নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

মৌসুমী রায়



ব্যর্থ অভিসার
************




আঁচল দিয়ে কপালে ঘাম
মোছানোর সময় প্রেমিক
তোমার নজর বুকের খাঁজে
ভালোবাসার উত্তাপটা অনুভব করলেনা
অবুঝ আমি চোখের কাম দেখতে পেলামনা।

তুমি ক্লান্ত ঘুমিয়ে পড়লে আমি মুখে
আঁতিপাঁতি করে খুঁজি আমার হারানো আদর
তোমার মুঠোফোন বেজে ওঠে আমি ভয় পাই
তোমার ঘরের মানুষ বুঝি এই ডেকে নিলো..
তুমি শার্টের বোতাম লাগালেই বুঝি সব আবার হারালো।

যাওয়ার আগে দায়সারা ভাবে ভালোবাসা
দেখিয়ে বোঝাতে চাইলে তুমি আমার শুধুই আমার
আমি বাড়ি ফিরে সাবান দিয়ে ঘষে ঘষে কষ্ট ধুই
আয়নায় দাঁড়িয়ে চওড়া করে সিঁদুর পড়ি
ভুলে যাই অভিসার আর সংসার আমি নদী না নারী?

শোভন মণ্ডল

 


ঈশ্বর ও রাজদন্ড
      *************

 
এরপর ঈশ্বর কয়েকজন মানুষকে ডেকে পাঠালেন
বললেন,  আমি ক্লান্ত,  অবসন্ন
এবার আমার নিদ্রার সময় আসন্নপ্রায়
এই বলে মানুষের হাতে ধরিয়ে দিলেন রাজদন্ড
প্রাসাদের ভেতর মিলিয়ে গেলেন ভগ্ন ঈশ্বর

আপেল বাগানে সভায় বসলেন মানুষেরা
কীভাবে চলবে মানব-সভ্যতা?
কার হাতে থাকবে রাজদন্ড?
চলছে তর্কবিতর্ক
দিন যায়। তর্ক পৌঁচ্ছে যায় কলহে
সেখান থেকে হিংসা তান্ডবে
তছনছ হয়ে যাচ্ছে প্রমোদ-উদ্যান

মহান ঈশ্বর তখনও নিদ্রিত।




শুভেন্দু চট্টোপাধ্যায়




কবি, কল্পনা ও বাস্তব
 *******************



কল্পনা করে রং ছবি আঁকে কবি ও লেখক
 বাস্তব থেকে দূরে।
বাস্তববাদী যারা বলে হায়
কল্পকথার ধার ঘেঁষে যায়
রুঢ় গদ্যের সুরে।
সাম্যবাদের কুঠার হাতে,
চলতে পারেনা কবি কল্পিত পথে-
রাখতে পারেন আস্থাও কোন সমাজসেবক।
#
সস্তা কাহিনী বস্তা বন্দি আজ,
সবাই পড়েছে গড্ডালিকার তাজ।
তাই কাব্য কাননে গর্জাও শত বাজ,
ছিঁড়তে ভূষণ, শোষণ তোষণ,
                      ছিঁড়তে ভুঁড়ির ভাঁজ।

চৌধুরী নাজির হোসেন





বেকার যুবক
************


কালো কালো ধোঁয়া
যেন চোখের আকাশে সারাদিন ধোঁয়া ওড়ে,
ধোঁয়ার ভিতর জলকণা
ভেসে যায় হাওয়ায় হাওয়ায়;
মেঘেদের পাড়ায় তুমুল হৈচৈ
রটে যায় বৃষ্টি হবে
চাতক মাঠে ফসল ফলবে!
হা স্বপ্ন,সবুজের মাঠে নক্সা আঁকা
সম্ভাব্য ফসল
কোথায় যে উড়ে যায়,
ধোঁয়ার রাজ‍্যে জমাট বাঁধে কি সে!
ভাবতে ভাবতে প্রতিবাদ-শূন্যতায়
বিন্দুটি মিলিয়ে গেল।

শুভজিৎ কোলে





ভালোবাসি তোমায়
-----------------------------


ঠোঁটে পুড়ুক জ্বলন্ত সিগারেট,
উড়ুক নিকটিনের ছাই;
আলকোহলের গ্লাসে ভেসে যাক জীবন।
হৃদয় পুড়ুক মিথ্যে ভালোবাসায়,
উত্তপ্ত হোক চার দেওয়ালের আনাচ-কানাচ।
শুষ্ক হোক আরও শুষ্ক হোক,
মরুভূমির ধূধূ বালুচর।
তেষ্টায় ফেটে যাক গলা,
উঠুক মরুঝড়। 
ফুসফুস বুজে যাক উত্তপ্ত বালুকনায়,
তবু মুখে হাসি রেখে বলি;
ভালোবাসি তোমায়।

শ্যামাপদ মালাকার





বিশ্বাসঘাতক
************


ধর,--আমার বুকের ভিতর একটা তামাটেবর্ণ কৃষক নাঙল চালাচ্ছে,- -
আচ্ছা, ওটা বাদ দাও,
মনে কর- আমার সব অন্তরটাই পল্লীর মাঠ হয়ে চাষের গাজন চলছে।
কেউ লক্ষ্য করেনি, আকাশের গায়ে একটুকরো মেঘ- - ধীরে - ধীরে - সব আকাশটা ছেয়ে ফেলল।
আগাম দু'একফোঁটা, পরে দু'দশ ফোঁটার সাঙ্গে- - নেমে এল প্রবল বর্ষণ!
তুমিও হতবাক! আমিও!
হঠাৎ মাঠ অন্ধকার করা দারুণ একটা বজ্রের শব্দে, তুমি আমায় আঁকড়ে ধরলে!
পলকে পলকে বর্ষণ- -
সারামাঠ ধরে- ধর ধর কোদাল ধর, লাজভেঙ্গে পাগবেঁধে জল ধরে রাখ রব।
একদিকে আনীত শাকসেদ্ধ পান্তার উপর বৃষ্টির প্লাবন- -
অন্যদিকে হাঁকে ডাকে শব্দের অন্ধকারের এক কোণে,-মন্দবিদ্যুতের ন্যায় ধ্বনিত হতে লাগল- ধর ধর কোদাল ধর!
কেউ লক্ষ্য করিনি-
সমুদ্রউত্তাল তরঙ্গের ন্যায় বর্ষিত বৃষ্টির লহর, সারামাঠ প্রহত করে চলেছে- -মনে হচ্ছে এই বুঝি শেষ দিন!।
আমি যে কাঁপছি, তুমি টেরপাচ্ছ,- -
আমিও টেরপাচ্ছি!
আমার ললাট-চিবুক তোমার বুক বিদীর্ণ করে- হৃৎপিণ্ডের শিকড়ে শিকড়ে মাটির মতো ঠোঁটের গন্ধ লেপে দিতে চাইছি!
তুমি তখন বলবে,-"বৃষ্টি আর একটু বেশী হলে ক্ষতি কি!- - নাকি, সেখানেও একটা প্রবল ঝিঁকুনি দিয়ে বলে উঠবে,-"এ হতে পারে না,- -এ অন্যায় - অন্যায় -অন্যায়, তুমি বিশ্বাসঘাতক!"।
তখনও আমার বুকের ভিতর- কাদমাটি মাখা সেই কৃষকটা বলে চলেছে,-"লাজ ভেঙ্গে পাগ বেঁধে- ধর ধর কোদাল ধর,- -নিজের ফসল ঘরে তোল, ওরে নিজের ফসল ঘরে তো- - - - -!"।।