১
একটা দিনের
দুটো দিনের
দিনের পর দিনের
চাওয়াগুলো হতাহত হয়।
অসহায় পিতৃ মন।
আমার কি ডালপালা কাটছে কেউ?
এত চোরাস্রোত আমাকেই ঘিরে!
স্বপ্নগুলো পাথর
আর
পাথরগুলো স্বপ্ন হচ্ছে বারংবার।
একদিন
দুদিন
দিনের পর দিন
ভালবেসে দেখেছি
জল চাইছে সবাই
এমনকি ঘাস লতা পাথরও।
আমার কি কিছু হওয়ার কথা ছিল?
কারো ছায়া
কারো শীতের রোদ?
আমি তো আকন্ঠ বেসেছি ভাল
সন্তানকেও
তার রোগে
হতাশার অন্ধকারে
তাথৈ আনন্দেও।
তবুও পেরেক বাঁধা হাটু
বেঁকে থাকা লেগ হেড
জোড়া পাঁজর
কোমরের জোড়া হাড়েরা
বিন্দু বিন্দু জল চায়
চিৎকার জোড়ে
মড়াকান্না কানে তোলে।
এত জল কোথায় যে পাই!
ভূত্বকের জীবিত ঈশ্বরেরা কাঁদে
মানুষকে জল বিলোতে বিলোতে
তাদের চোখও আজ খটখটে মরুভূমি।
২
দীর্ঘ সাড়ে কুড়ি বছরেরও বেশী পর.......
কিছু সুখী-স্মৃতি........
কিছু ডুকরে ওঠা স্মৃতি পিছু টানে......
আচমকা হৃদকম্পনে........
এমনটা তো হবারই ছিল.......
কারো কি কিছু হারিয়েছিল?........
কেউ কি তুমুল খেয়েছিল নাড়া..........
নাকি অনেকেই চুপিচুপি বা প্রকাশ্যে অসহায় ছিল?........
অজানা শ্মশানে তোর পোস্টমর্টেম করা শরীরটা ........
রাতের অন্ধকারে আগুনকে দিয়ে খাওয়ালাম...........
তুই চলে গেলি.......
কিছুই নিয়ে গেলি না...........
কিম্বা আমার ভাল থাকা নিলি........
কিম্বা অন্য কেউ কেউ শতছিদ্র হলো দুর্দান্ত ...........
পাশাপাশি কতদিন এক তক্তাবোসে আর ঘুমাইনা.........
গুলিও খেলিনা, কউও না......
মনে আছে কউ লেগে থুতনি ফেটে গেল তোর?........
সব রহস্য, সব মরমী রেষারেষি, প্রশংসা সব আগুনে মিশল......
শুধু ঊনত্রিশ বছরের স্মৃতিগুলো একি আজো দগদগে হায়! ..........
৩
ঘিলু আঁটকে ঘাঁটকে টানি
বোধ খুঁড়ে শূন্যতাকে তুলে আনি।
আয় শূন্যতা লোফালুফি খেলি
আরে তুই কি করে পারবি!
আমার সন্তান যে আজ আমারই পাশে।
তোকে ভস্ম করে
তোর ছাই চটকে চটকে
দ্বিতীয় হুগলি থেকে ওড়াব আকাশে।
আগুন বাতাসে ফাগুন বাতাসে
সে খবর পৌঁছে যাবে
ভূত্বকে সবে আসাদেরও কানে।
শূন্যতা তুই কি ভেবেছিলি
আমার এ সারি শরীর
ফুলচারায় ভরাবি, লাগাবি বাগানে?
৪
একা থাকলেই কিসের যেন শব্দ আসে
সবাই আসো আর শোনো রহস্য কথা।
লোকটা রোজ ভোরে কাকেদের কিছু বলে
কিছু কথা হয় শিউলিদের সাথে, নিঃশব্দে।
অনেক শব্দ নিজে নিজেই কথা বলে
ভূত্বকে আপন আপন শব্দ সব ডাকে।
শূন্যতাই কঠিন কুয়াশায় লুকালে শরীর মন
হাহাকার সমাজ সংসারে, একা থাকা মনে।
কিছু অলৌলিক লোক শব্দকে জাপ্টে ধরে
মায়ার শরীরে ঈশ্বরের বারবার জন্ম হয়।
সব শূন্যতাই জন্ম দেয় ভরা বিস্ময়
শব্দেরা লুকিয়ে ঐ শূন্যতায়, ঐ শূন্যতায়।
আহা, শব্দ বাণে শব্দ কব্জা করে, কব্জা করে
রামের মত অভিশাপ খায় সব কবি মনে হয়।
৫
ঠিক কতটা বাড়লে নাগাল পাওয়া যায় হাকুতকুত করতে করতে জানার চেষ্টায় আছি, ছাইগাদার উপরে ফেলা কাঁঠালের ছালে বসছে আর উড়ছে ডুমো ডুমো মাছি, তোমাকে হয়নি বলা এখন আমি দর্শকে বাঁচি।
পাখিদের হঠাৎ ছায়াতে ঠকে যায় ঝাঁকে ঝাঁকে মাছ, আমি কি করবো বল পাশেই দাঁড়িয়ে গাছ, ও তে তো ফল ভরা পাখি করে নাচ, মুখ কালো বানরেরা লেজে চুল বাছ।
তোমাকে হয়নি বলা করে নিও আঁচ, বেঁচে তো এখনও আছি, চারদিকে কাঁচ, মাঝে মাঝে হাত পা কাটি, রক্তের নাচ, এখনও খেলে, চেয়ে থাকে গাছ।
সাক্ষাৎকারে : জ্যোতির্ময়