নোটিশ বোর্ড
তমালী বন্দ্যোপাধ্যায়
আগমনীর সুর
*************
*************
শ্রাবণ শেষের ভোরে যখন শরৎ এলো-
শিউলি ফুলে সুবাস তখন কে ছড়ালো ?
নীল আকাশে মেঘের ভেলা কে ভাসালো ?
শিউলি ফুলে সুবাস তখন কে ছড়ালো ?
নীল আকাশে মেঘের ভেলা কে ভাসালো ?
শিশির তখন মন ভেজালো ঘাসের কোলে।
মনপাখিরা ডানা মেলে সুদূর নীলে।
আগমনীর সুর খেলে যায় ঢাকের বোলে।
মনপাখিরা ডানা মেলে সুদূর নীলে।
আগমনীর সুর খেলে যায় ঢাকের বোলে।
সোনা রোদের ছোঁয়া তখন কাশের বনে
"সর্বজয়া মা" এর ছোঁয়া সকলখানে।
আনন্দ আজ কে ছড়ালো সবার প্রাণে ?
"সর্বজয়া মা" এর ছোঁয়া সকলখানে।
আনন্দ আজ কে ছড়ালো সবার প্রাণে ?
বিশ্বজুড়ে হিংসার বিষ,ঝগড়াবিবাদ, রণধ্বনি ।
তারই মাঝে জুড়ায় এ মন শুনে তোমার পদধ্বনি।
তাই তো মা'গো দুখের মাঝেও গাইছি তোমার আগমনী।
তারই মাঝে জুড়ায় এ মন শুনে তোমার পদধ্বনি।
তাই তো মা'গো দুখের মাঝেও গাইছি তোমার আগমনী।
মা গো, তুমি সব্বাইকে রেখো ভালো।
সবার মনে জ্বেলে দিও ভালোবাসার আলো।
শিক্ষা যেন দূর করে দেয় আঁধার রাতের কালো।
সবার মনে জ্বেলে দিও ভালোবাসার আলো।
শিক্ষা যেন দূর করে দেয় আঁধার রাতের কালো।
মা'গো তুমি সব্বাইকে রেখো ভালো।।
সুজান মিঠি
মহালয়ার ভোরে
*****************
মহালয়ার ভোরে হঠাৎ ঝমঝম করে বৃষ্টি এলো,
রেডিওতে সবে শুরু হয়েছে বিরেনবাবু আর বাজলো…
জালনার কাঁচে থমকে দাঁড়ালো বৃষ্টি, ফোঁটা ফোঁটা করে,
রোজ চেনা শিউলিসুবাস পেলাম, ও তো জাগেই ভোরে।
উড়ে এসে সুবাসটা বললো, ‘আরে, দেখো, এসেছে বৃষ্টি,
খুশিমত শুনবো আগমনী, নতুন করে পুরানো সৃষ্টি।
জানলার কাঁচে ফোঁটা গুলো তখন অনেক গেছে বেড়ে,
আনন্দে বৃষ্টি সম্মতি দিচ্ছে যে, যাবেনা বলছে ছেড়ে।
আমি মাথা নেড়ে বলি, বেশ,তবে বাইরে কেন, এস ঘরে
বৃষ্টি বলে, আমি যে মন ভেজাই গো, ঘর তো অনেকপরে
জানালাটা দিলাম খানিক খুলে, শিউলি সুবাস বললে
আচ্ছা, আমাদের সঙ্গে কেমন হয়, কাশের পাড়া গেলে?
চলো চলো, ওকে গিয়ে ডেকে আনি, আজ সবার ছুটি,
খেলবো নাচবো গাইবো হাসবো একসাথে লুটোপুটি।
খোলা জানলার মধ্যে দিয়ে একরাশ শুভ্রতা নিয়ে এলো কাশ,
এসেই করলে শুরু, এস এস সবাই এস এটা পুজোর মাস।
বললো কি গো, কি সুন্দর মহালয়া, মায়ের হবে আগমন,
আমরা এখন বৃষ্টিমেখে সারাগায়ে হারাতেই পারি মন।
কি বলো, ও ধানের সবুজ, ও মা, দেখি সেও হাজির এসে,
কোত্থেকে এক বাবুই এলো হঠাৎ আকাশ ভেসে।
বললো, মুক্তি নেবে, মুক্তি? এক আকাশে খেলতে হবে,
দুই আকাশ যদি চাও… কি জানি, আসব আবার কবে।
বেশ, লিখে নিলাম ঠোঁটে, পরেরবার ঠিক আনব দেখো,
আমার জন্য আজের দিনে জানলা কিন্তু খোলা রেখো।
তিনটে শালিখ হাসছিল মিটিমিটি, শিউলি বললে এই,
হাসছো যে ভারী, ঝগড়া করার সময়, কাজে মন নেই!
হকচকিয়ে পরে কিচিমিচি ঝগড়া করলে শুরু খুব,
বলি আমি ওরে থাম থাম, ওই দেখ চড়াই দিচ্ছে ডুব।
উঠোনজুড়ে জমেছে বৃষ্টি, ফেলে ছড়িয়ে মাখছে চড়াই
মাধবী এসে বলে, জলকেলিতে আমায় নে’না ভাই।
রেডিওর পাশে জ্বালা ধুপ মা বলে গেলেন খবরদার,
নিভিয়ে যদি দিবি, মহালয়ায় তবে খাবি কিন্তু মার।
ততক্ষনে পাশে রাখা টগরগুলো হামাগুড়ি দিয়ে,
কানে কানে চুপিচুপি বললে, দেখো এসেছি কি নিয়ে,
হাতমুঠোতে দেখি চেয়ে ঘুমিয়ে ছোট্ট কুঁড়িখানি ,
মায়ের স্নেহ চোখের উপর আড়াল করে আনি।
খেলতে চায় সেও সাথে, আদর করে বুকখানিতে,
রাখি তাকে। রেডিও তখন বীরেনবাবুর মিতে।
গমগম করছে ঘর দুয়ার উঠোন, আর আমরা,
মহালয়ার ভোরে আগমনী খেলায় সবুজ বৃষ্টি পাড়া।
ধীরে ধীরে শেষ হলো পুন্য নতুন ভোর, খুশির ক্ষণ,
হারিয়েছিল তখনো যেন সুরে-খেলায় বৃষ্টি মাখা মন।
হঠাৎ শুনি চমকে উঠে আধো গলায় আবার আগমনী,
বাজলো তোমার আলোর বেনু, গাইছে ছোট্ট ননী।
এস. কবীর
আমি হাইরোড
*************
আমি হাইরোড-
আমার ওপর দিয়ে কত শত
ব্যাস্ত যান বহে যায় সাঁই_সাঁই করে-
দিন দুপুরে, রাত-বিরেতে;
উন্নয়নের চাকা অনির্বাণ ঘষটে চলে
আমার পিঠ ঘেঁষে -
তবুও আমি অশ্রান্ত শহন শীল!
মাঝ রাতে ঘুম ভাঙে - নতুন চাকা আর
নতুন রাস্তার উৎকট আত্মচিৎকারে-
শোঁ-শোঁ নিশুত শব্দ! (তবুও) আমার
বুকের উপর বহে যায় -
শত টন লৌহ বোঝায় গাড়ি -
যান বোঝায় শিশু - পুরুষ - নারী ;
গ্রীষ্মের দাবদাহে তপ্ত বায়ুর ঝাঁপটে-
ঝলসে যাওয়া পিচের চামড়ায়-
বর্ষার খানা খন্দে ভর্তি জলে ;-
শীতার্ত ঘন কুয়াশায় কুহেলিকার
মাঝে অদেখা পথে ছুটে যায় -
ঊর্ধ্বশ্বাসে, সময়ের সাথে গতি বাড়িয়ে ;
ঋতুরাজের টানে, চিল-কোকিলের গানে-
ছুটে যায় বন হতে বনান্তরে;
তবুও আমার রাজপথে শিশুর রক্তে
লাল হয়ে যায় কখনো মানুষেরই ভুলে!
কত আয়ু হয়ে যায় ক্ষয় নিয়মের অনিয়মে!
তবুও আমার হয়না শেষ পথ চলার -
শহরের বুকচিরে বহে যায় - আমি হাইরোড -
দিক হতে দিকান্তরে।
আমার ওপর দিয়ে কত শত
ব্যাস্ত যান বহে যায় সাঁই_সাঁই করে-
দিন দুপুরে, রাত-বিরেতে;
উন্নয়নের চাকা অনির্বাণ ঘষটে চলে
আমার পিঠ ঘেঁষে -
তবুও আমি অশ্রান্ত শহন শীল!
মাঝ রাতে ঘুম ভাঙে - নতুন চাকা আর
নতুন রাস্তার উৎকট আত্মচিৎকারে-
শোঁ-শোঁ নিশুত শব্দ! (তবুও) আমার
বুকের উপর বহে যায় -
শত টন লৌহ বোঝায় গাড়ি -
যান বোঝায় শিশু - পুরুষ - নারী ;
গ্রীষ্মের দাবদাহে তপ্ত বায়ুর ঝাঁপটে-
ঝলসে যাওয়া পিচের চামড়ায়-
বর্ষার খানা খন্দে ভর্তি জলে ;-
শীতার্ত ঘন কুয়াশায় কুহেলিকার
মাঝে অদেখা পথে ছুটে যায় -
ঊর্ধ্বশ্বাসে, সময়ের সাথে গতি বাড়িয়ে ;
ঋতুরাজের টানে, চিল-কোকিলের গানে-
ছুটে যায় বন হতে বনান্তরে;
তবুও আমার রাজপথে শিশুর রক্তে
লাল হয়ে যায় কখনো মানুষেরই ভুলে!
কত আয়ু হয়ে যায় ক্ষয় নিয়মের অনিয়মে!
তবুও আমার হয়না শেষ পথ চলার -
শহরের বুকচিরে বহে যায় - আমি হাইরোড -
দিক হতে দিকান্তরে।
সুনন্দ মন্ডল
আরাধনা
*********
শিউলির ডালে কুঁড়ি ভরে এলো,
কাশফুলের গন্ধে আকাশটা ভরালো।
পুজো পুজো আনন্দে মাতল সবাই,
আত্মহারা খুশিতে জীবনটা ভাসায়।
শারদ প্রাতে পেঁজা তুলোর মত মেঘ,
শুভ্র-সমুজ্জল-কান্তি-সুকোমল-নি র্নিমেখ।
বাতাসে বাতাসে ভেসে এলো আগমনী গান,
দুর্গা মায়ের বোধন দিয়ে পুজো-আরাধন।
নতুন জামা,নতুন পোশাক,নতুন শাড়ি গয়না,
বাঁধ ভাঙা খুশিরে ভাই, ধরে রাখা যায়না।
আয়রে ছুটে,আয়রে পলি, মিলি-লিলি,
পুজো এবার জমবে দেখ, আয়রে চোখ তুলি।
মা দুর্গা আসছেন ঘরে নতুন সকাল নিয়ে,
প্রাণের ইচ্ছা আছে যা আজ মাগি মন দিয়ে।
প্রার্থনা করি মাগো, সকলেরে রেখো শান্তিতে,
অশান্তির ছাপ যেন না লাগে কারো মনেতে।
অশুভ সব অঞ্জলি দিই তোমার চরণে,
খরা মুছে ধরায় এনো শুভ এই লগনে।
হাসি ভরা থাকে যেন, ক্লান্তি-দৈনতা ভুলে,
থাকতে যেন পারি,জাতিভেদে, সকলে মিলে।
রনিতা মল্লিক
বেজন্মা শিশু
************
কি দোষ করেছিল সে?
যাকে তুমি পাঠিয়ে দিলে,
ওই অন্ধ কারের দেশে।
ওই টুকু শিশু একটা,তাকে তুমি এত ভয় পেলে?
ভয় পেয়ে তাইতো তুমি ওকে,
শেষ করে দিলে।
ওতো বলেনী আমার জন্ম দাও।
দাও আমায় গড়ে, নষ্ট করে।
নিজের লালসা মেটানোর জন্য,
কেন ওর জন্ম দিলে?
ওর কথা না ছেড়েই দিলাম,
নিজের শরীর টাকেও ছাড়লে না?
কষ্টযুক্ত অশান্তি পাবে,
সুখে তুমি বাঁচতে পারবে না।
নিজের পবিত্রতা নষ্ট করে,
সতীত্ব কে বিলিয়ে দিলে?
এই তুমি ভালোবাসো নিজেকে?
ওতো বলোনী,
আমায় পৃথিবী তে জন্ম দিয়ে,
গলাটিপে মেরে ভাসিয়ে দাও,
ওই নদীর জলে।
পাবেনা, পাবেনা কোনো ক্ষমা তুমি,
তোমার পাপ তোমায়, কুড়ে কুড়ে খাবে।
কতদিন আর মুখ আড়াল করে থাকবে তুমি?
একদিন না একদিন,
তোমার ওই নোংরা,কুৎসিত মুখ বের করতেই হবে।
তোমার মধ্যে,তুমি স্থান দিয়েছো,
এক নির্লজ্জ,মনুষ্যত্বহীন,বিবেকহীন এক নারীকে।
আর তোমার মধ্যে থাকা ওই
আগের তুমি সত্তা কে,
তুমি গলাটিপে মেরে দিয়ে গেছ চলে।
এবার থেকে যখন নিজের শরীর কে বিলিয়ে দেবে....
ওই ছন্নছাড়া মানুষদের কাছে,
তখন আগে থেকে ভাববে,
ওই নিস্পাপ শিশু জন্ম নেবে,
তোমাদের-ই কাছে।
কেন মারলে ওকে?
নিজেকে লুকিয়ে রাখবে বলে?
কিন্তু সেটাতো আর হবেনা।
তোমার মধ্যে থাকা তুমি,
তোমায় একদিন বের করবে।
ওই শিশুর গলাফাটা আর্তনাদ,
রক্তঝড়া দেহ......
সবের জন্য তুমি দায়ী,
তোমায় একটা মানুষ বলে,
মানবেনা আর কেহ।
ওর -ও তো একটা জীবন ছিল বলো?
ছিল মনে অনেক ইচ্ছা,
গায়ে মাখতে চেয়েছিল,
এই পৃথিবীর আলো।
ওর মতো শিশুদের সাথে খেলা করতে,
পাখিদের সাথে উড়ে বেড়াতে,
খোলা আকাশের নিচে থাকতে ইচ্ছা ছিল ওর।
আর তোর মতো এক জঘন্য নারী
জন্ম দিয়ে মৃত্যু দিলি ওর.....
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)