নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অব্যাহতি : অমিত কুমার জানা


নিশুতি রাত, হায়নার ভয়ংকর ডাকে ও চমকে উঠলো।
ও চিৎকার করে ডাকলো বাবা মাকে,
বললো-"তোমরা কোথায়? এখনই লাঠিসোটা নিয়ে এস,
হিংস্র হায়নাটাকে তাড়িয়ে দাও"।
বাবা মা ভাই বোন কেউ এল না।
-"তোমরা কি শুনতে পাচ্ছো না কেউ?"
ও ফুঁপিয়ে কেঁদে উঠলো,তবুও---

এবার ওর প্রকৃত নিদ্রা ভঙ্গ হলো,
দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি পেতে ও পরিবারের সবাইকে ছেড়ে এসেছে,
ও মস্ত অফিসার, এখন ভীষণ স্বাধীন।
সংসার সামলানোর বাধ্যবাধকতা থেকেও মুক্ত।
উপার্জিত অর্থ একাই ভোগ করে,বাকিটা সঞ্চিত  থাকে।

রাত্রি বাড়ে, ওর চারপাশ ছমছমে আঁধার ঘন হয়ে ওঠে,
সুযোগ সন্ধানী হায়নার দল ধেয়ে আসে ওর দিকে,
ও যেন শিশুর মতো নিতান্ত অসহায় হয়ে ওঠে,
পরিবারবর্গের সঙ্গ পেতে ও মরিয়া হয়ে ও সচিৎকারে বলে ওঠে-"বাঁচাও, বাঁচাও---"

তুই কি আমার বন্ধু হবি : মুহাম্মদ ইয়াসিন।



তুই কি আমার বন্ধু হবি?
রাত-বিরাতে একলা চলার সঙ্গী হবি?
সাঝ সকালে ঘুম বাড়িতে
ঝাঁকুনি মেরে ঘুম তাড়াবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
একলা রাতে আকাশ দেখার সঙ্গী হবি?
দুঃখ রাতে পাশে থেকে
দুঃখগুলোয় ভাগ বসাবি?
সুখের সময় দুঃখের সময়
সব বেলাতে আমার হবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
শিশির ভেজা ঘাসের উপর
হাঁটতে গিয়ে আমায় নিবি?
মিষ্টি রোদের শেষ বেলাতে
মন খারাপের সব বেলাতে
কাছে থেকে মন রাঙ্গাবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
বৃষ্টি ভেজা রৌদ্র ছায়ায়
একলা যখন ভিজবে কায়া
কলা পাতার ছাতা নিয়ে
তুই কি আমার পথ শুকাবি?

তুই কি আমার বন্ধু হবি?
আঁধার রাতে একলা হলে
দুঃসময়ে পথ হারালে
তুই কি চেনা পথিক হবি?
আলো হয়ে পথ দেখাবি?
তুই কি আমার বন্ধু হবি?

চাই না কারগিল : পিনাকি কর্মকার


বন্ধ হোক রক্তস্রোত নিয়ত দুইবেলা,
বন্ধ হোক পড়শির সাথে যুদ্ধ যুদ্ধ খেলা।
বন্ধ হোক দেশের মধ্যে আরেকটা দেশ গড়া,
 বন্ধ হোক প্রত্যহ এই লাশগুনতির ছড়া।
সীসের টুকরো বোঝেনা যে কে আপন কে পর,
মৃত্যুদূতের কোলে তুলে সে ভাঙছে শুধুই ঘর।
যুদ্ধের মুখে ছাই দাও আর বারুদের ঘরে খিল,
চাইনা কারুর রক্ত যে আর চাইনা কারগিল।

শিক্ষার হালচাল : মাধব মন্ডল


বিষয় : শিক্ষার হালচাল
স্থান : শিক্ষাপুর,
কলার : পিকু
অন্যান্যরা : ইকু, মিকু, রিয়া ও রুবিনা।
----------------------------------------------


পিকু : আগত সবাইকে জানাই স্বাগত।
অন্যান্যারা(একসঙ্গে) : মহা স্বাগত।
পিকু : শিক্ষাপুরে সত্যিই শিক্ষার ফল
ফলছে।
ইকু : নিশ্চয়ই, না হলে এখানে একসঙ্গে এত
স্কুল চলছে!
মিকু : চারদিক বিজ্ঞাপণে গিয়েছে ছেয়ে।
রিয়া : মনে হচ্ছে বাচ্চারা বড় হবে বিজ্ঞাপণ
খেয়ে।
রুবিনা : রিক্সাওলাও হাজির বিজ্ঞাপণ পেয়ে।



পিকু : ফ্রি প্রাইমারি তকমা পেয়েছে খিচুড়ি
স্কুলের।
রুবিনা : এস এস কের কপালেও জুটেছে ছাপ
একই ফুলের।
রিয়া : বাদ নেই এম এস কে আর জুনিয়র
হাইও।
মিকু : এর বাইরে আর কিছু নাইও।
ইকু : এবার তাহলে শিক্ষা কিনতে অন্য
কোথাও যাইও।



পিকু : তাহলে প্রথম চলো জ্ঞানালয়ে।
যেতে পারি বোধোদয়ে। না হলে
জ্ঞান পিপাসায়। জ্ঞানজলসায়?
হ্যাঁ তাও যাওয়া যায়।
ইকু : অকারণ বইয়ের বোঝা।
মিকু : দায় হয় মাজা রাখা সোজা।
রিয়া : এলেবেলে টিচারকুল।
রুবিনা : হম্বিতম্বিতে নাম্বার ওয়ান বিলকুল।
ছুতো নাতায় পয়সা আদায়ে করেনা
ভুল। হ্যান করেঙ্গা ত্যান করেঙ্গা
মারছে খালি গুল।



পিকু : ব্যাঙের ছাতার মতো গজিয়ে উঠেছে
সব। যেমন ছিরি নামের তেমনি লক্ষ্য
নিয়েও নীরব।এক একটি শিক্ষাগর্ধভ।
রিয়া : লক্ষ্যের চেয়ে উপলক্ষই বড়। মান?
মান চুলোতে যাক টাকা পেমেন্ট কর।

মিকু : শিক্ষাপুরের শিক্ষাশালায় প্রোডাক্ট
তৈরি হয়।তা ঝাঁ চকচকে মোড়ক
মোড়া সমাজ বৈরি হয়।
রুবিনা : নিজেকে ছাড়া কাউকে চেনে না।
এমনকি মাঝে মাঝে মনে হয় এরা
নিজেকেও চেনে না। দেশ নয়, মাটি
নয়, মা নয়, শুধু মস্তিতে বাঁচো। টাকা
টাকা করে শুধু হিঁচ্চা হিঁচিং হাঁচো।
ইকু : নিজেদের দোষে ডুবে মারি তোকে। হায়,
ঝাঁ চকচকের, অকারণ শৌখিনের কদর
করছে লোকে।



পিকু : ভুলে ভরা বই।
সাত ভূতে খায় কমিশনই।
রুবিনা : ব্যবসা বাড়ছে চড়চড়।
শয়তান ওড়ে ফড়ফড়।
রিয়া : খাতারও নেই শেষ।
চুপ, শিক্ষা চলছে বেশ।
ইকু : প্রজেক্টের জোয়ার!
কিছু শিখুক না শিখুক থাকবোই গোঁয়ার।
মিকু : পয়সায় পয়সায় শিক্ষা ওড়ে
তোমার বাড়িতে যায়।
হায়, হায়, হায়!
****************************

ঊনিশের প্রেম দিবস : প্রলয় কুমার বিশ্বাস


এক থালা পায়েস সাজিয়ে ছিল মা
ফেরা হয়নি জন্মদিনে,
গত শ্রাবণী পূর্ণিমার  বোনের রাখি হাতে ছিল সেদিনও,
প্রতি বছর এইদিনটিতে প্রেয়সী গোলাপ হাতে দাঁড়িয়ে থাকতো স্কুলের চেনা কৃষ্ণচূড়ার নীচে।
কিন্তু, এবারে আর ফেরা হয়নি।

আমার শরীরে এদিন তেরঙ্গা জড়ানো ছিল
মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি,
গোটা দেশের চোখে তখন জল।
যারা কাছের ছিল, তারাই আগুন দিল
শূন্যে ভাসলো গুলির শব্দ
দলা পাকাতে লাগল আমার শিরা উপশিরা।
কিন্তু, অমরত্ব পেলাম আমি
আর ঊনিশের প্রেম দিবস।

সাদা এপ্রোনের মেয়ে : নির্ঝর চৌধুরী


একটা মেঘাচ্ছন্ন সন্ধ্যা,বৃষ্টির প্রতিক্ষায় থাকা আমাদের অনুভূতি গুলো।আর ওপাশে খোলা চুলে একটা সাদা এপ্রোনের তুমি অবিরাম।

হঠাৎ তুমুল বৃষ্টি নামুক।বৃষ্টিভেজার ছলে সাদা শার্টের বুক পকেট বরাবর একটা গোলাপি লিপিষ্টিকের জীবন্ত দাগ লাগুক।এইতো বেশ....

বিশ্বাস করো একটা জীবন তোমার সাদা এপ্রোনে কবিতা লিখতে লিখতে কাটিয়ে দেবো....