নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

আতপ-প্রেম :দেবাশ্রিতা চৌধুরী







থার্মোমিটারের ফারেনহাইটের মাত্রা
 সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে প্রেম।
উত্তর মেরুপ্রান্তে হাতে হাত রেখে
উষ্ণ চুম্বনেও শীতলতার হিম চাদর।

মরুপ্রান্তরে তীব্র উষ্ণতায় মরুদ্যানের
খোঁজে অসীম হাহাকার, জলীয়
ফলের আকুল আহ্বান খরখরে
জিহ্বাগ্ৰে কাতর পিপাসা 
আমাদের কর্কটক্রান্তি রেখার এপারে
শরীরে শরীরে উষ্ণতা অন্বেষণ।

একটুকরো উষ্ণতার জন্য উন্মুখ
তুমি আমি আর আমাদের মতো 
লিভিং অর্গানিজম।হে শীতলতা
তুমি থাকো ডাল লেকের বরফপিন্ডে,
উষ্ণতা আমাদের শরীরে মননে উজাড়
করে ঢেলে যায় ভালোবাসা আর ভালো লাগা...


।। অসহনীয় ।।রিঙ্কু মণ্ডল





ধরার সর্ব বেদনা সহিবারে পারি
অম্বর সম কুলিশ পরিলে পরুক।
তীব্র ঝড়ের তান্ডবে ভাঙে যদি বাড়ি
বৃষ্টির প্লাবন তবে মস্তকে ধরুক।
সুনামি আসিলে পাশে চিন্তা নাই তবু
চঞ্চল চিত্ত সেথায় রহিবে নিশ্চল।
মরুভূমির উত্তাপ আসিলেও কভু
চিন্তা ছাড়া স্বীয় প্রাণে রহিব সবল।

রহিয়াছে কিছু কিছু যন্ত্রণার দল
যেগুলো করিয়া থাকে মর্মাহত মোরে।
নিশিকালে অশ্রুধারা, তুল্য বহে নল
মূর্ছা হেতু বন্ধ চক্ষে নিদ্রা আসে জ্বরে।
গার্হস্থ্যের অভিপ্রায় যেই হেতু রহে
সেই হতে দুঃখ পেলে প্রাণে নাহি সহে।



আঘাত এবং মনুষ্যত্ব : সজীব বড়ুয়া বাপ্পী






আকাশের কালো মেঘ —
দূর থেকে দেখা হয় , 
কিন্তু কেন তাহা !
কেহই বুঝার চেস্টা করি না ।


ঠিক মন ভেঙ্গে পড়ে —
যখন কেউ আঘাত করে যায় । 
মানসিক চাপ প্রখর , 
রৌদ্রের চেয়ে প্রখর । 


এই বুঝি উঠে দাঁড়াবো , 
পারা হয় না । 
হেরে যায় বারে বারে , 
তবু এগিয়ে যাওয়ার জয়গান গায় । 


আমিত্ব নই —
জাগ্রত হউক মনুষ্যত্ব ।

ধর্ম : সন্দীপ দাস





কবরের নীচে ঘুমিয়ে আছে যারা , তারাও কি জানতো কোনদিন --- কবর তাদের পরিচয় লিখে দেবে একদিন ।
আগুনে শুয়ে পুড়েছিল যারা তারাও কি জানতো কোনদিন --- এই চিতা তাদের পরিচয় চিনিয়ে দেবে একদিন । অপারেশন টেবিলে যে কান্না ভাসিয়ে দিয়েছিল হাসপাতাল এর ফোর্থ ফ্লোর , সে টেবিল কি জানতো সেদিন , এ শিশুটি কার -----

ভগবান না আল্লাহর ?

তারপর আজানের শব্দ মিশে ভেসে এসেছিল রামায়ণের পাঠ তারই নতুন কানে । শিশুটি কেঁদে উঠেছিল না বুঝেই ---
শুধু পৃথিবী বুঝেছিল সেদিন , শৈশব তার কেঁদে ওঠে বারবার

ভগবান না আল্লাহর নামে ।

শিশুটি বড় হল । পদবি জুড়ে দিল পরিবার তার ওই ছোট্ট পিঠে । পরিচয় পেল সে ধর্মের খাতায় প্রথম বার ।

পৃথিবী চিনলো তাকে জীবনের এ দীর্ঘ পথ জুড়ে
মানুষ জানলো পরিচয় মানুষের

হিন্দু না মুসলমান ।

সেও রক্ত দিয়েছিল । সেও বহুবার মানুষকে ভালোবেসে
দাঁড়িয়েছিল এসে মানুষের পাশে .....
রক্তের ফোঁটায় সেদিন ধর্ম ছিলনা লেখা
সেবকের কর্মে সেদিন ধর্ম দেয়নি দেখা
তবু হিংসা , তবু নিষ্ঠুর রক্তপাত দেশজুড়ে রোজ আসে
মানুষের হাতে লেখা হয় ইতি
একটা জীবনের কথা ।

আর দূরে রাজনীতি হাসে বসে বরফের ডেরায়
মদিরা হাতে ওরা মজা নেয় আমাদের
আর আমরা ধর্মহীন লাশ হয়ে পড়ে থাকি কবরে
অথবা জ্বলন্ত চিতায় ।

ছাঁচের আদলে : ভগীরথ সর্দার








চারিদিকে স্তাবকতা জড়ানো ভোর
শিশিরের অজুহাতে মাখছি জল
কি গভীর তোমার শঠতা ।   বাড়ছে
আমি সমর্পনের গা-ঘেঁষে এসে
                                       দাঁড়ালাম।

কুমারী স্নানে রোদ পড়ে
জড়তা ভাঙছি ছাঁচের আদলে

তুমি মুখোশ পরে এসে স্বপ্ন দেখালে 

ক্লান্ত দুপুর ও রাখাল ছেলে....: কুনাল গোস্বামী





শূন্য উঠোনে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে আছে কিছু মাটির খেলনা আর পুতুল 
তা নিয়ে খেলতে ব্যস্ত ক্লান্ত দুপুর, 
দূরে কোথাও শোনা যায় হিংস্র সমুদ্রের অগণন উত্তাল ঢেউ'য়ে সর্বস্ব হারানো নাবিকের আর্তনাদ 
তাতে আর কিইবা আসে যায় নির্বাক নির্জন বালুকা তটের
দর্শকের আসনে বসে রঙিন চলচ্চিত্র দেখতে কারই না ভালো লাগে?
ভালো লাগে সবারই তো বটে!

ছবির মতো সুন্দর গ্রাম, পরদে পরদে মাটির সুগন্ধ 
দু'দিকে সোনালী ধানক্ষেতের বুক চিড়ে ঐ দূরে এগিয়ে গেছে আলপথ
একমুঠো গোধূলির আলো তার ছোট্ট অন্ধকার কুঁড়ে ঘরে নিয়ে যাবার আশে
ছুটে চলে রাখাল সেই পথে
হঠাৎই বিস্ফোরণ ঘটে দিগন্তের শূন্য প্রান্তরে 
ছিন্নভিন্ন হয়ে যায় ঘর ফেরা পাখিদের শব
সেই বিস্ফোরণের সাদা ধোঁয়ায় হারিয়ে যায় রাখাল ছেলে
তাতে কিইবা আসে যায় অন্ধকারের ;

সেই ক্লান্ত দুপুর, সেই রাখাল ছেলে এখনও হয়তো বর্তমান 
যেখানে হিংসা নেই, নেই কোনো ক্ষমতা লাভের লোলুপ দৃষ্টি 
যেখানে সেই ক্লান্ত দুপুরের কোলে মাথা রেখে নির্ভাবনায় ঘুমোতে পারবে সেই রাখাল ছেলে