নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

||একটি নাবালিকা বোনের কথা || মান্নুজা খাতুন





   জন্ম নেবার পর সময়ের সাথে তাল রেখে
স্বপ্ন দেখেছিলিস অনেক!  অনেক ;

চেয়েছিলিস গড়তে একটা সুন্দর ভবিষ্যৎ,

করেছিলিস অঙ্গীকার বাবা-মাকে ভালো রাখার।

তখনও শুনিস নি বোধহয় সংসার নামক শন্দটা,

বুঝিয়ে কেউ দেয় নি তোকে ঘর- সংসার স্বামীর অর্থ।।


বারোর কাটা অতিক্রম করে সবেমাত্র দিয়েছিলিস পা পনেরোই

সময় হয়েছিল তোর,  এজগৎকে নতুন করে চেনার

তার পরিবর্তে! অভাবের সংসারের দোয়ায় দিয়ে

এতটুকুন তোকে ঘোমটা পরিয়ে দিয়ে এল ছাদনাতলায়

পুতুলের মতো করলি মন্ত্রপাঠ,  বাবা মা ফেলল স্বস্তির নিঃশ্বাস।।


বিনিময়ে!  বিনিময়ে পেলি টা  কি তুই বোন?

বয়সে দ্বিগুণ স্বামীর বিকৃত কামের ফাঁদের পড়ে

বিয়ে বাড়ির সানাই বন্ধ হওয়ার আগেই ঠাই হলো তোর হাসপাতালে;

দিনের আলো ফুটতে বা ফুটতে হারালি তাদের

মন্ত্রপাঠ করে করেছিলিস গোত্র ধারণ যাদের

স্বামী পালাল কৈফিয়ৎ আর লজ্জার ভয়ে,  আত্মীয় পালাল দায়সারাভাবে দ্বায়িত্ব পালন করে।।


দুর্ঘটনার খবর পেয়ে

পাত্রপক্ষের ঝুলি ভরতে গিয়ে সর্বশান্ত হওয়া হতভাগ্য পিতা এল দ্রুতপদে।

রক্তের অভাবে,  অর্থের অভাবে ধুকতে ধুকতে চলে গেলি অকালে।

বুঝলি না তুই সংসারের মর্মবাণী,  পেলি না আস্বাদ

কৈশোরের লীলাচপলতার

রয়ে গেল অজানা সব কিছু তোর অভিধানে

তবু তুই জেনে গেলি বোন!  নারীর যন্ত্রণা।।

জনতার চাঁদ : গোলাম রসুল



শেষ মিছিলে ক্লান্ত পৃথিবীর ছায়া পড়েছে
আর ছায়ায় কিছু রক্ত রয়েছে তাই দেখা যাচ্ছে মানুষের হৃদয়
মাথার ওপরে জনতার চাঁদ
ভাগ্য যেমন হয়

দুশ্চিন্তার কাক
ইলেকট্রিক তার
পোড়া ইটের বাড়ি
আমারা সম্মান জানাচ্ছি  নাগরিক সমাজকে

আকাশে কাজ করছে মানুষের একঝাঁক হাত
শ্রমিকের মর্যাদা মেঘ আর পিরামিড আমাদের ভবিষ্যৎ

অন্ধকার মাতাল জলাধার
ব্যবহার করা শব্দের ডাস্টবিন
আর হাই ড্রেনের সুগন্ধ উচ্ছ্বাস
বই   পাঠশালা
আট দশটি কথা

টেবিল প্লেট  চামচ একটি নক্ষত্র
দিগন্ত পানশালার দেয়াল
পাখির দেহ

ঝোপের ভেতরে তালাচাবি দেওয়া রোম্যান্টিক প্রেম
কল্পনার ভিটে বাড়িতে আলো জ্বলছে
অবশিষ্ট আদিমতার এখনো সেই বাগান
তারপর বৃষ্টির সন্ধ্যা ঠিক একটি নরকের সংস্করণ

নীল মোহনা
নদীগুলো সব ফিরে যাচ্ছে বিরহের দিকে
মিছিলের শেষে ক্লান্ত পৃথিবীর ছায়া পড়েছে
                     -------------

মা দুগ্গা এসে গেছে: পিনাকী কর্মকার



বৃষ্টি-বাদল থেমে গেছে ,
বন্যার জল নেমে গেছে ,
আলোয় ভূবন ভেসে গেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে। ।

শরত্ ঋতু এসে গেছে,
হাওয়ায় মেঘ ভেসে গেছে,
বুলবুলিটা ডেকে গেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

 কাশের দোলায় মাঠ ভরেছে,
শিউলি তলায় ফুল ঝরেছে,
শিশির কণা ধরেছে ঘাসে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

ঐ দেখ ভাই চাঁদ উঠেছে,
হিমেল হাওয়া গায় লেগেছে ,
আনন্দে আজ মন মেতেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

নতুন জামা গায়ে পরেছে,
ঢ্যাম্ কুড়াকুড় ঢাক বেজেছে,
ধুনুচি হাতে খুব নেচেছে,
মা দুগ্গা এসে গেছে ।

নবমী নিশি ফুরিয়ে গেছে,
আনন্দ আজ জুড়িয়ে গেছে,
বিসর্জনের ঢাক বেজেছে,
মা দুগ্গা ভেসে গেছে ।

জীবন সায়াহ্নে :অথৈ দেবনাথ (রিনা)


কত শত বসন্ত পেরিয়ে,
অাজ জীর্ণ প্রাঙ্গণ।
সাথে ঝড়া বৃক্ষ পত্রের নির্মম দৃশ্য,
 অামাকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছে।
শারিরিক স্থবিরতা, ,
অাজ অার অধরে চুম্বনের শিশির বিন্দু, মুক্তর মত জ্বল জ্বল করছেনা।
অামার অক্ষির নেশায়,
প্রেয়সীর গালের টোলে ঢেউ খেলেনা।
তবুও মাঝে মাঝে,  পাঁজোরে প্রণয়ের সাড়া শুনতে পাই।
তখণ একাকী নিভৃতে,
রংধনুর তুলির অাঁচড়ে
ভালবাসার স্বপ্ন অাঁকি।
ফিরে যাই সেই তারুণ্য,
ঠিক তখনি ,
জীর্ণতাকে অতিক্রম করে,  ওষ্ঠ জোড়া হতে বেড়িয়ে অাসে।
অামার প্রিয় স্বর ভালবাসি।
অতপর ইচ্ছে হয়,
প্রতিটি অধ্যায়ের মত জোড়িয়ে রাখতে।
এই জীবন সায়াহ্নে।।

উদ্ভট এক রাজার কথা: মোঃ গোলাম মোস্তফা লিটু


উদ্ভট এক রাজার কথা
করবো আমি বর্ননা,
এ রাজার রাজ্যের সাথে করোনা
আপন,দেশ রাজ্যের তুলনা।

ক্ষমতা পেয়েই রাজা
হয়ে কঠিন কঠোর খুব,
বিরোধী দলমত কে দমন করে
ভয় দেখিয়ে করিয়ে দেয় চুপ।

চাটুকারেরা ঘিরে থাকে
রাজার চতুর্দিকে,
রাজ্য চালায় রাজা মশাই
চাটুকার বেষ্টিত থেকে।

চাটুকারদের তোষামোদে
রাজা হয়ে গদগদ,
চাটুকারদের দান করেছে
নানান,গুরুত্বপূর্ণ পদ।

রাজা মশাই মানুষ ভালো
বহুত পরহেজগার !
চামচাগুলোর কর্মদোষে
দুর্নাম হচ্ছে তার।

দুর্নীতিগ্রস্ত সান্ত্রী মন্ত্রী
রাজার রাজ্যসভার,
যে যা পারছে করছে ভোগ
রাজ্য করছে সাবাড়।

অপরাধ যা হচ্ছে রাজ্যে
সব করছে রাজার লোক,
কিছুই করার নাই প্রজাগণের
বিস্ময়ে,গেলা ছাড়া ঢোঁক।

রাজ্য যাচ্ছে রসাতলে
রাজা রাখে না খবর,
ব্যস্ত রাজা কোষাগারের টাকায়
করতে বিদেশ সফর।

উদ্ভট সেই রাজার বিরুদ্ধে যবে
জাগবে রাজ্যের প্রজাগন
টেনেহিঁচড়ে নামাবে মসনদ হতে
ধুলোয় লোটাবে সিংহাসন।

চাটুকার বেষ্টিত ছিল
অতীতের যত উদ্ভট রাজা
ইতিহাস সাক্ষী তারা ভুগেছে দুর্ভোগে
পেয়েছে নিদারুণ নিষ্ঠুর সাজা।।

মুখোমুখি তুমি : আমিনুল ইসলাম


বসে আছি মুখোমুখি, মানে মুখে মুখ রেখে চুমুর অন্তরঙ্গতা নয়
সামনাসামনি কিছু বোঝাপড়া বুঝে নিতে আয়নায়।
তুমি লেলীহান জ্বলছো সলতের সংস্পর্শে -
আলোহীন খাঁচার ভিতর পাখি সেজে কতোদিন একা থাকা যায়?
একা হতে হতে তলানিতে ঠেকে একাকিত্বে নিখোঁজ হওয়ার অমোঘ আকর্ষণে পর্দার হারিয়ে যাওয়া, শব্দগুলিকে ভেঙে বিকলাঙ্গ করে তোলার নিরবিচ্ছিন্ন তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয় সত্য-মিথ্যা
সতী-সাবিত্রী কথায় বালিশ ভেজেনা কখনো, ভিজে যায় চোখের চালচিত্র
মেজেন্টা রং ক্ষয়ে যাবে বলে আদ্রতা ধরে রাখে উদ্ভিদ
চাঁদের চর্যাপদে চাষযোগ্য ভুমি না থাকায় কৃষি কাজ নিয়ে কোনো চাঁদের আলোর মাথা ব্যাথা নেই
সুতরাং একা হয়ে পড়ছো ক্রমশঃ বহুত্বের অন্ধকারে -
দলিত ফুটপাতে আঁকা থাকে রাতের প্রজাপতি