নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

মনোজ কুমার ঠাকুর




ব্যর্থ আমি
*******


.
আমি তখন ঘোর আশোয়ার 
যখন কিরীটী হবার লক্ষ্য সবার,
হারিনি আমি, শুধু হেরেছি তোমায়,
এ কি আমার বড় হারা নয় ?
কিরীট আমি লভেছিলাম তবে
তখন তোমার সাথে বিচ্ছেদ সবে,
সফল আমি বদ্ধ পাগল
অহংকারের কাসার ছিল অতল ৷
তোমায় পেল অভিমানের পীড়া
নিমেষে বদলে গেল তোমার ইরা ৷
নীরবে নিভৃতে চোখ মুছতে
অবহেলাতেও অভিমান খুঁজতে ৷
দিন গুনতে প্রত্যাবর্তনের
আমার মনে অহংকারের বেড় ৷
তারপর একদিন বেরোল তোমার জানাজা,
ক্রমাগত শুরু হল আমার সাজা ৷
বদ্ধ পাগলের হুশ ফিরল
একাকীত্ব এসে ঘিরল,
অনুভূত হল তোমার অনুভূতি,
শুরু হল মোর ব্যর্থ আহূতি ৷
বুঝলাম আমি চুকে যাচ্ছে সব
মন তবু হল জেরবার,
সূচনাতেই যদি বুঝতাম আমি
পালটে যেত আজ উপসংহার ৷

সুকান্ত মণ্ডল





বৃষ্টি নামলেই
 **********


বৃষ্টি নামলেই-
তোমায় মনে পড়ে
বৃষ্টি নামলেই-
মন মেঘলা করে
জমে থাকা কান্না-
     চাপে স্রোত হয়;
ভরিয়ে দেয় হৃদয় নদী।

ব এ বর্ণমালা ( অ - ক্ষ )(তৃতীয় পর্ব)





মাধব মন্ডল 


কবি পরিচিতি:
সাংবাদিকতায় এম. এ.; বি.এড.।১৯৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত একফর্মার কবিতার বই ‘ছায়াপাত’।আনন্দবাজার ও বর্তমান পত্রিকার প্রশংসা পেয়েছিল।ছড়া এবং কবিতা নিয়ে লেখালেখি।বর্তমানে ফেসবুক ও বাংলা কবিতা.কম এ নিয়মিত লেখালেখি।রাজ্য সেচ দপ্তরে কর্মরত।ছোটদের একটি স্কুলের সম্পাদকও।১৯৬৮ এর মার্চে জন্ম।জন্মস্থান সুন্দরবন,বর্তমানে সোনারপুরে বাসস্থান ।


(তৃতীয় পর্ব)




ঠিক কতটা বাসলে ভালো
ঐ তো আমাকে জানাল
চোখেতে ফোটে বৈশাখি আলো
কি বুঝি আর ও কি বোঝাল
খুঁজে খুঁজে মরি ঐ তো খোঁজাল
ভ্রুতে আলপনা আঁকলে চোখ যে বোঁজাল।

এ কি ভালবাসা?
মনে হয় মায়ার পিপাসা
তাই বারবার ঘটে শুধু তামাসা
দোল দোলে আশা আর নিরাশা
আর হঠাৎ কুয়াশা
কেটে গেলে জেগে ওঠে আশা।



এত ভিজে ভিজে ভালবাসা,এত্ত
আর এত্ত এত উপোস,নির্জলা
তাই এত ভুগি সর্দি কাশিতে।

জানি তোর ভয় নেই কোন
নিজে চলিস নিজের মতো
তোর আশারা জেগে উঠুক।

আমার বোঝা মিথ্যে হোক
মিথ্যে হোক মিথ্যে হোক
মিথ্যে হোক আকাশে গড়াগড়ি।

ভূত্বক ফুঁড়ে কেঁচোর মাটি উঠুক
গর্ত ধরে ঢুকে যাই কুমারী কেঁচোর কাছে
বলি গিয়ে দেখ দেখ পেয়েছি কত ভালবাসা।

কত কত্ত ভালবাসা,ভালবাসা
বলি গিয়ে শুয়ে আছে নরম গদিতে
প্লাস্টিক দেয়াল,শ্বেত পাথরের মেঝেতে।



সিগন্যাল লাল
থামো থামো থামো
দরাজ নয় ওটি
রাখো পাকামো!!

কেউ নেই পথ চেয়ে আর
ঘুম নেই তোর ক্যানো?
পথ সব বেছে নিল যে যার
পড়ে থাক চুপচাপ ন্যাতানো।

গান এলে কানে
ছিঁড়ে ফ্যাল কান
চিল ডেকে খাওয়া
বাঁচা তোর মান।



আমি তো লতপতে মাল
এত টাকা তোর
পাথর বসানো চক মেলানো তোর ঘর
আমি বেমানান
ছেঁড়া খোঁড়া হয়ে আছি ভাই!

ভালবাসা নয় কোন এক মায়া
ছুঁড়ে ছুঁড়ে দিস
দুব্বোর হাড়ে গজাবার মতো।
দু'হাত উপুড় করা
খালি নেই নেই করা!!



আমার জন্মদিনে কেউ পায়েস করেনি কোনদিন
বাবা কি কোথাও লিখেছিলে নাকি?
কোনদিনও স্কুলে না যাওয়া মার কি মনে ছিল জান?
সেদিন বর্ষা বাদল
বেস্পতিবার!

এমনটাও নয় যে
আমার উপরের আট আর নীচের একজন
জন্মদিন উপহার পেয়েছিল।

আসলে, কি বলি
বিদ্যাধরীর নোনা হাওয়া
ঐ নোনা হাওয়াই জন্মদিন খেল।



আমার ঘুম কেড়ে খা
ঘুমের ভেতর গাল পাড়
দশ ভূত লেলিয়ে দে
সব চুল তুলে নে
গালটা তুবড়ে দে
ঘুম পেলে বরফে বসা আর
পায়খানা পথে পুলিশি গাদন দে।

তবুও নৈরাশ্য নয়
হবও না বুদ্ধ অনুগামী
আমি তো আমার মতো
চিৎ হই,উপুড়ও হই।



আমার সংশোধনী আমি নিজে
তুমি তো নিষ্ঠুর ঘাতক
আমি খানা খন্দ লাফিয়ে সকালকে ডাকি
তুমি ভাব সকাল তোমার প্রাপ্য
পাখিদের সুর শেখাই,আর
তুমি বলছো ও পাখি তোমার!

এতটা মিনিট,সেকেন্ড
শুধু তোমারই তর্জনী গিললো
আমি বলি কি,কি বলি?
পদচ্যুত করে তুমি শীর্ষ ছোঁও
আমি শুধু একটু অন্ধকার চাই
আমি যে আমার নিজের সংশোধনী।



দুটো চড়ের দাগ আজও আয়নায় দেখি
স্পষ্ট দেখা যায় ওদের
মানুষের আয়না এটা তো নয়
কথা কিছু কিছু মনে আছে
অজস্র বেবুঝ জল
কিছু কি শিখেছি?

একটু একটু কানমলা খাই
একেক করে শিরা ছিঁড়ি
বস্তাবন্দি করেছি বেয়াদপি,হায়!
তবুও মানুষ হতে এখনও অনেক বাকি।



সবটা দিয়েছি
কোথাও রাখিনি একতিল
তাহলে কিসের এ যুদ্ধ
যুদ্ধ!
এ কোন ভালো থাকার অন্ধকার
এত নৈরাশ্য
এত বিচ্ছিন্নতা
এত ঘৃণা ফুটে ছিল?
আমি কি এতই অধম!

মিনিট সেকেন্ড সেকেন্ড মিনিট
আষ্টেপৃষ্ঠে প্যাঁচানো
কি করে কেটোছো গুণী?
ফুটো ফুটো বাসা আমার
অসম্ভব চাঁদনি কলরব
এই কি ছিল তোমার চাওয়া!



আহা,কি সুন্দর
কি দক্ষ সিদ্ধান্ত তোমার
পুকুর সেঁচে মাছেদের বলছো ভাল আছো?
কখনও বলছো আরে ভয় কি
ঐ তো মেঘ আসছে
ঐ বৃষ্টি নিয়ে
এক নম্বর
ন'নম্বর
চার নম্বর
ঐ তো আসছে ওরা
প্যান্ডেল বাঁধো
লাগাও প্রতিটা দিবস জম্পেশ
গোলাপ দামী হলে মোরগজটাই আনো।

আহা,কি সুন্দর বল তুমি!
কোটেশন করে বাঁধি
কারোর বৃষ্টির আর নেই ডাকাডাকি
কাদা জলে আর কখনও বা পাঁকে
শান্ত উদ্বেগে সময় জাপ্টে বসে আছি।



একটা একটা করেই মারছি
একান্ত ভুল
একটা একটা করেই তাড়ছি
অশান্ত গুল।
একটা একটা স্মৃতি মাকড়
রক্তে ভাসে ঐ
একটা একটা শেকড় বাকড়
জ্বলে আসে ঐ।

একটা একটা মিনিট যাচ্ছে
মন শুখাচ্ছে না
একটা একটা ঝড় যাচ্ছে
নাগাল পাচ্ছে না।
একটা একটা কথা ভাসছে
গায়ে মাখছি না
একটা একটা রোগ হাসছে
রক্তে রাখছি না।



ভুলে তো খেয়েছে গুলে
জলগুলো ফলগুলো
ছুটে এসে গেল ফুটে
চুলগুলো ফুলগুলো
তোলা তো রয়েছে কানমোলা
রাগগুলো ফাগগুলো
গোলা তো মেরেছে ঝোলা
ধানগুলো পানগুলো।

পাখি করে ডাকাডাকি
ফুলগুলি ফুলগুলো
রাতে আসে কাটতে
ভুলগুলি ভুলগুলো
পাশাপাশি কাছে আসি
তাপগুলি তাপগুলো
খেটেমেটে খাই পেটে
ভাতগুলি ভাতগুলো।



প্রত্যেকটা প্রত্যাখ্যানে হাজারো রক্তক্ষরণ
কি যন্ত্রণা কি মরণ এমন মরণ!
আমি তো নিজস্ব ভূত্বকে কামড়ে ধরি তোমাকেই
কীট জ্ঞানে আছাড় মারলে!
কি আশ্চর্য,বিষে কেন ছটপট কর তুমি!

কি কপাল আমার!
এতকাল দেবদূত সাজালাম পরস্পরে
মিনিটে মিনিটে ভগ্নাংশে পূর্ণভাবে
নৈবেদ্য নিয়েছি দিয়েছি কত
আর আজ!

এত কষ্ট কাটে তোমাকে
তুমি বলেছিলে না
হায়,কি করি এখন!
তুমি এখানে এভাবেই বিশ্রাম নাও
চললাম আমি.......

কে দেখি পারে এক চুমুকে এক শ্বাসে
ধোঁয়া ওঠা বিষ শুষে নেয়
হে খোলা মাঠ,হে শীর্ষ বাঁশের আগালি
হে বর্ণমালা,হে একাকীত্বের শব্দ
আমাকে গুঁড়ো গুঁড়ো কর

আমার বিস্ময় বিষকে গুঁড়ো গুঁড়ো কর
হে পুকুর পাড়ে গজানো থানকুনি
হে দুব্বো,হে তুলসী,হে বুনো ফুল
হে আমার মালা বদলের রজনীগন্ধা
আমি তো দুর্বিপাকে বিপন্ন,জল খেলি শুধু।



(ক্রমশ...)

রহস্য কাহিনী(তিন)







দেবাশিস মুখোপাধ্যায়

2/401 Urmila Apartment .
Gorai Complex. Bagnan.
Howrah 711303.


          (তিন)


১১.

মেয়ে গায়

জল তরঙ্গে নূপুর ভেসে যায়

মাছরাঙা পাখিটির দেশে

দোল খায় চোখ

আর ক্রমশ রঙ্গিন আকাশের মাঠে

খেলা চলে রোদ ও ছায়ার

মায়াবী অক্ষর গাছে গাছে

সুস্বাদু পথের জানালায় বাহবা তুলি

আরো কিছু এঁকে দিলে

সাদা কাগজের যেমন খুশি সাজ

বাড়িতে উৎসব গন্ধ

এসব কিছুই দুঃখ ভুলানি উপকথা

ঠাকুমার কণ্ঠটি কেঁপে কেঁপে

ঝুলির ভিতর নামের মালাটি জপে

আর বর্ষার মাঠে বীজতলা

তৈরি হলে কষ্টের ভিতর

ভাতের পুরনো সুবাস ফিরে আসে

সে ঘরে ফিরে নি কেউ বলতে পারে না

১২.

একটা ভাঙাচোরা বাড়ির নীচে

শূন্য আর স্বপ্ন বুনে

সময় কেটে যায়

ঘুম বিদায় নেওয়ায় তার জায়গা

নিয়েছে তোমার প্রিয় নাম

এই যে বর্ষার দিনে মেলে

তোমার দীর্ঘ চুলের বাহার

মাঝে মাঝে সেখানে

সেজে ওঠে বর্শা রঙের ক্লিপ

রাত্রির শরীরে

কেঁপে ওঠে

এক মধুর ঝড়

ধ্বংসের ভিতর এক কালো নদী

শূন্যতার মাঝখানে গড়ে

তোলে রাত্রির এলো চুলের

অস্পষ্ট স্মৃতি

মৃত জোছনায়

আছড়ে পড়েছে কান্না

সাগরের গুমরে গুমরে


সায়ন্তনী হোড়



বৃষ্টির রেখা
**********



একটা সর্পিল বাঁকের কাছে
লুকানো আছে মরচে পড়া কথা গুলো
রূপকের আড়ালে তার অবশিষ্ট অবয়ব।

ব্যক্তিগত টেবিলের সেই নীলচে খামের 
ইতিহাস পড়তে পড়তে  
বৃষ্টির সোঁদা গন্ধের অবচেতনে
 নিজেকে হারিয়ে ফেলি।

বৃষ্টির উল্টানো প্রতিফলন। কিছু অসমাপ্ত 
 শব্দের জ্যামিতিক আকার।
বিন্দু  থেকে চতুর্ভুজে অঙ্ক মেলানোর সময়
  হয়তো আমাদের চুপকথার মিলন হবে এক
  অশরীরী বৃষ্টির  সরলরেখায় ।।
                                  

শুক্লা মালাকার



বর্ষা লেখা



যেদিকে তাকাই মাইল মাইল সবুজ
দূরে দিগন্ত রেখা বরাবর আকাশ বিষাদ সাজিয়েছে
এখানে এই নির্জন ডুয়ার্সে ধ্বসে পড়েছে শহুরে মুখোশ
কয়েকটা মুহুর্ততারপরই ধেয়ে এল কান্না
বৃষ্টি কুয়াশায় ঢেকে গেল প্রান্তর
এই অপরূপ দৃশ্য মেখে ভেসে যাচ্ছে যত প্রেমহীন দিন
বিপ্লবী জলহাওয়া উড়িয়ে নিল ক্লান্তির চাদর

এখন কেউ দুটো ভালোবাসার কথা বললে
দু চার লাইন লিখেও ফেলতে পারি