
কত ব্যথার খোলস খুলে কত মুখোশ পড়েছি




                   সভ্যতার অসুখ
      ----------------------

এই যে একগুঁয়েমি কালো ,
                    রাতপিছু ঘুরঘুর করছে

নরম ময়ূরের নম্রতা ভেঙে গ্যালেই ভুলতে পারিনা ,
সভ্যচাতুরীর শব্দত্বকের ভেলায় 
গাঢ় হতে প্রগাঢ় হচ্ছে কোলাহলের কোলাকুলি
সারকুলেট করছে খিদের পোশাক 
কেমন ধীরেধীরে আতুর ছায়া হয়ে যাই
তারপর আতঙ্ককারী 
আর সভ্যতায় জরুরী হয়ে পরছে 
অসুখের আত্ম-সিগন্যাচার



                কালো লেখনী
                          --------------------


তাঁর মুখজুড়ে কোথাও চাঁদ নেই
অথচ কলঙ্কফুলের পারফিউম মাখি
খেলি জোনাকি জাপটে ধরে গুপ্তগুপ্ত খেলা

 গোপনে গুচ্ছখেলার ডানা তরপেতরপে মরে মরনের প'রে

যেভাবে নিসর্গ বসন্তঘুম ভক্ষন করে অপ্সরার পাতে
সেভাবেই তুমবীন রাতীয়া কোলো চ্যাংড়া রজনী শূন্য পাণ করে







       
                     উষ্ণ-কথা
                           --------------


শায়িত কলা বিগড়ে দেয় ডুমুরফুল
গরমগতিতে পটল তুলছে দীর্ঘপথচলা

এসো , দাঁতের ফাকেফাকে চুষে নিই উষ্ণ কথা 
এই রজনীপ্রেম এই তাবিজ প্রেম 
আর কতদিন ?

যে কথায় পকেট ভরেনা
যেখানে শুড়শুড়ির কেনাবেচা নেই
তবুও মৃদুপেরেকের খোঁচা 
দ্যাখো , ফিসফিস যেন অদলবদল না হয়





                   হোম-সিক্
                             --------------



বালিকাময় পরদেশী ___

ওই ঘরের অসুস্থতা ভেঙ্গে দিয়ে 
খুঁজে ফিরি গোছাগোছা লালবোতল মুখ

বিস্তর ঠোটপাথারে জিহ্বাযুদ্ধ ও
মদনমন্থন ,
ছিপিখোলা ঘর
মুদ্রাঘটিত আপেলঘুম

সে 
যেন গৃহমূখী স্বদেশীমুখ






               বন্ধু 
               --------

বন্ধুফুল মানেই ব্যাপক গন্ধের গাঁদা...
এই সঙ্গ গোঁখড়ো চিড়ে ভোজনদেব গাঙচিলের মতোন...

যেথায়সেথায় ঝুলে থাকা ঝুলের মতোন...
চাঁদনীর চুলে শ্যাম্পু মাখিয়ে ঊড়ে যাওয়ার মতোন...
বারোমাসে একই ঋতুর নুপূরনৃত্যের মতোন...

বন্ধুফুল মানেই ব্যাপক সাদা...
এই সঙ্গ মাটির জঠর ছিঁড়ে বেরিয়ে আসা বনালীর মতোন...

।।জলছবি।। অভিজিৎ আচার্য্য





স্কুলের মাঠ তখনও থাকতো জলে ভরা। লম্বা ঘাস গুলো মাথা তুলে থাকতো জলের উপর। শ্যাওলা রঙের জলের উপর রোদ পরে এঁকে দিতো জলছবি। মাঠের উল্টো দিকেই রবীন্দ্র সেবা সমিতি, এ অঞ্চলের সবচেয়ে পুরনো ক্লাব। টালি দেওয়া এক চিলতে ঘরের পাশেই বাঁধা হতো বাঁশ। প্যান্ডেলের চূড়া ছুয়ে উড়ে যাচ্ছে পেঁজা মেঘ। আমি দুচোখে ধোরে রাখতাম সেই নীল আকাশের ছবি তারপর এক ছুটে পৌঁছিয়ে যেতাম উত্তরের জানলার ধারে, চোখ খুললেই আবার সেই ছবি হুবহু ফুটে উঠতো সামনে।
বাতাবি লেবু গাছটার নিচে খেলা শেষে গুছিয়ে নিচ্ছি সংসার হঠাৎ শুনতে পেতাম বুড়ির গলা। ও গোপাল। আমি সামনে গেলেই বুড়ি খুলে রাখত পায়ের চটি তারপর দু হাত বুলিয়ে দিত সারা গায়ে, আকাশের দিকে মুখ তুলে কি যেন বিরবির করে নিত তারপর। তার হাতের রেখা যেন ছুয়ে যেত আমার গাল, কপাল মিশে যেত লোহিত স্রোতে। প্রতি বারের মতন মা এসে বলতো খেয়ে যেও দুপুরে। আমি তার হাত ধরে বসিয়ে দিতাম বারান্দায়। ছোট্ট দুটো খঞ্জনি বের করে সে গেয়ে উঠতো "রাধে গোবিন্দ"। কানে কানে বলত এ খঞ্জনি তোমাকেই দিয়ে যাব গোপাল কেমন। আমি মাথা নাড়তাম। বারান্দার এক পাশে উনুনে মা রান্না করতো মাছ, ভাত, ডাল, তরকারি। পাশে ঠাকুমা বসে কেটে দিতো আনাজ আর বলতো তোমাদের গ্রামের কি খবর গো। বুড়ি শোনাত এক সবুজ গ্রামের কথা। গ্রামে আছে তার মা বাপ মরা নাতি, আর আছে একটা ছোট্ট বাড়ি, মাটির দেওয়াল, বেড়ার ধারে পুঁই ডাটা। সে গ্রামেও আসেন মা দুর্গা, সে গ্রামেও আকাশ হয় নীল, বাতাস লাগলে শিরশিরিয়ে ওঠে গা। আমি শুনতে থাকি গল্প আর মনে মনে ভাবি বুড়ির নাতির কথা। বুড়ি বলে ওঠে কি গোপাল যাবে নাকি আমাদের গ্রাম। আমি মাথা নাড়ি আবার। কিন্তু যাওয়া হয় না কোনোবারই। দুপুরের খাওয়া সেরে বুড়ি আবার হাত বুলিয়ে দেয় ওই ভাবেই তারপর হাঁটা দেয় আপন পথে। আমি দেখতে পাই একটা কাঁচা রাস্তা চলে গেছে এঁকে বেঁকে, দুধারে তার সবুজ। হাঁটতে হাঁটতে একটা বাঁকে থেমে যায় পা। একটা নুইয়ে পরা মাটির ঘর, ঘরের সামনে নিকানো উঠোন, তুলসী তলা, ঘরের ভিতর থেকে ভেসে আসে "রাধে গোবিন্দ নাম"। আমি হাত বাড়িতে বলি কই আমার খঞ্জনি দাও। ঘুম ভেঙে যায়। জানলার ফাঁক খুঁজে এসে পরে আলোর রেখা। এ আলোতে উত্তাপ নেই আছে নরম আঁচ। ঢাকের আওয়াজ বলে যায় মা এসে গেছে মণ্ডপে।
বালি পুকুর এই সময় থাকে জলে টইটম্বুর। জল কম থাকলে কাছাকাছি ছিপ ফেললে বেলে মাছ ওঠে টপাটপ। আমরা দুই বন্ধু চড়ে বসি সবেদা গাছটার উপর। আজ কোন তাড়া নেই। স্কুল ছুটি। চেয়ে দেখি ঘোলাটে জলের উপর জেগে আছে মরা কাঠের মাথা আর তারউপর মাছরাঙা বসে তাকে চুপ চাপ। এই এস আই হসপিটাল হওয়ার সময় এই পুকুর খুড়ে ভরা হয়েছিল মাটি, বেরিয়ে ছিল সাদা বালি তাই নাম বালি পুকুর। ভরা পুকুরে চ্যাপ্টা পাথর খুঁজে তেরচা করে ছুড়ে দিলে সে দৌড় দিতো ব্যাঙের মতোন। জলের বুক চিড়ে ছুটে চলা পাথর লাফাতে লাফাতে হারিয়ে যেত সীমানায়, যে ভাবে হারিয়ে যায় লালচে সূর্যটা ওই মস্ত বাড়ি গুলোর পিছনে। আর আমি  অপেক্ষা করতেই থাকি বুড়ি আমায় খঞ্জনি দিয়ে যাবে বলে। শেষ বিকেলের গোলাপী আলো মিলিয়ে যেতে যেতে গান শুনিয়ে যেত নাম না জানা পাখি। আমরা লাফ দিয়ে নেমে আসতাম আকাশ থেকে মাটিতে। পাড়ার মোড়ে মোড়ে জ্বলে উঠতো টিউবের আলো কোথাও সাদা, কোথাও সবুজ। ঝির ঝির বৃষ্টি নামলে সবুজ আলো ছিটিয়ে যেত রাস্তার বুকে। আমি দেখতে পেতাম বুড়ির গ্রাম আর শুনতে পেতাম বুড়ি বলছে ও গোপাল, এই খঞ্জনি আমি তোমায় দিয়ে যাব কেমন। আমি বলতাম তোমার নাতি রাগ করবে না, বেজে উঠতো ঢাক। রাত নামলে এক তারা ভরা আকাশ দেখা দিত, তারায় তারায় মা দুর্গার মুখ, তার হাতে কত অস্ত্র, দেখতাম ঢাকের সাথে কাঁসর বাজাচ্ছে একটা ছেলে, আমারই বয়সি। আমি দেখতাম বুড়ির নাতিকে। মা গুছিয়ে রাখতো পুরনো জামা প্যান্ট। দশমীর দিন সকালে ঢাক বাজিয়ে বাড়ি বাড়ি আসতো ওরা। আমি এগিয়ে দিতাম পুরনো জামা, প্যান্ট আর দশটকা। ছেলেটার মুখে দেখেছিলাম হালাকা হাসি। আমি সেদিন খুব দৌড়িয়ে ছিলাম দুহাত ছড়িয়ে হাওয়াদের সাথে সাথে, শুধু পৌঁছাতে পারিনি বুড়ির গ্রামে। বুড়ি আমরা খঞ্জনি দিয়ে যায় নি। প্রতি বারের মতোন আমি অপেক্ষায় থাকি। ঢাক বেজে ওঠে, ওরা আসে বাড়ি বাড়ি কিন্তু বয়স বারে না ছেলেটার। আয়নায় খুঁজতে যাই কিন্তু  আমি আমায় পাইনা খুঁজে।

জয়দীপ রায় এর গুচ্ছ কবিতা




সোশ্যালিস্ট মহালয়া 

অব্যক্ত রেডিও গুলো
আজকাল বাজেনা সকাল হলে 
লেট নাইটে অনেক কষ্টে ঘুমিয়েছে 
বোবা ফোনটা, 
কাল নাকি মহালয়া 
অসুর বধের অনেক কিসসা ছিল নাকি
 শুনেছিলাম কোন গল্পে 
মিথ্যে হোক বা সত্যি
তবুও হোক স্ট্যাটাস 
হ্যাজ ট্যাগ মহালয়া
ফিলিং পুজো পাঞ্জাবি কুর্তা
মজাটাই আলাদা।
                            




অন্য উমা 


শিউলির বুকে
আঁকা প্রতিচ্ছবি
কাঁচা হাতে কেউ লিখেছে দুগগা
কেউ বা দশভূজা
শিল্পীর আঁকা আদল ছুঁয়ে
মা আসছেন কৈলাস হতে মণ্ডপে
হাজারো বাতি হাজারো হাতে
পিক্সেলের কৈলাসী ছেপেছে কভারে
বিনোদনে তো নেই উমা
চোখ রেখো অন্ধকার ঝুপড়িতে
মহল্লার কোঠাগুলোয়
খুঁজে পাবে ত্রিনয়নীকে
অন্যরুপে অসহায়
কালশিটে ঠোঁট ভিজে কান্নায়
চাবুক হাতে অঞ্জলি দেয়
পঞ্চভূত মহিষেরা।
                              

।।আগমনী।। তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়





ওই যে তোমার আলোর বাঁশি।
ওই যে তোমার ফুলের হাসি। 
ওই যে তোমার কাশের দোলা।
শিউলি ঝরা সকালবেলা।
ওই যে তোমার চরণধ্বনি,
শিশিরভেজা সবুজ ঘাসে।
সাদা মেঘের ভেলা ভাসাও,
ওই যে দূরের নীল আকাশে।
ওই যে তুমি সকলখানে।
ছড়াও খুশী সবার প্রাণে।
আকাশ-বাতাস জুড়ে শুধু,
ছড়িয়ে তোমার আগমনী।
 মাগো,সঙ্গে থাকুক সারাজীবন,
তোমার বরাভয় আর অভয়বাণী।
  

।।অমরত্ব চাই ? ।। আকাশদীপ গড়গড়ী







আমি হঠাৎ করেই দেখেছি মাটি ফাঁক হয়ে গিয়ে আলাদা হচ্ছে রুজিরুটি, আমি মনে মনে ঋতু পরিবর্তনের ভয়ে কেঁপেছি । যুদ্ধক্ষেত্রে অব্যবহৃত কার্তুজের মতো কিছু নামহীন গোত্রের কাছে আমি প্রয়োজনের তাগিদে নিজেকে বিক্রি করেছি ফুটপাথের ধাঁর ঘেঁষে । আমি রাতজেগে দেখেছি অন্ধকার গলির বাঁকে একদল ঘাসফড়িং এর মতো অধিকারের লড়াইতে নেমেছে রূপান্তরকামীদের ক্ষত-বিক্ষত মিছিল ।নিকষ কালো দিঘীর জলের পর্দা সরিয়ে একটুকরো জলপদ্ম তিরতির করে কাঁপতে কাঁপতে মাথা তুলেছে । ওটা কিসের শরীর ? মানুষ ? শুকিয়ে আসা মৃতদেহটার মাথার উপর ঘুরঘুর করছে একঝাঁক রঙ্গিন কাপড়ে মোড়া শকুনের দল । পাশে যে দুহাজার টাকার নোটের পাঁচ - সাতটা বান্ডিল পড়ে আছে কই তার উপর তো কারুর নজর নেই । অহংকারের শেষ আধখাওয়া টুকরোটা থেকে আর কোনো বোঁটকা গন্ধ নাকে আসছে না । আমি ছিপ ফেলে নিকষ জলে রাঘব বোয়াল খুঁজতে থাকি । হঠাৎ ছিপে টান পড়ে; অতি কষ্টে আমার ছিপ বেয়ে উঠে আসে একটা লাল ঝিনুকের পোশাক পরা ছোট্ট এক মৎসকন্যা । ভয়ে কাঁপছে তার গোটা শরীর । আমি হাত বাড়িয়ে একটা দুহাজার টাকার নোটের বান্ডিল তার হাতে গুঁজে দিতে গেলাম ।বাচ্চা মেয়েটা ওটা ছুঁয়েও দেখলো না । দূরে টিলার উপর থেকে ভেসে আসছে একটা তীক্ষ্ণ মোহময়ী খেয়াল বাঁশির শব্দ । শিশুটি বাঁশিওয়ালার ফুঁ এর তালে দুলে দুলে লেজ নাড়লো কিছুক্ষণ । আমি চুপ করে তাকে দেখছি । তারপর হঠাৎ করেই সে জলে ঝাঁপ দিয়ে চোখের নিমেষে অদৃশ্য হয়ে গেলো । মাটির চারপাশে গুরগুর শব্দ শুরু হচ্ছে । ভূমিকম্প ! আমি কাঁপা কাঁপা পায়ে উঠে দাঁড়িয়ে আমার প্রিয়জনদের নাম ধরে ডাকি । কারুর কোনো সাড়া আসেনা । আমি ফ্যাকাশে চোখে দেখি ধীরে ধীরে মাটি ফাঁক হয়ে উঠে আসছে একঝাঁক পঙ্গপালের মতো হাড় জিরজিরে মাংসাশী গিরগিটির লাল চোখের ধুলো । আমি ভয়ে জ্ঞান হারাবার আগে লক্ষ্য করি আকাশের পশ্চিম কোণে প্রবল ঘূর্ণঝড় উঠছে, আকাশে উড়ছে শয়ে শয়ে টাকার নোট আর অগুন্তি সার্টিফিকেটস । শেষ বারের মতো চোখ বোজার আগে আমি অবাক চোখে দেখি অদূরে শুকনো উলঙ্গ কঙ্কালসার শরীরটা দুহাত মাথার উপর তুলে আকাশ বিদীর্ণ করে চিৎকার দিতে দিতে এদিক ওদিক ছুটে বেড়াচ্ছে আর তার মাথার উপরে চক্রাকারে ঘুরতে থাকা শকুনের দল কখন যেন আনুবিসের জাদুবলে বদলে গিয়ে রূপ নিয়েছে একঝাঁক মিষ্টি পরিযায়ী পাখির !

ঋতু বদলাচ্ছে ! 
দেখলেন, প্রথমেই আমি বলেছিলাম না আমার ঋতু পরিবর্তনের সাঁড়াশিতে ক্লাস্ট্রোফোবিয়ার ব্যামো আছে ! এখন যদি আপনারা শিকারী আর আমি তার শিকার হই তাহলে স্বীকার করছি আমার স্বীকারোক্তির বয়ানে আপনারা অদ্ভুত উওেজনা পাবেন । কোয়ান্টাম ফিজিক্সের সাথে  নিউক্লিয়ার মিউটেশনের অ্যাটাচমেন্টের একটা জটিল তত্ত্বের মাধ্যমে অমরত্বের ফর্মূলা আমি একটা অ্যালুমিনিয়ামের বাক্সে তালায় বন্দী করে সেই কালো দিঘীর জলে লুকিয়ে রেখে এসেছি । কই যান, যান, লেগে পড়ুন উত্তরাধিকার চেইনে সেই গোপন ফর্মূলা আবিষ্কারের নেশায় । আরো প্রাণ যাক । নয়তো শকুনের দল যে না খেতে পেয়ে মরবে; দিঘীর কালো জল অ-মানুষদের রক্ত না পেলে শুকিয়ে যাবে যে । যদিবা সেই দিঘীর পাড়ে তুমি বেঁচে পৌঁছোও ; যদি সেই মনমাতানো খেয়াল বাঁশির শব্দ তুমি শুনতে পাও ; যদি তুমি সেই বাচ্চা মৎসকন্যার দেখা পাও , তাহলে ওর কাছেই পাবে সেই বাক্স খোলার চাবিকাঠি । শুধু মনে রেখো অমরত্বের গোপন ফর্মূলা পেতে হলে তার কানে কানে তোমাকে শুধু উচ্চারণ করতে হবে একটা ছোট্ট পাসওয়ার্ড - “ গোডোত ! “ 

।।স্বপ্লিল ছবি।।জিয়াউল হক






(এক)

তোর বাবদ বদলানোর আর কিছু...
জার্নি জারি থাক ডুব দেওয়ায়। 

আর
এভাবেই মাঝবয়েসীপনায় শয়ে শান দেওয়া...
অছ্যুৎ প্রেমিক গড়ায়।








(দুই)

সোনা
কলতান বাদে এখন উল্টে ভাসাই ভালো। 
দু চাকায় আর রং লাগে না...
সময়ের স্বপ্লিল ছবিই মলিন ক্যানভাসে। 

যদিও রাতরক্তের খেলা অবশেষে সর্বনাশী দিনান্তে গতর হচ্ছে..

।।প্রাণভিক্ষা ।।কাজী জুবেরী মোস্তাক





না রাষ্ট্রপতির কাছে আমি আমার প্রাণটা ভিক্ষা চাইবোনা
এখানে আইন টাকা আর ক্ষমতার কাছে জিম্মি
তাই বাঁচতে চাইনা
যে রাষ্ট্র আজও মিথ্যার চামচামি করে সে রাষ্ট্রে
প্রাণভিক্ষা চাইনা ।

না এই সুউচ্চ প্রাচীর কিন্তু আমার সমাধীর জন্য 
তৈরি করা না
এ জেলখানা কিন্তু অনেক বড় কিন্তু আমার ঘর
বেশি বড় না
আগামীকাল আবার জন্ম হবে আমার তাই আজ বাঁচতে চাইনা

বদ্ধভূমির জেলখানায় ঘুমটা আসলে বিশ্বাঘাতক
এক অপরাধী
আর কয়েদিরা একেকজন যেন ঘুমহীন একেকটা চাতক পাখি
আর জেল পুলিশগুলো পাখিদের উপরে রেখেছে 
তীক্ষ্ণ নজরদারি ।

জেলখানার খুপরিঘর গুলোর দেয়ালে বন্দী রয়
চাপা আর্তনাদ 
সু-উচ্চ প্রাচীরেই আটকে থাকে ভেদহীন শতশত
বন্দীর দীর্ঘশ্বাস
তবুও স্বপ্নগুলো কয়েদিদের দিচ্ছে বেঁচে থাকার
জন্য আশ্বাস। 

যে সমাজটা আমার সু-শৃঙ্খল জীবনকে করেছে
উশৃঙ্খল সন্ত্রাসী
যে রাষ্ট্র ব্যবস্থা প্রতি পদেপদে জন্ম দিচ্ছে আমার মতো সন্ত্রাসী 
সে সমাজে বাঁচার জন্য অযোগ্য রাষ্ট্রে প্রাণভিক্ষা চেয়ে লাভ কি ?

আমাকে নাহয় বন্দীই করেছো এই সুউচ্চ প্রাচীর
ঘেরা জেলখানায় 
কিন্তু আমার চিন্তা চেতনা মস্তিষ্ককে বন্দী করবে কোন জেলখানায় 
মনে রেখো এই মৃত্যু চিরস্থায়ী নয় প্রতি সকালেই আমার জন্ম হয়। 

।।তরঙ্গ ।।তন্মনা চ্যাটার্জী





একটা ঢেউ গেলে ওপর ঢেউ~
ডুবিয়ে দেবে অবিশ্বাসের বাঁধন!
যদি কিছু রসায়ন বোঝে ঘর ,
আল্পনা আঁকবে শীত-
ডাকটিকিট জমা হবে, 
পুরোনো সংখ্যার যোগফলে!
চুপিচুপি রোদ চশমার কোন
ভিজবে তীব্র অনুশাসনে;
যেখানে রোজ না জানার 
পারদ চড়ে বার্তাবহ তরঙ্গের
দৃষ্টি পেরোনো নীরবতার
অস্ফুট আস্ফালনে!!

।।বর্ষা ভেজা সকাল।। জসিমদ্দিন সেখ




ভোর হতে সকাল এল নেমে
গুঞ্জরিয়া গুঞ্জরিয়া দমকা মেঘের ডাক,
পলকা পবনের প্রতারণা নেমে আসে
আকাশে আঁচড় দিয়েছে বজ্র চমক।
সদ্য জন্মানো কচি পাখিদের কিচিমিচি
বর্ষা ভেজা সকালে খিদের তাড়োনে,
মাছেরা জল হতে উঁকি মারে
পুনরায় ফিরে যায় গভীরে তৎক্ষণে।
বর্ষার ভেজা সকালে বৃষ্টির আগমন
নদী পাড় ছাপিয়ে সেঁজেছে কুমারী, 
জেলেরা মাছ শিকারে পেতেছে ঢিকিজাল
ভোর হতে সন্ধ্যা দিয়েছে পাড়ি।
চারিদিকে থৈই থৈই আঙিনা ভরা জল
কাদাতে জমেছে স্যাঁতসেতে পিচ্ছিল আলপনা, 
মেঘেদের ভিড় কোথা হইতে উপস্থিত 
তাদের শ্লেষ হাসাহাসি যেন কল্পনা।

।।আলোগাছ।।মৌসুমী রায়





আলোগাছ হতে চাই বুঝলে প্রেমিক
বাধা দেয় কপালের লাল ক্ষতের দাগ
তোমার বুকের বোতাম খোলা থাকলে...
যতটুকু শরীর দেখা যায় ততটুকুতেই আমার ভাগ।

লোভ হয় লোভ ভীষণ রকম
শেষ কবে কাকে ভালোবেসেছি মনে নেই
জানি কেউ আসবেনা প্রেমহীন জীবনে...
বেজন্মা কবিতা ঘুরে ফিরে আমার মাথায় আসবেই।

জানালার গরাদ চুঁয়ে কামুক রাত নামে
আমার পুরুষ অপমানের ভয় পায়
আমি ক্ষইতে থাকি অভিমানে অপেক্ষায়...
হারাবার ভয় আমায় আলোগাছ হতে শেখায়।


।।শারদ উপহার।।শুভম চক্রবর্ত্তী





লজ্জা, ঘৃন্য, জঘন্য;
বলে গন্য-মান্য।
ওদের বাড়ির ছেলে,
যেমন তুলসী পাতা ধুলে।
অসহায় শুধু তুমি,
তাই ধর্ষণ- ই প্রনামী।
গুমরে গুমরে মরো,
সমাজ দোষাবে এরপরেও।

ওদিকে চলে আলোর ছটা,
আড়ম্বরই পূজার ঘটা;
মাতৃ ভক্তি ওসব মিথ্যা,
গ্ৰাস করে সব উল্লাস ও উগ্ৰতা।
আমি তাই বেড়োচ্ছিনা,
আমার পূজা সূচী আর হচ্ছে না।

নারী তুমি গর্জে ওঠো,
প্রতিবাদে তোলো হাতিয়ার।
সেটাই হবে আমার জন্য
শ্রেষ্ঠ শারদ উপহার।