নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

কার্তিক ঢক্







সরলীকরণ 
**********



চোখেতে চোখ রেখে বলো
কতোটা সরলীকরণে হেঁটেছে ঝর্ণা-জল..
নুড়ি পাথরকেই সঙ্গ দিয়েছো বেশী। 
যতোটা নাব্যতা চেয়ে ছিলাম-
তার থেকে অনেক দিয়েছো নোনা-ঢেউ--
দাঁতালো মাছ আর জেলিফিশ... 

হাতে হাত রেখে বলো
হৃদয়-গ্রাহ্য হাওয়া দিয়েছো কতোটুকু--
আইভি-লতায় গন্ধ ফোটেনি এখনো
মৌমাছিদের হুলের তীব্র  চিৎকার... 
বাগান শুকায় ঝর্ণা-জল ক্ষিদে নিয়ে বুকে..

বৃষ্টি চাইতেই,  কান্না ঝরায় মেঘ ! 
ভেবে দেখো , ভিজছি দু-জনেই...

অভিজিৎ দাসকর্মকার





১ টি বৈধব্য সান-পাথরের গায়ে
*******************


১টি বনসাই মানিপ্লান্ট গাছের পাশটিতে
২টো প্লাস্টিক পাতা 
২য় ফুলটি শালুকপাতার উপরি তলের বুদবুদে জলজকোষ পড়ে
XY ক্রোমোজোমে পুরুষ-নারীর হাত ধরাধরি পড়ে
ভালদারামার গোল পড়ে, আর-
||
১ম কদমফুল হয়ে 
সাদা-কালো উত্তম-সুচিত্রা লেখে
'নীড় ছোট ক্ষতি নেই' শোনে-
কোমরে আদর জড়ানো বারান্দা বলে আর -
সামনে এসে দাঁড়ায় চাঁদ
গায়ে প্রুসিয়ান রঙের জ্যোৎস্নাকলা
||
চাঁদকলা আর সুর্যকোষের মেঘমিলনে 
বিশমিল্লাহর সানাই বেতার তরঙ্গের দরজা খোলে 
১ টি বাদাম গাছ বাড়িয়ে দিয়েছে বর্ষাসকালের রান্নাঘর  আর 
মেঘমল্লারের আলাপী নদী 
তাতে
||
১টি ডিঙি নৌকা তারই অব্যক্ত অবয়ব রেখেছে 
বাৎসল্যময়ী ১ টি বৈধব্য সান-পাথরের গায়ে...

পবিত্র কুমার ভক্তা






কলঙ্কমোচন
************



হুল আর দাপটের ভয়ে গদ্যময় নীরবতা
ভীড় করে আছে মানুষের ঠোঁটে
একলহমায় রাজনৈতিক জ্যামিতি বদলে দিতে পারে
ভোলেন কি করে?
সন্ধ্যেপাখির মতো গান গাওয়া ভুলে সাঁতার অন্ধকারে
একবার ভেবে দেখো কতটা উদাসীনতা বন্ধুত্বের বেঞ্চে
জরায়ুজ বিবেকের গর্ভপাতে নিষ্কম্প তুমি
একবার হৃদয়-লিটমাসে আঙুল ছুঁয়ে দেখ
কতটা পাপ জমেছে
প্রতিনিধি বেশে পুড়িয়েছ ভালোবাসা
একবার ছুঁয়ে দেখ মানুষের হাত
কি গভীর প্রত্যাশারা, মমতায় বোতাম টিপেছে
একবার অন্ধকার বিসর্জনে সকালের সোনালী ভালোবেসে দেখো
কাশের রঙ মেখেছে হৃদয়... 

বৈশাখী চক্কোত্তি




প্রত্যাবর্তন ….



শ্মশানে দাঁড়িয়ে আছি শবদেহ নিয়ে,
একদম ঠিক নিজের চিতার সামনে,
কাঠ ঠাট সব জোগাড় করা হয়েছে,
আয়োজনের ত্রূটি  নেইএই সায়াহ্নে।।

ঘি টি মাখানো হয়ে গেছেনতুনপোশাকে
সুন্দর করে সাজানো আমায়নতুনঅনুরাগে,
না আমি সধবানাই বা হলাম বিধবা,
কিন্তু সতীচ্ছদসেতো হয়েছে বহুদিনআগে।।

বহুদিন ধরে তিল তিল করে
ক্ষয়েছে শরীর  মন,
অবশেষে আজ যাত্রার শেষচিরশান্তি,
তাই অকারণ হতাশার নিবারণ।।



নিজেকে তুলে ধরি চিতার ওপরে,
এবার আগুন লাগানোর পালা,
হঠাৎ শুনি দূর থেকে ভেসে আসে
এক পুরোনো কিন্তু অতি পরিচিত গলা ।।

তোমার কণ্ঠস্বরে আজ আবার
হৃদপিন্ডে রক্তপ্রবাহ চলে,
আবার জেগে উঠি বাঁচার আশায়দেখি
পশ্চিমের সূর্য আজ পুবের কথা বলে ।।
               

বৈশাখী চক্কোত্তি         

শ্যামাপদ মালাকার





পথ
****

আমি জানতাম,-কালের স্রোত নিংড়ে একদিন তুমি আসবে।
তাই ললাটের পাকে ভাঙ্গাদেহে পড়ে আছি--
তোমার পায়েচলা মেঠো পথটির শেষে।
পথিকের মুখে শুনতাম- এ বরাদ্দে দেহ আমার মজবুত হবে, কিন্তু হয়নি!
ভাগে ক'ধামা ধূলি-- তাতে কি আর দেহ বাঁচে!
ওরাই এখন দেহভাগে দেহ দেয়।
দু'কথা বলে যায় শোন,-শীঘ্রই আমি দেহ রাখব!
রুগ্ন গা প্রাণ ধরতে অরাজি হাঁকছে যে!
স্বার্থপর তৃণের গ্রাসে পথ হারায় কে-- তাছাড়া প্রতিবাদ আজ বড় ম্রিয়মাণ, বাঁচি কার আশে?।
দুই- বুকে কান পেতে শোন, দামালের হাড় চিবানোর শব্দ!
--স্কুল হতে ছেলেটা এখন ফিরেনি!
বিশ্বাস হচ্ছে না? ধূলি সরায়ে দেখ রক্তের দাগ!
রেখেছি প্রমাণ।
বলি- আমার দেহ সারায়ে কাজ কি?--সবার ভিতরে এক-একটি পথ আছে, সেই পথ মেরামতের সময় এসেছে- -
যাবার পথ নয়,
শুধু একটি মাত্র ফেরার পথ!
যে পথে ঝুলিনিয়ে ভিখারিনীর রবেনা পড়ে দেহ--
যে পথে জননী তার পানে চেয়ে রয়--
যে পথে তুলসীবেদীমূলে প্রদপটি জ্বেলে দিতে হয়!।

সুপ্রভাত দত্ত





বিসর্জন
********

               

পেরিয়ে যাবার পথ আটকে কুকুর গুলি--
মাংস নিয়ে লড়াই,  ধুলোবালি,  চিৎকার !
পাশ কেটে চলে যাই, নিজের দিগন্ত চেয়ে--

একতারা কেঁপে ওঠে অসুখ বাউল মেঘে--
গেরুয়া রঙের মন প্ল্যাটফর্ম চিরে ওঠে !
একটা পথের বাঁক, চেনা জানা সংসারে
যেখানে গালাজ মুখী শিশুর সুলভ মুখ
বাবা মায়ে এক হয়ে বিকেল নোংরা করে !

একদিন সব পথ কুকুরের লালা নিয়ে 
একতারা, সংসারে ছাপ দিয়ে চলে যায়- 
দুচোখ নিজে নিজে মুছে যাক,  ক্ষতি নেই!
তৃতীয় নয়ন যদি মুছে যায় কোনোক্রমে, 
তোমার আমার গায়ে বিসর্জন ঠিক নামে-