।।তিন।।
মাসখানেক পর যখন দিতি নিজের বাড়িতে ফিরে এলো, তখন চারপাশের মানুষজনদের কাছে সে বিভিন্ন সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত। আমি বললাম, দিতি, তোমাকে আমরা ধরতে পারলাম না। বড় সাধারণ চোখে তোমাকে মূল্যায়ন করে ফেললাম। দিতি কাছে এসে আমার হাতে মাথাটা রাখল। সেদিন দিতির কাছে কি আমি আশ্রয় ছিলাম? না কি ওর মনের সবুজ অংশটুকুর অর্থ আমিই একমাত্র ধরতে পেরেছিলাম?
।। চার।।
পড়াশোনা করতে ভালোবাসতাম। পরীক্ষার দিন যত এগিয়ে আসত ততই আমার বুকের ওপর রাখা পাথরের সংখ্যা বৃদ্ধি পেত। ভয় ঠিক পেতাম না। কেমন যেন একটা অস্বস্তি বোধ করতাম। আসলে পরীক্ষাকে সামনে রেখে নিজের পড়াশোনা নিয়ে খুশি হতে পারতাম না। কোথা থেকে যে এতো ঘুম আসত জানি না। পরীক্ষা শেষের দিনগুলো এখনও মনের মধ্যে গাঁথা হয়ে আছে। হল থেকে বেরিয়ে দেখতাম চারপাশটা যেন কতো বদলে গেছে। এতো আনন্দ হতো যে বলে বোঝাতে পারবো না। যার সঙ্গে কথাই বলতাম না তার সঙ্গেও মনে হতো গল্প করি। এই আনন্দ কি শুধু পড়াশোনা করতে হবে না বলে? কিন্তু তা কেমন করে হয়। আমার তো পড়াশোনা করতে ভালোই লাগতো। ওই আনন্দের সঙ্গে অন্য কোনো আনন্দের তুলনাই চলে না। আসলে ওই আনন্দ একমাত্র পরীক্ষা দিয়েই পাওয়া যায়।
।। পাঁচ।।
যে কোনো কারণেই হোক যখন তখন বাড়ি থেকে বেরিয়ে পড়ি। কয়েক পা এগোলেই বলা শুরু হয়। কোথায় যাচ্ছি, কেন যাচ্ছি এইসব। কি জানি কোথায় যাচ্ছি জানি না ------ বলতে খুব ইচ্ছে করে। এটা কি যে কেউ বলতে পারে? আজ বুঝতে পারি এটা বলা কত শক্ত। একটা উদ্দেশ্যহীন যাত্রা মানুষকে দীর্ঘদিন আলোয় বাঁচিয়ে রাখে। জীবনে একবার হলেও এই উদ্দেশ্যহীন যাত্রায় সামিল হতে চাই।
(ক্রমশঃ)
(০৮/০৩/১৯)