নোটিশ বোর্ড

" নিকোটিন 2.0 এর নতুন প্রজেক্ট "ক থা হো ক" এর জন্য শীঘ্রই আপনার সেরা লেখাটি এক্ষুনি mail করুন nicotinemagz@gmail.com এ প্রতিদিন সকালবেলা প্রকাশিত হবে

বিশ্বজিৎ ভৌমিক


"মহান ২১শে"
************



আবার আসিয়াছে আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো ২১শে ফেব্রুয়ারি---

বাঙালি জীবনে ২১শে ফিরে ফিরে আসে নবজীবনের ডাক নিয়ে।
২১শে ডাক দিয়ে যায় উদ্দীপনের, উজ্জীবনের।
২১শে আমাদের বাতিঘর মননের।
২১শে মহিমামণ্ডিত করিয়াছে বাঙালি জাতিকে,
১৯৫২ সালে মাতৃভাষার মর্যাদা ও অধিকার রক্ষার দাবিতে।
মিছিলে শ্লোগানে প্রকম্পিত হইয়াছিল সেদিন গোটা বাংলাদেশ।
রফিক, সফিক, সালাম, বরকত, জব্বারের বুকের রক্তে,
যে ইতিহাস রচনা হয়ে আছে,
উহাই বাঙালি জাতীকে---
মাথা নত না করিবার,
চিরকালীন প্রেরণা যুগিয়েছে।।

অসীম মালিক





মা বলে ডাকলে
***************

          
       
মা বলে ডাকলে সোনালি ফসলে
ভরে ওঠে খামার বাড়ি ।
ঘোমটায় ঢাকা লাজুক গ্রাম
পড়ে নেয় পাতার শাড়ি ।

মা বলে ডাকলে উঠানে উঠানে
পড়ে যায় ছড়াঝাঁট ।
রূপশালি ধানে ভরে ওঠে
আদিগন্ত খোলা মাঠ ।

মা বলে ডাকলে দুর্গাদালানে
শুরু হয় সিঁদুর খেলা ।
কোজাগরী চাঁদ আল্পনা দেয়
মরসুমি ফুলের দোলা ।

মা বলে ডাকলে রমজানি চাঁদ
তুলসী মঞ্চের প্রদীপ ।
লক্ষ্মী দালানে ভোরের আজান
গোলাপি রঙের টিপ ।

মা বলে ডাকলে অ আ ক খ
নয়তো ধূমকেতু ।
অমর একুশ হাঁক দিয়ে যায়
বাংলা ভাষার সেতু ।

বিকি দাস




বাংলা ভাষা আমার মায়ের মতন
*************************



একটা গভীর রাত পেরিয়ে যেমন নতুন সকাল আসে। নতুন আলো, নতুন দিনের সূচনায় আমরা ব্রতী হই। ঠিক তেমন'ই আমার বাংলা ভাষা। আমার ঠোঁটে নিয়ে কথা বলবার অধিকার। সারাদিন ইংরাজিতে কথা বলে যখন ক্লান্ত হয়ে ঘরে ফিরি, তখন এক বাংলা ভাষার মা তার স্নেহময় আঁচলে আমায় ঢেকে রাখে। তাই তো বাংলা ভাষা তোমায় ভালোবাসি।
কৃষ্ণচূড়া ফুলের মতন আমার ভাষা। আমি যেমন মা'য়ের কাছে আমার সুখ দুঃখগুলি বলতে পারি। ঠিক তেমন'ই আমার বাংলা মা আমার সব কষ্ট বুঝতে পারে।
রোদ্দুরে জবা ফুলের ন্যায় লাল আমার ভাষা, আমার বাংলা ভাষা। আমার প্রথম কথা বলা, আমার হাত ধরে চলতে শেখা আমার ভাষা। বাংলা ভাষা আমার মায়ে'র মতন ।






একুশ
 *****



"পদ্ম পাতায় শিশিরজলে লেখা আছে স্বপ্ন ভোর।
এই প্রজন্ম জাগিয়ে রেখো বুকের মধ্যে একাত্তর।
বাংলা আমার মাতৃভাষা,
বাংলা আমার ভালোবাসা।
গর্ব আমার বাঁচিয়ে রাখি জন্ম থেকে জন্মান্তর।"

রিক্তা মুখার্জি



*অমর একুশে*
************


জননী, আমার গর্বিতা জননী,
দেখ তোমার ছেলের লহু জননী,
গড়িয়ে লাল এই মাটির বুকে,
তোমার গৌরব তুলে ধরতে
তারা জেগেছে শান্তির চিরহরিৎ মুখে।

ভুলেছে জোছনাস্নাত চাঁদনী রাতের ফোয়ারা,
গায়ে মেখে কত রক্ত, ঘাম,বুলেট,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।
ও আমার স্বাধীন জননী,
সমুদ্র নদীর রক্তজলায়
তোমার ছেলেরা রয়েছে সেথায়,
পাহারারত বিনিদ্র রজনী।

আকাশের বিদ্যুৎ ঝলকের মত জেগে ওঠা
তোমার রূপেরঘটায়, প্রকৃতির ঘ্রাণে,
সবুজের ঘোমটাপরা উদার দিগন্তরেখা জননী,
ওরা এনেছে স্বাধীন বাংলায় শান্তির পায়রা,
তুলে ধরেছে পেশিবহুল হাতে
এই মানচিত্র, সবুজের মাঠ,
কৃষাণের লাঙল, পতপত করে ওড়া
লাল সবুজ সমুজ্জ্বল তোমার আঁচল জননী।
ওরা এঁকেছে সুউচ্চ তাল-তমালে
স্বাধীন সূর্য লহুর প্রেম, প্রশান্ত বায়ুর অবনী।

হিমালয়ের শিখর ছড়িয়ে
বাংলার স্বর্গ তুলে দিতে
ওরা জেগেছে বিনিদ্র রজনী,
অজস্র বুলেটের আঘাতে
ঝাঝরা বুকের কাঁপুনি,
মরেও ওরা মরেনি,
মরেও ওরা মরেনি।
হে আমার দুখী বাংলা জননী,
তোমার চোখে অশ্রু মুছে,
ওরা লুটিয়েছে তোমার শিয়রে,
হাসি হাসি দিবস রজনী।

ওরা এঁকে গেছে ভাটিগাঙ স্নিগ্ধ জল হাসি,
শত শত মাইল সুবিস্তৃত তটে,
তোমার ঢেউয়ের বাঁশি,
বীরের সমুদ্রজলে দিগন্ত প্রসারিত
ডানা মেলা গাঙচিল, সারস,
সূর্য ছুঁয়ে সদা জাগ্রত মাঝির তরণী,
ও আমার শান্তির জলপাই পাতা জননী।
জেগেছে ওরা তোমার শিয়রে
হাসি হাসি মুখে দিবস রজনী।

রূপা রায়




একটি দিনের তাৎপর্য
*****************



তাৎপর্যপূর্ণ দিন না দিনটির তাৎপর্য!
শহিদের বেদিতে ফুল না ফুলের
সজ্জায় শহিদ!
   প্রতিটি দিন আসে প্রতিটি দিনের মতো।
সব দিন ই সমান
কেউ জানে না কোনদিন কখন তারিখ হয়ে যায়;
ইতিহাসের পাতার কোনো গুরুত্বপূর্ণ
অধ্যায় সৃষ্টি করে সে।
  জীবনের আয়ু যেমন কল্যানপুত কর্মে
দিনের মাধুর্য তেমন মানুষের বিপ্লবের উচ্ছ্বাসে।
  অধিকারের মান্যতা বোঝার বিড়ম্বরতা,
খসখসে কলমের কালির লেপন কাগজের পাতায়।
দিবসের অন্ত নেই
আর নেই প্রকাশের মাধুর্য;
দিন আসে দিন যায়
শহিদ অমর হয়,
তুমি আমি ফুল দিই তাতে।
রাখতে শহিদের মান
আগুনে জ্বালাও প্রাণ
ঝড় তোলো কোনো প্রভাতে।
  প্রাচ্য পাশ্চাত্যের অপূর্ব মেলবন্ধন
বাংলার শিক্ষক,তার ই সন্তান
ইংরেজী স্কুলের নন্দন;
আভিজাত্যের অহংকারে উচ্চ শিরে কহে-
ছেলেটা আমার বেশ নাম করেছে
ইংরেজী ইস্কুলের ফাষ্ট বয়,
তবে বাংলাটা বিশেষ বোঝে না
তাতে কি আসে যায়?
মানুষের মত মানুষ হচ্ছে
কেবল মাতৃভাষায় দুর্বল।
তা হোক  তাতেই বা কি আসে যায়
মারা পড়েছিলো কিছু মানুষ না হয়!
  বিবেক বন্দী তালকানা তাই
করছি পালন ভাষা দিবস।
বন্ধ দেরাজ খোলো রে সকলে
দ্বন্দ্ব ভুলে তোলো আওয়াজ।
তোমার ভাষা আমার ভাষা
বাংলা আমার মান
সবে মিলে অমর করি
বাংলা ভাষার প্রাণ।।


মো: রফিকুল ইসলাম




আমি শহীদ মিনারে দেখেছি
**********************



আমি শহীদ মিনারে দেখেছি
যেখানে চল্লিশ কিংবা তারও বেশি রক্তের ছাপ।
যারা মা , মাটি ও মাতৃভূমির গর্বিত সন্তান ,
মাতৃভাষার জন্য দিয়েছে যারা অকাতরে প্রাণ
তারা যে আমার স্বপ্নে আঁকা এই বাংলারই বুকে মুক্তির জয়গান ।

আমি দেখেছি মায়ের চোখের জল
বিধবা মায়ের হয়েছে স্বপ্ন ধূলিসাৎ
পিতৃহারা সন্তানের আর্তনাদের চিৎকার
কবে আসবে সেই প্রতিজ্ঞায়...।

জানি ওরা চল্লিশ জন কখনো ফিরে আসবে না,
ছাপান্ন হাজার বর্গমাইলের বুকে তারা যে মৃত্যুঞ্জয়ী বীর।
আমি কৃষ্ণচূড়ার অজস্র পাপড়ি ভালোবাসি ,
ভালোবাসি মুকুল গাছতলায় বসে প্রশান্তি নিতে-
যেখানে ফাল্গুনের পুষ্পিত ফুলের গন্ধে রমনার প্রাঙ্গণ,
আজ ইতিহাস সাক্ষী মায়ের ভাষার জন্য।

আমি ভালোবাসি তাদের কে
যারা বুকে শহীদের স্বপ্ন লালন করে
বাংলাকে দিয়েছে প্রাণ,
রঙিন বর্ণে ধরণীর বুকে।
আমি বিশ্বাস ঘাতকের কথা স্মরণ করিয়ে দিতে চাই,
যারা দিতে চাইনি আমার মায়ের সম্মান
যাদের বুলেটের আঘাতে বাংলার বুকে রাজপথে রক্তক্ষরণ হয়েছে আমার ভাইয়ের দেহ,
সেসব ঘাতকরা যে এখনো সজাগ ,
কিভাবে বাংলাকে বিলুপ্ত করবে এ ধরণীর বুক থেকে।
বাংলাকে ভালোবেসে করে যাবো আমরা তাদের প্রতিঘাত।

আমি শুনতে ভালোবাসি মুয়াজ্জিনের আযানের সুমধুর সুর,
যে  মধুর সুর শুনে ভাইয়ের ঘুম ভাঙ্গে মায়ের ভাষা রক্ষায়,
ঘুম ভাঙ্গে ভোরের দোয়েল ,কোকিল , শালিকের কন্ঠে,
যে কন্ঠ শুনে রাজপথে ঝড়েছিল তাজা প্রাণ!

কখনো ভুলবো না তাদেরকে , ভুলবো না মায়ের গর্বিত সন্তানদের,
যে বুকে তোমাদের নিয়ে আমার বাংলার জয়গান,
ভালোবাসি তোমাদের স্বপ্ন ,
যে স্বপ্ন লালন করে যাবে আমার এই স্বপ্রাণ ।