নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

ঝর্ণা :অযান্ত্রিক(অনুপ রায়)







নিলোফার,আমি “যদি ঝর্ণা ফোটাই  তুমি দেখতে আসবে?”
না না ,হয়তো শক্তি বাবুর মত নয়,তবে আমার তো সাধ হয়।
কালের জমানো স্মৃতি,পাথরের মতো রয়েছে বুকে,দেখতে আসবে?
কাছ থেকে বোঝা যায় না, দূর থেকে  খাঁজ হীন পাহাড় মনেহয়।

যদি একটা ঝর্ণা ফোটাই, আর কিছুটা নীচে, পেটের কাছে সরোবর,
তাতে শুধু নীল,ঘন নীল জল, রক্তাভ পদ্ম,
আর কিছু শালুক ফুটে উঠবে নাভির কাছাকাছি।
পাহাড়ের উপরের দিকে কার্তিকের বাতাস ছুঁয়ে যাবে জঙ্গলের চুল,
ছোটো ছোটো রংবেরঙের পাখিদের দল শীষ দেবে, ডাকবে, যেমন 
হারিয়ে যাওয়া বন্ধুরা ডাকতো, ভালোবাসার নাম করে।
নিলোফার, “যদি ঝর্ণা ফোটাই  তুমি কি দেখতে আসবে?”


একেকদিন, খুব ঘুম পায়, রাত যৌবন পেলে, 
একেকদিন আবআর পায় না,
কিন্তু রোজ চোখ বুঝলেই আমার বিছানা জুড়ে জেগে ওঠে জঙ্গল,
 আমার ভাবনার জঙ্গলের পাশে জেগে ওঠে পাহাড়।
তার নীচ থেকে কালো রাস্তা চলে যায় দিগন্তের দিকে,পথচারী হীন।
পাহাড়ের গা থেকে ঠিকরে পরে গোলাপী জোৎস্না,কার্তিকের হিম,
জঙ্গলের কোনো বুড়ো গাছের কোটর থেকে 
হাহুতাশ করে লক্ষী পেঁচা,
মাঝে মাঝে মেঘের আড়ালে লুকিয়ে পরে কোজাগরী চাঁদ,
যদিও এমন পাহাড়ের গায়ে ঝর্ণা বড্ডো বেমানান, 
বড্ডো একপেশে।
কিন্তু তবুও এখানেই “যদি ঝর্ণা ফোটাই,তুমি দেখতে আসবে”?

বহুদিন বন্ধুদের মুখ মনে পড়ে না, 
নাম বলতেই মনে পড়ে শুধু কিছু কচি শিশুদের মুখ,
আমার বোজা চোখের পাহাড়ের নীচে ,কালো রাস্তা দিয়ে ,
মাঝে মাঝে ছুটে যায় মালবাহী ট্রাক, উন্নতির বোঝা নিয়ে,
আমার গল্প গুলো মাঝে মাঝে সেই ট্রাকের চাকায় থেতলে যায়,
রাস্তা পার হতে গিয়ে কিন্তু কেউ দেখার নেই, 
আমি সেই গল্পের মৃতদেহ  কোলে করে নিয়ে ফিরি বাস্তবে,
আমি যদি সেখানেই একটা ঝর্ণা ফোঁটাই, আর সেই গল্পের ,
সরোবর এঁকে দি, বুকের নীচেই,
তুমি কি দেখতে আসবে নিলোফার?,
প্রেমিকের মৃতদেহ, ঝর্ণা আর পাহাড় নীরবতা।


অরাজকতা: রবি মল্লিক





দেশ আমাদের এগিয়ে চলেছে,
                 উন্নয়ন হচ্ছে খুব,
  উন্নয়নের জোয়ারে তাই
                সকলেই দিয়েছে ডুব;
রাজ্য আমার দালালদের হাতে
              ঘুষখোরদের বাসা,
লন্ডন আজ রিক্সা নগরী
               চপ শিল্পীতে ঠাসা;
দেশ-প্রেম বাড়াতে নাকি
          সেনায় যোগদান চাই,
শারীরিক দুর্বল দের কী তবে
               দেশ ভক্তি নাই!
রাজ্যজুড়ে সুচিকিৎসার
           উল্লাস যখন বাড়ে,
গরিব রোগীরা ডাক্তারের অপেক্ষায়
            বিনা চিকিৎসায় মরে;
কোটি কোটি নয় ছয় করে
          কেউ দেশ ছেড়ে পালায়,
গরীবের টাকা কেটে নেওয়া হয়
           তিন হাজার নেই খাতায়৷

হায় কপাল : মাধব মন্ডল







কথার ভিড়ে সমাজ ওড়ে তুই কেডা!
হিংসা ওড়ে ভর দুপুরে মার গুলি।

গুরু কি দিলে রোয়াবি চাল মর সব
লাশের কথা শুনতে দেব? মার লাথি!

লাশেই শুরু কর্মনীতি বোলচাল
বোলচালেতে নষ্ট গুরু গুলি ছোঁড়ে।

লাগ ভেল্কি লাগ ভেল্কি লাগুক না
লাগলে জোর অক্কা পাব তুমি আমি।

হায় কপাল! জন্ম থেকে দেখি খেলা
বুঝবো ঠ্যালা এবার তালে ক্ষেপে ক্ষেপে?

আর এক সংঘাত,পদত্যাগ" : রাণা চ্যাটার্জী




প্রতিবাদ,মতান্তর হলেই নিশানা-এ ঘটনা নতুন কিছু নয়।যদি সে সংঘাত হয় সর্ব শক্তিমান ভেবে বসা অর্থ মন্ত্রক,সরকারের বিরুদ্ধে তবে তো সম্মান খোওয়ানোর আগে ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দায়িত্ব ছেড়ে সরে যাওয়া বেশি
ভালো,এমন আর এক নমুনা দেখে ফেললো আপামর দেশবাসি।

রাষ্ট্রপ্রধান জনসমক্ষে প্রশংসার পিঠ চাপড়ে  দক্ষ অর্থনীতিবিদ বলে দিয়েছেন তবু চলে যেতেই হলো  রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নরের দায়িত্ব ছেড়ে উর্জিত প্যাটেলকে। কি পেলাম আর কি পাচ্ছির যখন হিসেব নিকেশ, আর মাত্র কয়েক মাস পরই লোকসভা ভোটের দামামা বাজার পূর্বে এমন কিছু ছন্দ পতন কিসের ইঙ্গিত দেয় জানিনা।তবে আম আদমি সাদা চোখে দেখছে,মেয়াদ ফুরানোর নয় মাস আগেই ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে পদত্যাগ করলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গর্ভনর,যা আবার উদাহরণ সৃষ্টি করে গেল সব থেকে কম সময়ে ওই দায়িত্বপূর্ণ পদে থাকার।

মেয়াদ শেষের আগে দেখেছি নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান পানগড়িয়ার ইস্তফা,ল।গত জুন মাসে প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা সুব্রহ্মন্যমের পর আবার এমন গুরুত্বপূর্ন পদ থেকে পদত্যাগ,তবে কি সরকারের অতিরিক্ত নাগপাশ,খবরদারি,মতানৈক্য এ বিষয়ে  সরকার,বিরোধী,জনগন সকলের মনেই চাপা গুঞ্জন ছড়িয়েছে।

কিছু বেশি দু বছর আগে এমন পরিস্থিতি জনসমক্ষে এসেছিল পূর্ববর্তী গভর্ণর বনাম সরকার সংঘাত,মতবিরোধ।রঘুরাম রাজনের ইস্তফা মুহূর্তে সবার মনে এটাই এসেছিল সরকার তার আস্থাভাজন ব্যক্তি কে নিয়ে আসছেন,হয়তো সেটার সারবত্তাও ছিল,কিন্তু আবার দ্বন্ধ, মানসিক সংঘাতের যবনিকা।অর্থ মন্ত্রকের চাপ ক্রমশ বাড়ছিল ব্যাঙ্কের উদ্বৃত্ত তহবিল থেকে টাকা চেয়ে,এই রকম নানান চাপান উতোর,মত পার্থক্যের পরিনাম প্রকাশ্যে এসে যাবে,তা দৃষ্টি ঘোরাতে  দক্ষ পারদর্শী অর্থনীতিবিদ না বললেও মুশকিল।কিন্তু অভিমানী বিদায়ী গভর্নর ,সকল সহকর্মী,পরিচালন বোর্ডের ডিরেক্টরদের ধন্যবাদ জানালেও প্রধানমন্ত্রী,অর্থমন্ত্রীর নাম মুখে না আনায় সেটাকেই অনেকে প্রতিবাদ হিসাবে দেখছেন,বিশেষ করে প্রাক্তন গর্ভনর রাজন মহাশয়।দেশের অর্থনীতি নির্ধারক, এই তাবড়
তাবড় ব্যক্তিদের মান সম্মান বাঁচিয়ে পদত্যাগ খুব কিন্তু ভালো বার্তা দিচ্ছে না।

২০১৬সালে ৪ সেপ্টেম্বর গুড বয় হিসাবে উর্জিত প্যাটেলের গর্ভনর হওয়া। দুমাসের মধ্যে এত বড়ো নোটবন্দির সিদ্ধান্ত সরকার নেওয়ায় সে ধারণা সত্যিই জোরদার হয়েছিল কিন্তু সরকারের সাথে উর্জিতের লড়াই,সংঘাত বোর্ডের মিটিংয়ে চলতে থাকায় অতি সম্প্রতি কিছু কমিটিও তৈরি হয়।আগামী ১৪তারিখ ডিসেম্বরের বৈঠকের ঘোষিত দিন ছিল তারমধ্যেই এমন আকস্মিক খবরে নানান কৌতূহলের জন্ম দিচ্ছে।হয়তো সরকার পক্ষ থেকে আরো চাপ,আরো জটিলতার জন্ম,তার আগেই নিজের ভাবমূর্তি ঠিক রাখতে ইস্তফাই ভালো পদক্ষেপ।

বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভা ভোট অলরেডি শুরু হয়ে গেছে,রেজাল্টে পারদের ওঠা নামা। আগামী কয়েক মাস পরই বৃহত্তম গণতান্ত্রিক দেশের কুর্শির দাবিদার দল কে আসছে তার কাউন্টডাউন শুরু।  দেখছি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি,কৃষকের আত্মহত্যা, একের পর এক দুর্নীতি আজ সামনে, উজ্জ্বল নিয়ন আলোয়। বিপুল ঋণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়া মহানদের বহাল তবিয়তে বিদেশে দিন গুজরান করছেন আর  নুন্যতম দৈনন্দিন পরিষেবার তথৈবচ অবস্থার সাক্ষী হয়ে আমআদমিগণ গ্যালারিতে বসে মুখ চাওয়া চাওয়ি ও হাততালি দিতে মগ্ন।

সম্প্রতি সরকারের কাজে হিন্দুত্বের রাজনীতির একটা স্রোত নজরে আসছে আবার সরকার উদার অর্থনীতির মধ্যে একটা লাগাম টানতে উদ্যত।টাকার অবমূল্যায়ন,কি পাবো আর কি পেলামের হিসেব নিকেশ,লাগাম ছাড়া মূল্যবৃদ্ধিতে জন সাধারণের নাভিশ্বাস ওঠার উপক্রম।বিরোধী শিবিরের লাগাতার আক্রমণে একপ্রকার উপেক্ষা করছি ভাবনা দেখালেও সরকারের মধ্যেই নানান অনৈক্যের চোরা স্রোত ক্রমশ প্রকাশিত হচ্ছে।

দেশের অর্থনীতির  মেরুদন্ড ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থাকে নিয়ে এই গভর্নর পদে আসা সম্মানীয় ব্যক্তিগণের নিজস্ব কিছু ভাবনা  থাকে ।বেশ কিছু সংঘাত যা আগের সরকারের আমলে ওয়াই ভি রেড্ডি,সুব্বারাওয়ের সাথেও হয়েছিল কিন্তু এই আমলের মতানৈক্য,কিছু নতুন মাত্রা এনেছে।একের পর এক ব্যবসায়ী যখন বিপুল ঋণ নিয়ে বিদেশে বহাল তবিয়তে পালিয়েছে,সরকার দোষ দিয়েছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের ওপরই। আবার যখন গর্বিত বুকে দেশ থেকে কালো টাকা ধ্বংস করার মহান ব্রত সামনে রেখে নোট বন্দীর বিপুল কর্ম যজ্ঞ ,পরিসংখ্যান দিয়ে রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তখন শুনিয়েছে,সব টাকাই ফিরে আসছে ব্যাঙ্কে।তবে কি কালো টাকা ছিল না ,এই অস্বস্তি সরকারের প্রগতির বেলুনকে  যথেষ্ট খোঁচা দিয়েছে। সর্বশেষ বেসরকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠান গুলিকে ঋণ প্রদান বন্ধ করে দেওয়া নিয়ে সংঘাত যে আগামী বৈঠকে চরম আকার নিতো সেটা অনুমান করেই এমন সরে যাওয়া।সেই সঙ্গে আরো যে কিছু চমক বাকি আছে এই সরকার বনাম রিজার্ভ ব্যাঙ্ক তা বোঝা যায় ডেপুটি গভর্নরের ,"সরকারের উচিত রিজার্ভ ব্যাঙ্কের স্বশাসিত চরিত্র বজায় রাখা"এই গোপন মন্তব্য ফাঁসে।

মেয়েটি: মৌসুমী ভৌমিক





মেয়েটির দশ হাতে অস্ত্র হয়ত নেই
তবু মেয়েটি লড়াই করে
লড়াই করে বেঁচে থাকবার
লড়াই করে  একটি ছাদের জন্য 
লড়াই করে -
বেঁচেও থাকে ।

অস্ত্র নেই
তবু যুদ্ধ আছে 
তবু সংগ্রাম আছে 
তবু জিততে হয়, কারন অসুর আছে ।

এই যে ভাতগন্ধ খুঁজে নিতে 
দৈনন্দিন ছোটাছুটি, তার ব্যস্ত পরিসর
সেখানে কোনো উৎসব নেই। 
অন্ধকার পথে একমুঠো আলো খুঁজে খুঁজে 
এই পথচলা
এই  দৃঢ়তা 
এই সশক্ত জীবন
তাকে কুর্নিশ না করে বসে থাকি কী করে? 

সে দুর্গা নয়
সে আমার চারপাশে অহর্নিশ হেঁটে চলা মেয়েটি। 
কিভাবে ভুলে যাব, ব্যক্তিগত চৌকাঠ পেরিয়ে সে তো নিজেই বসে গেছে অনুক্ত ইতিহাসে। 

পিয়াংকী






আমিত্ব 
*******



চুপিসারে নৈঃশব্দ এসে লিখে যায় অন্তহীন সংলাপ , 
উত্তাপ পুড়িয়ে তৃপ্ত হয় বিভাজিকা , 
সমাজের চিলেকোঠায় যখন প্রেম মাপে নিষিদ্ধতা ...
ঠিক সেই মুহূর্তেই পিয়াংকী পোশাক ছেড়ে আমি হয়ে উঠি তোমার অনিন্দিতা॥

কবিতাযাপন আত্মায় আঁকে বিশুদ্ধ শ্বাস , 
মুহূর্তরা বন্দী হয় খাতার সাদা পৃষ্ঠায় 
অলৌকিক আতিশয্যে ক্রমাগত মুড়তে থাকি অস্তিত্ব 
উপপাদ্যের পাতায় স্পর্শক , আমায়  উৎসর্গ করে চেতনায় ॥