নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

অসীম মালিক

টোপ
****              


মাছ ধরতে মাছের টোপ যেই দিয়েছি আমি , 
রুপোলি মাছ , সোনালি মাছ টোপ গিলেছ তুমি । 
মাছের টোপে মাছের খিদে কক্ষনো কী সাড়ে ? 
বড়শি হাতে ঘাটের দখল মনের অসুখ বাড়ে । 
টোপ গিললে ছিপুরে খুশি খেলায় অথই জলে , 
রাজাও কী এখন ছিপ ফেলে নদী নালা বিলে ! 

কোন নদীতে কী মাছ থাকে কোন টোপেতে খুশি , 
রাজাকে রোজ খবর পাঠায় আমার পাড়া পড়শি । 
ঘাট বদলে টোপ পাল্টায় রাজা , পাল্টায় না সমাজ 
মন্দিরে গিয়ে পুজো করি মসজিদে পড়ি নামাজ । 
শিক্ষা , স্বাস্থ্য , অন্ন-সংস্থান কমন কোনও টোপ নয় , 
যদি বিশ্বাস হয় মঙ্গলঘট , চাল কলাতেই তুষ্ট রয় । 

রামের চর্চা কিসের ভরসা কোন আগুনের টোপ , 
কেঁচো আজও কৃষক বন্ধু , রক্ত চোষে জোঁক । 

বিশ্বজিৎ ভৌমিক

বৈশাখ এলো 
**********


আবার এলো বৈশাখ ফিরে,
লাগছে ভীষন ভালো।

মনেতে আজ খুশির জোয়ার,
নাচতে থাকে হৃদয়ও।

আকাশ জুড়ে মেঘের খেলা,
চোখ ফিরালেই আর দেখা নাই।

গাছে গাছে আমের মুকুল,
সুবাস তার হাওয়ায় হাওয়ায়।

বৈশাখ এলো নদীর তীরে,
বটবৃক্ষের ছায়াতে।

বৈশাখ এসো নতুন দিনের,
স্বপ্ন-রঙিন আশাতে।

বৈশাখ থাকুক সবার প্রাণে,
স্নেহ আর পরম ভালোবাসাতে।‌।

সৈকত বণিক

 নিরুদ্দেশের শেষে 
*******************




একটা দেশলাই কাঠি জ্বালালাম
হঠাৎ যেন আঁধার নেমে এলো 
চলে গেলাম সিন্ধু সভ্যতার ৩৪ ফুট গভীর স্নানাগারটায়... 
আড়াল থেকে দেখলাম নগ্নতার বেশে তোর অর্ধসিক্ত তনুরাশি। 
কিন্তু সেই দেহটায় আজকের মতো কালো দাগ খুঁজে পাইনি তো... 
বুঝলাম পাঁচ মাথার ভিড়
আর পার্ক স্ট্রিটের ধোঁয়া- তোকে বড্ড বেশি আপন করেছে... 
আজও কিন্তু আমি তোর চোখে 
একটা নকশী কাঁথা আর একটা সাজুকে খুঁজে বেড়াই... 
কিন্তু তোর পছন্দ তো গুচ্চিও গুচ্চির ডিজাইনার 
আর ইসাবেলা মার্চেন্ট। 
সত্যি ঐন্দ্রিলা, আমার ভালো লাগে না
ভালো লাগে না, যখন সবাই তোর বুকের খয়েরি তিলটা দেখে
নিজের বুকে হাত ঘষে। 
তুই তো জানিস, দক্ষিণেশ্বরের ঘন্টা 
আর সোনামা'র মুড়ি মাখা আমার কতটা প্রিয়! 
তবু বারবার কেন শরীর দোলাতে নিয়ে যাস
ডিজে-লাউঞ্জের ডান্স ফ্লোরে??
কেন রোজই বার্মিস ককটেলের পেগে চুমুক দেওয়াস???
না ঐন্দ্রিলা, আমি পারবো না 
স্টারডাস্টর কভার পেজে তোর নাভির পাশে সূর্য দেখতে... 
তুই বরং ছুটির দিনে আমায়
মুগের বড়া আর মোচার ঘন্ট খাওয়াস, 
পারলে শোনাস দক্ষিণেশ্বরের ঘন্টা।
স্বপ্নে বরং নিয়ে যাস হরপ্পা-মহেঞ্জোদড়োয়...



-জিবেন্দু রাজবংশী

অভাব হলেও হারিনি 
*******************



তুচ্ছ হলে কি হবে!
রাতে সরু গলির মোরে আমার কদর এখন অনেক।
ওই যে সমাজের লোকেরা কি যেন বলে আমায় বেশ‍্যা নাকি?
বলি হে বড় বাবুরা আজ তোমরা যারে বেশ‍্যা বলো,
আমার পেছনের হিস্ট্রী একটু শুনবে চলো।
এক কালে আমার বাবার টানের সংসারে অভাব পড়েছিল খুব,
তা দেখে আমি থাকতে পারিনি চুপ।
তবে সার্টিফিকেটের উপর ভরসা ছিলো বটে,
রোজগারের দায়িত্ব তো আমাকেই নিতে হবে মাথায় উঠলো চটে।
এই এম.এ পি.এইচ.ডির যুগে কমদামী মাধ‍্যমিক পাশের সার্টিফিকেট কি হবে শুনি?
মুদ্দা কথা গরীবের মেয়ে তো ঘুষের টাকা দিতে পারবো নি।
তাই সরকারি চাকরি আর করা হয়নি,
বেসরকারি কোম্পানি গুলোতেও টাকা দেয়না খুব একটা কমী!
এদিকে বাপটাও আমাদের ছেড়ে ইহলোকে গেল চলে
এ আবার নতূন কি?
আমি মা আর ভাই পরলাম বড় অভাবের গেরাকলে।
ভি.আই.পি অফিসের দরজায় কত ঘুরলো আমার দু-পা,
টাকা ছাড়া গতিক নেই জীবন করছিল খাঁ খাঁ।
কালো কোট পরা বাবুরা চাইনি আমার কমদামী সার্টিফিকেট,
চেয়েছিলো সাধাসিধা গরীব মেয়েটার উষ্ণ শরীরের স্রোত।
গরীব হলে কি হবে আমি কিন্তু অনেক দামী,
তাই দেয়া-নেয়ার চাকরিটা আর হয়ে ওঠেনি।
একদিকে দারুণ অভাব আর অন‍্যদিকে গরীবত্বের অভিশাপ,
শেষমেষ নিরুপায়,দামী শরীরটা নিয়ে দিতেই হলো ঝাঁপ।
না না মৃত‍্যূতে নয় বাবুদের একটু উষ্ণ স্বাদ দেবার তরে,
মরতে পারলে তো বড়জোড় বাঁচতাম,
কিন্তু আমি হারিনি টাইপরা কথ‍্যবাবুদের কাছে,
আজও অন্ধকার রাতে মেদ জমে যাওয়া বাবুরা টাকা নিয়ে ছুটছে আমার পাছে।।
                            

সুকান্ত মণ্ডল

 আমি বৈশাখ 
**********



চৈত্র তুমি ভালো থেকো-
আমি বৈশাখ এসেছি বাংলায়।
নতুন করে সৃষ্টি হব ,আবার ধ্বংস ও হবো;
মনে মনে বাঁধব এক আকাশ শপথ।

ইচ্ছে হলে, ভালবাসা হয়ে ঝরবো-
           সবুজের পাতায় -পাতায়।
জলোচ্ছাসের প্রেমে আনব শস্যোচ্ছাসের বিপ্লব ।

আবার, ইচ্ছেমতন ধুয়ে ফেলব-
   নরপিশাচদের শিরায়- শিরায়।
অবক্ষয়ী আমার দেশে বেলাফুল হবে চিরবিরাজিত।


শুভদীপ পাপলু

সাডেন ডেথ
 ***********



অন্য ঋণের সাতসকালে,
কালো মানুষের ছাল
তোমার দেহে গাছ পুঁতেছে,
শুকনো লংকা'র ঝাল।

বাকি যুগের হিসেব খাতা,
সাইরেন-এ কফি মাগ
কলমপেষা জীবিকা তোমার,
আমার দেশ ভাগ।

কড়িবরগায় নকশালবাড়ি,
আসমুদ্র হিমাচল
ছন্দ হারুক তোমার নিচে,
আমার কর্মফল।

কাল কিশোরী'র রান্নাবাটি,
ইছামতি'র কূল
তোমার ওজোন্ বাড়ছে খুব'ই,
আমার ভাতে ভুল।

তোমার ছবি দ্য ভিঞ্চি মুখ,
শ্রমিক শ্রেণি'র ঝি
তোমার চোখের আইন অমান্যে,
ব্যারিকেড ভেঙেছি।