নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

শরীর অভিমুখী মনন : রুনা দত্ত



আমার শরীরে চাঁদ খেলা করে
জোনাকির মতো,
ঠোঁটে জেগে থাকে
মায়াবী রাতের নির্যাস।

আমার খোলা চুলে
বন্য ফুলের সুবাস ,
চিবুকে নিবিড়
বনানীর স্নিগ্ধতা।

আমার বুকে আজও
চাঁপা ফুলের সৌরভ ,
মৃগনাভীতে জুঁই ফুল
আতর হয়ে জন্মায়।

নিটোল পায়ে নুপুরের ছন্দ
বন ময়ূরীর মতো চঞ্চল,
তন্বী কোমরে যেন
অরণ্যের মেদুর নির্জনতা ।

বুনো হরিণীর মতো শরীরে
জ্যোস্নার রহস্যময়তা দানা বাঁধে,
এক গভীর ভালোবাসা বোধে
আছন্ন হয় শরীর অভিমুখী মনন।


স্বাগত : পিনাকি কর্মকার




নিয়নের নীল আলোয় শোভে শহর,
মাঝে মাঝে কাঁপিয়ে দিয়ে যায় মোটরের শব্দ।
দিগন্তে তখনও কুমড়োর ফালির মত চাঁদ,
রুগ্ন,শীর্ণ হয়ে প্রহর গুনে চলে।
বিদ্যুতের তারে ভোরের প্রথম কাক,
থেমে থেমে তার ডাক ছাড়ে।
সারারাত জেগে থাকা খ্যাপাটে শহর,
আড়মোড়া ভেঙে উঠে বসে।
রাস্তার মোড়ে মোড়ে ধোঁয়া ওঠে।
দূর থেকে ভেসে আসে নামাজের রব,
শোনা যায় সাইকেলের ক্রিং ক্রিং।
ঘরে ঘরে পৌঁছায় নতুন দিনের খবর।
আলসেমি মাখা শরীর খুঁজে নেয় টুথব্রাশ।
কোথাও বেসিন, কোথাও রাস্তার ট্যাপকল,
ঘষামাজার কত না রকমফের।
ধোঁয়া ওঠা কাপে স্বাগত নতুন দিন।

পুনঃজন্ম : সুমিত মোদক


নেচে নেচে ওঠে নূপুর-পা ;
কালবেলার দিন ...
হারিয়ে যায় ফড়িং-প্রজাপতিরা ;
বাজে সাপুড়ে-বীন ....
#
একে একে গিলেখায় দাবানল ;
পড়ে থাকে চিতার ছাই ..
তবুও , কণ্ঠে মীরার ভজন ;
নিজেকেই খুঁজে পাই ...
#
নেমে পড়েছি মাটির গভীরে ;
শিকড়ের অভিমুখে এখন ...
ঘুমেও তোমার পদধ্বনি শুনি ;
সময়ের পুনঃজন্ম যখন ....

জীবনযাত্রার বৈপরীত্য : অমিত কুমার জানা




জীবনব্যাপী কেউ মাথার ঘাম পায়ে ফেলে,
কারো বা আলস্যে সময় কাটে অবহেলে।

কারো খাবার প্রতুল,নিঃসংকোচে ছুঁড়ে ফেলে অতিরিক্ত,
কেউ খাদ্যহীনতায় শুষ্ক প্রাণ,উদর রিক্ত।

কেউ অতিভোজনের মেদ ঝরাতে জিমে যায় নিত্য,
কোন জীবনযোদ্ধা নিত্য পরিশ্রম করে অকথ্য।

কারো সারাক্ষণ গাড়িতে চড়ে সময় সানন্দে অতিবাহিত,
কারো জীবনপথের কাঠিন্যে পদযুগল ক্ষতবিক্ষত।

অর্থের বলে বলীয়ান কেউ করে বেহিসেবি অপচয়,
সামান্য অর্থ উপার্জনের তরে কারো সর্বদাই হয় জীবনের ক্ষয়।

লিফটে চড়ে কেউ আসে যায় ইমারতের বহুতলে,
কারো ছোট্ট স্বপ্ন ফুঁপিয়ে কাঁদে কোন্ সে অতলে।

আভিজাত্যে ভরা পোশাক পরিহিত বাবুরা হেঁটে যায় রাজপথে,
ক্ষুধার তাড়নায় অপেক্ষমাণ ভিখিরি ধূলো মাখে ফুটপাতে।

চাকরির খোঁজে উদভ্রান্ত উচ্চশিক্ষিত দরিদ্র বেকার,
অশিক্ষিত নেতার অবাধ শোষণ,সঙ্গে পদাধিকারের হুঙ্কার।

সত্যের পথযাত্রী কেউ আজীবন ধরে রাখে সততা,
সব পেয়েও কেউ বা প্রতিনিয়ত করে মানবতার হত্যা।

অবাক এক এলা খেলোয়াড় : অনিন্দ্য পাল


আড়ামোড়া ভাঙতে ভাঙতে যখন কমে আসে
রাতের আয়ু, নিদ্রা ছেড়ে ফ্যালে একের পর এক
রাতের পোষাক, ওদিকে ঘুলঘুলি পেরিয়ে পৌঁছায়
সবুজ আলো - বিনা অনুমতিতে ছুঁয়ে যায়
নিষিদ্ধ অঞ্চল, ঠিক তখনই আমার বুদ্ধিকোটরে
কিলবিল করে বেঁচে ওঠে, মর্গের ড্রয়ারে শুয়ে থাকা
সমবয়সী অপমান ...
তারপর,
চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে চলে সেই সব ফুৎকার
যেগুলোর হুকুমে কালো হয়ে যায় রোজ ভোরবেলা
অন্ধকার বাড়তে বাড়তে যখন দুচোখের গহ্বরে
ফুটে ওঠে মৃতভোজী কৃষ্ণ গহ্বর
তখন আবার এক মহাজাগতিক বিস্ফোরণ
আমাকে পৌঁছে দেয় শূন্য সময়ে
কাউকে পাই না সেখানে
কোন মুখ নেই
অবয়ব নেই
ভালোবাসা নেই
ঘৃণা নেই
জন্ম নেই
মৃত্যুকেও দেখিনা শরীরে বা অশরীরে
শুধু আমি
একা আমি আর সমস্ত না থাকা অথবা
বর্তমান শূন্যতা ঘিরে ধরে চারধারে
ভেঙে পড়ে আমার ভিতরে
মিশে যেতে থাকি স্থান-কাল সহবাসে...

তারপর কখন জ্বলে ওঠে খিদে
বেজে ওঠে অশালীন ডোরবেল
ডেকে যায় বাজারের থলি
আবার ঘুমিয়ে পড়ে সমস্ত কৃষ্ণগহ্বর এবং
অসীম শূন্যতা

তখনই, ঠিক তখনই জেগে উঠি আমি
জীবনের চোরকাঁটা ভরা মাঠে
রেফারীর বাঁশি শুনে তখন আমি
অবাক খেলোয়াড় ...

শরতের চিঠি: নির্ঝর চৌধুরী



প্রিয়তমা,
জানালা খুলে দ্যাখো, নীল আকাশে শুভ্র মেঘের ভাঁজে লিখা শরতের চিঠি..
চিঠিতে তোমাকে পরাবো বলে শরতের আকাশ থেকে কাশ কাশ শুভ্রতা দিয়ে সাজানো একটি জ্যোৎস্নাত মেঘের শাড়ির কথা রয়েছে....
শরতের জলসায় জমবে জ্যোৎস্না সম্ভোগ,সাঝ সকালে তোমার নিশি কালো দীঘল চুল থেকে ঝরে পড়বে শরতের শিশির বিন্দু শত জনমের তৃষ্ণা মেটানোর দায়।
শরতের আকাশে মেঘের কোণঘেঁষা যে বিন্দু বিন্দু বেদনার জলকণা তা মুছে ফেলার অভিপ্রায়ে এক জোনাকিঘেরা সন্ধ্যায় পৌঁছে যাবে তোমার ঠিকানায় আমার অলিখিত প্রেম।
উত্তরের ছলে চিঠি দিও......