নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বিশ্বাসঘাতক : অনোজ ব্যানার্জী



   ‎

 ওরা মস্ত বড়ো কুখ্যাত ভিলেন,
 ‎তৃতীয় নয়নে ওদের হবে চিনে নিতে।
 ‎চিনতে যেন করোনা কখনো  ভুল।
 ‎সুন্দর, সুগন্ধি মনোলোভা ফুল সেজে,সেজে,,
 ‎প্রিয় আপন সেজে,বন্ধু সেজে,হিতাকাঙখী সেজে,,
 ওরা ‎আসবে তোমাদের,  আমাদের, কাছেকাছে। ওরা সংসার ভাঙে,ওরা সমাজ ভাঙে,,,
 ‎ওরা কখনো সাদা মুখে হাসে,কখনোবা থাকে রঙিন মুখোশে।ওরা সদাসর্বদাই রয়েছে আমাদেরই আশেপাশে। অর্থ, স্বার্থ, পদ, গদি, ক্ষমতার লোভে,,, ওরা,পবিত্র- মহান-বিশ্বাসের, কোমল দেহ-মন-আত্মাকে,পিছন থেকে করে ছুরিকাঘাত,। করে অমর্যাদা, অবলীলায়, অবিরত। কখনোবা সামনাসামনি। ওরা বোঝেনা আপন-পর।
ওরা বিশ্বাসের ঘাতক,,ওরা  বিশ্বাসঘাতক।
আদর্শবান বিশ্বাস, ধূলায় পড়ে লুটিয়ে,খায় গড়াগড়ি, যখন তখন।
এক আত্মার সঙ্গে অপর আত্মার জড়াজড়ি,
এক মনের সঙ্গে,অন্য মনের, মধুর সম্পর্কের মজবুত অক্ষয় সাঁকো ওরা ভেঙে ভেঙে করে চূড়মাড়, করে ছাড়খাড়।ওরা সমাজের শত্রু।
ওরা দশের শত্রু,ওরা দেশের শত্রু,ওরা শত্রু স্বর্গ মর্ত্য পাতালের।ওরা আছে যুগেযুগে,ওরা থাকবে যুগেযুগে।
ভয়ঙ্কর রাক্ষস, লংকার রাজা রাবণ, ভিখারির ছদ্মবেশ ধরে,,ভগবান রামচন্দ্রের স্ত্রী সীতাদেবীকে করেছিল অপহরণ।
মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতায় দুশো বছর ধরে,,ছিলাম আমরা পরাধীনতার কালো অন্ধকারে।
মীরজাফর,, রাবণ,, ওদের মৃত্যু নেই,
ওরা চারিপাশে, ঘিরেঘিরে রয়েছে আমাদের নিরন্তর,, ,, সাবধান!!!!

স্মৃতির দেয়ালে:তপন কুমার মাজি



         

গজাচ্ছে পাতা    আসছে কুঁড়ি
       ফুটছে ফুল বসন্তে,
খসছে পাতা    মরছে কুঁড়ি
       ঝরছে ফুল একান্তে!

মাখছে রং    সাজছে সঙ
      চলছে প্রেম চুটিয়ে,
তিরিক্ষি-তিন     খেলছে খেলা
    খেলছে হলি লুকিয়ে!

ঢোলে-ঢাকে    আসছে প্রেম
     উঠছে আবেগ উথলে,
ফাগুন শেষে     কাটছে ঘোর
    আসছে বিরহ না বলে!

ঘুরছে পৃথিবী     ঘুরছে ঋতু
    ঘুরছে মানুষ খেয়ালে,
পাচ্ছে ব্যথা      লিখছে গাথা
   গাঁথছে স্মৃতির দেয়ালে। 


অগ্রজ :শ্রাবনে শ্রাবনী




আগে জন্মালে...
নদীর কিনারে কিনারে হাঁটতুম, সভ্যতার মাদুলি না পড়েই

আগে জন্মালে...
গ্রহের হাট খুলে রাখতুম, পাথুরে প্রলাপেই

সলতে পাকাতুম, সেঁজুতি সাজাতুম
ভিনদেশী কোনও জাহাজে, পথভ্রষ্ট নাবিকের অপেক্ষায়

ধ্রুবতারা দেখতে দেখতে কাটিয়ে দিতুম রাত
আকাশের নীচে পাতা বিছানায়

আগে জন্মালে, পাহাড় চিনতুম কিন্তু চাঁদে যেতুম না
জঙ্গল চিনতুম,তবু মঙ্গলে পা রাখতুম না
শিকার করতুম কিন্তু উটের পিঠে চেপে বর্ডার দেখতে যেতুম না...

আগে জন্মালে, অগ্রজ হতুম
দূরে কোনও অনাবিষ্কৃত দ্বীপে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতুম
সেন্টিনেলিজদের মতন পাতার পোশাক পড়ে, তবু ছেঁড়া ছেঁড়া এমন ব্র্যান্ডেড প্যান্টালুন পড়তুম না

আগে জন্মালে
পেতুম না কুইনাইন, ফিনাইল কিংবা জুভেনাইল অ্যাক্ট
তবু নিপাট বাঁচতুম কেরোসিন তেলে আগুন জ্বেলে জ্বেলে

আগে জন্মালে, বারকয়েক দেখে আসতুম ভেতো গলি, শুষ্ক মুখ আধপেটা মায়ের আর বাবার রুক্ষ পায়ের তলা

শহরের গলির অন্ধকারে, বিদেশী ফার্ণিচারে
এমন মুখ লুকাতুম না|

না বলা কথা :নাহার নাসরিন



 কি বলব কি লিখব কিছুই বুঝে পাই না
শুধু জানি কিছু তো ছিলো তোকে বলার।
এমন নই যে সময় হয়নি বলার
সময় অনেক ছিল শুধু পাইনি তোকে বলার।
যা ছিল না বলা আজও তা রয়ে গেল না বলাই।
অপেক্ষায় রয়েছি আমি হতভাগি
আশা নিয়ে বলে যাব তোকে সবই।
অবুঝ পাগল মন কেন বোঝে না
তোর কাছে সময় হবে না।
কেন মন বোঝে না তুই বড় ব্যস্ত
অন্যের মুখে হাসি ফোটাতে আশস্ত ।
মন কেন বোঝে না
না বলা কথা চিরকাল না বলায় থেকে যাবে।
না বলা কথা খাতার পাতায়ও তার ভাষা পাবে না।।

তারা শুরু ছেড়ে চলে যায়,হারায় না কোনোদিন



কবি পায়েল খাঁড়া
জন্ম :17 জানুয়ারি 1993
ইহলোক ত্যাগ: 08 ই মার্চ,2019

কি লিখবো সে ভাষা আজ আমার নেই ,কয়েকদিন আগে দিদি বলেছিল শরীর খারাপ ,গতকাল রাতে অফিস থেকে ফেরার পথে যখন মেসেঞ্জার অন করেছি তখনই শুনতে পেলাম দিদি আর নেই ,প্রথমে বিশ্বাস হচ্ছিলো না ,তারপর সত্যি সত্যিই সে নেই ।

নিকোটিন শুরুর প্রথম থেকেই দিদি সব সময় পাশে ছিল ,নিকোটিন যখন প্রায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছিল তখনও সাহস দিয়ে বলেছিল " এগিয়ে যা ভাই ,সাথে আছি "
কিন্তু  কই আজ সে ?


"রক্তে ভিজছে মাটির পাঁজর, শিরায় বিষ্ফোরক
শতাব্দী, তোকে পেয়েছে এ কোন মারণ খেলার ঝোঁক।"


সত্যিই এ কোন মারণ ঝোঁক ,একে একে সবাই কেমন চলে যাচ্ছে ছেড়ে ।

তাই আজকের নিকোটিন এর" সকাল বেলা "
কবি পায়েল খাঁড়া কে উৎসর্গ করলাম ।


- জ্যোতির্ময় 

আলো ছায়ার গল্পগুলো : হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়





।। ছয় ।।

একদিন রেডিওতে শুনলাম ---- "পাখি উড়ে যাবে বলে খাঁচা কিনি না"। একটা গান একটা জীবনকে বদলে দিতে পারে। আমরা সেইভাবে গান শুনলাম কোথায়! আমাদের গানে পুরোটাই বিনোদন। শিক্ষা কোথায়! অথচ এইসব গান আমাদের প্রতিদিনের জীবনে যদি উঠে আসতো তাহলে আমরা এই ইহজীবনেই দেখতে পেতাম এক ঘর রোদ। আর সেই রোদে মানুষেরা খেলে বেড়াচ্ছে শিশুর সারল্যে।



।। সাত ।।

সত্যিই তার মুখ না দেখে থাকতে পারতাম না। ঘুমের মধ্যেও তাকে দেখতে পেতাম। শুধুমাত একবার চোখের দেখা দেখবার জন্যে কতবার তার বাড়ির সামনে দিয়ে সাইকেল নিয়ে ঘুরপাক খেয়েছি। দেখা হয় নি। যদিও তাতে কিছু যায় আসে না। বাড়ির সামনে দাঁড়ালেও শান্তি। একদিন কিন্তু সেই চোখ হারিয়ে যায়। কোথায়? অথচ আমারই তো মন। হাজার চেষ্টাতেও যার কাছ থেকে নিজেকে ফেরাতে পারি নি, সেই মনকে কে বোঝালো! কার কথায় সে সরে এলো? যে চোখ ছাড়া মনের মুহূর্ত চলত না, সেই মন অন্য চোখে তাকাবার সময় কখন পেল? মন যে বৈশিষ্ট্যে আমৃত্যু রত থাকার অঙ্গীকার করেছিল তা সে ভুলে গেল কি করে!


।। আট ।।

"এ্যাই দত টাকা দে" ------ চোখের সামনে একটা শুকনো হাত। দুহাত ভর্তি পুরোনো আর বাতিল রঙবেরঙের চুড়ি। একটাও দাঁত নেই। মাথার চুল সাত জন্মেও তেল পড়ে নি। পরনের কাপড় নোংরা আর ছেঁড়া। দুহাতে তিনটে তিনটে ছ'টা ব্যাগ। দশ টাকা দিলাম। কী খুশি। এইভাবে রোজ আসে বুড়ি। একদিন দেখি ফুটপাতে বসে আসন বুনছে। "কাকে বসতে দিবি?" আমার প্রশ্ন শুনে বুড়ির একেবারে হেসে গড়িয়ে পরার যোগাড়। "আজ একত টাকা দে"----- একদিন হঠাৎই চেয়ে বসল। আমি বললাম পুজোর সময় দেব। আর কোনো কথা নেই। হাসতে হাসতে সেদিন দশ টাকা নিয়ে চলে গেল। পুজোর সময় বুড়িকে কোথাও খুঁজে পেলাম না। মনে হল সে কি অন্য কোথাও চলে গিয়ে রাস্তা খুঁজে পায় নি! একদিন এক বান্ধবী এসে খবর দিল, "তোমার প্রেমিকা লঞ্চঘাটে ঘোরাঘুরি করছে"। এর বেশ কয়েকদিন পরে বুড়ি আমার সামনে এসে দাঁড়াল। দেখলাম বুড়ির একশ টাকার কথা মনে আছে। কিছু খাওয়াতে গেলে খাবে না। দশ টাকা নিয়ে হাসি মুখে চলে যাবে। আমার ওপর যেন ওর একটা অধিকার জন্মে গেছে। একদিন কে যেন এসে বলল, ওকে টাকা দেবেন না। বুড়ি ছোট ছোট ছেলেদের টাকা বিলিয়ে দেয়। সে নাকি দেখেছে। নিজেকে খুব সৌভাগ্যবান বলে মনে হলো। এমন একটা মানুষ আমার ওপর অধিকার দেখায়।


(ক্রমশঃ...)