নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

দেবীপক্ষ : রমা সিমলাই



এইমাত্র নিজের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফিরলাম !

পান্ডুলিপি জুড়ে বিষাদের একমুঠো ছাই !
প্রলয়ের  সাঙ্কেতিক রোজনামচায় এক ঘাটে
জল খাওয়া বাঘে গরুতে উপবাস করে আমার  তর্পণ করবে, কথা দিয়েছে !!

প্রবালপ্রাচীর থেকে নেমে আসা ধর্ষিতা মেয়েরা
মুক্তির আনন্দে সাবলীল সামিল হয়েছে যজ্ঞের
বেদীতে, যজ্ঞকাঠ আজকাল আগুনকে ভয় পাচ্ছে
বলে, মৃদু কিছু সমস্যা !!

অন্যরাতে পদাবলী আর রসকলি গল্পে যত কিছু
অমায়িক স্নিগ্ধ অনিয়ম, ভ্রূণ হত্যা করেছিলো নিয়মিত, প্রেতযোনী রাতে তাদের সে কী হাসাহাসি,
বৈধ নথিপত্র নিয়েই  একমাঠ কুরুক্ষেত্র !!

ও মানুষ, মাটির বিকলাঙ্গ সন্তান..........
পোড়ামাটি ছেনে যেটুকু আমিষ সুখ জড়ো করেছো, আমার অনাত্মীয় শরীরের নদী ঢেউ উপত্যকা অন্ধকার নিয়ে শ্মশানের পথময় যতখানি
আদিখ্যেতা দিলে, আমি তাকে আপন ভাবি নি।

নিজের মৃতদেহ পুড়িয়ে ফিরেছি ।
                                     এবার পোড়াবো তোমায়  ।

               
                 আমি আজ দেবীপক্ষ  !!!


অপেক্ষা :নাহার নাসরিন


সকাল থেকে বসে আছি অপেক্ষায় তোর         
আসবি বলেছিলি এলি না তো কই?
এক ঘণ্টা দুই ঘণ্টা তিন ঘণ্টা বসে,
এমন করেই প্রাণ বাঁচাস ডাক্তার তুই অবশেষে?
আশার বাঁধন যাচ্ছে ছিঁড়ে আর কতক্ষণ
শত শত মানুষ যে চেয়ে আছে তোর দিকে সর্বক্ষণ।
আস্তে আস্তে নিশ্বাস হারিয়ে ফেলছে বিশ্বাস
তবুও আছি অপেক্ষায় নিয়ে মনে বিশ্বাস।
অবশেষে,
আসবি তুই দেখবি নাস, বলবি শেষে সর্বনাশ।
চোখ রাঙিয়ে বলবি আমায়
এতো দেরি করলে কী হয়।
ইচ্ছে হল বলি একবার করি নি আমি দেরি
অপেক্ষায় ছিলাম আমি, এসেছি অনেক আগেই।।

সুখী ও অসুখী ঘাম : উজান উপাধ্যায়


শক্ত করে এঁটে বসা প্লাস্টিক আবরণ তুলে দিতে গেলে আঁঠার শত্রু কোনও তরলকে খুব প্রয়োজন।

শহরে গরম এলে মানুষের দ্বিস্তরীয় খোসা উঠে যায়। ফুটপাতে নিরাময়ী চোখ রাখে আঁশহীন খোলামেলা  ফল, বহুতল ছেড়ে আসা ক্লান্ত টহল।  খোসা ছুঁড়ে ছায়া ফুঁড়ে বেহুলা আঁচল -- হঠাৎ রাস্তা জুড়ে সারি সারি বৃহন্নলা গাছ-চিঠি জুড়ে নাগরিক ঘাম বাধ্য শহর জুড়ে ছড়িয়েছে সুখের অসুখ। অসুখের পারদেরা উপেক্ষিত বিধবার সিঁথি জোড়ে, শিৎকারে শিষ্ট নষ্টামির পালতোলা খাম।

শহরে গরম এলে পরিযায়ী পাখিদের প্রবল আরাম। শেষ ট্রেনে বাড়ি ফেরা গাছগুলো দিনগত পাপক্ষয়ে মুছে ফেলে শহরের নাম।  সুখী ও অসুখী ঘাম প্রয়োজন অনুসারে চুকিয়েছে ভ্রমনের দাম।

না আমি কবি নই : সারিফ হোসেন


না আমি কবি নই,
                    নিছক তোমাকে ভালোবেসে ঠাকুর বাড়ির
 দু-চার কথা চুরি করে লিখেছিলাম কয়েকটি।

কিন্তু বিশ্বাস করো,
                    বর্তমানে আমিও আজ কবি অ্যাখ্যায়িত।
                    কি নিদারুণ পরিহাস সমাজের।  তাই
                    বাংলার গৌরব, বাংলার অহংকার আজ শায়িত।।

হ্যাঁ আমি ফেসবুক কবি,
                    হাজারো সস্তা জিনিসের মাঝে আমার অবস্থান।
                    বাংলা লেখনীর ইতিহাস না পড়েই আমি কবি
                    এই জায়গা ছাড়া আর কোথায়বা হয়ে পারে স্থান?

খুব ভোরে সকাল বেলা,
                    চায়ের সাথে কবি আর কবিতা কবিতা রব।
                    কটাক্ষের সুরে মানুষ হাজারে হাজারে
                    বাঘের মত বাঙালীরও কী তবে ভালো কবির অভাব?

না আমি কবি নই,
                    লিখতে লিখতে নতুন করে আবার লেখনীকে ভালোবাসা।
লুপ্তপ্রায়,  দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়া
বাংলা ভাষা চোখ তুলে,  মেরুদন্ড সোজা করুক
                    এই টুকুই আশা।।

অভিসারী শহর : রাজিত বন্দোপাধ্যায়

   

অভিসারী শহরের বুকে নামে       
সর্পিল পিচ্ছিল রাত --   
যৌনতা নগ্ন হয় সুরভি ও সৌরভে ।   
রাতের মায়ার আছে রূপ --     
যৌবনেরে করে যায় শিকার ;       
তার নখরের আঘাতে করে ক্ষত   
যৌবন পরাস্ত দেখ যৌন অভিঘাতে --   
অভিসারী রাত তবু বিকে চলে     
আকাশের প্রান্ত হতে একমুঠো বিকার !       
এখানে নারী - পুরুষ সব একাকার !!       

প্লাবন ভূমি : বিকাশ দাস (বিল্টু )



নীরবতা যখন বাঁধ ভাঙা উচ্ছাস হয়ে প্লাবিত হয় প্লাবন ভূমিতে

প্লাবন ভূমি যখন প্লাবনের জলে লবনের আস্তরনে
চাষ অযোগ্য

লাঙল চালিয়ে ফসল ফলানোর চেষ্টা
      বীজ বপন করতে ভয় লাগে -
অঙ্কুর কি হবে?
                না ভ্রূণ সুপ্ততেই বিনাশ....

প্লাবনের জল কবিতা হয় ;
  ভ্রূণ হয়, চারা গাছ হয়ে বাঁধ দেয় ।
প্লাবন আটকে যায় গাছের শিকড়ে ।

জল আর লবন হয়না !
এই তো কবিতায় শান্তি ,এই তো মনের সুখ ।

থাক না প্লাবন ;
                  জমি পলি হবেই হবে ।
ক্ষতি হউক না !হতে দাও ,
জল তো আছেই জীবনের বাঁচার রসদ হয়ে ।

গাছ আরও কিছু লাগাতে হবে নদীর ধারে ।
আসুক যত নোনা জল ,
সূর্য আছে তাপ আছে কবিতা আছে ।

ভয় নেই তাই  ।