।। তেরো ।।
চৈত্র মাসের সন্ধেবেলা। হ্যারিকেন নিয়ে পড়তে গেছি। অর্ধেক পড়া হয়েছে। ঝড় উঠলো। একটু পরেই বৃষ্টি। সারাটা দুপুর বেশ গরম গেছে। এখন বেশ ঠাণ্ডা ঠাণ্ডা। সন্ধের একটু পরের বৃষ্টি চারপাশকে কেমন চুপচাপ করে দেয়। তার ওপর আবার গ্রাম। হ্যারিকেন নিয়ে বাড়ি ফিরছি। ব্যাঙ ডাকছে। রাস্তায় দু'একটা লোক। আমি প্রায় একাই। রাস্তার ধারে ধারে আমগাছ। ঝিঁঝিঁ ডাকছে। ভয় যে একেবারেই করত না তা নয়। কিন্তু সবকিছুকে ছাপিয়ে যেত একটা ভালোলাগা বোধ। কতদিন হল ব্যাঙের ডাক, ঝিঁঝিঁর ডাক কান থেকে সরে গেছে। আজ মনে হয় ওইগুলোই ছিল প্রকৃত গ্রামীণ জীবনের সঞ্চয় যা একটা মানুষকে ইঁট কাঠ পাথরের মাঝেও আমৃত্যু সবুজ রাখতে পারে।
।। চোদ্দ ।।
দেওয়ালীর রাতে প্রতিটা বাড়িতে মোমবাতি জ্বলছে। আমরা সারা পাড়া ঘুরে ঘুরে দেখছি কোন বাতিগুলো নিভে গেছে। বাতি নিভে গেলেই আমরা সেগুলো নিয়ে নিতাম। নেভা বাতি তুলে নেওয়ার সময় খুব তাড়াতাড়ি ফুঁ দিয়ে একটা দুটো বাতি নিভিয়ে সেগুলোও হাতে তুলে নিতাম। যখন বাড়ি ফিরতাম মনে হতো রাজ্য জয়ের আনন্দ। বাতিগুলো পেয়ে যে কি আনন্দ হতো তা বলে বোঝাতে পারবো না। বছর ঘুরে গেলেও সেগুলোকে কাছ ছাড়া করতাম না। আজও ভাবলে বাতিগুলো মনকে উষ্ণ রাখে।
(কর্ম