নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

লক্ষ্যভ্রষ্ট : সুদীপ্ত বিশ্বাস


পথিক আমি, পথের কাছে কথা আমার দেওয়াই আছে
ঠিক যে ভাবে ছোট্ট নদী ছুটতে-ছুটতে দারুণ বাঁচে!
মাধুকরী করেই আমি পাহাড় দেখে ঝর্ণাতলে
সেই যেখানে অরণ্য-বন ভালবাসার কথাই বলে;
সেই সে দেশে যেই না গেছি ছুটতে ছুটতে হন্যে হয়ে
নদীও দেখি দারুণ খুশি, আমার জন্যে যাচ্ছে বয়ে।
টুনটুনিটার মতই সরল, আমার হাতে রাখল সে হাত
তারপরে তো আপন হল, নদীর সে গান, জলপ্রপাত।
ছপ-ছপা-ছপ সাঁতরে শুধু ডুব-সাঁতারে, চিৎ-সাঁতারে
যাচ্ছি ডুবে উঠছি ভেসে কুল না পেয়ে সেই পাথারে।
এরপরে তো হঠাৎ করে সেই ফোয়ারা উথলে ওঠে
এমনি করেই ঝলমলিয়ে বাগানজুড়ে গোলাপ ফোটে।
গেলাম ভুলে পথের কাছে কথা আমার দেওয়াই আছে
বন্দী আমি আটকে গেছি, আটকে গেছি তোমার কাছে!

অস্তিত্বে: মুহম্মদ আল আমিন


পরিশ্রান্ত দিন শেষে যদি একলা লাগে-
আসবো তোমার ঘুমের দেশে।
মাঝ রাতে যদি মন খারাপ থাকে-
আসবো জোছনার বেশে।

আকাশ জুড়ে শূন্যতার ভরা রোদ্দুরে,
আসবো কায়াহীন ছায়া হয়ে।
নিশি রাতে সজনে পাতার অভিমান ভাঙিয়ে
তারার আলোর মতন দেবো তোমায় ছঁুয়ে।

সব আলো ফুরিয়ে গেলে
আমার দু’চোখের আলোটুকু নিও,
হঠাৎ তোমার ধারায় দিনেই যদি রাত নামে,
তবে সে অন্ধকার আমায় দিও।

তন্ত্র: সঞ্জয় গায়েন


--মানুষকে বশ করতে চাই বাবা। একসঙ্গে অনেক অনেক মানুষ বশ হবে। তার মন্ত্র বলে দিন।
--এ তো খুব সহজ রে বেটা। যা ঘরে ফিরে গিয়ে সবথেকে বড় তন্ত্রের সাধনা কর। একসঙ্গে লক্ষ লক্ষ মানুষ বশ হয়ে যাবে।
--সত্যি বলছ, বাবা। কিন্তু সবথেকে বড় তন্ত্র! তার নাম কি? আর সেই তন্ত্রের সাধনা কেমন করে করতে হয়?
-- এই তন্ত্রের সাধনা করতে হলে তোকে মানুষের অরণ্যে যেতে হবে। মনে রাখবি এই সাধনায় মানুষই শব। মানুষই সব। সেই মানুষদের স্বপ্নের নেশায় বুঁদ করতে পারলেই কাজ হাসিল। কি রে পারবি তো?
-- পারব।  আমাকে পারতেই হবে। কিন্তু বাবা, এই তন্ত্রের নাম কি?
--ওরে, এর নাম গণ-তন্ত্র।

খোঁজ: নীলাদ্রি হাসানাত



এক টুকরো হাসির খোঁজে  ফিরব কোথায় বলতে পারো? 
গৃহের কোনে? সবার মাঝে? লুকিয়ে আছে হৃদয়ে কারো?

সবার সাথেই মেলাতে গিয়ে,
 সবার মতো হতে গিয়ে
বারে বারে বদলে যাচ্ছি
হারিয়ে ফেলছি নিজেকে যে!
কারণ, ওরা চাইনা আমায়
চাইনা রাখতে কাছে,
কাছে গেলেই তাই তো সবাই
দূর দূর দূর করে। 

খাবার খেতে যাচ্ছি যখন
আহ্লাদে আটখানা
যেই ঘেঁষেছি ওদের কাছে
শুনিয়ে দিল কথা ষাটখানা।

এবার বলো কোন সুখেতে ফিরব তাদের কাছে? 
কোন আশাতে ঘুরব বলো তাদের পিছে পিছে? 
আমিও মানুষ  এই কথাটা যাচ্ছে কি ওরা ভুলে? 

বাবা: মুহম্মদ আল আমিন



চৈত্ররোদে ফেটে চৈচির হওয়া ফসলের মাঠের মতোন- কষ্ট বুকে চেপে

বর্গাচাষী রহিদ মিয়া বেঁচে রয়। মরণ এসে ফিরে যায় বারংবার!

লাঙলের হাতলে হাত পড়তে পড়তে- কড়া পেয়ে বসেছে হাতের তালুতে।



'বউট্যার পেটের ব্যাটাটা য্যান মোর ভরসা হয় আল্লা! "



তারপর-

ভরসা হয়ে জন্মানো ছেলেটা আজ অন্যঘরে- জ্বেলে যায় আশার আলো;

বর্গাচাষী রহিদ আজ অচল- ঘরের আলো, চোখের আলো নিভে গ্যাছে!

গাছের পাতায় অস্থিরতা জাগায়, উঠোনে গড়াগড়ি খায় রহিদের বেদনার্ত স্বর:

বাজান, ও বাজান...মইরবার আগে তোর মুখখান দেইকপার পাইম না বাজান..?

লটারি : পিনাকী কর্মকার


বোধনের বাজনা বাজে ধরার বুকে আজ।
 কৈলাসে দেবদেবীরা করছে নতুন সাজ।
আজকে সবে মহাখুশি মামার বাড়ি যাবে।
শুয়ে বসে চারটি দিন মণ্ডা-মেঠাই খাবে।
সাজগোজ মিটলে পরে বাজলো কাঁসর ঢোল।
কিসে চড়ে যাবে তারা বাঁধল বিষম গোল।
কার্তিক বলে এই বছরে ঐরাবতের পিঠে।
চড়ে যাবো মামার বাড়ি, রোদ্দুর খুব মিঠে।
গণপতি চেঁচিয়ে বলে কি যে বলিস ভাই।
চলনা এবার সবাই মিলে নৌকা চেপে যাই।
সরস্বতী বিরক্ত হয়ে পিছিয়ে যায় দুপা।
নৌকায় আমার ভয় করে তুই তো জানিস তা।
তারচে' চল দোলায় চড়ে মামাবাড়ি যাই।
এই না শুনে লক্ষ্মীদেবী তোলেন বিষম হাই।
ঘোড়ায় চড়ে যাব মোরা চেঁচিয়ে বলে ইন্দিরা।
মাথায় সবার কিলবিল করে নিত্যনতুন ফন্দিরা।
দুর্গা একটা বুদ্ধি করে বলল সবে একসাথে।
আসা-যাওয়া হবে কিসে ঠিক হবে লটারি তে।