নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অনোজ ব্যানার্জী




বিসর্জন
********



"বিসর্জন " কথাটি,, একবারমাত্র ভাবলেই,কিএক গহীন, দুঃসহ, অসীম বেদনায় ডুবে যায়, আমাদের সকলের মন।
মগজের মধ্যে ঝিলিক মারে সর্বক্ষণ, কি যেন গেল হারিয়ে,কি যেন গেল ফুরিয়ে.....দেবদেবীর
পুজোর ঘট আনা হবে,পুজোর বেদীতে হবে তার আবাহন, পঞ্চপ্রদীপ জ্বলবে, ধূপ, ধুনোর সুগন্ধে,,  ঢাকের বাজনা, কাঁসির শব্দ ,শঙ্খধ্বনিতে ভরে যাবে মন্দিরপ্রাঙ্গন।
তারপর,,,,সমস্ত আমোদ,,হইহুল্লোড় যাবে ফুরিয়ে। আনন্দরা যাবে যেন কোথায় হারিয়ে,,,,
দিতে হবে বিদায়,,দেবদেবীকে,,,
ঘট বিসর্জন,,প্রতিমা নিরুঞ্জন,,,...
*******
এখন,,
পুজোর বেদীতে,, বসে বসে নিচ্ছে পুজো
যেসব রাক্ষসের দল,, দেশটাকে পাঠাচ্ছে জাহান্নামের অন্ধকারে যারা,,,
আরাম করে,আয়েস করে কাটেচ্ছে সুখের জীবন,,,
নিচ্ছে কেড়েকেড়ে  আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকারের পরশমাণিকটিকে,
তাদের দিতে হবে এবার বিসর্জন।
হাজার কুসংস্কার, পাপ,অন্যায়,দুর্নীতি, গুণ্ডামি,
অত্যাচার,, অনাচার,ধর্ষণ,
ধর্ম নিয়ে ছিনিমিনি খেলা,,প্রবঞ্চনা,
বোম,বারুদ, বুলেটে অগণন তাজা তাজা মানুষের অকারণ, রক্তপাত,,,কত শহীদের বেদনার্ত লাশের মিছিল,,
কত মায়ের কোল হলো খালি....
এসবের যারা করছে পুজো,,ভক্তিভরে,,
যারা দায়ী এসব কুকাজের জন্য,যে সব দানব ঘটাচ্ছে এসব কুকর্ম,,
আমাদের দেশমাতাকে করছে যারা কলংকিত,
অবিরত,,,,
দেশটাকে যারা দিচ্ছে বেচে বিদেশীদের হাতে,গরু-ছাগলের মত, এই সুন্দর পৃথিবীটাকে,  যারা দিচ্ছে ডুবিয়ে..
অনাদ্যন্ত, নরকের গভীর পঙ্কিলতায়,,
এবার আর তাদের কোন ক্ষমা নয়,,,
সুসভ্য সমাজের বেদী থেকে তাদের দিতে হবে
সমূলে বিসর্জন।
হবে বসাতে রাজসিংহাসনে,,
ভদ্র,সত্যনিষ্ঠ, বিচক্ষণ , দেশপ্রেমিক, বীর নেতাকে।। প্রস্তুত হও এবার ঘরেঘরে।।

মাধব মণ্ডল






হাত
---------




ইস, এ হাতে এখনো বসে
দুব্বো ঘাসের পাতা
একটু একটু কালচে ঘৃণাও
ঘর দালান উঠোন ফুঁড়ে
আসি আসি ভাব।

জিভ সব ভেঙে ভেঙে
কথা বা গান ছাড়ে
নদী বা পুকুর ঘাটে
আমার লোমশ বুকে
খুকি তুই কাকে যে খুঁজিস!!

গল্প গল্প মন তোর
এ হাত আলমারি পাক
নিদেনপক্ষে একটা তাক
পেয়ারার ডালে বুলবুলি
আর ফুটে থাকা থোকা থোকা ফুল।

কাল রাতে কেঁদেছিল খুকি
গভীর দুঃখ পেলে ও খুকি কাঁদে
সেই সুর আদি গঙ্গা খায়
ও হাতে এবার কি তুলেছিস?
কচি কচি দুব্বো? ঘৃণা?

পিয়াংকী মুখার্জী





প্রত্যয় 
*******



জলছবির অচেতন  জলোচ্ছ্বাস ,
আজ অনেকটা বিষাদ ভর্তি ফেলে আসা আকাশ  বাতাস !
মেঘ-মল্লার জমিয়েছে আসর,
 সরগম-তান-রাগ-রাগিণীর সমন্বয়ে ,
সেই লালচে বিকেলের আসরে বিলম্বিত দোসর !

পা ভিজলেও ভিজতে পারে মনের আয়নায়,
হৃদয় স্নাত হতেও পারে খুশির ঠমকে আর অঙ্গজ গয়নায়...

বিসর্জনের সুর যদি বাজে পূরবীর তালে...
আমার নূপুর বাঁধা পা নাচবে 
রাগাশ্রয়ী ইমনের  মীরের অন্তরালে ॥

জলাঞ্জলি জলছবিকে কাঁদায় না , 
এ বহিঃদেহী অন্তবৃত্তে পুঁতে দেয় আগুন ঝলসানো কিছু নির্মম  অক্ষর...

দহনের আগুন পোড়ায় না 
বরং কলমের বুক চিরে রোপণ করে অঙ্কুরোদগমের জন্মান্তর । 

এভাবেই , 
আগামী প্রজন্ম জন্ম নিক প্রত্যয়ী চিত্তে 
লৌহপ্রতিজ্ঞা সম্ভাবনা আঁকুক ছন্দসাজানো  মাত্রাবৃত্তে ॥

বন্দনা মিত্র





ভাতের গন্ধ
*********



অনেক রাত্রি শেষে নবান্নের ভোরে
ছেলেটা তাকিয়ে দেখে
সবুজ ধানের শিষে ভাতফুল ফুটে আছে ।
আশ্চর্য ফুলের ঘ্রাণে ম ম করে
পৃথিবীর মাঠ ঘাট ।
ক্ষুধা ঋতু শেষ হল নাকি ?
বিস্ময়ে আনন্দে রোমকূপে কদম্বের ছোঁয়া ।
 দুর্গা দালান জুড়ে সমারোহ , আলপনা ,
 বসুধারা দেয়ালের গায়ে -
ঢেঁকিঘরে শালি ধান,
ঢিমে আঁচে ঘন হয়  দুধ -
উনানের ধোঁয়া লেগে চোখে জল আসে ।
গরম ভাতের গন্ধ মনে করে নেশাগ্রস্ত  মাতালের মত
ছেলেটা তাকিয়ে থাকে ঝিম চোখে ।
বোধনের ঢাকে কাঠি  , নেত্রদান , কলা বৌ স্নান
আরতির ঘন্টা বাজে , অঞ্জলি শুরু হয় ।
অপূর্ব গন্ধ মাখা ছেলে মেয়ে
প্রতিমার মত মুখে প্রসাদের স্বাদ পায় ।
ছেলেটা তাকিয়ে থাকে ঝিম চোখে,
ভাতের গন্ধ শোঁকে , খিদে পায় ।
এবার সিঁদূর খেলা,  ভাসানের বোল ওঠে ,
প্রতিমার মুখে মিঠাপান, সন্দেশের গুঁড়ো –
সন্ধ্যার বিজয়া বাতাসে আকুল ভাতের গন্ধ,
ছেলেটার খিদে পায়, রাগ হয়।
অসম্ভব, খুনে রাগ,  রক্তমাখা আঙুলের নখে
আগুন ঝরানো রাগ ।
বাতাসে মৃত্যুর গন্ধ, পোড়া শব, বারুদের ঝাঁঝ,
পুলিশের ভারী বুট,  সন্ধ্যার জ্ঞান গর্ভ আলোচনা ,
রাস্তায় নিয়মিত মোমবাতি ।
সবকিছু  পার করে জেগে থাকে
নবান্নের ভোরে,  অমিত ক্ষুধার ঋতু
উন্মাদ,  ক্ষুধিত,  ক্রুদ্ধ নগ্ন বালক এক,
চরাচর মেশামিশি বাতাসে ভাতের গন্ধ ।









প্রভাত মন্ডল





বিদ্রোহী কলম
   ==========
                        


হে কলম, 
     আর কত দিন থাকবে স্তব্ধ, 
তোমার টানে
      হয়ে উঠুক সারা বিশ্বে আজ বিদ্রোহ। 
তোমার লেখণী
        আর কত থাকবে, মৌন অসাড় বুকে, 
তোমার প্রতিটি ঘর্ষন
        আজ বিদ্রোহী হয়ে পৌঁছাক বিশ্ব দরবারেতে। 
তোমার রক্তের কালি দিয়ে
        আজ পঞ্জিকা লিখে মৌলাবাদের মুখোস দাও খুলে
তুমি ধর্মের নামে বজ্জাতি
          আর চলবে না তুলে ধর বিশ্ব আদালতে, 
তোমার লেখা ধর্মের নামে
           আর রক্তাত হতে দেবে না এই ভূবনকে। 
তোমার  ঘর্ষনে
            আজ জাগ্রত হোক মৃত আগ্নেয়গিরি দ্বার
তার লাভাতে জ্বলে 
             যাক যত গোঁড়া মৌলাবাদী নরখাদকের দল। 
জাগবার দিন আজ
              র্দুদিন আসছে চুপিসারে, 
করুক্ষেতের মাঠ
              আজ প্রশস্ত হচ্ছে ধর্ম ধর্ম করে। 
তোমার লেখণীর খঞ্জরের ধারে
                আজ রোধ হোক মৌলাবাদের কন্ঠস্বর। 
প্রশয় দেব না
               গোঁড়া মৌলাবাদীদের
করবো না 
             ওদের আর ডোর। 
বিশ্বের থাকবে একটাই 
             ধর্ম,  মানব ধর্ম তার নাম
তোমার  লেখন শৈলীতে
               এটাই হবে স্লোগান।

তপন জানা




দেবী "মা "ই তোর মা
"""""""""""""""""""""""""""""""""


জয় মা দুর্গা বলে প্যান্ডেলে প্যান্ডেলে,
হাজার মানু‌ষের ভিড়, দুহাত জড়ো করে।
প্রতিমা দর্শনের নামটি করে,
আড় চোখেতে তাকিয়ে দেখে দেবী অংগের ভাজ।
চক্ষু কটিদেশে, চায় বক্ষ মাঝে।
তাই তো সেদিন গলির শেষে,
পোড়ো বাড়ির ভেতর
বিবস্ত্র এক দেবী দেহ সাজিয়েছিস রক্ত সাজে।
"মা " "ম " বলে যার পায়েতে আজ লুটিয়ে দিলি মাথা।
সেদিন রাতের ঘন আধারে নিজের মা কে তাড়ালি,
দিয়ে দুঃখ, ব্যাথা।
দেবী মায়ের পুজোর কত আয়োজন, কত আড়ম্বর।
কিন্তু নিজের জন্মদাত্রী কে
পাঠিয়েছিস বৃদ্ধাশ্রমের এক চিলতে ঘর।
যার জন্য এত প্রসাদ, এত ভূষন
সাজিয়েছিস শ্রদ্ধা ভরে।
সেই মায়েরে দুবেলা দুমুঠো দিস না খেতে ঘরে।
"মা দুর্গা "র মূর্তি সাজালি দামি শাড়ি গহনায়,
সেই মা তোর ছেঁড়া কাপড়ে শুয়ে মাটির বিছানায়।
মৃন্ময়ী মা তো চিন্ময়ী রুপে
  সে যে তোর মা,
নিজের মায়েরা দিস না কষ্ট কর ভক্তি শ্রদ্ধা।
বিজয়াতে বাঁচিয়ে রাখিস একটু চোখের জল।
জন্মদাত্রী র জন্য ফেলতে হবে  ওই বাঁচানো জল।
নিজের মা কে শ্রদ্ধা করলে
   খুশি দেবী মা।
জন্মদাত্রী মা যে তোর দেবীরুপী মাতৃ প্রতিমা।
মেয়ে মানেই তো সুলভ, নয়তো লেহ্য চুস্য।
রাস্তার ওই মেয়েটি ও তো, তোর মা বোনের ই মতন।
নিজের মায়ের পায়ে মাথা রাখ,
দেবী মায়ের আগে।
তাহলেই তোর সব পাপ "মা "দেবেন ক্ষমা করে।