নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

ন্যাপকিন: বিকাশ দাস (বিল্টু)

(বিশ্ব নারী দিবসে নারীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে)



ঋতুস্রাব, রক্তে লাল হওয়া সাদা ইউনিফর্ম
ক্লাসের শেষ বেঞ্চে বসা মেয়েটির লাগছে শরম ।
ন্যাপকিন চাই, কমনরুমে যাওয়া চাই -
দিদিমনির কড়া শাসনে কিভাবে তা পাই ?
রক্তের ছোপ ;মনের গলিতে আনে নিজের প্রতি ক্ষোভ ।
মেয়ে জন্ম পাপ, তবে কেন জন্ম দিল বেহায়া বাপ ?
লজ্জায় লাল হওয়া মেয়েটি ন্যাপকিন চায় ,
দোকানে অনেক লোক কি করে তবে তা পায়?
ছেলে ছোকরা আড্ডা মারে তা 'য়
ন্যাপকিনের কথা শুনে কতই না সুখ টানে সিগারেট ফুঁকায়  --
মেয়েটি ঠায় দাঁড়িয়ে থাকে, ভাবে কখন হবে লোক খালি ।
আর কত!আর কত খেলতেই হবে এ রকম চোরাবালি ?

কেন এত ন্যাপকিনের প্রতি জমা ওই ক্ষোভ ?
কি দাদা এভাবেই কি হচ্ছেনা আমাদের মনুrষত্ব লোপ ?
নেই কি সবার ঘরে দিদি বোন মা --
তবে কেন, কেন নাচে ন্যাপকিনের কথাতে ওই দুরাত্মা ।
বাঁকা চোখে তাকায় কেন তবে সবাই ,
জানিনা ঠিক, হয়ত এভাবেই হয় কত মেয়ের পড়া কামাই ।

কত কথা, নানান অশুচি, কত বিজ্ঞতা
মার গর্ভে ছিলাম সবাই, ভুলে গেছি কি তা?
রক্তের ওই লাল দাগ ভবিষৎরই সুপ্ত আশা
কু কথা গো নয়, দাও না গো একটু সহানুভূতি আর একটু ভালবাসা ।
হবে কেন আর চোখে, বাঁকা চোখে দেখা --
কেন ভুলে যাই সবই তো এ এক সহজাত প্রতিবর্ত ক্রিয়া ।

কোরো 'না গো আর এমন আচরণ --
এভাবেই কি করতে চাও মানুষের মনুষত্বের মরণ ?

আধখানা অপেক্ষা...:অভিজিৎ দাসকর্মকার




আমাকে যে তিলটি ভাবিয়েছে
কল্পনাপ্রবনে ফিরে এলাম-

দিগন্ত আসছে-

ট্রাপিজিয়ামের দেওয়ালে
গতকালের রাত আশ্চর্য হচ্ছে
শব্দকোষ সিগারেট টানছিল
সময়ের মুখোমুখি

তীব্রতাকে মধ্যাহ্নভোজন করাবো-

উচ্চাঙ্গসংগীতে যৌবন উড়ছে
সাক্ষী থাকুক কৃষ্ণপক্ষের জ্যোৎস্নাকলা

অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ধস নেমেছিল সূচক ধরে
বাদ দিয়েছে তিল
ছায়াগন্ধ নিয়ে আল্পনা দিচ্ছি
চোখের রাতজাগা কালিতে

মহোদয়া
অব্যবহৃত তোষকের নীচে আমার কান্না রাখা
বিপরীতপন্থীরা স্নানজলে ধুয়ে দিচ্ছে
আধখানা অপেক্ষা...

কিশোরীর প্রস্ফুটিত স্তন : নয়ন হাফিজ







হরিণের চোখ জোড়া আগামী বসন্তে, নিশ্চিত যন্ত্রণা দগ্ধ সিগ্রেটের বিভৎস কংকালে, খুঁজবে অশ্বত্থের পোড়া জীর্ণ বিবর্ণ পাতায় ঋতুর যাপিত অতীত। নদীর চঞ্চল স্রোতে হাসির উচ্ছ্বাসে ঘেসা সুন্দরবন, ক্রমশ থুত্থুরে বুড়ো সুর্যের তাপে অবৈধ সঙ্গম লিপ্সায় কাতর, পিপাসায় জন্ম দেবে মৃত শাদা বালুর কফিন। লিখে যাচ্ছি, এই উনিশের মার্চে নিরাসক্ত নির্মল আবেশে, নৈর্ব্যক্তিক ও নৈঃশব্দের প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেও, আদিগন্ত প্রাকৃতিক জীর্ণ জটাজালে, ফুটন্ত শাপলার প্রণয় উপাখ্যান। প্রবঞ্চনা তিক্ত বিষন্ন মনে, নিরন্তর ছুটে চলে দৈন্য দশায়, হাঁটু গেড়ে প্রার্থনার সঙ্গীতে সুরে সুরে বহুদূর পরিচ্ছন্ন উল্লাসে, স্মৃতিঘেরা দেয়ালে রক্ত পাষাণ, মুখচ্ছবি, খড়কুটো, নির্মল বসন্ত, কোকিলের কুহুতান, ছড়ায় বিদ্বেষ মহামারী, বরং ভুভাগে চঞ্চল নিরঞ্জন মিলেমিশে একাকার, প্রাণান্তকর প্রয়াসে দুঃস্থ বিবর্ণ সঞ্চরণে ঘনঘোর নীলিমার আক্ষেপ। সহস্র কবিতা পেলো কালির আঁচড়, অজস্র কবিতা ভ্রুণ অবস্থায় হারালো প্রাণচাঞ্চল্য, তবু কিছু কবিতা জন্মায় যাদের আদলে গড়ে ওঠে তাজমহল, কবি নয়, বরং কবিতাই কবিতার একনিষ্ঠ গর্ভধারিণী, কবিতা ও কবির গভীর প্রণয়ে কবিতা ক্রমশ হয়ে ওঠে কিশোরীর প্রস্ফুটিত স্তন।


অন্তরালে: ঋজু

শাশ্বত ওমের অন্তরালেও বাষ্প জমে মেঘ বাড়ে;আমি দেখেছি
 গহন পলাশ-লালে বৃষ্টি রং কেমন দগদগে লাগে; পোকার মতো নেভে ফাগুন সেদিন
দেখতে দেখতে নিজের বুড়ো আঙুলের অবচেতন চাপেও খলবলি বীর্যের মতোন
ঝরে যায় বাড়ির কাঠামো-পাঁচিল।
কখনো কবিতার প্রয়োজন আমাদের পড়েনি সত্যিটা বলতে,
পড়ে ও না...
শেষ অন্তর্বস্ত্র টুকু হারিয়েও আত্মীয়তা হাঁসির রোজনামচা হারায়না...
তার ও ওপাড়ে স্নানভীরু সভ্যতা।
দেহ জুড়ে তার অনেক চুপকথা রাত জেগে জাল বোনে...উই জমে
ও কে মুখ ডোবাচ্ছে ওর বুকের মাঝখানটায়..
কুমকুম স্বরে...
গোপনে... ভীষন গোপনে....ও কে?
কে?
দেখতে দেখতে জানা আর মানার বিয়োগ টা আরো স্পষ্ট করে বোঝা যায়
অবশিষ্ট সুবাস টুকুও ততক্ষণে প্যারালাইড;
নিশ্চুপ
রক্তাক্ত।

রাজকন্যে,আজ তো মানো,মুখ কখনো মুখোশের চেয়ে সত্যবাদী হতে পারে না???

পাহাড় জানেনা নারী দিবসের মানে :সম্পা পাল

আমার পাহাড় পোস্ট গ্ৰ্যাজুয়েট নয়
ডক্টরেট শব্দ এখনও তার কাছে কঠিন অক্ষর।
তাই সে কখনো কোনো সেমিনারেও আমন্ত্রিত নয়।

ফাঁকা ডিগ্রির ঘরগুলো কোনো বিকেলেও তাকে ভাবায় না
আসলে সে কখনো স্কুলের সীমানায় পা রাখেনি।

আমার পাহাড় মহানগর থেকে দূরে
বিশ্বায়ন থেকেও দূরে
তবু জীবন প্রবাহে স্বমহিমায়।

পিতৃতান্ত্রিক , মাতৃতান্ত্রিক সমাজের মানে সে জানে না
জানেনা গ্ৰেগোরিয়ান ক‍্যালেন্ডারে নারী  দিবস কেন আসে 
তবু নারীকে সন্মান দেবার তার নিরলস প্রচেষ্টা
সেই টার্সিয়ারী যুগ থেকেই …......

 

সতীর্থ :মান্নুজা খাতুন





যেখান থেকে শুরু হয়েছিল দিনের প্রথম ট্রেনটি

ঠিক সেইখান থেকেই আমরা ছিলাম একই পথের যাত্রী।

তুমি অচেনা আমার কাছে তবুও যেন অনেক দিনের চেনা

তুমি জানো না আমার গন্তব্যপথ,আমিও ঠিক তাই

তবে মনে বরাভয়

হয় তো নেমে যাবে মাঝ পথে নয় তো জেলার শেষপ্রান্তে

অজানা এক আশংকায় খোদাকে ডাকি

মনে মনে হাত জোড় করে বলি এই পথ যেন শেষ না হয়।


চলার পথে হাজারও গোলমালে

পড়েছে তোমার চোখে চোখ,

হয় তো বা হয়ে ছিলাম দুজনেই বড়োই অপ্রস্তুত


সারা পথ চুপ চাপ দুজনেই মুখোমুখি, কেটে যাই সময় নিস্তব্ধ দুপুরের ঘুমন্ত রুপ দেখে

কখনো বা আড় চোখে চেয়েছি দুজনে দুজনের পানে

লুকোচুরি খেলতে গিয়েও পড়ে গেছি ধরা

অপরাধীর মত আনত করেছি মুখ

তারপর।

তারপর ফুরিয়ে আসে পথ

মনে জাগে এক অপরিণত চঞ্চলতা।

অবশেষে পৌচ্ছালাম যেখানে হয়েছে শেষ সব ট্রেনের গতি পথ

দুজনেই নেমে গেলাম এক রাশ হতাশা নিয়ে

শহরের ভীড়ে হারিয়ে গেলাম দুজনেই।

অতঃপর  নিজেদের অজান্তে পেছন ফিরে দেখা

মুখ ফুটে পারি না বিদায় জানাতে

কেন না সারা পথ একসাথে এলেও হয় নি আলাপচারিতা

যা হয়েছে সব কিছুই হৃদয়ের!

বামপাশের পার্লামেন্টের ওয়াল ক্লকে টিকটিকি করে প্রহর গোনে

আবার কখন আসবে দিনের শেষ ট্রেন।