নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কবি রুদ্রপতি এর একটি কবিতা

           


              বাংলা কবিতায়
                ***********

           

হরি ও আল্লা ভরসা
যখন ব্যর্থতা আসে, মন ভেঙে যায়
এপারে নৌকা মাঝে ভয়ংকর স্রোত
ওপারে জরুরি যাওয়া, চোরও নিশ্চুপ
আমিও চোরের মতো নদীটি পেরিয়ে
ওপারের লোকাল গঞ্জে গিয়ে
 চুরি করতাম প্রেম, জ্যোৎস্না, ফুলের গন্ধ
মনে পড়ে? তুমি তখন কলেজে পাওনি;
কিন্তু এখন নদী ভয়ংকর
ফেরি চলাচল বন্ধ, মাঝি ও যাত্রীরা অসহায়
মাঝির জীবিকা বন্ধ
চোরের চুরি বন্ধ
আমার প্রেম বন্ধ
কিন্তু কবির সুবিধে এই
লিখতে পারে লোকাল কবিতা
যেখানে বাজে লোকায়ত শব্দ ও অভিমান
ভরসা অনেক ছিল, কিন্তু এই যে কবিতা লেখার নেশা
যা সায়েন্স পড়ুয়াদের মাথায় একবার ঢুকে গেলে
বিপদ, ব্যর্থতা নামে;
তবু একদিন আল্পস পর্বতে উড়ে যাওয়া পাখি দেখে
যে মানুষ বানিয়েছে উড়োজাহাজ
তার কাছে আমার অনন্ত ঋণ
কারণ এই নদী পেরোতে পারি এখুনি
উড়োজাহাজ যদি ব্যবহার করি।




প্রতিভা দেএর কবিতা

     
     





                       পরিতাপ
                     ************
     





মায়ের পাশে লক্ষ লাশ
টেনে নিয়ে গিয়ে ছিল
ছেলেকে বলীর পাঠা করতে।
মৃত লাশের স্তূপ
সভ্যতা কি নিষ্ঠুর।
কান্না যেখানে হৃদয় বিদারক
কলজে যেখানে চিরে দেওয়া
কেন এমন নিষ্ঠুর রাজনীতি
বাঁচবার জন্য
এ কেমন বাঁচা
মানুষ হয়ে মনুষ্যত্ব হারিয়ে।
তোমরা কি ভুল করেছ?
যার শাস্তি এমন নির্মম।
ধ্বংস হোক এমন মনুষ্যত্ব ছলে বলে কৌশলে
পাপীদের দেক শাস্তি মহা প্রকৃতি
যাদের কাছে নগ্ন মনুষ্যত্ব
সৃষ্টি তাদের দিয়ে বিকলাঙ্গ তৈরী করুক
যেন প্রতি পদে বুঝতে পারে
অন্যায় অন্যায় ই হয়।
ছোট বেলার কথা
ভাই সাথে যথা
গাছে উঠে লাফিয়ে পড়া
বাবার বকা খাওয়া
ঠেং ভাঙলে হবে না বিয়ে
কি করব তোকে নিয়ে,
কাঁচা ঘরের বাঁসে
দড়ি বেঁধে কসে
ভাইয়ের সাথে দোলনা ঝোলা
এমন ছিল খেলা,
লুকিয়ে কিনে কুলের আঁচাড়
ভাই বোনেতে ইঙ্গিতে ডেকে
চোরের মত বসে
মায়ের চোখে ফাঁকি দিয়ে
না ঘুমিয়ে আচার খাওয়া
মনে পড়ে সে সব কথা
ভাই না থাকলে বোনের কদর হয়না
শ্বশুর বাড়ি চলে গেলে
ভাইকে পাঠিয়ে খবর নেওয়া।
ভাই ফোঁটাতে সে সব কথানিয়ে
চুপিচুপি হাসা আছে আজও
মনে ভাসাভাসা।
যমুনা দেয় যমেরে ফোঁটা
যমের দুয়ারে পড়ল কাঁটা।

শান্তনু দে এর প্রতিবাদী কবিতা

     
               
                      লজ্জা



দেখলে বড় লজ্জা লাগে , আমার পাশের পাড়ায় ।
ধর্মকে শুধু সাক্ষী করে হাজার বাড়ি জ্বালায় ।।
দেখলে হয় মাথা নিচু নাবালক যে ছেলে ।
ধর্মের শুধু দোহাই দিয়ে বন্দি হলো জেলে ।।
কিসের জন্য পূজা পাঠ আজান কিসের জন্য ।
আজকে যদি রক্ত মেখে মানুষ সাজে অন্য ।।
কোনো ধর্মে আছে কি লেখা ? মানুষ মারার কথা ।
তবে কেন বইতে হবে স্বজন হারার ব্যথা ।।
সব ধর্মেই দেখায় যদি আপন পথের দিশা ।
তবে কেন হিংসা ছড়াই ভুলে ভালোবাসা ?
কেন র‌্যাপের টহলদারি পাড়াটা শুনশান ?
তবে কেন কুস্তি করি হিন্দু মুসলমান?
খিদে ভুলে অস্ত্র তুলে হানাহানি ক্ষয় ?
চেনা মানুষ পথে ঘাটে দেখলে লাগে ভয়?

তখনই বলতে ইচ্ছে করে  এ দেশ আমার নয় ।
চাই না আমার নাগরিকত্বের কোনো পরিচয় ।।

মণিকান্ত সরের দুটি কবিতা

~*** মেরো না আমায় ***~

              
"মেরো না আমায় " মাঝপথে......

মাঝে মাঝেই আঁতকে উঠে বলতে থাকে কন্যাভ্রূণ,
ভয়ার্ত সে, অনিশ্চিত তার পরিনতি ।
অস্ফুটে বলে যায় বারবার........
আমিও দেখতে চাই নতুন ভোরের আলো,
দেখতে চাই তোমাদের বিষে ভরা সুসজ্জিত সমাজ,
একটা জীবনচক্রে অনুভব করতে চাই---
বেঁচে থাকার ভালোলাগা খারাপলাগা ।

কেন ভুলে যাও......
তোমার সন্তানের জন্মদাত্রী একজন কন্যা,
আমিও তো পেতে চাই, মাতৃত্বের স্বাদ ।
কেন ভুলে যাও বারেবার...
তোমার পূজিত দেবতার অনেকেই কন্যারূপী।
প্রশ্ন জাগে মনে --
সত্যিই কী ভুলে যাও, নাকি...................??

কে বলতে পারে ------
একদিন আমিই হবো না, দেশ অথবা জাতির মাথা,
আমিও তো চালাতে পারি বিমান,
খেলতে পারি মেঘেদের সাথে, অথবা
গায়ে তুলে নিতে পারি সৈনিকের কড়া পোষাক ।
আমার পরিচয়েই তো একদিন
             পরিচিত হতে পারো তোমরা।
সেদিন তো বড্ড বড়াই করে বলবে--
        কাদের মেয়ে দেখতে হবে তো..!!
ফ্ল্যাশ লাইটের ঝলকানিতে টিভির পর্দায় রাখবে মুখ।

অথচ আজ.........??
আজ মেতেছো কী ভীষণ এক ধ্বংসলীলায়,
অচিরেই হত্যা করছো এক নব দূর্গার আগমন।
উন্মাদ চিন্তা আর অপার্থিব চাহিদায়
           চাপা পড়ে যায়, তার কাতর আবেদন,
কুসংস্কারে আচ্ছন্ন, বর্বর সমাজ
                              শুনেও শুনলো না কানে।
অগত্যা তার সজল নয়নে করুণ মিনতিই সম্বল,
আর একান্ত নিভৃতে বলে চলা --
        
                  " মেরো না আমায় মাঝপথে...... "
               হোক না জন্ম আর একটা দূর্গার ।।




~*** কথা তো দিইনি ***~




            
কথা তো দিইনি................  যে
দাঁড়িয়ে থাকবো তোমার পথ চেয়ে,
চোখ রাখবো পশ্চিমের খোলা জানালায়,
তাকিয়ে থাকবো শূণ্য আকাশের দিকে, নির্জনে
কিংবা হেঁটে যাব বিষন্ন মনে, দূর -- বহুদূর ।

কথা তো দিইনি............... যে
তোমার অনুভব অনুভূত হবে, তোমার না থাকায়,
স্পর্শগুলো আনমনা করবে, কোনো একাকী মুহুর্তে,
স্বপ্নগুলো চোখ ছুঁয়ে যাবে, নিয়মকরে প্রতি রাতে,
কিংবা একলা চাঁদ এসে নিয়ে যাবে তোমার খোঁজ ।

কথা তো দিইনি............... যে
পেরিয়ে যাওয়া সময় আবার ডাকবে হাত বাড়িয়ে,
ঝরেপড়া ফুল সাজিয়ে রাখবে গাছ, কুয়াশা ভোরে,
দিগন্ত ছাড়িয়ে পথ বেঁকে যাবে আকাশের টানে,
কিংবা রামধনু এসে খবর দেবে তোমার বৃষ্টিভেজা চুলের ।

তুমিও তো দাওনি কথা.....................

তবুও রোজ দাঁড়িয়ে থাকি তোমার পথ চেয়ে,
জানালায় চোখ রেখে তাকিয়ে থাকি শূণ্য আকাশে,
তোমার অনুভবও অনুভূত হয় প্রতিদিন,
প্রতিটা নির্ঘুম রাতে স্বপ্নেরা চোখ ছুঁয়ে যায়, আজও।

------------------- অথচ, কথা দিইনি কেউ'ই ।।

জ্যোতির্ময় মুখার্জী এর তিনটি কবিতা

  
জ্যোতির্ময় মুখার্জী এর তিনটি কবিতা 


                   চৌকাঠ টু ফুটপাথ


             কিছু একটা কেলেঙ্কারি হয়েই যাক.....
                         আর ভাল্লাগছে না
                     কাক ভেজা রাত গুলো
               পোয়াতির মতো হেঁচকি তোলে
    একটা মাঠ, দুটো ডাস্টবিন তিনটে তালগাছ আর চারটে চড়াই নিয়ে আর কুমির ছানাগুনতে পারছে না
                       এই ফোকলা দাঁত
           
                চিঁড়ে ভেজা পেট হোক বা
                    সেতার শুখনো কান
                     ফাঁকটা বেড়েই যায়
                      চৌকাঠ টু ফুটপাথ ।



                    ময়ূর কাঁদলে...



                      মনে রাখিস তুই
                     ভূবনডাঙ্গার মাঠ
                        মনে রাখিস
                      আমি আসবো
             হাঁড়িয়া খাবো...মাতাল হবো....
                         বন-পলাশী
                    তোর সাথে রোজ
                   মাদল ভেঙ্গে নাচবো



               ইঁট + ইঁট = ঘর বেঁধেছে
                        এ শহর
                  শহুরে ঘরে খিল
                একা + একা = দুই
                    মানুষের বাস
                 সবার ঠোঁটে আঙুল
                        চুপ.... চুপ......
                       ময়ূর কাঁদছে
            ময়ূরীর পেট ফুলবে এবার।
                               



               ধর্মেও আছি, জিরাফেও আছি 





       নির্দ্বিধায় বলতে পারি আমি ধর্ম মানি না
                               ঈশ্বরও
                   এখন তুমি আমার বুকে
                         ছুরি বসাতে পারো
                                   বা
                     হাতে রাখতে পারো হাত
                             তারপর চলন্ত
                            কিছু কোলাজ….
                          রক্তের আঁশটে গন্ধ
                                       বা
                                   মানুষের

পিয়ালী সাহা এর কবিতা


     




           ঘর পোড়া দিওয়ালি




অভিমানের পাহাড় চূড়ায় বসে কখনো ঝর্ণার গান শুনেছ?
শুনেছ বৈকি তুমি তো গান শোনো।
আমি উপলব্ধি করি।
জানো, ওগুলো কিন্তু কোনো গান নয়,ওই পাহাড় টার কান্না।দেখলে তো এবারও ভুল করলে।
জোনাকি কে তারা আর সুর্য কে প্রদীপ তো তুমি সব সময় ভাবো।
সেই তফাৎ টুকু বোঝোনি বলেই যেদিন নিজের ঘরে আগুন লাগলো সেই আগুন কে দিয়ালির রোশনাই করে নিলে।
আজও সেই পোড়া ছাই গুলো বড্ডো চোখে পড়ে।অন্ধকার হয়ে যায় চারদিক।