নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

দেউলিয়া নদীর পাশে আমার ঘর : মহঃ রাফিউল আলম



       
তোর আকাশে এখন
অনেক তারা---কিংবা তোকে ঘিরে
        পঞ্চহ্রদ
   আমার আকাশ শূন্য আজ
আমি দেউলিয়া নগরীর রাজকুমার।
         

           
তোর চোখের প্রত্যেক ফোঁটা
   অশ্রুবিন্দুকে জিজ্ঞেস কর----
কতটা ব্যাথা পেলে তারা বাইরে আসে?
তোর নষ্ট রাতকে জিজ্ঞেস কর
   কেন তারা অকারণ রাত জাগে?

যতটা ব্যাথা তুই পেয়েছিস---
বিপরীত প্রান্তে থাকা মানুষটির
নিকোটিনে পোড়া ঠোঁটকে একবার জিজ্ঞেস করলে
বুঝতে পারতিস----তার আগে
কতবার সে নিজেকে পুড়িয়েছে?

অনন্যা :শ্যামল কুমার রায়



                      তুমি অনন্যা!
     তোমার সাথে অন্য কারোর তুলনা হয় না।
   সবাই যখন আঘাত করে পুলকিত হয়-
   তুমি তখন আঘাত করেও বেদনাহত হও!
   সবাই যখন চলার পথে অঘটনই চায়-
তুমি তখন ফেরার পথে অপেক্ষাতেই রও।
     সবাই যখন উন্নতিতে চরম ঈর্ষান্বিত
    তুমি তখন বিপদ ভেবে সদা শঙ্কিত ।
  সবাই যখন গুছিয়ে নিতে সদা তৎপর
তুমি তখন সাজিয়ে দিতে ভুলেছো আপন পর।
ব্যবহার করে বাগিয়ে নিতে ধান্দাবাজের ভিড়
  তুমি তখন তফাত বাড়াতে ভীষণ অস্থির।
  সবাই যখন ঝামেলা করে বেশ ফুরফুরে
তোমার কেন ঝামেলা করে আঁখি জল ভরে ?
       সবাই যখন তোষামোদে শশব্যস্ত
  তুমি তখন ভুল ধরতে করো না ইতস্তত।
 তুমি যখন অভিমানী , কও না কোনো কথা,
  শুধু তোমার মান ভাঙাতেই থাকে কারকতা।
তোমার মত দ্বিতীয় কেউ খুঁজে পাওয়া ভার!
    অনন্যা থাকতে আর কিসের দরকার?
         

সত্য : হেমন্ত সরখেল





না।
কিছু পেতে আসিনি। দিতেও না। সবটাই আজকাল বিস্বাদ। আলুনি। অম্বুবাচী ক্ষণ।
নেই আশা। সূর্যালোক।
অদেখা রয়েছে অবিনাশী। কে দেখেছে তাকে? দেখতে হলে- অবিনাশী হতে হয়। তত্ত্ব, নিয়ম,অবধারণা- সময়ের হিসেবে পাল্টে যায়। অমর যে নয় সে কিভাবে দেবে বরাভয়?

জানি। এই লেখাও থাকবে না অনন্তকাল। থাকে না। সভ্যতা বদলে গেলে স্মৃতি ব্যাকডেটেড হয়। মুছতে মুছতে হারিয়ে যায়। হয়তো লরির চাকায়, ট্রেনের নীচে, ট্রাই-গ্লিসারাইডে, কর্কটে একদিন কেড়ে নেবে কলম। হা-হুতাশ কিছুক্ষণ, কিছু দিন-মাস-বছর-শতাব্দী-সহস্রাব্দ। তারপর? বোঝাতে এসো না। পারবে না। আপেক্ষিক যেখানে সব সেখানে নৈতিক আর অনৈতিক দুয়েরই এক রব।
               এটুকুতেই উপকৃত হবো। যদি না বলো- ভবঃ। আমি নেই- এটা মেনে, চলুক যাপন, আমিও আছি। চলে যাওয়াই সত্য। তাই ভেবো না, এখনও আমি আছি। কোনো পাখি, নদ, বিল, কোনো ঘাস, আগাছা, কোনো বাতাস, শব্দ, প্রেম ধরে রাখে না যেন আমায়- প্রিয় শুধু অস্তিত্বহীনতা। কার সাথে কেটে গেল সময়-সকাল, কোন্ প্রাচীরে রইল  স্বার্থ বেতাল, কতোদিন মনে রেখে দেবে? অতো সময় আছে কার? শুধু একটা ছবি, ক্রমক্ষয়িষ্ণু, মুছে যাক আজই, কেন বইবে সবটা আমার। মনে হচ্ছে- এবার সময় হয়েছে থামার।
                           

বিশ্বাসঘাতক : অনোজ ব্যানার্জী



   ‎

 ওরা মস্ত বড়ো কুখ্যাত ভিলেন,
 ‎তৃতীয় নয়নে ওদের হবে চিনে নিতে।
 ‎চিনতে যেন করোনা কখনো  ভুল।
 ‎সুন্দর, সুগন্ধি মনোলোভা ফুল সেজে,সেজে,,
 ‎প্রিয় আপন সেজে,বন্ধু সেজে,হিতাকাঙখী সেজে,,
 ওরা ‎আসবে তোমাদের,  আমাদের, কাছেকাছে। ওরা সংসার ভাঙে,ওরা সমাজ ভাঙে,,,
 ‎ওরা কখনো সাদা মুখে হাসে,কখনোবা থাকে রঙিন মুখোশে।ওরা সদাসর্বদাই রয়েছে আমাদেরই আশেপাশে। অর্থ, স্বার্থ, পদ, গদি, ক্ষমতার লোভে,,, ওরা,পবিত্র- মহান-বিশ্বাসের, কোমল দেহ-মন-আত্মাকে,পিছন থেকে করে ছুরিকাঘাত,। করে অমর্যাদা, অবলীলায়, অবিরত। কখনোবা সামনাসামনি। ওরা বোঝেনা আপন-পর।
ওরা বিশ্বাসের ঘাতক,,ওরা  বিশ্বাসঘাতক।
আদর্শবান বিশ্বাস, ধূলায় পড়ে লুটিয়ে,খায় গড়াগড়ি, যখন তখন।
এক আত্মার সঙ্গে অপর আত্মার জড়াজড়ি,
এক মনের সঙ্গে,অন্য মনের, মধুর সম্পর্কের মজবুত অক্ষয় সাঁকো ওরা ভেঙে ভেঙে করে চূড়মাড়, করে ছাড়খাড়।ওরা সমাজের শত্রু।
ওরা দশের শত্রু,ওরা দেশের শত্রু,ওরা শত্রু স্বর্গ মর্ত্য পাতালের।ওরা আছে যুগেযুগে,ওরা থাকবে যুগেযুগে।
ভয়ঙ্কর রাক্ষস, লংকার রাজা রাবণ, ভিখারির ছদ্মবেশ ধরে,,ভগবান রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতাদেবীকে করেছিল অপহরণ।
মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় দুশো বছর ধরে,,ছিলাম আমরা পরাধীনতার কালো অন্ধকারে।
মীরজাফর,, রাবণ,, ওদের মৃত্যু নেই,
ওরা চারিপাশে, ঘিরেঘিরে রয়েছে আমাদের নিরন্তর,, ,, সাবধান!!!!

স্মৃতির দেয়ালে:তপন কুমার মাজি



         

গজাচ্ছে পাতা    আসছে কুঁড়ি
       ফুটছে ফুল বসন্তে,
খসছে পাতা    মরছে কুঁড়ি
       ঝরছে ফুল একান্তে!

মাখছে রং    সাজছে সঙ
      চলছে প্রেম চুটিয়ে,
তিরিক্ষি-তিন     খেলছে খেলা
    খেলছে হলি লুকিয়ে!

ঢোলে-ঢাকে    আসছে প্রেম
     উঠছে আবেগ উথলে,
ফাগুন শেষে     কাটছে ঘোর
    আসছে বিরহ না বলে!

ঘুরছে পৃথিবী     ঘুরছে ঋতু
    ঘুরছে মানুষ খেয়ালে,
পাচ্ছে ব্যথা      লিখছে গাথা
   গাঁথছে স্মৃতির দেয়ালে। 


অগ্রজ :শ্রাবনে শ্রাবনী




আগে জন্মালে...
নদীর কিনারে কিনারে হাঁটতুম, সভ্যতার মাদুলি না পড়েই

আগে জন্মালে...
গ্রহের হাট খুলে রাখতুম, পাথুরে প্রলাপেই

সলতে পাকাতুম, সেঁজুতি সাজাতুম
ভিনদেশী কোনও জাহাজে, পথভ্রষ্ট নাবিকের অপেক্ষায়

ধ্রুবতারা দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিতুম রাত
আকাশের নীচে পাতা বিছানায়

আগে জন্মালে, পাহাড় চিনতুম কিন্তু চাঁদে যেতুম না
জঙ্গল চিনতুম,তবু মঙ্গলে পা রাখতুম না
শিকার করতুম কিন্তু উটের পিঠে চেপে বর্ডার দেখতে যেতুম না...

আগে জন্মালে, অগ্রজ হতুম
দূরে কোনও অনাবিষ্কৃত দ্বীপে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতুম
সেন্টিনেলিজদের মতন পাতার পোশাক পড়ে, তবু ছেঁড়া ছেঁড়া এমন ব্র্যান্ডেড প্যান্টালুন পড়তুম না

আগে জন্মালে
পেতুম না কুইনাইন, ফিনাইল কিংবা জুভেনাইল অ্যাক্ট
তবু নিপাট বাঁচতুম কেরোসিন তেলে আগুন জ্বেলে জ্বেলে

আগে জন্মালে, বারকয়েক দেখে আসতুম ভেতো গলি, শুষ্ক মুখ আধপেটা মায়ের আর বাবার রুক্ষ পায়ের তলা

শহরের গলির অন্ধকারে, বিদেশী ফার্ণিচারে
এমন মুখ লুকাতুম না|