নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অনুভবে -সুকান্ত ঘোষ



সকাল ১১:১০ এ পুঁচি রেজাল্ট দেখল। এতক্ষন উত্তেজনায় পা যেন মাটি থেকে সরছিল না। এখন স্বস্তি। পুঁচি উচ্চমাধ্যমিকে স্টার পেয়েছে, স্কুলে কৃতি ছাত্রীদের মধ্যে তার নাম রয়েছে। এই সাফল্য ওর জীবনের একটি বড়ো পদক্ষেপ। স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে পুঁচি যাবে বাইরের এক বিশাল জগতে। সেখানে ওকে লড়তে হবে কোমর এঁটে, ও প্রস্তুত। সকলের শুভকামনা, আশীর্বাদ ও পুঁচির অমোঘ পরিশ্রমে আজ এই সফলতা।

সকাল থেকে বাড়িতে পুঁচিকে নিয়ে হুড়োহুড়ি, রেজাল্ট আনতে যাওয়া, বাবা-দিদি-বোন সবার সাথে ঐকান্তিক আনন্দ বিনিময়, বন্ধুদের সাথে শেষ দেখা সেই সঙ্গে আবার-সাক্ষাতের শপথ গ্রহণ, ম্যাডামদের প্রশংসা, ও বিশেষত যার কাছে হাতেখড়ি সেই দিদিমনির আনন্দে চোখের জলে ভাসা, এমন কী পাড়ার সবচেয়ে খিটখিটে কাকুর ৫০০ টাকা দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সব যেন পুঁচির কাছে জীবনের এক অপ্রত্যাশিত আনন্দ।

দিনের শেষে যখন সব শান্ত। ঘরের দরজার সামনে একা বসে আছে পুঁচি। প্রথমার রাত্রে জ্যোৎস্নার ম্লান আলো সামনের কৃষ্ণচূড়ার লাল-সবুজ চাদরের ফাঁক দিয়ে ছড়িয়ে পড়েছে রাস্তায়, সেই ক্ষীণ আভা ম্লান করেছে তিনটি শরীর। চৌকাঠে উপবিষ্টা পুঁচির নিথর দৃষ্টি স্থির অদূরে অবস্থিত দুটি প্রাণীর ওপর। পুঁচি দেখছে একটি নিষ্পাপ, নিরীহ, ক্ষুদ্র কুকুর ছানা তার ঘুমন্ত মাকে ঘিরে খেলা করছে, আর ঘুমন্ত মায়ের একটি পা বার বার আগলে নিচ্ছে শিশুটিকে। জ্যোৎস্নার স্বচ্ছতায় প্রাণী দুটি যেন আরো নিষ্পাপ নিরীহ মনে হচ্ছে। পুঁচির দৃষ্টি স্থির, দেহ
 নিথর।

সেই স্থির দৃষ্টি যেন এবার অস্থির হয়ে আসছে। পুঁচির চোখ দুটি জলে ভোরে উঠেছে। ম্লান আলয়ে ছলছল করছে সেই চোখ সমুদ্রের জলে বিচ্ছুরিত জ্যোৎস্নার মতো। বাঁ দিকের গাল বেয়ে চুয়ে পড়ল এক ফোঁটা নোনা অশ্রুজল বাঁ হাতের চামড়া ওঠা জীবন্ত ফোসকাটির ওপর। পুঁচির সমস্ত শরীর-মন জ্বলে উঠল। পুঁচি কাঁদছে। আজ ৮ বছর ও মা-কে হারিয়েছে। আজ ওর মায়ের কথা খুব মনে পড়ছে। "আজ যদি মা থাকতো? খুব আনন্দ পেত, আমায় জড়িয়ে ধরত। মা-এর মুখের সেই অমলিন হাসি দেখে আমারও হয়তো চোখে জল আসত। কোথায় রাখতাম সেই আনন্দ গুলো? তা তো আজ আর সম্ভব নয়। এই ক্ষতি তো পুরণ হওয়ার নয়!" আজ মায়ের অভাব পুঁচির বুকের ভিতরটা একেবারে শূন্য করে দিয়েছে। এই কষ্ট ওর একার, একেবারে নিজের। পুঁচি চাইলেও যেতে পারবেনা ওর মায়ের কাছে, ছুঁতে পারবেনা সেই অমলিন হাসি।

কিন্তু হঠাৎ পুঁচির অস্থির দৃষ্টির চঞ্চলতা এবার বেড়েছে। ও ক্রমশ অনুভব করতে পারছে বাঁ হাতের চামড়া ওঠা জীবন্ত ফোসকার জ্বালা যেন অস্বাভাবিক শীতল হয়ে আসছে। কে যেন একটা ঠান্ডা স্পর্শ রেখেছে তার উপর। পুঁচি অনুভব করছে একটা ঠান্ডা শরীর যেন তাকে জড়িয়ে ধরেছে। পুঁচির সমস্ত শরীর হীম হয়ে উঠছে। পুঁচি বুঝতে পারছে এই স্পর্শ ওর খুব চেনা। এই স্পর্শ যে ওর মায়ের। পুঁচির নিথর দেহ ক্ষণিকের জন্য প্রাণ পেয়ে আবার অসার হয়ে পড়েছে, কেবল দুই চোখ দিয়ে অঝোরে জল ঝড়ছে, বোবার মতো নিঃশব্দে প্রচন্ড চিৎকার করে কেঁদে চলেছে সে।

পুঁচি বুঝল ওর মা দুই হাত বাড়িয়ে ওকে জড়িয়ে ধরেছে, দৃঢ় স্নিগ্ধ শীতল সেই স্নেহালিঙ্গন। এই সমস্ত ও অনুভব করছে। দেখতে পাচ্ছে মায়ের সেই অদৃশ্য অমলিন হাসি। আর কাঁদছে।

এই অনুভূতি কেবল পুঁচির নিজের একার। ও অনুভব করেছে মায়ের অস্তিত্ব, শুধু বস্তুজগতের বাহ্য ব্যবধানের জন্য তা আজ অদৃশ্য। সমস্তকিছুই তো কেবল অনুভূতির দ্বারা গ্রাহ্য, বাস্তব অপেক্ষা অনুভবে অস্তিত্বের সত্যতা তো সর্বাধিক।

অন্তর কালা .... আহাম্মেদ হৃদয়



ধর্ষিতা নও তুমি,
ধর্ষক বটে
এই পৃথিবীতে এইসব,
হাজারো দূর্লভ ঘটনা ঘটে।

দেহ পোড়ানো জ্বালা
ভুলিতে পারেনা তারা।
যে জ্বালিয়ে মারে তাকে
সে তো বোঝেনা তাহার কষ্টটাকে।
সে মোহে অন্ধ হয়ে জ্বালায় তাকে।

নিজের দেহ হয় দখল
অন্তর হয় কালা
এই সব ঘটনা ঘটে
মধ্য রাএীবেলা।

বিবেক শুন্য প্রতারক তুমি
ক্ষমা পাবিনা আর
তদের জন্য আসছে একদল
সুশীল ছাত্র সমাজ।

অন্যায় দেখলেই প্রতিবাদ করে
পিছু পা হাঁটেনা তারা
ন্যায়ের পক্ষে জন্ম তাদের
অন্যায় দেখলে জ্বলে ওঠে তারা।

জীবন তরী" কলমে - রাসমণি সাহা দেবনাথ



নিদ্রাহীন আঁখি,
নিশাচর পাখি...
মুখোমুখি একাকী।

রাত জাগা ভোর,
আলগা প্রেমের ডোর...
ভাঙছে বিশ্বাসের জোর।।

অবিশ্বাসের চোরা বালি,
গহীনমনে বাড়ছে খালি...
শূণ্য ক্রমে জীবনপদ্মের ডালি।

জীবন বড্ড আপেক্ষিক,
সংজ্ঞা গুলো নৈমিত্তিক...
কেবল উদাহরণ সহস্রাধিক।

বাঁচার মতো বাঁচতে হলে,
মনের ক্ষত ঢাকতে হলে...
জীবনতরী ভাসাতে হবে উজান গাঙে।।

~~~~~~~~~~~~~

গানের সাঁকো.. সৈকত ঘোষাল

"গানের সাঁকো"
হঠাৎ ঝ'রে যাওয়া ফুলের মতন
ঝ'রে পরে সন্ধে,
সিঁদুর রঙের মেঘকে সাক্ষী রেখে
সাঙ্গ হয়,টবে লাগানো ফুলগাছ গুলির স্নান।
'গীতবিতান' এর দুপাশে
চোখে জল নিয়ে দাঁড়িয়ে রয়েছে দুজন,
যাদের মধ্যে ক্ষুদ্র যোগাযোগের
সেতু গ’ড়ে দেয় অসংখ্য গানের স্বরলিপি।।


দৃশ্যসংলাপ... কল্যানী



চেনা গন্ধের বীজে প্রকান্ড গাছের সংকেত খুঁজি এখোনো।
নীলচোখের দম্পতি যারা....
তাদের শাখাজুড়ে চেনা চেনা ফুলেদের আঁশ।
মাটির তলায় রোজ শিকড় ছড়ায়।
আর্দ্র শপথে তাই দৃশ্যেরা সারিদিয়ে আছে।
হলুদপাতা বিছানো পথ আর রোদেলাচাদর
 খামখেয়ালী হাওয়ায় উষ্ণতার ভ্রম।

একমুখ আলোনিয়ে এখোনো সেখানেই
আলোচুরির দায় নিয়ে দাঁড়িয়েছো...
যে আলোতে পুড়বো না আমি।

প্রেমস্নাত বিকেল..... রুদ্র সুশান্ত



কতো ভালো বাসলাম তোমায় কেমন করে বলি?
সবুজে সবুজে সবুজপত্র বিলিয়ে দিয়ে জানাবো- আমিও এসেছিলাম শিশিরের কোলাহল ছুঁয়ে।

কিরণে উধাও হলো শিশিরজল,  আমার দিকজুড়ে তখনো শিশিরস্নাত বর্ষা, তুমি এলেনা, বসলেনা, বাসলে না ভালো। উন্মুক্ত আহ্বানে ডাকলে না এই শিশিরধৌত সকালকে।

তবুও শিশিরবিন্দু কথা রেখেছে, সূর্যোদয়ে মিলিয়ে গেলো, ভোর পেরিয়ে সকাল, তারপর দুপুর হলো। ভালোবাসার একটি বাক্যও বিনিময় হয়নি আমাদের। 

এতো ভালোবাসা নিয়ে আজো অপেক্ষমান আছি, পথিক পথ পেরুলেই হয়তো তোমাকে পেয়ে যাবো, হে প্রিয় বিকেল। 

তোমার ভালোবাসায় আমার আড়মড়া ভাঙবে, এ প্রত্যাশায় রোজ তোমার অপেক্ষায় থাকি।
বিকেল আসবে, আমিও ভালোবাসার কথা জানিয়ে দিবো।