নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

সন্দীপ ভট্টাচার্য



তোর জন্য
 *********         

           (১)
তোর মায়াবী মনের ছায়াপথে
আমার নামাজি আকুতি
হাটখোলা বুকে আরও একবার
নিঃস্ব হবার প্রণতি
           (২)
গজল সুরের রোদ্দুরে তুই
হেঁটেছিস শুধু উদাসীন
নূপুরের গান মনের উঠোনে
লুকোনো ব্যথার অংশিন্
          (৩)
আস্কারা দিলে বসন্ত আর
আড়াল খুঁজলে বর্ষা
দখিনা বাতাসে বৃষ্টি ফোঁটাতে
স্বপ্ন সুখের তিয়াসা
          (৪)
আগুন হয়ে আয় না ধেয়ে
জ্বলবো আমি দাবানলে
নতুন করে উঠবো বেঁচে
তপ্ত ছোঁয়ায় মরার ছলে
         (৫)
পারলে চোখের জল হয়ে যা
ভাসবো আমি পাল তুলে
চাইলে না হয় ঝাঁপই দেবো
কপালে ভাসা উদাস চুলে

বিকাশ দাস






দুষ্টুমি



তোমার নিঃশ্বাস আচম্বিত চুম্বনের গহনে
উড়িয়ে দিগন্তে    অন্তহীন রহস্য গোপনে
মোহের দরজা জানালা ভেঙে নিজের মনে
আলাপী আকাশ মেঘবরণ আমার শিহরণে 

তোমার সোহাগ মাখা বিলোল দুষ্টুমি
কবিতার মতো দৃষ্টি কাড়া স্বাধীন ভূমি
সৃষ্টি ছাড়া বৃষ্টি          প্রসন্ন মুখর সৃষ্টি
সঙ্গোপনে লুকানো ঝনৎকারে
উষ্ণ মধুর আলিঙ্গনে   তুষার-শীতল শরীর
নিরাময় 
উচ্ছিত সব কথার স্তব্ধতার  গভীরে হৃদয়
ঋতুময়  

হরিৎ বন্দ্যোপাধ্যায়



বৃষ্টি দুপুর






মেঘ করেছে এখানে খুব
আকাশ কাজল কালো
বৃষ্টি দুপুর আজকে হলেও
বৃষ্টি দুপুর নয় ।
বৃষ্টি দুপুর মানে জানি 
তোমার আমার বৃষ্টি
সেই তুমি আজ নাগালে নেই
অনেক দূরে ব্যস্ত ।
তুমিই যদি না থাকো তো
ঝরবে কোথায় বৃষ্টি ?
মনের মাঝে তুমি মানেই
বৃষ্টি মিষ্টি মিষ্টি ।
এখানে তাই বৃষ্টি মানে
সারাটাদিন কালো
সেই কালোতে ঢেকে আছে
ইজেল ক্যানভাস।
বৃষ্টি আজকে রঙ ঢেলেছে
বৃষ্টি আজকে তুলি
চোখের সামনে বৃষ্টি প্যালেট
বৃষ্টি ক্যানভাস ।
বৃষ্টি মেখে বৃষ্টি হেসে
বৃষ্টি নামে তুমি
বৃষ্টি জলের শরীর নিয়ে
ঝরছে অঝোর বৃষ্টি ।

তপন জানা



আমার দুর্গা
**********


দুর্গা দেখি পথের পাশে;ঝুপড়ি ঘরে।
দুবেলা দুমুঠো ভাতের অভাবে শুকিয়ে মরে।
ছেঁড়া পোষাকে;নোংরা চুলে
রাস্তার মাঝে ভিক্ষা করে;
উত্সব ভুলে।
দুর্গা দেখি খাওয়ার দোকানে চায়ের ঠেকে;
বাসন মাজে; কাপ ধোয় দুঃখ শোকে।
সন্ধ্যা বেলা বাড়ি ফিরে জ্বর গায়ে;
ঠান্ডা ভাতে পেট ভরায় মায়ে ঝিয়ে।
দুর্গা দেখি বেশ্যালয়ে;খোলা শরীরে
সারাদিন রাত শরীর বিকোয় টাকার তরে।
শরীর নয়তো ;বিবেক বিকায় অনাহারে মরার ভয়ে।
দুর্গা দেখি পাহাড় কোলে তপ্ত রোদে
মাথায় কাঠের বোঝা নিয়ে।
বুকের পাঞ্জরে মচকা লাগে হাওয়া র ঘায়ে।
দুর্গা দেখি খনির ভেতর কয়লা  কালো চামড়া নিয়ে;
জট পাকানো লাল চুলে পাগড়ি বেঁধে।
দুর্গা দেখি ইট ভাটায়;চা বাগানে ;তামা খনির গর্ভে
কাদে অর্ধাহারে;অনাহারে।
জীবন যুদ্ধের ইতিহাস লেখে
বন্ধ কারখানার হাড় পাঞ্জরে।
দুর্গা  দেখি ঝোপের আড়ালে;ফাঁকা মাঠে;বন্ধ কারখানার ফাঁকা ঘরে
রক্তাক্ত উলংগ শরীরে মরে পড়ে।
রাতের হিংস্র অসুরের দল ভীষণ লোলুপতায়;ধারালো কামফলাকাগ্রে তারে খেয়েছে ছিঁড়ে।
তবু দেখি আমার দুর্গা
রোদে পুড়ে তামাটে শরীরে
সকরুন দৃষ্টি নিয়ে হেটে যায় জীবনপথে।
আগামীর নব অরুন প্রভাত দেখাবে বলে এই নতুন সভ্যতাকে।

মহ. ওলিউল ইসলাম




★ওদের বৃষ্টি,তাদের বৃষ্টি★ 
  ****************



অট্টালিকার শরীর ধুয়েছে শখের বৃষ্টি| 
ফিকে হওয়া রঙ,রাঙিয়েছে ইমারতের গা | 
ভেতরের মানুষ গুলো বেশ সৌখিন মেজাজে| 
কিছু মুচ্ মুচে গরম খাবার,রকমারি পাণীয় সহযোগে! 
সবক্ষণে সঙ্গীর আলতো আদর,--- 
খেয়ালী মনে ভাটিয়ালী জোয়ার| 
সময় গুলো যেন ছোট হয়ে আসে, 
দুটি দেহ বাধা পড়ে আছে| 
--প্রাণের পণ, --স্বাদ কুড়াবে, ক্ষান্ত হবে তবে| 
তখনো,--- বৃষ্টি টিপ্ টাপ অনুরাগের শব্দ ছড়ায়| 

এদিকে আবার মাথা গোজা ঠায় গুলো মাথায় ঠেকে আছে| 
নির্মম সেজে, বৃষ্টি এখন রাগী মহারাজ| 
--রাগের বহর খুব দেখেছে তারা, 
গৃহহীন মানুষ অভিশপ্ত খোলা আকাশের নিচে | 
দুঃখ-ব্যথা ত্রিপলের দেহে,স্বস্তি  কোণায় ঝোলে| 
ক্ষণ গুলো সব লম্বা হয়ে,যেন আকাশ ছুঁয়ে আছে | 
বৃষ্টির জল মাথা চুঁয়ে  ঠোঁটের কিনারায় ঝুলে,----- 
রসদ জোগায় খুব! 
বেপরওয়া, নিষ্ঠুর সেজে বেদনা ছড়ায় গৃহহীন মানুষের মনে। 
শেষ রাগ কবে হবে শেষ, 
সে সংকেত এখনো পায়নি মুহূর্ত | 

সিদ্ধার্থ সিনহামহাপাত্র





তমসা, এক অতৃপ্ত আঁধার!!!
********★****************★**




আমার প্রাক্তন প্রেমিকা তমসা,
রাত্রির গর্ভে জন্মানো এক অতৃপ্ত আঁধার।
অমাবস্যার গাড় সৌন্দর্য ছুঁয়ে গেছে তার শরীর,
পূর্ণিমার বাসি চাঁদ ব্যঙ্গের আলপনা এঁকে দেয় তার কপোলে।

আমার প্রাক্তন প্রেমিকা তমসা,
আমায় ভালোবাসত অক্সিজেনের মতো।
আমি কখনো ভালোবাসিনি তারে,
তার শরীর জুড়ে কালো কার্বন আমায় বিষিয়ে দিত।
শশ্মান ভূমি থেকে উত্থিত অগ্নিবিষ্ট কাষ্ঠের ন্যায়
তার শরীরে দেখেছি নরকীয় আঁধার।
গভীর স্নেহাবিষ্ট চুম্বন আমার শুভ্র শরীর পুড়িয়ে দিত।
আমি ভালবাসতে পারিনি তারে,
শুধু তার উন্মুক্ত শরীর, উদবাস্তু যৌবন
ছিল আমার ক্ষুধার্ত অভ্যেস।
আমি ভালোবাসতে পারিনি অমাবস্যার অবৈধ কন্যাকে,
শুধু রাত্রির অন্ধকারে চার মিনিটের মিথ্যে অভিনয়ে
উগরে দিতাম সব ঘৃণা, মিটিয়ে নিতাম সব অবৈধ তৃষ্ণা ।

তমসা আমার প্রাক্তন প্রেমিকা,
তার কুঁকড়ানো অবিন্যস্ত চুল, পাশবিক নখ, বিবর্ণ দাঁত
এক কুৎসিত প্রেতকায়ার জীবন্ত মূর্তি।
আমি ভালাবাসতে পারিনি তারে,
শুধু তার শরীর আঁচড়ে-কামড়ে-খুবলে খেয়েছি,
তার পাউষ চোখ সয়ে গেছে সব ভালবাসা, সব ঘৃণা।
যতই ঘৃণা করেছি, উগরে দিয়েছি ক্ষোভ,
সে ভালোবেসে গেছে অবলীলায়, চেয়েছে প্রতীকী স্থাপন।

তারপর একদিন ঘন ঘোর বর্ষায়
তার তমসাচ্ছন্ন গর্ভে আমার অবৈধ বীর্যপাত,
বর্ষার স্বাচ্ছলতায় পিতৃহীন শুক্রাণুর অঙ্কুরোদ্গম ।
বন্য অন্ধকার মুছে ফেলে, একাকীত্বের গিরিখাতে
তমসার বিসর্জনে আমি ফিরেছি সামাজিক আলোয়।

কেটে গেছে কত দিন, কত কাল না জানি,
বৈধতার উঠোনে, সামাজিক সম্পর্কের গাঁটবন্ধনে,
আমার হৃদয় দুয়ারে শুভ্র জ্যোৎস্নার মতো  অর্ধাঙ্গিনী।
রজনীগন্ধার শুভ্র বিছানায় আমি তারে করি আমন্ত্রণ,
নিয়নের বাতি সব নিভে যায়, মিলনের সেই পূর্বক্ষণ ।
অন্ধকার, ঘন অন্ধকার, অতি ঘন অন্ধকারে মিশে যায়
বাসরের ঘর, শুভ্র অর্ধাঙ্গিনীর অতৃপ্ত প্রথম প্রহর।
বিস্ফারিত চক্ষু মেলে চেয়ে থাকি আঁধারের তরে,
উন্মুক্ত শরীরে তমসা চেয়ে আছে ভালবাসার নীড়ে,
প্রেতকায়ার মত স্নেহাকাঙখী এক অপূর্ণ মুর্তি
জীবনের সরল সমীকরণে শুধু পেতে চায় ঘৃণাবর্জিত প্রেম।
আমি ভালোবাসতে পারিনি তারে, তার নিবিড় তৃষ্ণার্ত চোখ,
জীবন্ত ফসিল হয়ে জ্বলতেই থাকে আমার অপত্য স্নেহের খোঁজে।