নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

রাজকুমার বিশ্বাস





পৌষের সকাল
*************




পৌষের হিমেল সকাল কুয়াশা ঘিরেছে চারপাশে;
রাজপথের চলন্ত দানব;হোঁচট খাচ্ছে
হাওয়া ব্রেকে |
"নিশুতি রাতের ",চৌকিদার 
ক্লান্ত কুকুর ;
এলিয়ে দেহ পড়ে আছে ফুটপাতে আফিম খোড়ের মতো |

ঘুম ভাঙেনি পথশিশুদের;
সারারাত মশার সাথে লুকোচুরি খেলে
শ্রান্ত দেহ ঢেকেছে ছিন্ন মাদুরে |

ব্যস্ত ফেরিওয়ালা জীর্ণ পোশাকে,
ছেঁড়া চপ্পলে আওয়াজ তুলে,
মোট মাথায় চলেছে হনহনিয়ে,
বিকিকিনির হাটে;--পসারসাজাতে ।

চায়েরদোকানের  চুলার ধোঁয়ায়
বর্তুলের-কুণ্ডলী মিশে কুয়াশায় ;
ধুোঁয়াশার--পালে ,জোড় বাড়িয়েছে |

কাগজের ফেরিওয়ালা;-বিড়ি ফুকে -
শেষ সুখটান টেনে;
দিচ্ছে চাপ, -- সাইকেলের ভাঙা প্যাডেলে|

হরিজন দম্পতি--খুকখুক কেশে;-
ঝাড়ু হাতে--নেমেছে ,
রাস্তা ঝাঁটের কাজে |

যারা সভ্যতার জঞ্জাল তোমাদের চোখে, 
তারা জ্বেলে আগুন জঞ্জালের স্তূপ, 
হিমে ভেজা গায়ে 'ওম' নিচ্ছে। 

আর ,
সুট-বুট-কোটে ফুলবাবু সেজে;
সিগারেটে ধোঁয়া ছেড়ে; পানের পিকে;
সভ্যতার' বাবু' রাজপথ লাল করে, উঠছ বাসে -ট্রেনে-ট্রামে |

পৌষের হিমেল সকাল কুয়াশা ঘিরেছে 
চারপাশে |

অভিষেক মিত্র







স্বপ্ন



কবিতা – তুমি হয়ে যাও সবুজ শরীর।
বদলে যাও সেই ভাষায়
যার উপর ভর করে উড়ে যাব আমি,
স্বপ্নের ডানায়।
কখনও তুমি আদিম সুর,
আফ্রিকার অচেনা উপজাতির
জড়িয়ে নাও মায়াবী ক্লিভেজ,
আমি চাইতুমি আজ বিপ্লব হও
আমার এই ক্ষুধার্ত জিভে।

এস.কে.এম মিজানুর রহমান






মা




সাত জনমের মাগো তুমি 
ব্যথা দিলে
কাঁদছি আমি,
তোমার ছেলে আমরা সবাই 
তোমার হাসি ভুবন ভরা,
স্বপ্নে এসো মাগো তুমি 
দেখব হাসি আবার আমি,
ফুটবে ফুল জগৎ সংসারে
মাগো
রূপ কথার সে গল্প বটে
ঘুম পাড়ানোর আগে,
তোমার কোলে ঘুমিয়ে পড়ি
ভোর হওয়ার আগে,
মাগো তুমি ভালো থেকো 
পারলে এসো ঘরে,
কাঁদব আমি দেখবে তুমি 
তোমায় বুকে ধরে,
আর পারিনা সইতে মাগো
তোমায় ছেড়ে
সকল ঘরে প্রদীপ জ্বেলো 
সন্ধ্যা নামার আগে

তানিয়া ব্যানার্জী





সুখ
-----------------------




ওরা আসবেনা ভাবে রোজ রোজ..
ছোঁবেনা ভাবে রোজ রোজ।
ফুসফুস নিয়ত ছোটো হতে হতে নিদান হাঁকে,
ওরা অভুক্ত,  ওরা নিদ্রাহীন...
নির্জলা উপবাসে বাঁচে রোজ রোজ।
উপেক্ষার বুদবুদে নদী নালা মিশে এক হয়ে যায়,

ওরা আসে... ওরা যায়..... ওরা বাস করে মজ্জায় মজ্জায়,
কেমো থেরাপি বড্ড কড়া ডোজ----
দাঁতে দাঁত দিয়ে,  জীবানু মারার অভিপ্রায়,
তবু' তো ওরা আসে,  সারা শরীর ,  রক্তে মেশে --
দৃশ্য দূষণ,  কাব্য দূষণ,  সঙ্গ দূষণে বাড়ে রোজ রোজ।
শরীরের ভাঁজে ভাঁজে পোঁতা,  ওদের বীজ,
জানলা বেয়ে.. দরজা বেয়ে আসে ওরা,
হাত বড়ালেই পাতা মুড়ে যায় --
লজ্জাবতীর মত....তবে কি! 
গাছেদেরও অসুখ হয়!  কাছে ফিরে এলে,  পেতে চাওয়া যত!

চৈতালি গোস্বামী






এমন অনেক স্বপ্ন থাকে 



কিছু অমলিন স্বপ্ন থাকে। 
সবার থাকে। 
পূরণ যদি হবার নয়, তবুও থাকে। 
নিরীহ কিছু ইচ্ছে থাকে
তুমি ভরসা দিলে বেড়ে উঠবে 
এই বর্ষায় মাথা তুলবে
বাগান জুড়ে বেঁচে থাকবে

বিরাট ক্ষেতে তোমার মুখের জন্ম দেব
তোমার আদল, তোমার চোখ 
তোমার নখের স্পর্শ দেব
আমার এমন স্বপ্ন ছিল মালী হব
আকাশ ফুঁড়ে রোদ আনব
মাটি খুঁড়ে আনব জল
সেচ করব, ফসল তুলে ভরব ঘর
আগুন আঁচে সেঁকব রুটি 
নরম রুটি তাওয়ার আঁচে তৃপ্তি পাব। 
তৃপ্ত হব।
হা, এমন স্বপ্ন সবার থাকে। 
আমার থাকে, তোমার থাকে। 

দীপ্তি মৈত্র







স্মৃতিপটে জীবনানন্দ
********************




   
নির্জনতার কবি জীবনানন্দ 
সাহিত্য প্রাণে আনে নব ছন্দ।
১৮৯৯সন১৭ইফেব্রুয়ারি, 
পিতা হন সত্যানন্দ,
মাতা কুসুম কুমারী। 
‘রূপসী বাংলা’র বরিশাল গ্রাম;
শালিকের খয়েরী ডানা,
তমালের নীল ছায়া-
কবির নিবাস তিনি শিশু যখন।
‘ঝরা পালক’ সম বাতাসে ভেসে 
কবি জীবনের বৈঠা বাওয়া।
‘ধূসর পাণ্ডুলিপি’তে সঞ্চিত থাকা
বিষণ্ণতা,স্বপ্নলোকে অভিসার বাসনা।
জীবন সলিলে পাড়ি দেওয়া
সেই বিদীর্ণ ক্লান্ত প্রাণেরে
দু দণ্ড শান্তি দিয়েছিল, 
নাটোরের বনলতা সেন।
‘মহাপৃথিবী’,‘মাল্যবান’,‘সুতীর্থ’
‘সাতটি তারার তিমির,’ ‘আমিষাশী তরবার’
মাতিয়ে দিলো সাহিত্যের দরবার।
এ হেন তিমির বিনাশী কবির
চিত্রকল্প,সৃজন দক্ষতা,অলংকার মাধুর্য
দৈবাৎ একদিন হলো স্তব্ধ।
ট্রাম দূর্ঘটনায় আহত হল কবি প্রাণ-
রক্ত মাংসের শরীর,সৃষ্টিশীল মন
দপদপ্ করে জ্বলতে জ্বলতে
একদিন গেল নিভে-
রেখে গেল তাঁর অমূল্য সৃজন।
তিমির বিনাশী হলেন তিমির বিলাশী
‘কবিতার কথা’আামাদের রেখে 
ধীরে ধীরে মিলিয়ে গেলেন
 নক্ষত্রের দেশে-
আজি এ দিনে প্রাঞ্জলিতে
জানাই তাঁরে প্রণাম।